somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অদ্ভুত প্রেমের গল্প (পর্ব ১)

২৬ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পুলক ড্রয়িং রুমে বসে আছে। একটু আগেও এই ঘরে পুলকের মা এবং রীতার মা ছিল। রীতা নামক একটি মেয়ের সাথে কথা বলতেই মায়ের সাথে এখানে আসা পুলকের। সেই মেয়েটির সাথে নিভৃতে কথা বলার সুযোগ করে দেয়ার জন্যেই তার মা আর রীতা নামক মেয়েটির মা অন্য ঘরে গিয়েছে। এটা রীতাদের ই বাসা।

‘মেয়ে দেখতে আসা’ – ব্যাপারটার মধ্যেই কেমন জানি একটা অস্বস্তিকর কিছু একটা আছে। তবে পুলক কিন্তু আগ্রহের সাথেই অপেক্ষা করছে। উলটাপালটা কথা বার্তা বলে মানুষকে ভড়কে দেয়ার কাজটা তার অনেক প্রিয়। এই জন্য বেশিরভাগ মানুষই তাকে তেমন পছন্দ করে না। এইখানে মেয়েটাকে কত তাড়াতাড়ি ভড়কানো যায়, সেটাই ভাবছে পুলক। খুব বেশী কিছু করতে হবে বলে মনে হয় না। যুক্তি দিয়ে কথা বললেই মানুষ খুব ভড়কে যায়। এটা অনেক আগেই খেয়াল করেছে পুলক। মানুষ আবেগী কথাবার্তা বললে খুব খুশি হয়। যৌক্তিক কথা ঠিক মানতে পারে না।

শাড়ি পরা একটা মেয়ে ঘরে ঢুকল। পুলক ভদ্রতা করে উঠে দাঁড়ালো। মেয়েটি বসলো। পুলকও বসলো।
-হেলো! আমি রীতা।
-আমি পুলক।
-কেমন আছেন?
-ভালো, আপনি?
-আমিও ভালো।
এরপর নীরবতা। এটা হচ্ছে সেই মুহূর্ত যখন মানুষ ভাবে যে এখন কী বলা যায়!! খুব বেশীক্ষণ নীরব থাকা লাগলো না। কারণ পুলক কথা খুঁজে পেয়েছে।
-আপনি কি করছেন?
হুমায়ূন আহমেদ এর উপন্যাস হলে উত্তর আসতে পারত, ‘বসে আছি!! দেখতে পারছেন না? আশ্চর্য মানুষ তো আপনি!!’
-আমি এমবিএ করছি।
-বাঃ! কোথায় করছেন?
-ডি ইউ তে। আই মীন ঢাকা ইউনিভার্সিটি।
পুলক ভাবছে অনেকক্ষণ চিট চ্যাট হয়েছে। এখন আক্রমনের সময়।
-খুবই ভালো। পড়াশোনা করছেন এবং ভালো জায়গায় পড়াশোনা করছেন। খামাখা বিয়ে করতে চাইছেন কেন?
রীতা যেন কিছুটা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়েছে। এরকম প্রশ্ন আশা করেনি সে একদমই।
-খামাখা বিয়ে করতে চাইছি কেন মানে?
-মানে, পড়াশোনা করছেন। নিজের পায়ে দাঁড়াবেন। তার আগে বিয়ে করে ফেললে ঝামেলা না? ছেলেপক্ষ যতই লিবারেল হোক। আর বিয়ের আগে সবাই লিবারেল ভাব দেখায়। পরে দেখবেন পড়তে দিচ্ছে না, চাকরি করতে দিচ্ছে না। আগ বাড়িয়ে এরকম ঝামেলায় জড়ানোর কি দরকার?
রীতার হঠাৎ করে কেন জানি খুব মজা লাগলো। লোকটা তাঁকে ভয় দেখাচ্ছে। ঘটনা কী? প্রেমিকা আছে নাকি এনার? নাটক সিনেমায় যেমন হয়, প্রেমিকা থাকে তাও মায়ের অনুরোধে মেয়ে দেখতে আসা? ইন্টারেস্টিং!!
-কেন? আপনি আমাকে চাকরী করতে দেবেন না?
-আমি? মানে আমি আমার কথা বলছি না। আমি তো ইন জেনেরাল বলছি। মানে এখন বিয়ে করাটা আপনার জন্য বোকামি না? এই অর্থে বলছি আর কি!
-কেন? আমরা তো ‘বিয়ে’ নামক আনুষ্ঠানিকতার উদ্দেশ্যেই এখানে বসা। সো আপনি ইন জেনেরাল না বলে, নিজের কথা বলুন।
-আমার কথা?
-হম! আপনার কথা।
পুলক দেখলো যে কোথায় সে আক্রমণ করবে। উলটা তার দিকেই আক্রমণ হচ্ছে। ইটস টাইম টু রিটালিয়েট।
-ওকে। আমি পাত্র হিসেবে মোটেও সুবিধার না।
-তাই? কীরকম?
রীতা কৌতুকময় চোখে জিজ্ঞেস করলো।
-আমি খুবই বদরাগী ধরনের লোক। ধুরুম ধারুম রাগ উঠে যায়। গায়ে হাতও তুলতে পারি। খুবই পসসেসিভ। দেখা যাবে আপনি অন্য ছেলের দিকে তাকাতেও পারছেন না। এদিকে আমি অন্য মেয়ের দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছি। এই নিয়ে কিছু বললেও মহাবিপদ। ভয়ানক রেগে যাবো। রোমান্টিকতার ‘র’-ও নাই আমার মাঝে। বরং ত্যাড়া ব্যাকা কথা বলে রোমানটিক মুড দূর করার আশ্চর্য ক্ষমতা আমার আছে। আমার যেটা ঠিক মনে হয়, সেটা পৃথিবী যদি উলটায়ে যাওয়ার ভানও করে তবু আমারটাই ঠিক।
এইটুকু বলে পুলক ভাবছে আর কী যোগ করা যায়! তখন রীতা তার কৌতুকময় চাহনি নিয়ে জিজ্ঞাসা করলো
-শেষ?
পুলক মনে মনে নিজেকে গালি দিচ্ছে। আরও কত কিছু বলবে সে ঠিক করে রেখেছিল। একটাও মনে পরতেসে না। ড্যাম!!!
-হুম! মোটামুটি।
রীতা মুচকি হাসল। তারপর সরাসরি পুলকের দিকে তাকিয়ে বলল,
-আপনাকে আমার পছন্দ হয়েছে। আপনার ইচ্ছা হলে আমাকে এই নাম্বার এ কল দিতে পারেন। আর আপনার নাম্বার আমার কাছে আছে। আমিও আপনাকে কল দিয়ে দিতে পারি কিন্তু!! এখন আমি যাই।

