somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১০)

১৩ ই মার্চ, ২০১৮ বিকাল ৩:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



পবিত্র বাইতুল্লাহর একটি চমকপ্রদ ভিউ।

মিসফালার প্রিয় পথে নাক্কাশা বাজারে

ইতিপূর্বেকার কোনো এক পোস্টেও নাক্কাশা বাজার প্রসঙ্গটি যদিও এসেছিল।
আজ একটু বিস্তারিত বলতে চাই।
দেখতে চাই।
বাজারটির অলি-গলিগুলোতে ঢুঁ মেরে আসার চেষ্টা করি, চলুন।
পবিত্র হারাম এলাকা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি বাজারের নাম নাক্কাশা।
গাড়িতে করে অথবা পায়ে হেটে এই বাজারে যাওয়া যায়।
বাংলাদেশিদের দ¦ারা পরিচালিত বাজারটি আপনাকে কিছুক্ষনের জন্য হলেও স্বদেশী-স্ব-জাতি বাংলাদেশীদের সংস্পর্শ সুখ দেবে।
কিছুটা সময়ের জন্য হলেও আপনার মনে হবে, বিদেশে নয়, বাংলাদেশেরই কোন গ্রাম্য হাট-বাজারে রয়েছেন আপনি।
পবিত্র কাবা প্রাঙ্গন থেকে হিজরাহ রোড কিংবা শারে’ ইবরাহীম আলাইহিসসালাম অর্থাৎ, হযরত ইবরাহীম আলাইহিসসালাম সড়ক ধরে কিছু দূর এগিয়ে গেলে মিসফালা এলাকা।
এই মিসফালা ছাড়িয়ে আরও কিছুটা সামনের দিকে এগোলে চোখে পড়বে ‘নাক্কাশা বাজার’।
নাক্কাশা মক্কাতুল মুকাররমাহতে অবস্থিত ছোট্ট একটি বাজার।
বাংলাদেশীদের দ্বারা পরিচালিত এই বাজারটির কথা মক্কাতুল মুকাররমায় আসার পরপরই শুনেছি।
তখন থেকেই এক নজর দেখে আসার আগ্রহ জন্মায় মনের কোনে।
সময়-সুযোগ পেলে যাওয়ার ইচ্ছে জাগে বিদেশ বিভূঁইয়ে ‘এক টুকরো বাংলাদেশ’ দেখার।
উদ্দেশ্য, জানতে চাওয়া- তপ্ত মরুভূমির দেশ সউদির মাটিতে কেমন আছেন আমাদের স্বদেশী ভাইয়েরা।
কেমন চলছে তাদের ব্যবসা-বানিজ্য ইত্যাকার নানান জিনিষ সচক্ষে প্রত্যক্ষ করার মানসে অপেক্ষা করতে থাকি উপযুক্ত সময়ের।
আলহামদুলিল্লাহ, একদিন সময় এসে যায়।
তায়িফ শহর ঘুরে মক্কাতুল মুকাররমায় প্রত্যাবর্তনের পথে আমাদের পথপ্রদর্শক গাড়ি চালক ভাই মোঃ আল আমীন আমাদের কিছু সময়ের জন্য নাক্কাশা বাজারে ঘুরে আসার অবকাশ দেন।
তার প্রতি আবারও কৃতজ্ঞতা।
আল্লাহ পাক তাকে দুনিয়া-আখিরাত উভয় জাহানে প্রভূত কল্যান দান করুন।
তার অসাধারন কুরবানী আল্লাহ পাক কবুল এবং মঞ্জুর করুন।
মক্কাতুল মুকাররমায় অবস্থানকালের পুরো মাসাধিককাল সময় তিনি আমাদের পরম আত্মীয় জ্ঞান করে নিয়মিত খোঁজ-খবর রেখে কৃতজ্ঞতাপাশে আবদ্ধ করেছেন।

আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ পাকই দয়া এবং মেহেরবানী করে তাকে আমাদের জন্য এত কিছু করার মন ও মানসিকতা দান করেছেন।
অবনত মস্তকে হাজারও লাখো সুজূদ তাঁর আলীশান দরবারে।
তাঁর শোকর প্রকাশ করার কোনও ক্ষমতাই আমাদের নেই।
তিনি দয়া করে যতটুকু দেন, শুধু ততটুকুই আমাদের পক্ষে করা সম্ভব।
অফুরন্ত নেয়ামতে তিনি ভরে রেখেছেন আমাদের জীবন-জগত।
আল্লাহু আকবার!
মালিকের একটি নেআমতের শোকর আদায় করা কি সম্ভব!
তিনি যে সুন্দর চোখ দিয়েছেন, তাকালেই দিগন্তজুড়ে আকাশ-নদী-পাহাড়-গিরি-সাগর-ঝর্না-পাখি-তরুর বিশাল জগত দেখতে পাই।
এক লহমায়, এক নিমেষে কত কি দেখে নিতে সক্ষম হই!
লক্ষ-কোটি আলোক বর্ষ দূরের নক্ষত্র-নিহারিকা-ছায়াপথ আমাদের মাটির চোখে ছায়া ফেলে!
মুহূর্তেই!
পলকে!
সুবহানাল্লাহ!
সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহী সুবহানাল্লাহিল আজীম!
মহামহিয়ান মালিকের কুদরত ভাবলেও শিহরিত হতে হয়!
কতই না সুন্দর কৌশল করে তিনি সৃষ্টি করেছেন আমাদের!
মানবদেহের একেকটি অঙ্গের সৃষ্টি কৌশল নিয়ে ভাবলে বিষ্ময়ে নিথর হয়ে মহান রব্বুল আলামীনের সীমাহীন ক্ষমতা ও দয়া উপলব্ধি করতে পারি।



বাইতুল্লাহ শরীফের পশ্চিম দিকে অবস্থিত এই স্থানটিতে জাহিলিয়া যুগের আরবগন তাদের কন্যা সন্তানদের জীবন্ত কবরদান করতেন।

এই যে অনিন্দ্য সুন্দর চোখ তিনি আমাদের দিয়েছেন।
এই চোখকে তিনি বিন্যস্ত করেছেন সাতটি স্তরে।
অসাধারন সুন্দর গঠন আর অভাবনীয় বিচিত্র আকৃতিতে।
আল্লাহু আকবার!
প্রিয় বন্ধু, একবার ভেবেছেন কখনও, অমূল্য সম্পদ এই চোখের কোন বিকল্প ছিল কি?
আহ! চোখ দু’টো যদি কপালের ঠিক মাঝ বরাবর সেঁটে দেয়া হত!
কেমন লাগতো?
নিশ্চয়ই, বিশ্রী কদাকার লাগতো।
হায়, হায়, শুধুমাত্র এই চোখের অনুপম সৌন্দর্য্য নিয়ে কত কবি কত সাহিত্যিক কত আবেগময় কবিতা আর সাহিত্য রচনা করেছেন।
একেক জনের একেক ধরনের চোখ।
কারো ছোট, কারো বড়।
কারো ভ্রু সোজা লম্বাটে এবং মিলিত।
কারোটা বাঁকা তরবারির মত।
কারো আবার মাঝখানে দ্বিখন্ডিত।
মহান স্রষ্টার অপূর্ব সৃষ্টি নারীর চোখের সৌন্দর্য্যে মুগ্ধ হয়ে জগতে কত পুরুষ পাগল হয়েছেন তারও কি ইয়ত্তা আছে!
হায় হায়, নারী চোখ, একজন মানব কিংবা মানবীর চোখ যদি হয় এত সুন্দর, পাগল হওয়ার মত সৌন্দর্য্য-সুন্দরের আধার,
অনুপম সুন্দরের আধার এই ডাগর চোখওয়ালা নারীকে, পুরুষকে যিনি সৃষ্টি করেছেন, তিনি কত সুন্দর!
তিনি কত সুন্দর!
হায়, তিনি কত সুন্দর!

হাদিসে কুদসিতে এসেছে- ’ইন্নাল্লাহা জামিলুন, ইউহিব্বুল জামাল’।
নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সবচে’ সুন্দর, তিনি ভালবাসেন সুন্দর আর সৌন্দর্য্যকে।
প্রিয় ভাই, আশ্চর্য্যের সীমা-পরিসীমা নেই মহান আল্লাহ পাকের কুদরত দর্শনে।
দেখুন, চোখকে তিনি দেখার মাধ্যম বানিয়েছেন।
আকর্ষনীয় করে সৃষ্টি করেছেন চোখের অবয়ব-আকৃতি।
আবার সেকথা কুরআনে পাকে বলেও দিয়েছেন।
সুবহানাল্লাহ!

