somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভূত নিয়ে তৃতীয় সত্য ঘটনা.....

১৫ ই জুলাই, ২০০৮ বিকাল ৩:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

যারা ভূতে বিশ্বাস করেন না, বা করতে চান না তাদেরকে আজকে আবার একটা সত্য ঘটনা শুনাব-
আমি ঢাকা আসার পর গ্রামের বান্ধবীদের সাথে চিঠি দিয়ে যোগাযোগ করতাম। চিঠি পাঠাতাম আমার এক বন্ধুর ঠিকানায়। ঐ সব চিঠি বান্ধবীদের কাছে পৌছাইয়া দিত। তখন আমাদের এলাকায় মোবাইলে ভাল নেটওয়ার্ক পাওয়া যেতনা। যে এক-দুইজনের মোবাইল ছিল তারা গাছের মগডালে উঠে নেটওয়ার্ক খুজত।

একবার হলো কি আমি একটা চিঠি পাঠাইলাম ঐ বন্ধুর ঠিকানায়। আগে থেকেই হিসেব করে রাখতাম চিঠি কবে গিয়ে পৌছাবে। তো যেদিন চিঠি পৌছানোর কথা তার আগের দিন সন্ধায় আমার বন্ধু ঢাকা এসে ফোন করল আমিতো ঢাকা। মাথায় যেন কেউ হাতুড়ি দিয়ে বাড়ি মারল। এলাকায় আমার যে শত্রু কার হাতে না কার হাতে পড়ে যায়। আর শালার পিয়নও হইলো এলাকার। তাছাড়া চিঠি যদি ঐ বন্ধুকে না পেয়ে তার বাসায় রেখে আসে। খুব ভয় পাইলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম রাত্রেই বাড়িতে যাব। মহাখালী থেকে ময়মনসিংহের বাস পেলাম। ময়মনসিংহ যেতে যেতে রাত ১টা। হালুয়াঘাটের কোন বাস না পেয়ে শেষে হালুয়াঘাটগামী একটি ট্রাকে উঠে পড়লাম।

যখন নাগলা নামলাম তখন রাত দুইটা। কোন রিক্সা নাই। একটি দোকান খোলা পেয়ে এক প্যাকেট বেনসন আর একটা ম্যাচ নিয়ে হেটেই রওনা হলাম। ঐ খান থেকে আমার বাসা ১৫ কি.মি.। তার মাঝে ৫ কি.মি. পাকা রাস্তা, বাকী১০ কি.মি. কাচা রাস্তা। হঠাৎ একটি রিক্সা দেখে পুলকিত হলাম। কিন্তু রিক্সাওয়ালা শুধু পাকা রাস্তাটি যেতে রাজি হলো। কাঁচা রাস্তায় অনেক কাঁদা তাই যাবেনা। আমি পাকা রাস্তাটি ১০ টাকা দিয়ে গেলাম। তারপর প্যান্ট উল্টিয়ে হাটু পর্যন্ত তুলে রওনা হলাম।

মাঝে মাঝেই চাঁদটা মেঘের আড়ালে ঢাকা পড়ছে। তখন চারদিকে অন্ধকার হয়ে যায়। মনে হচ্ছে এই বুঝি চাঁদটাকে কোন দৈত্য তাড়িয়ে নিয়ে গেছে। পাশের ধানক্ষেত থেকে একটি ব্যাঙ থেমে থেমে করুন সুরে ডেকে যাচ্ছে। বুঝতে পাড়লাম হয়তো কোন সাপ ঐ ব্যাঙটিকে ধরেছে।

আমি হেটেই চলছি। আমাকে যে সকালেই বাজারে পৌছাতে হবে। মাঝে মাঝে সিগারেট ধরিয়ে এক-দুইটা ফুক দিচ্ছি। আসলে সিগারেট খাওয়ার চেয়ে হাতে সিগারেটের আগুন রাখাই মূখ্য উদ্দেশ্য। দূর থেকে দুটি শেয়াল দেখতে পেলাম। আমাকে দেখে যেন অবাক হয়ে গেছে। কাছে যেতেই এক দৌড়ে পাশের ধানক্ষেতে মিলিয়ে গেল।

আমদের ইউনিয়নে ঢুকে পড়লাম। আর মাত্র সাড়ে চার কি.মি.। আকাশের চাদটা মাঝে মাঝেই উকি দিয়ে হারিয়ে যাচ্ছে। যেন আমার সাথে লুকোচুরি খেলছে, আর তারাগুলো যেন মিটিমিটি করে হাসছে।

পেশাবের খুব চাপ দিল। ভাবলাম ব্রীজটার উপরে উঠেই...। হাতের সিগারেট টা এইমাত্র শেষ হয়েছে। আমি ব্রীজের উপরে দাড়ানো।

হঠাৎ....হঠাৎ.... ব্রীজের নিচ থেকে একটি মেয়ের হাসি শোনা গেল। আমিতো অবাক। ভাবলাম নিশ্চয় কেউ ঐখানে........। এইভেবে চিন্তা করলাম দেখি আসি কে ঐখানে........।

তখনই মনে পড়ল আরে এখন না বর্ষাকাল। ব্রীজের নিচেতো পানি। সাথে সাথেই কি যেন পায়ের তলা দিয়ে সোজা মাথায় উঠে গেল। চিনচিন করে মাথাটা ব্যাথাটা করছে। আমি যখন খুব ভয় পায় তখন আমার ঐ রকম লাগে। আমি ব্রীজ থেকে নেমে সোজা হাটা শুরু করলাম।

- দাঁড়াও

পিছনে তাকিয়ে দেখি ঠিক ব্রীজের মাঝখানে একটি সাদা শাড়ীপড়া যুবতী মেয়ে দাড়ানো আছে।

-আমাকে তুমি চিননা

চমকে উঠলাম দেখি অর্পনা। ভাল করে তাকালাম। এখন কিন্তু আর অর্পনা মনে হচ্ছেনা। অর্পনার কথা খুব মনে পড়ে গেল।

-আমি বললাম না চিনিনা।
-তুমি আমারে লইয়া যাও।

-আমি আপনাকে কোথায় নিয়া যাব

ভয়ংকর ভয়ংকর সে চিৎকার। যেন কানের পর্দা ছিড়ে যাবে। আমি দৌড়দিলাম। চিৎকার যেন বেড়েই চলছে। পানিতে ঝাপ দেওয়ার শব্দ শুনা গেল। আমি পিছনে তাকাবার সাহস পেলাম না। সামনে বাতি আর মানুষ দেখতে পেয়ে থেমে গেলাম।

-কি হয়েছে চিয়ারম্যানের পুত।
আমি সব খুলে বললাম। সাথে এও বললাম আমি তো আর একলা একলা বাসায় যেতে পারবনা।

তারপর তারা সবাই মিলে আমাকে বাসা পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে আসল। আমি আব্বা-আম্মাকে কিছু বলতে নিষেধ করলাম।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০০৮ সকাল ৯:০৫
২০টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×