পুলক বেশ হতভম্ব হয়ে রীতার যাওয়া দেখল। তৈরি করে আসা পুরোটা না বলতে পারলেও যতটুকু বলেছে, একটা মেয়ের তাতে ভয় পাওয়ার জন্য যথেষ্ট মনে হয়েছিল তার। মেয়েটা দেখি ডেঞ্জারাস। এসব ভাবতে ভাবতে পুলক উঠে দাঁড়ালো।

পর্ব-১ Click This Link পর্ব-২ Click This Link পর্ব-৩ Click This Link পর্ব-৪ Click This Link পর্ব-৫ Click This Link পর্ব-৬ Click This Link পর্ব-৭ Click This Link পর্ব-৮ Click This Link পর্ব-৯ Click This Link পর্ব-১০ Click This Link পর্ব-১১ Click This Link পর্ব-১২ Click This Link পর্ব-১৩ Click This Link পর্ব-১৪ Click This Link পর্ব-১৫ Click This Link পর্ব-১৬ Click This Link পর্ব-১৭ Click This Link পর্ব-১৮ Click This Link পর্ব-১৯ Click This Link পর্ব-২০ Click This Link পর্ব-২১ Click This Link পর্ব-২২ Click This Link পর্ব-২৩ Click This Link পর্ব-২৪ Click This Link পর্ব-২৫ Click This Link পর্ব-২৬ Click This Link পর্ব-২৭ Click This Link পর্ব-২৮ Click This Link পর্ব-২৯ Click This Link পর্ব-৩০ Click This Link পর্ব-৩১ Click This Link পর্ব-৩২ Click This Link পর্ব-৩৩ Click This Link পর্ব-৩৪ Click This Link পর্ব-৩৫ Click This Link পর্ব-৩৬ Click This Link পর্ব-৩৭ Click This Link পর্ব-৩৮ Click This Link পর্ব-৩৯ Click This Link পর্ব-৪০ Click This Link পর্ব-৪১ Click This Link পর্ব-৪২ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৭ সকাল ১১:২৬
৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×