জান্নাতের হুরদের সৌন্দর্য্য কোটিগুন বেড়ে যাবে তাদের আয়ত নয়নের কারনে।
‘হূরুন ঈ-নুন কাআমসালিল লু’লুয়িল মাকনূন’ - ‘তারা ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট ও মনি-মুক্তো সদৃশ হবে।’
কাজল কালো চোখ, হরিনী চোখ।

চোখের তারার আলোয় কত নারী কত দুর্ধর্ষ পুরুষ, দিগি¦জয়ী যোদ্ধাকে পরাভূত-ঘায়েল করে দিয়েছেন!
কত রাজা তার রজত্ব ছেড়েছেন এই চোখের ইশারায়!
ভাবুন, ভেবে দেখুন একবার, আল্লাহ তাআলা ধুলো-বালি ও খড়কুটো থেকে চোখের সুরক্ষার জন্য চক্ষুপত্রকে ঢাকনা হিসেবে তৈরি করেছেন।

মক্কাতুল মুকাররমার অন্যতম পথ হযরত ইবরাহিম আলাইহিসসালাম রোড।



সেই পত্রকোনকে সাজিয়েছেন সোজা কালো রঙের কতগুলো পশম দ্বারা।
যাকে আমরা বলি পাঁপড়ি।
এই পাঁপড়িরও রয়েছে কাজ।
এরা চোখের সৌন্দর্য্য আর শোভাই শুধু বৃদ্ধি করে না, চোখের দৃষ্টি শক্তি প্রখর করতেও এই পাঁপড়ির রয়েছে অসাধারন ভূমিকা।
আবার দেখুন, পাঁপড়িগুলো সোজা হবার কারনে ধুলো-বালি উড়লে সহজে চোখকে বন্ধ করে নেয়া যায়।
যার ফলে আপনার চোখে ধুলো-ময়লা পড়ে না।
আবার পাঁপড়ি সোজা ও কালো হওয়ায় এগুলোর ফাঁক দিয়ে আপনি অনায়াসে সামনের দিকের সবকিছুই পরিষ্কার দেখতে পান।
এই পাঁপড়ি যদি কালো না হয়ে অন্য কোন রঙের হত, কিংবা এগুলো যদি নিচের দিকে বাঁকা হত তাহলে নির্ঘাত আপনার দৃষ্টি বাধা পেতো।

আহ! পাঁপড়িগুলো সামনের দিকে সোজাভাবে ছাউনির মত ঢাকা; ফলে উপর থেকে খড়কুটো বা তেমন কিছু পড়লে বাধাপ্রাপ্ত হয়।
চক্ষুগোলক আর তার সাথের আনুসঙ্গিক প্রত্যঙ্গগুলো আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআলার বিচিত্র সৃষ্টি কৌশল ও আশ্চর্য্য শিল্প নৈপুন্যের অনুপম বহিপ্রকাশ।
আল্লাহু আকবার, কিন্তু এরচে’ আরও আশ্চর্য্য কারিগরি এবং অসীম ক্ষমতার নিদর্শন চক্ষুগোলকে বসানো এই চোখের মনি।
এগুলো আয়তনে মাত্র দু’তিনটে মসুর বীচের পরিমান।
কিন্তু অবাক বিস্ময়ে হতবাক হতে হয় এর দর্শনক্ষমতার পরিধি আর সীমাহীন ব্যপ্তি চিন্তা করলে!
ছোট্ট এই মসুর বীচের মত নয়নমনির দেখার ক্ষমতা দিগন্ত বিস্তৃত গগনমন্ডল আর সুবিশাল ভূমন্ডল!
আসমান এত উপরে, এত দূরে কিন্তু পলকে তা পরিষ্কার দেখে নিচ্ছে নয়নমনি!
একটুও দেরি হয় না!
মুহূর্তকালও নয়!
সুবহানাল্লাহ!
আহ! আল্লাহ পাক, আপনি কতই না মহান!
কতই না উত্তম সৃষ্টিকর্তা আপনি!
কতই না উন্নত-অভিজাত আপনার সৃষ্টি সুষমা-সৃজন কৌশল-অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্ব দানের অসাধারন প্রক্রিয়া!
মহান মনিবের অসাধারন এসব সৃষ্টি রহস্য ভাবলেই তো চোখ অশ্রুসজল হয়!
হৃদয় বিগলিত-বিচূর্ন হয়!
প্রানের ভেতরে জেগে ওঠে প্রানের স্পন্দন!
বিমুগ্ধ-বিমোহিত অনুভূতি!
আপনিও ভাবুন না একবার!
নিভৃতে-নিরবে!
একাকি!
ভেবে দেখুন!
ভাবনার অতলে হারিয়ে যান না কিছু সময়ের জন্য!
আপনার চোখও অশ্রুসিক্ত হবে নিশ্চয়!
আর এই ভেজা চোখের অনেক দাম মনিবের দরবারে!
তিনি ভেজা চোখওয়ালাদের ভালবাসেন!
তাঁর ক্ষমার দরজা তাদের জন্য খুলে দেন!
রহমতের বারিধারা বইয়ে দেন জগতজুড়ে এই ভেজা চোখওয়ালাদের কারনেই!
এই অশ্রু ঝড়ানো মানুষগুলো হাশরের মাঠেও জিতে যাবেন!
আরশের ছায়ায় স্থান পাবেন যে সাত শ্রেনির মানুষ এরাও তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবেন!
আহ, আমরাও যদি এদের দলে শামিল হতে পারতাম!

