ভক্তদের আনাগোনায় বিপর্যস্ত হুমায়ূনের নুহাশ পল্লী
প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের কবর জিয়ারত করতে এসে তারই লাগানো ঔষধি গাছের পাতা ছিঁড়ছেন, ডাল ভাঙছেন ভক্তরা। শত শত গাড়ির চাকায় এই বাগান বাড়ির ঘাষের গালিচা যেন পরিণত হয়েছে চষা ক্ষেতে।
লেখকের কবর বাদে বাকি জায়গায় দড়ি টেনে নোটিস টাঙিয়েও রক্ষা করা যাচ্ছে না। এ নিয়ে ভক্তদের অসন্তোষ আর দুর্র্ব্যবহারের শিকার হচ্ছেন নুহাশ পল্লীর কর্মীরা।
ভক্তদের আনাগোনার চাপে নুহাশ পল্লীকে ‘পিকনিক স্পট’ হিসেবে ভাড়া দেয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এর কর্মী ও নেত্রকোনার কুতুবপুরে হুমায়ূনের গড়া শহীদস্মৃতি বিদ্যাপীঠ পড়ছে আর্থিক অনটনে।
এই পরিস্থিতি থেকে হুমায়ূনের ‘প্রাণের চেয়েও প্রিয়’ নুহাশ পল্লীকে রক্ষার জন্য ভক্ত-দর্শনার্থীদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন নুহাশ পল্লীর ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম বুলবুল।
তিনি বলেন, “হুমায়ূন স্যারকে সমাহিত করার পর থেকেই তার কবর জেয়ারত করতে আসা ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত। তার দাফনের দিন বৃষ্টির মধ্যে দাফনে আসা শত শত গাড়ি ও হাজার হাজার মানুষের পাদাঘাতে নুহাশ পল্লীর ভেতরের অনেকাংশই কর্দমাক্ত হয়ে চাষ করা জমির মতো হয়ে গেছে। বিবর্ণ হয়ে গেছে ঘাসের সবুজ গালিচা। এখনও নুহাশ পল্লীতে প্রতিদিন শত-সহ¯্র মানুষ আসছেন, হুমায়ুন স্যারের কবর জিয়ারত করতে।
“এ সময় তাদের অনেকেই নুহাশ পল্লীতে মূল্যবান গাছের লতা-পাতা, ফুল-ফল ছিঁড়ে ফেলছেন, এমনকি গাছের ডালাপালাও ভেঙে ফেলছেন। এসব বারণ করতে গিয়ে তাদের কাছে নুহাশ পল্লীর কর্মচারীদের লাঞ্ছিত হতে হচ্ছে।”
এ অবস্থায় সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত ভক্তদের কবর জিয়ারতের সুযোগ দেয়ার কথা জানানো হয়।
তবে ভক্তরা তা মানছেন না বলে অভিযোগ করেন সাইফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “এ নিয়ে প্রতিদিন দেশের দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের সঙ্গে নুহাশ পল্লীর কর্মচারীদের তিক্ততা তৈরি হচ্ছে।”
একই সঙ্গে নুহাশ পল্লী পিকনিক স্পট হিসেবে ভাড়া দিতে না পারায় এর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ এবং নয় কর্মচারী ও নেত্রকোনার কুতুবপুরের শহীদস্মৃতি বিদ্যাপীঠ স্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা তথা অনুদানের টাকা দেয়া যাচ্ছে না বলে জানান সাইফুল ইসলাম।
গত ১৯ জুন নিউইয়র্কে চিকিৎধীন অবস্থায় হুমায়ূন আহমেদ মারা যান। ২৩ জুলাই ঢাকায় আনার পর ২৪ জুলাই দুপুরে গাজীপুরের নুহাশ পল্লীর লিচু বাগানে তাকে দাফন করা হয়।
সূত্র : বিডিনিউজ