somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

নতুন নকিব
আলহামদুলিল্লাহ। যা চাইনি তার চেয়ে বেশি দিয়েছেন প্রিয়তম রব। যা পাইনি তার জন্য আফসোস নেই। সিজদাবনত শুকরিয়া। প্রত্যাশার একটি ঘর এখনও ফাঁকা কি না জানা নেই, তাঁর কাছে নি:শর্ত ক্ষমা আশা করেছিলাম। তিনি দয়া করে যদি দিতেন, শুন্য সেই ঘরটিও পূর্নতা পেত!

বাইতুল্লাহর মুসাফির (পর্ব-৩)

১৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ সকাল ১০:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মাকামে ইবরাহিমের পাশে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করাটা একটু কঠিন। প্রতিবার নতুন যারা তাওয়াফ করতে নামেন এই জায়গাটায় কেমন যেন একটা জটলা লেগেই থাকে। নামাজ আদায়কারীর সামনে দিয়ে যাতায়াত করা খুবই অপছন্দনীয় কাজ হলেও এই জায়গাটাতে দেখেছি অন্যরকম অবস্থা। ভীরের কারনে এমনটা হয়ে থাকে। হাজীগন চলাচল করছেন। নামাজী ব্যক্তির নামাজ শেষ হওয়ার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকার মত সময় এবং অবস্থা কোনটাই হয়তো এখানে থাকে না। ১। মাকামে ইবরাহিমের পেছনের এই স্থানটুকু দোআ কবুলের অন্যতম জায়গা। এছাড়া মক্কাস্থিত পবিত্র বাইতুল্লাহ এবং হারাম সন্নিহিত যে স্থানগুলোতে দোআ কবুল হয় তার মধ্যে রয়েছে-

২। তাওয়াফ স্থল (যেখানে তাওয়াফ করা হয়)।
৩। মুলতাযাম (কা'বা ঘরের চৌকাঠ)।
৪। মীযাবে রহমতের নীচে (কা'বা ঘরের ছাদের পানি গড়িয়ে পড়ার নালা)।
৫। হাতীম (কা'বা সংলগ্ন বর্ধিত ঘেরা অংশ)।
৬। কা'বা শরীফের ভেতরে।
৭। জমজম কুপের নীচে (পবিত্র কা'বা সংস্কারের কারনে এখন জমজমের নীচে যাওয়ার উপায় নেই। জমজম কুপটি যে স্থানে বর্তমানে তা মাতাফের ভেতরে চলে এসেছে)।
৮। হাজরে আসওয়াদ এবং রুকনে ইয়ামানীর মাঝে।
৯। হাজরে আসওয়াদের নিকটে।

মক্কাতুল মুকাররমা এবং এর আশপাশে দোআ কবুলের আরও কিছু স্থান রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য-

১০। সাফা পাহাড়।
১১। মারওয়াহ পাহাড়।
১২। সায়ীস্থল। বিশেষ করে দুই সবুজ লাইটের মাঝে।
১৩। আরাফাতের ময়দান।
১৪। মুযদালিফা।
১৫। মীনায় ছোট ও মাঝের জামারাতের নিকট।

কথায় কথায় আবারও দূরে সরে গিয়েছিলাম। প্রিয় বন্ধু, বিনীত ক্ষমা প্রার্থনা করছি আবারও। অনেককে দেখেছি, এই স্থানে দু'হাত তুলে অনেক দোআ করেন। আমার কেন জানি না, এই জায়গাটায় হাত পাততে ইতস্তত লাগতো। হৃদয় কাঁপতো। অন্তর কাঁদতো। চোখ অশ্রু ঝড়াতো। এক সময় মনে হত, কী এক অনাবিল প্রশান্তি হৃদয়-মন জুড়ে ছেয়ে আছে। হাত তুলে দোআ করার পরিবর্তে আমার মহান মালিকের ঘরের এই একান্ত নিকটে, চৌকাঠের অতি কাছের এই পূন্যময় জায়গাটিতে মনে হত, সিজদায় কাটিয়ে দেই লম্বা সময়। বাকিটা জনম।

এখানে কাউকে কাউকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখেছি। পবিত্র কা'বা তাওয়াফের সময়ও মাঝে মাঝে প্রত্যক্ষ করেছি এমন দৃশ্য। হজ্বের পূর্বেকার এক দিনের ঘটনা। শ্বেত বর্নের একই পরিবারের দু'তিন সদস্যকে দেখেছিলাম। যারা কাঁদছিলেন। হায় হায়! সে কি কান্না তাদের! গগনবিদারী বুকফাঁটা সে কান্নায় পবিত্র কা'বা চত্বর, গোটা মাতাফ যেন দুলছিল। আমার চোখও অশ্রুসজল হয়ে উঠেছিল তাদের দেখে। ধারনা করছি, তারা হয়তো স্বজন হারা-স্বপন কাড়া-স্বভূমি থেকে বিতাড়িত অসহায় কোন ফিলিস্তিনি পরিবারের উদ্বাস্তু সদস্য হবেন। পরিবার-পরিজন-স্বজন হারিয়ে বিশ্ব বিবেকের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে আজ বোধ করি আসল মালিকের চৌকাঠে এসে এমন করে কান্নায় ভেঙে পড়েছে। এমন করে নিজেদের অসহায়ত্ব আর অপদস্ততার মামলা ঠুকছে। বিচার চাইছে ত্রাস-সন্ত্রাস আর মহাজুলূম-জুলূমাতের। মাজলূমের এ বাঁধভাঙা অশ্রু কি আল্লাহ পাকের রহমতের দরিয়ায় জোশ না এনে ছাড়বে?