সাত শ্রেনির লোক থাকবেন আরশের ছায়াতলে

হাশরের দিন বিভীষিকাময় কঠিন সময়ে মহান আল্লাহ পাক সাত শ্রেনির মানুষকে তার আরশের নিচে ছায়াদান করে ধন্য করবেন।
হাদিসে রাসূলে মাকবূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، قَالَ حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، قَالَ حَدَّثَنِي خُبَيْبُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، عَنْ حَفْصِ بْنِ عَاصِمٍ، عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ‏"‏ سَبْعَةٌ يُظِلُّهُمُ اللَّهُ فِي ظِلِّهِ يَوْمَ لاَ ظِلَّ إِلاَّ ظِلُّهُ الإِمَامُ الْعَادِلُ، وَشَابٌّ نَشَأَ فِي عِبَادَةِ رَبِّهِ، وَرَجُلٌ قَلْبُهُ مُعَلَّقٌ فِي الْمَسَاجِدِ، وَرَجُلاَنِ تَحَابَّا فِي اللَّهِ اجْتَمَعَا عَلَيْهِ وَتَفَرَّقَا عَلَيْهِ، وَرَجُلٌ طَلَبَتْهُ امْرَأَةٌ ذَاتُ مَنْصِبٍ وَجَمَالٍ فَقَالَ إِنِّي أَخَافُ اللَّهَ‏.‏ وَرَجُلٌ تَصَدَّقَ أَخْفَى حَتَّى لاَ تَعْلَمَ شِمَالُهُ مَا تُنْفِقُ يَمِينُهُ، وَرَجُلٌ ذَكَرَ اللَّهَ خَالِيًا فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ ‏"‏‏.

‘‘সাত শ্রেনির ব্যক্তিদের আল্লাহ পাক তার আরশের ছায়াতলে আশ্রয় দিবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ব্যতিত আর কোনো ছায়া থাকবে না: ন্যায়পরায়ন বিচারক; সেই যুবক যিনি তার যৌবনকাল আল্লাহ পাকের ইবাদাতে অতিবাহিত করেছেন; ঐ ব্যক্তি যার অন্তকরন মসজিদের সাথে যুক্ত; দু’জন যারা একে অপরকে ভালবাসেন শুধুমাত্র আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্য, এবং এর জন্যই মিলিত হন, আবার এই উদ্দেশ্যেই পৃথক হন; ঐ ব্যক্তি যাকে বিত্ত-বৈভবের অধিকারী কোনো রূপবতী যুবতী অনৈতিক কাজের প্রতি আহবান করেন, কিন্তু তিনি বলেন: ‘আমি আল্লাহ পাককে ভয় করি’; এমন ব্যক্তি যিনি দান করেন এবং তা গোপন করেন, এমনভাবেই গোপন করেন যে তার বাম হাত জানতে পারে না ডান হাত কী দান করেছে; আর ঐ ব্যক্তি যিনি আল্লাহ পাককে স্মরন করেন একাকি নির্জনে অত:পর তার চোখ অশ্রু ঝড়ায়।’’ সহিহ আল বুখারি, হাদিস নং ৬২৯, সহিহ আল মুসলিম, হাদিস নং ১০৩১।

