১. কারো বাড়ীতে মেহমান হিসেবে যেতে হলে মেজবানের মর্যাদানুযায়ী মেজবানের শিশুদের জন্য কিছু হাদিয়া তোহফা নিয়ে যাবে। তোহফায় মেজবানের রুচি ও পছন্দের প্রতি লক্ষ্য রাখবে। হাদিয়া তোহফার লেনদেনে বন্ধুত্ব ও সম্পর্কে অনুভূতি বৃদ্ধি পায়।
২. যার বাড়ীতেই মেহমান হিসেবে যাওয়া হোক না কেন তিন দিনের অতিরিক্ত সময় অবস্থান না করার চেষ্টা করবে কিন্তু অবস্থা বিশেষে মেজবানের কঠোর একাগ্রতায় ভিন্ন কথা।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন-
মেহমানের জন্য মেজবান পেরেশানিতে পড়ে এমন সময় পর্যন্ত মেজবানের বাড়ীতে অবস্থান করা ঠিক নয়।
(আল আদাবুল মুফরাদ)
সহীহ মুসলিম শরীফে আছে যে, মুসলমানের জন্য তার ভাইয়ের বাড়ীতে তাকে গুনাহগার করে দেয়া পর্যন্ত অবস্থান করা ঠিক নয়। সাহাবায়ে কেরাম বলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, কিভাবে গুনাহগার করবে? তিনি বললেন, “সেভাবে যে, সে তার নিকট অবস্থান করবে অথচ, মেজবানের নিকট আতিথ্যের কিছু থাকবে না”।
৪. শুধু অপরের মেহমানই হবে না, অন্যদেরকেও নিজের ঘরে আসার দাওয়াত দেবে এবং প্রাণ খুলে আতিথেয়তা করবে।
৫.কোথাও মেহমান হিসাবে যেতে চাইলেও মওসুম বা ঋতুর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় সাজ-সরঞ্জাম ও বিছানাপত্র ইত্যাদি সাথে নিয়ে যাবে। বিশেষ করে শীতকালে বিছানা-পত্র ছাড়া যাবে না নতুবা মেজবানের কষ্ট হবে এবং এটাও ঠিক নয় যে, মেহমান মেজবানের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
৬. মেজবানের কর্মব্যস্ততা ও দায়িত্বের প্রতি লক্ষ্য রাখবে। বিশেষকরে লক্ষ্য রাখবে যে, তোমার কারণে মেজবানের কর্ম ব্যস্ততায় যেন প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না করে এবং দায়িত্বে ব্যাঘাত না ঘটে।
৭. মেজবানের নিকট কিছু দাবী করবে না। সে মেহমানের সন্তুষ্টির জন্য স্বেচ্ছায় যে ব্যবস্থা করে তার উপরই মেজবানের শুকরিয়া আদায় করবে আর তাকে অনর্থক কষ্টে ফেলবে না।
৮. যদি মেজবানের মহিলাদের শরয়ী গায়র মুহরিম হোন তা হলে বিনা কারণে মেজবানের অনুপস্থিতিতে কথা-বার্তা বলবে না বা কারো কথাবার্তাও আন লাগিয়ে শুনবে না। এ নিয়মে থাকবে যে তোমার কথা বার্তা ও চালচলনে যেন তাদের কোন পেরেশানি না হয় এবং কোন ব্যাঘাতও না ঘটে।
৯. তুমি যদি কোন কারণে মেজবানের সাথে খেতে অনিচ্ছা প্রকাশ কর অথবা রোযাদার হও তাহলে অত্যন্ত নম্রভাবে ওযর পেশ করবে। আর মেজবানের সম্পদ বৃদ্ধি ও সুস্বাস্থ্যের জন্য দোআ করবে।
হযরত ইবরাহীম (আঃ) সম্মানিত মেহমানদের জন্য খাদ্য পরিবেশন করলেন আর তারা হাত গুটাতেই রইলেন তখন হযরত আবেদন করলেনঃ
“আপনারা খাচ্ছেন না কেন”? উত্তরে ফিরিশতাগণ হযরতকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, “আপনি মনোকষ্ট নেবেন না। মূলতঃ আমরা খেতে পারিনা, আমরা তো আপনাকে শুধুমাত্র যোগ্য ছেলের জন্ম গ্রহণের সুসংবাদ দান করতে এসেছি”।
১০. কারো বাড়ীতে যখন দাওয়াতে যাবে পানাহারের পর মেজবানের সম্পদ বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্যের উন্নতির মাগফিরাত ও রহমতের জন্য দোআ করবে। হযরত আবুল হাইসুম বিন তাইহান (রাঃ) রাসূল (সাঃ) ও তাঁর সাহাবীগণকে দাওয়াত দিলেন। তারা যখন খাবার শেষ করলো তখন রাসূল (সাঃ) বললেন, “তোমাদের ভাইকে প্রতিদান দাও। সাহাবাগণ আরজ করলেন কি প্রতিদান দেবো, ইয়া রাসূলাল্লাহ? মানুষ যখন তার ভাইয়ের বাড়ী যায় এবং খাওয়া দাওয়া করে তখন তার জন্য ধন-সম্পদে প্রাচুর্যের দোআ করবে। এটাই হলো তার প্রতিদান”।
(আবু দাউদ)
রাসূল (সাঃ) একবার সায়াদ বিন ওবাদাহ (রাঃ)-এর বাড়ী গেলেন, হযরত সায়াদ (রাঃ) রুটি ও জলপাই পেশ করলেন, তিনি তা খেয়ে এ দোয়া করলেনঃ
আরবি
“তোমাদের নিকট রোযাদারগণ ইফতার করুক! সৎলোকেরা তোমাদের খাদ্য খাক! আর ফিরিশতাগণ তোমাদের জন্য মাগফিরাত ও রহমতের দোআ করুক”!

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


