somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের প্রতি ভারতের ঐতিহাসিক নিপীড়নমূলক আচরণসমূহ

০৪ ঠা জুলাই, ২০০৯ রাত ১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১। প্রায় ৪ হাজার কি.মি দীর্ঘ ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত অঞ্চলে স্বাধীনতার পর থেকেই ভারতের ভূমিকা আগ্রাসনমূলক। বিএসএফ গড়ে প্রতি ৩ দিনে একজন করে বাংলাদেশী হত্যা করছে বলে তথ্য পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এদের বেশীর ভাগই নিরীহ গ্রামবাসী। এমনকি ভারতের সীমান্তরক্ষীরা প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে নিরীহ গ্রামবাসীদের সম্পদ লুটপাট, হত্যা, ধর্ষণ ইত্যাদি জঘন্য কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।

২। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে ভারত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া তৈরী অব্যাহত রেখেছে।

৩। মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ ভারতকে বেরুবাড়ি হস্তান্তর করলেও, বাংলাদেশ এখনো ৩ বিঘা করিডোর ফেরত পায়নি। উপরন্তু, এ সব অঞ্চলের মানুষেরা স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও গত ৩৮ বছর যাবত উন্মুক্ত জেলখানায় বন্দী হিসেবে দিন কাটাচ্ছে।

৪। বাংলাদেশের সীমানায় জেগে উঠা তালপট্টি দ্বীপকে ভারত জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। নীলফামারী, পঞ্চগড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে এখনো এদেশের হাজার হাজার একর জমি ভারতের দখলে রয়েছে।

৫। আন্তর্জাতিক নিয়ম নীতিকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে ভারত আমাদেরকে পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করেছে। তারা ফারাক্কা বাঁধ, টিপাইমুখী বাঁধসহ উজানে আরও ডজন খানেক বাঁধ দিয়ে এদেশকে পুরোপুরি মরুভূমি করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে। ভারতের 'আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প' বাস্তবায়িত হলে তা বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি ও অর্থনীতিতে ডেকে আনবে চরম বিপর্যয়। কমে যাবে নদীর নব্যতা, মিঠা পানির মাছের উৎপাদন হ্রাস পাবে, আর্সেনিক সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে এবং ক্রমশঃ বাংলাদেশের বিশাল এলাকা পরিণত হবে ধূ ধূ মরুভূমিতে।

৬। চোরাকারবারীদের মাধ্যমে ভারত এদেশে মাদক, জালমুদ্রাসহ ভারতীয় বিভিন্ন নিম্নমানের পণ্যসামগ্রী ঠেলে দিচ্ছে। আর, অপরদিকে এদেশ থেকে পাচার হয়ে যাচ্ছে তেল ও সার। বিভিন্ন দৈনিকে প্রকাশিত রিপোর্ট থেকে জানা যায়, পিলখানা ট্রাজেডির পর সীমান্তে বিডিআরের অনুপস্থিতির সুযোগে এদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল, ভোজ্যতেল ও সার ভারত ও মিয়ানমারে পাচার হয়ে গেছে। আর দেশে প্রবেশ করেছে মাদকসহ বিভিন্ন নিম্নমানের ভারতীয় পণ্যসামগ্রী।

৭। ভারত সবসময়ই এদেশীয় কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের আশ্যয়-প্রশ্রয় দিয়েছে। নানাভাবে উস্কে দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রামরে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে। ২০০৭ সালের ১৭ আগস্ট সিরিজ বোমা হামলার সাথেও ভারতের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া গেছে এবং সেই সাথে জেএমবি নেতাদের বহুবার ভারত যাওয়া আসার প্রমাণ মিলেছে।

৮। খোদ ভারতের মাটিতেই ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নাকের ডগায় 'নিখিল বঙ্গ সংঙ্ঘের' ব্যানারে চলছে বাংলাদেশকে বিভক্ত করার এক জঘন্য ষড়যন্ত্র। সম্প্রতি কলকাতার বঙ্গসেনারা এদেশের ১৯ টি জেলা নিয়ে কলকাতায় পশ্চিমবঙ্গ কেন্দ্রিক একটি প্রবাসী বঙ্গভূমি সরকার গঠনের প্রকাশ্য ঘোষণা দিয়েছে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তাদের শ্লোগান ছিল 'বঙ্গভূমি দখল চাই'। তারা ভারত সরকারের চোখের সামনে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই হীন তৎপরতা চালাচ্ছে।

৯। বাংলাদেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করার জন্য ভারত দীর্ঘ এই সীমান্ত অঞ্চলে অসংখ্য ফেনসিডিললের কারখানা তৈরী করেছে এবং অবৈধ উপায়ে তা বাংলাদেশে পাচার করছে। ফলে মাদকের মরণ নেশায় ধ্বংস হচ্ছে এ দেশের যুবসমাজ।

কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে এদেশের বিরুদ্ধে ভারতের এত ষড়যন্ত্র ও অপতৎপরতার পরও বিগত ৩৮ বছর ক্ষমতাসীন প্রতিটি সরকার ভারতকে বন্ধুর মর্যাদায় আসীন করে তার প্রতি নতজানু পররাষ্ট্রনীতি অবলম্বন করেছে। শুধু তাই নয়, তারা বিভিন্ন সময়ে ভারতকে এদেশের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপেরও সুযোগ তৈরী করে দিয়েছে।

সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০০৯ রাত ১২:০৭
২৫টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×