উপরের এই দৃশ্য আর কতকাল দেখতে হবে আমাদের ,কেউ কি বলতে পারেন ? নুসরাত'কে মরে গিয়ে প্রমাণ করতে হলো তার অভিযোগের কথা কতটা নির্মম সত্য।এভাবেই যৌন-হয়রানি ও ধর্ষিতারা হত্যার শিকার হয়ে প্রমাণ দিয়ে গেছে আমাদের।তবুও কি টনক নড়ছে আমাদের ? কেউ কি বলতে পারবেন কতগুলো ঘটনার ফলোআপ আমরা পেয়েছি।শতকরা কতজনই বা সঠিক বিচার পেলো ! আদৌ কি কোন পরিবর্তন লক্ষনীয়।বরং বিচার চেয়ে এবং প্রতিবাদি হয়ে অনেকের জিবন চলে গেছে।আবার কেউ হয়েছে গ্রাম বা এলাকা ছাড়া।কেউবা উল্টো আইনের হাতেই হয়েছে আইনের অপ-প্রয়োগের শিকার।এরকম কি চলবে অনন্তকাল ?
নুসরাত জাহান রাফি- যে কুড়ি ফুল হয়ে ফোঁটার আগেই ঝরে গেলো তার হত্যাকারিদের বিচারের পুর্বে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোয়াজ্জেমের বিচার চাই।পৌর কমিশনার মাকসুদের বিচার চাই।
আইনপ্রয়োগকারি সংস্থার একজন বেতনভুক্ত কর্মচারি হয়ে আইনেরপ্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধা নেই যে কর্মকর্তার তার বিচার হওয়াটা খুব বেশি জরুরি বলে মনে করছি আমি।সে শুধু তার দায়িত্বে অবহেলাই করেনি ,বরং সে তার ক্ষমতার অপব্যাবহার করেছে।এতটাই বেপরোয়া যে একজন খুনি-ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে ভিক্টিমকে হত্যায় সাহায্য করেছে।সে এই খুনের একজন সহযোগি হিসেবে বিবেচিত আইনের দৃষ্টিতে।যদি না আইনকে বে-আইনে পরিনত করা হয়।যা বাংলাদেশে অহরহ হয়ে থাকে।অর্থাত অধিকাংশ সময় আইনের সঠিক প্রয়োগ না হয়ে অপ-প্রয়োগ হয়ে থাকে।এবং এটাকেই এখন মানুষ স্বাভাবিক বলে মেনে নিচ্ছে ।অর্থের বিনিময়ে আইন এবং বিচার ক্রয় করা যায় বর্তমানে।যদি আইন তার নিজস্ব পথে পরিচালিত হইতে পারতো নিজে নিজে ।তাহলে ভিক্টিমের প্রতি সহানুভুতিশীল হইতো।তার সুরক্ষা নিশ্চিত করে কঠোর ব্যাবস্থা গ্রহণ করা ছিলো ওয়ান,টু,থ্রির ব্যাপার মাত্র।এমন প্রতিটি ঘটনার পরে সাময়িক অব্যাহতি অথবা অন্য্যত্র বদলি করে দেওয়া ব্যাতিত কোন এ্যকশন দেখিনি।মাঝে মাঝে'তো পুরস্কৃত হতে দেখেছি।
২য় আরেকজন পৌর-কমিশনার জনাব মাকসুদ ।উনি ক্ষমতাশীল দলের একজন জন-প্রতিনিধি ।আদৌ কি তার জন-প্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা আছে ! আমার দৃষ্টিতে জন-প্রতিনিধি'তো সেই ব্যাক্তি, সকল কিছুর পুর্বে যে জনতার কথা বলবে।তাদের পক্ষ হয়ে সমাজে নেতৃত্ব দিবে।সবার আগে সেই রুখে দাড়াবে সকল অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে।অর্থাত নিপিরিত মানুষের কন্ঠস্বর হওয়ার কথা।যে কোন দুর্যোগে তার হাতটা প্রসারিত থাকবে তা ঠেকিয়ে দেওয়ার জন্য।কোন খুনি বা ধর্ষকের পক্ষে ওকালতি করার জন্য নয়।ক্ষমতার দাপটে খুনির পক্ষে মিটিং,মিছিল যে করে সে কখনই জন-প্রতিনিধি হোতে পারেনা।কাজেই এই ধর্ষণ ও খুনের একজন সহায়তাকারি হিসেবেই গণ্য হওয়ার কথা আইনের দৃষ্টিতে। আমি এই দু'জনের বিচার চাই সবার আগে। তারপরে বিচার চাই নানাভাবে সহািয়তাকারি সকলের।যারা মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বেশধারি পিশাচের পক্ষে দাড়িয়েছে।
