ভূমিকাঃ পড়াশুনা না করে স্যারের চোখ ফাকি দিয়ে পরীক্ষায় পার হয়ে যাওয়ার অদ্বিতীয় এক পদ্ধতি হিসেবে নকল প্রাচীন কাল হতে প্রচলিত।সারাদিন ঘুরাঘুরি, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম, চ্যাটিং, ডেটিং আর ফোনে কথা বলে পড়াশুনা করার সময় না পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট নকল আশীর্বাদ স্বরুপ।অলস ছাত্র-ছাত্রীদের নিকট এটি অত্যন্ত জনপ্রিয় পদ্ধতি হিসেবে সমাদৃত। নানাবিধ ঝুকি থাকা সত্ত্বেও পদ্ধতিটির বিশেষত্ত্বের কারনে ছাত্র-ছাত্রীগন এর আবেদন উপেক্ষা করতে পারেননা।
নকলঃ যুগে যুগে বিভিন্ন নকলবিদ নকলকে নানাভাবে সঙ্গায়িত করেছেন।সামগ্রিকভবে নকলকে নিম্নরুপে সঙ্গায়িত করা যায়।
সিলেবাস কম্পলিট না করে পরীক্ষাহলে গিয়ে প্রশ্নের উত্তর দেখে দেখে (কোন কোন ক্ষেত্রে শুনে এমনকি ইশারায়) উত্তর প্রদান করাকে নকল বলে।
নকলের পদ্ধতিঃ পদ্ধতিগত দিক থেকে নকলকে মূলত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
ক. সনাতন পদ্ধতি।
খ. ডিজিটাল পদ্ধতি।
ক.সনাতন পদ্ধতিঃ নকলের যেসকল পদ্ধতি প্রাচীন কাল থেকে চলে তাদেরকে সনাতন পদ্ধতি বলে।অনেক ক্ষেত্রে এ সকল পদ্ধতিকে সার্বজনীন পদ্ধতিও বলা হয়। সনাতন পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে
১. দেখে লেখা পদ্ধতি
২. শুনে লেখা পদ্ধতি
৩. ইশারায় লেখা পদ্ধতি
নিম্নে পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
১.দেখে লেখা পদ্ধতিঃ দেখে লেখা পদ্ধতিতে নকলকারী দেখে দেখে প্রশ্নের উত্তর লেখে। দেখে লেখা পদ্ধতিকে আবার দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
ক. প্রত্যক্ষ পদ্ধতি
খ.পরোক্ষ পদ্ধতি
প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ পদ্ধতি সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হল
ক.প্রত্যক্ষ পদ্ধতিঃ প্রত্যক্ষ পদ্ধতিতে নকলকারীকে নকল করার উপকরন যেমন খাতা, বই, নোট ইত্যাদি সঙ্গে করে নিয়ে আসতে হয় এবং সম্পূর্ন নিজ দায়িত্বে সেখান থেকে উত্তর কপি করে উত্তপত্রে পেস্ট করতে হয়। এক্ষেত্রে নকলকারী বিভিন্ন উপায়ে নকল করার উপকরন পরীক্ষাহলে নিয়ে আসে। নিম্নে উপায়গুলি উল্লেখ করা হল
১. সরাসরি বই , নোট বা তার কোন অংশ নিয়ে আসা।
২. পরীক্ষা শুরুর আগে বেঞ্ছে নকল লিখে রাখা।
৩. হাতে লিখে নিয়ে আসা।
৪. প্যাডে লিখে নিয়ে আসা।
৫. প্রবেশপত্রে লিখে নিয়ে আসা।
৬. পরীক্ষা শুরুর আগে দেয়ালে লিখে রাখা।
৭. টাকায় লিখে নিয়ে আসা।
নকলের এইসব উপকরন শিক্ষকদের চোখ ফাকি দিয়ে পরীক্ষাহলে নিয়ে আসতে হয়। শিক্ককদের চোখ ফাকি দিতে নকলকারীরা তাই বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করেন।নিম্নে এসব উপায় উল্লেখ করা হল।
১. পকেটে করে নিয়ে আসা।
২. টুপিতে করে নিয়ে আসা।
৩. বাথরুমে নকল রেখে আসা এবং মাঝখানে সুযোগ বুঝে দেখা আসা।
৪.জ্যামিতি বক্স বা পেন বক্সের মধ্যে নিয়ে আসা।
৫. কলমের খাপের ভেতর নিয়ে আসা।
খ.পরোক্ষ পদ্ধতিঃ এই পদ্ধতিতে নকলকারী আশেপাশের কারো দেখে দেখে লিখে অথবা অন্য কারো নিয়ে আসা নকল ব্যবহার করে।
২.শুনে লেখা পদ্ধতিঃ দেখার পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকলে অথবা নকলকারীর পার্টনার দূরে থাকলে বাধ্য হয়ে নকলকারীকে এই পদ্ধতি অনুসরন করতে হয়।পাশাপাশি বসা দুইজন নকলবাজের জন্য এই পদ্ধতি অত্যন্ত কার্যকর।
৩. ইশারা পদ্ধতিঃ অবজেক্টিভ পরীক্ষায় এই পদ্ধতির ব্যবহার সীমাবদ্ধ।এই পদ্ধতির সহায়তায় ক্লাশরুমের এক কোনায় বসা নকলকারী
আরেক কোনায় বসা নকলকারীর কাছ থেকে সহজেই অবজেক্টিভ প্রশ্নের সঠিক উত্তর জেনে নিতে পারে। এক্ষেত্রে নকলকারীরা নিজেদের মধ্যে বিশেষ ধরনের সংকেত ব্যবহার করে। যেমন মাথায় হাত দিলে সঠিক ঊত্তর ক, কানে হাত দিলে খ, চোখে হাত দিলে গ ইত্যাদি। প্রশ্নপত্রের সেট নাম্বার এক না হলে এই পদ্ধতি অকার্যকর।
ডিজিটাল পদ্ধতি সম্পর্কে পরবর্তীতে আলোচনা করা হবে।