আমি তাকে মেরেই ফেললাম। ওটা একটা গেরিলা ছুরি ছিল।
তার ফ্ল্যাটে যখন উঠছিলাম পাঞ্জাবির হাতার ভেতরে লুকিয়ে রেখেছিলাম।
ইন্টারকমেই সে জেনেছিল আমি আসছি।
কলিং বেল টিপতেই দরজা খুলে দিল
আমার হাত দুটো পেছনে ক্রস করা। ছুরির বাটটা উল্টো করে ধরা আছে।
সে আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো। অভ্যর্থনাসূচক।
আমি ফিরতি হাসতে পারলাম না।
দু সেকেন্ড পরে যাকে খুন করবো তার দিকে তাকিয়ে হাসাটা আমার কাছে নির্দয় মনে হলো।
খুনের চেয়ে ভণিতার হাসি সত্যিই নির্দয়।
সে ভেতরে আসতে বললো। আমি তিন পা এগিয়ে গেলাম।
হঠাৎ আমাকে সে জড়িয়ে ধরলো। কান্না জড়িত কণ্ঠে বললো, 'আমাকে মাফ করে দাও! আমাকে মাফ করে দাও!
আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি- আমাকে ক্ষমা করে দাও! ক্ষমা করে দাও জানের চেয়ে প্রিয়!'
আপনি যাকে খুন করতে যাবেন সে যদি আপনার কাছে ক্ষমা চায় তবে কি করা উচিত?
আমি বিরক্ত অনুভব করলাম- আমার দু হাত দুদিকে ছড়িয়ে আলিঙ্গন ছাড়ালাম।
এরই মধ্যে ছুরিটা পজিশনে চলে গেছে। আমি এক পা পিছিয়ে সজোরে চালিয়ে দিলাম তার 'হৃদয়' বরাবর।
ডানে-বামে কয়েকবার ঘুরালাম, তারপর উপরে তুলে নিচের দিকে ঝটকা টান দিয়ে বের করে নিলাম ।
একটা অস্ফুট শব্দ করেছিল সে, চোখজোড়া আমার দিকে বিস্ফোরিত হয়ে তাকিয়ে ছিল।
কণ্ঠ নয়, চোখই যেন চিৎকার করছে। কী সুন্দর চোখ, অথচ আর মোহিত করতে পারলো না।
পড়ে যাওয়ার আগে আমার দিকে হাত বাড়াতে চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, জানের বিনিময়ে ক্ষমা করে দিলাম।
এরপর আমার হাঁটু জোড়া ভেঙ্গে পড়লো। লাল রঙা ছুরি হাতের শরীরটার ভার হয়তো আর সহ্য করতে পারছিল না।
আমার চোখ মৃত্যুপথযাত্রীর জন্য অশ্রু বিসর্জন করার প্রয়োজন বোধ করলো। শেষবারের মতো তার হাতটা ধরলাম।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ বিকাল ৫:১০