রাতের নাক্কাশা বাজারে কিছু সময়

আমরা সংক্ষিপ্ত সময়ে দশ-পনের মিনিটের মত ঘোরাফেরা করে রাতের নাক্কাশা বাজার দেখে সেদিনের মত চলে আসি হোটেলে।
এই অল্প সময়ের ভেতরে টুকটাক কিছু কেনাকাটাও করলেন আমাদের কেউ কেউ।
অনেকটা আমাদের দেশের গ্রাম-গঞ্জের হাট-বাজারের স্টাইলে কয়েক সারিতে গড়ে ওঠা দোকানপাট এই বাজারে।
বাংলাদেশী রকমারি জিনিষপত্রে ভরপুর বাজারটি।
মাছ-মাংস থেকে শুরু করে বাংলাদেশী ঐতিহ্যবাহী পান-জর্দ্দা- কোনো আইটেমই বাদ যায় না এখানে।
বাংলাদেশী চানাচুর-বিস্কুট-সাবান-লোবান ইত্যাদি দর্শনে আপনি কিছু সময়ের জন্য বেমালূম ভুলেই যেতে পারেন- আপনি বাংলাদেশে নন, সউদি আরবে রয়েছেন।
এখানের বাহারী নানান জিনিষপত্র রীতিমত নজর কাড়ে।
মাছ বাজারে বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশ থেকে শুরু করে রুই কাতলা চিংড়ি বোয়াল সবই পাবেন।
দু’একটির দরদাম করে দেখেছি- দামও সহনীয় মনে হয়েছে।
বাগদা-গলদা চিংড়ি ২০-২৫ রিয়াল প্রতি কিলোগ্রাম।
তার মানে, প্রায় বাংলাদেশী বাজারের দামেই পাওয়া এসব এখানে।
এই বাজারে বড় সাইজের কাঁকড়া বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখতে দেখেছি।
এখানে কাঁকড়ার ক্রেতা কারা, কে জানে।
কাঁকড়া ভক্ষন যদিও মাকরূহ পর্যায়ের, কিন্তু আমার কাছে বরাবরই ভক্তি-অভক্তির বিষয়টি অনেক বড় ব্যাপার।
কাঁচা বাজারে কয়েক মুহূর্ত
নাক্কাশার কাঁচা বাজারে ঢুকলে আপনি আরও অবাক হবেন।
কাঁচা মরিচের চকচকে চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল, এই মাত্র বুঝি ক্ষেত থেকে তুলে আনা হয়েছে, এছাড়া শসা, ধনে পাতা, পুদিনা পাতা- কী নেই এখানে?
খাজা ভাই কাঁচা মরিচ খাওয়ার লোভ সামলাতে পারলেন না।
কিছু কিনে নিলেন।
পুদিনা পাতা বরাবরই আমার প্রিয়।
আমিও কিছু কিনেছিলাম মক্কাহ মুকাররমাহ থেকে।
বেশ ক’দিন পর্যন্ত ভাতের সাথে খেয়েছি ক’জন মিলে।
নাক্কাশা বাজারে ফলফলাদির ভেতরে টসটসে রসে ভরা পাকা টমেটো, সুস্বাদু মিষ্টি তরতাজা তরমুজ, পিস ফল, আপেল, আঙুর, বেদানা ইত্যাদি সব ফলই পেয়ে যাবেন।

নাক্কাশা বাজার মসজিদে কিছুক্ষন

ছিমছাম ছোট মসজিদটিতে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের সৌভাগ্য হয়েছিল।



মুযদালিফায় অবস্থিত মাসজিদ আল মাশআরিল হারাম।



আরাফাতের মাঠে অবস্থিত মাসজিদ আন নামিরাহ।



মাসজিদ আন নামিরাহর আরেকটি দৃশ্য।

কৈফিয়ত: সম্প্রতি ব্লগে অনাকাঙ্খিত কিছু ঘটনার মুখোমুখি হওয়ায় এই সিরিজটির নিয়মিত প্রকাশনা বিঘ্নিত হয়। আলহামদুলিল্লাহ। ইতিমধ্যে পরবর্তী আরও কয়েকটি পর্ব মোটামুটি গোছানো হয়ে গেছে। পান্ডুলিপি আকারে হাতে থাকা উক্ত পর্বগুলো আশা করি, অল্প সময়ের ভেতরেই পোস্ট করতে সক্ষম হব। তাওফিকদাতা কেবলমাত্র আল্লাহ পাক।

এই সিরিজের পেছনের পর্বগুলো পড়েছেন, যারা এটিকে কন্টিনিউ করার জন্য তাদের মূল্যবান পরামর্শ, আন্তরিক অভিমত দিয়েছেন তাদের সকলের জন্য অকৃত্রিম ভালবাসা, শুভকামনা অন্তহীন।

পেছনের পর্বগুলো দেখতে নিচের লিঙ্ক এ ক্লিক করুন-

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-১)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-২)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৩)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৪)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৫)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৬)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব৭)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৮)

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৯)
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:০০
৭টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×