আইণ প্রয়োগকারি সংস্থার প্রতিনিধি ও জন-প্রতিনিধি যখন একজন ভিক্টিমের বিরুদ্ধে দাড়ায় ।তখন কতটা অসহায় হয়ে যায় সেই মানুষটা তা কি উপলব্দি করতে পারেন আপনারা ? সেখানেই অর্ধমৃতে পরিনত হয়ে যায়।অপশক্তি তখন শতগুন শক্তিশালি হয়ে সেই অসহায়ের উপর ঝাপিয়ে পড়ে।এবং তারই ফলাফল ,নীতু,মিতু,খাদিজা ও রাফির মত নিরপরাধ মানুষ।এই মিছিল দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে।এবং এটা যে আরো কত বিশাল হবে তা জানিনা।এই দেশে আগুন লাগলে কিট-পতঙ্গের মত মানুষ পুড়ে মরে।এবং তার প্রতিকার চাইতে হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে।বাসের চাপায় থেতলে যেতে হয় -তার প্রতিকারও সেই প্রধানমন্ত্রী। লঞ্চডুবিতে হারিয়ে যায় মানুষ।ধর্ষিতা হয়ে জিবন দিতে হয় যাদের তাদের প্রতিকার করবেন কে !দুঃস্থ শিল্পী ,কবি ,শিক্ষক এদের চিকিৎসা বা সাহায্যের প্রয়োজন সেখানেও সেই প্রধানমন্ত্রী।আমি বলবোনা এটা খারাপ।কিন্তু তাহলে দেশের অন্য যারা আছেন তাদের কাজ কি ? বেতন নিবেন পোষ্ট হোল্ড করবেন সরকারি বেসরকারি সকল সুবিধা ভোগ করবেন ।কিন্তু নিজের কাজটুকু করেননা বা জানেননা ।এরা কারা এদের দিয়ে কি প্রয়োজন সেটা কি ভেবে দেখেছেন ? ডাক্তার জানেনা তার কাজ মানুষ হত্যা নয় মানুষকে জিবন দেওয়ার চেষ্টা করা।আইনের লোক জানেনা আইনের অপ-প্রয়োগ নয় সঠিক প্রয়োগ তার দায়িত্ব। ড্রাইভার জানেনা তার সতর্কতার উপর নির্ভর করে কত শত শত যাত্রি ও পথচারির জিবন।
জানি ,যাদের জন্য এত অনর্থ ঘটছে এই সমাজে তাদের কিছুই হবেনা। তবু লিখে যাবো । জানি কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবেনা পিশাচদের বিরুদ্ধে ,তবুও লিখবো।জানি যারা তাদের কাজে অবহেলা করেছে তারা তিরস্কৃত না হয়ে পুরস্কৃত হবে তবুও লিখবো আমি তাদের বিরুদ্ধেই।আমি লিখবো কারন একদিন জনতা জাগবেই ।তখন তারাই বাধ্য করবে অনিয়মের নিয়ম ভেঙ্গে সঠিক নিয়মে পরিচালিত করতে।কারন দেশের মালিক প্রকৃতপক্ষে সাধারণ মানুষ।তাদের কর্মচারিরা তাদের বিরুদ্ধে অন্যায় করেই যাবে এটা চলতে পারেনা।চলবেনা ,চলবেনা এবং চলবেনা।
আসুন আমরা একতাবদ্ধ হই।সবাই মিলে প্রতিবাদে প্রতিবাদে জাগিয়ে তুলি আমাদের ঘুমম্ত বিবেককে।জনতার শক্তির কাছে টিকে থাকতে পারে এমন পরাক্রমশালী কি কেউ আছে ? ওরা সংখ্যায় কম কিন্তু সংঘবদ্ধ । আমরা বেশি কিন্তু একতাবদ্ধ নই।সময় হয়েছে আমাদের একতাবদ্ধ হওয়ার।আগামির বাংলাদেশকে নিরাপদ করে যাবো আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য।এটাই হোক আমাদের আজকের সংকল্প।ধন্যবাদ।