তাওয়াফের প্রতি চক্করে পড়ার জন্য কিছু দোআ রয়েছে। প্রতি চক্করের প্রতিটি দোআই দারুন অর্থবহ এবং মর্মস্পর্শী। কিন্তু ষষ্ঠ চক্করের দোআটি কেন জানি একটু অন্যরকম! এই দোআটি যখনই পাঠ করেছি, ভিন্ন আবেগে অন্য অনুভূতিতে প্রতিবার আচ্ছন্ন হয়ে গেছি। প্রতিবার অশ্রুসজল হয়েছি। দগ্ধ-বিদগ্ধ-মুগ্ধ হয়েছি। করুন দহনে হৃদয়-মন আপ্লুত-স্নাত হয়েছে। প্রিয় বন্ধু, আপনিও শুনবেন প্রিয় সেই দোআটি? দোআটি আপনারও আশা করি নিশ্চয়ই ভাল লাগবে-কাজে লাগবে। ইনশাআল্লাহ পরবর্তী পর্ব দোআটি দ্বারা শুরু করা হবে। আল্লাহ পাক আমার অক্ষমতা ক্ষমা করুন। অপরাধ মার্জনা করুন। সকল ভাই-বোনকে নেককা্র মুত্তাকী হিসেবে কবুল করুন। আমীন।

এই পর্বেও যুক্ত করা হল প্রিয় বাইতুল্লাহর কিছু অসাধারন ছবি। আশা করি ভাল লাগবে প্রত্যেকের।



বাইতুল্লাহ শরীফের অভ্যন্তরভাগ পরিচ্ছন্নকালীন সময়কার বিশেষ অবস্থা। সাধারনত: এই কাজগুলো খাদেমুল হারামাইন হিসেবে সউদি বাদশাহ স্বয়ং উপস্থিত থেকে নিজ হাতে সম্পাদন করে থাকেন।



লোকে লোকারন্য পবিত্র হারাম চত্বরের অপরূপ দৃশ্য।



প্রিয় ঘরের দরজার একটি অনুপম চিত্র।



জনসমুদ্রের ভেতরে পবিত্র কা'বা আর শুন্য হাতিমের বিরল দৃশ্য।

[



প্রিয়তমের প্রিয় আলয়ের দরজার অনন্য আরেকটি দৃশ্য।



ক্লোজ ভিউতে পবিত্র কা'বা।



কা'বার চারপাশে যেন উপচেপড়া জনস্রোত।



পবিত্র কা'বার নান্দনিক একটি ভিউ।

চলবে-
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে মার্চ, ২০১৮ সকাল ১০:২২
১৪টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কিছু হিন্দু অখন্ড ভারত চায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৮




মুসলিম অখন্ড ভারত শাসন করেছে তখন তারা ছিলো সংখ্যা লঘু। খ্রিস্টান অখন্ড ভারত শাসন করেছে, তারা তখন সংখ্যা লঘু মুসলিম থেকেও সংখ্যা লঘু ছিলো। তারপর মুসলিমদেরকে সাথে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ্‌ সাহেবের ডায়রি ।। টাইম ম্যাগাজিনের আগামীর ১০০ প্রভাবশালীর তালিকায় বাংলাদেশের নাহিদ ইসলাম

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১২




নাহিদের ভাষ্য, ‘আমাদের নতুন প্রজন্মের পালস বুঝতে হবে। বাংলাদশে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সহিংসতার যে পালাক্রম– অবশ্যই তার অবসান হতে হবে। আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে।’ ... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গল্প প্রকাশিত হবার পর নিষিদ্ধ হয়

লিখেছেন জাহিদ শাওন, ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১০:৫০


এক কাপ চা, শীতের সন্ধ্যায় বেশি ঝালের ভর্তায় মাখানো চিতই পিঠার অজুহাতে বুকপকেটে কতবার প্রেম নিয়ে তোমার কাছে গিয়েছিলাম সে গল্প কেউ জানে না।
আজকাল অবশ্য আক্ষেপ নেই।
যে গল্প... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধী চেষ্টা করেছিলেন বাংলাদেশের মিলিটারীকে ক্ষমতা থেকে দুরে রাখতে!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৩:২৪



১৯৭১ সালের জেনারেশন'এর কাছে ইন্দিরা (১৯১৭ - ১৯৮৪ ) ছিলেন ১ জন বিশাল ব্যক্তিত্ব; যু্দ্ধ লেগে যাওয়ার পর, উনি বলেছিলেন যে, বাংগালীরা ভালো ও নীরিহ জাতি, তিনি এই জাতিকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন - পর্ব ৩

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ৮:২৩

জুলাই ১৮: ছাত্রলীগের হামলা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হত্যা এবং ঢাবি প্রশাসনের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে ১৭ই জুলাই কমপ্লিট শাট ডাউন কর্সুচী ঘোষনা করে বৈষম্যিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×