somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিছক এক সেন্ট মার্টিন'স ট্যুরের গল্প।

৩০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

; পৃথিবীতে তিন ক্যাটাগরির আয় রোজগারের মানুষ আছে। প্রথম শ্রেণি'র মানুষরা শুধু আয় করেন এবং তা সঞ্চয় ও বিনিয়োগের কথা চিন্তা করেন। তাদের কাছে জীবনে 'ফিউচার প্রসপেকট' টাই বড়। দ্বিতীয় শ্রেণি'র মানুষরা দেদারছে কিছুদিন আয় করেন এবং তারপর তা 'মাইকেল মধুসূদন দত্তের' মত দেদারছে খরচ করেন। জীবনে তারা 'সুলেমানি পোজে' বিশ্বাসী। তাদের সব সময়ই আয় অপেক্ষা ব্যয় বেশি থাকে। মাঝে মাঝে তৈরি হয় ধারের ছোট পাহাড়। তৃতীয় শ্রেণি'র আয় রোজগারের মানুষেরা আসলে সুখী মানুষ। এরা আসলে অন্য লেভেলের মানুষ। এদের নিজেদের কোন আয় নেই, তাই কোন চিন্তাও নেই। এদের খরচের লেভেল তাই বলে থেমে নেই। শুধুমাত্র বর্তমানের খরচের টাকাটা বাবা, মা না আপু'র কাছে থেকে নেবে এই হিসাবটাই যা করতে হয়। বাকিটা সব 'অনাদায়ি দেনা' হিসেবে চিরদিনের মত হিসাবভুক্ত।

আমি সিজনাল। যৌথভাবে আমি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ি। তাই এই ছুটিটা কাটালাম আমার পরিবারের সবাইকে নিয়ে সেন্ট মার্টিন'স দ্বীপে। এই ছুটিতে অনেক ভিড় থাকায় অনেক আগে থেকেই পুরা ট্যুরের সব বন্দোবস্ত করে রাখতে হয়েছিল। পরে জানলাম এত ভিড় আসলে ডাক্তারদের জন্যে। আধুনিক উপায়ে ডাক্তারদের মনোরঞ্জন করার জন্যে 'ঔষধ কোম্পানি' থেকে তাদের 'ট্যুরের' ব্যবস্থা এই ছুটিতেই করা হয়েছিল। তো একসাথে শ'দেড়েক ডাক্তার গেলেতো ভিড় বাড়বেই। রিসোর্ট বুকড, জাহাজের সিট বুকড, এসি বাস বুকড। সব জায়গায় ক্রাইসিস!

সে যাক, সেন্ট মার্টিন'স নিয়ে বলার মত আসলে কিছু নেই। আল্লাহ তা'আলার কুদরতের এক নিদর্শন। বলার মত আছে এখানকার মানুষদের নিয়ে। তাদের মত বন্ধুসুলভ এত ভাল মানুষ আসলেই ঢাকা শহরে বিরল। তারা ধর্মভীরু। মহিলারা পরহেজগার। এবং তাদের (স্থানীয়দের) দেখা সাক্ষাত খুবই বিরল। তারা 'হুমায়ূন আহমেদ'কে' একটু অপচ্ছন্দ করে। মদ্যপান এবং নারীসঙ্গ তার কারন। তারা আসলে নিজেদের এই দ্বীপটাকে খুব ভালবাসে। তারা মনে করে এই দ্বিপটা আল্লাহ তৈরি করেছেন এবং তিনি'ই একদিন এটাকে সাগরে মিলিয়ে দেবেন। ঘটনা সব সত্য। মিথ্যা না।

সেন্ট মার্টিন'স ট্যুরে যা বলার মত আছে তা হল ২৬ শে মার্চ নিয়ে। এবার বাংলাদেশের অনেক মানুষের সাথে আমাদের জাহাজের সবাই ২৬ শে মার্চ বেলা ১১টায় বঙ্গোপসাগরের উপরে, জাহাজের ভেতরে দাঁড়িয়ে একসাথে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছিলাম। সেই অনুভুতি ছিল চমৎকার। দ্বিতীয়তেই যা বলতে হয় তা ও জাহাজ নিয়ে। আমার কোন ধারণা ছিল না যে সমুদ্রেও ডুবোচর থাকে! আমাদের জাহাজ ফেরার পথে 'ভাটা'র' কারনে তিন থেকে চারবার বালিতে আটকে এমন জোরে ঝাঁকুনি খেয়েছিল যে জাহাজের সবাই ছোটাছুটি আর দোয়া দুরুদ পড়তে শুরু করেছিল। তবে আল্লাহ যে সব সময় সাথে আছেন তা তিনি আমাদের বুঝিয়ে দিলেন। বিপদ কেটে গেল। সেই জায়গায় আমাদের কপাল ভাল যে শুধু বালু'ই ছিল পাথর ছিল না। বিশ্বাস করেন সেই সময়ে আসলে বোঝা যায়, কত ধানে কত চাল। ঠিক তা না, সেই সময়ে আমি বুঝেছি কত মানুষে কত বয়া!! আর কি আশ্চর্য! যে জাহাজ সমুদ্র পাড়ি দেয় সেই জাহাজে কোন আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই! তারা পানি মাপে দড়ি ফেলে! আমার মনে হয় এইসব জাহাজের (কেয়ারি ক্রুজ এন্ড ডাইন এবং কুতুবদিয়া) এই রুটে চলাচল বন্ধ করে দেয়া উচিৎ।

সবার শেষে যে বিষয়টা বলার আছে তা হল শ্যামলী'র বাস ড্রাইভারকে নিয়ে। যাওয়ার সময় যে বাসে গিয়েছি আমি শিউর আল্লাহ তাকে বিশেষভাবে বিবেচনা করবেন। তার কারনে পুরা রাস্তায় আমি আমার আম্মাকে দোয়া পড়তে দেখেছি। আমি নিজেও যতটুকু পারি, পড়েছি। এবং তিনি বোধহয় 'কালা'ও ছিলেন। কারন বহুবারের অনুরোধও তার কর্ণে প্রবেশ করেনি। মানুষ 'খারাপ' চালালে বোঝানো যায়, কিন্তু 'সব উলটাইয়া ফেলবাম', খালি 'ওভারটেকিং' করবাম আর 'রং সাইডে চালাইবাম' এই সব মনোভাব একসাথে নিয়ে যে গাড়ি চালায় তাকে আসলে বোঝানোর কিছু নাই। সে 'এরশাদ' ক্যাটাগড়ির। অবুঝ।

সর্বপরি, ভাল লাগা বিষয়টা আপেক্ষিক। কিন্তুু কিছু ভাল লাগা সার্বজনীন। আপনি যখন শিতল ঠান্ডা হাওয়ায়, এক আকাশ তারার নিচে শুয়ে শুয়ে সমুদ্রের গর্জন শুনবেন তখন আপনার ভাল লাগবে। তার সাথে কিছু দূরে যদি কেউ গিটারে নিকষ কালো অন্ধকারে গানটি তোলে তাহলে তো কথাই নেই। মনে হবে জিবনটা এই জায়গায় 'পজ' হয়ে যাক না। ভাল লাগা বাড়তে থাকবে। গান ও পরিবর্তন হতে থাকবে। আসলে বাংলাদেশটা সুন্দর। জিবনটাও সুন্দর।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৫১
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×