হতভম্ব পুলক বাসায় গেলো। তার মা তাঁকে বারবার জিজ্ঞেস করলো, “মেয়ে কেমন লাগলো, পুলক?” পুলক এই কথার কোন জবাব দিল না। দিলেও এড়িয়ে যাওয়া টাইপ কথাবার্তা। এরকম যে ঘটবে এটা তার ধারণাতে ছিল না। পুলকের মাস্টার প্লান ছিল যে মেয়ে দেখতে গিয়ে মেয়েকে এমন ভয় পাওয়াবে যে মেয়ে ভুলেও আর তাঁকে বিয়ে করতে চাইবে না। কিন্তু ঘটনা তো কেমন অদ্ভুত ঘটলো।
না, বর্তমানে পুলকের কোন প্রেমিকা নেই। কিন্তু আগে ছিল। সেই অভিজ্ঞতা খুব সুখকর নয়। যার জন্যই তার ধারণা তার সাথে কেউ লম্বা সময় থাকতে পারবে না। তাই সে একাই থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু তার মা তার এই যুক্তি মানতে রাজি না। পৃথিবীর কোন মাই এই যুক্তি মানবে না। এটা সে জানে। কিন্তু জেনে শুনে একটা মেয়ের জীবন সে নষ্ট কখনোই করতে চায় না।
পুলকের বাবা নেই। না! মারা তিনি যাননি। বেঁচেই আছেন। কিন্তু তাঁর মা-বাবার মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। পুলকের বাবা একজন মদ্যপ অত্যাচারী পুরুষ ছিলেন। বেশিদিন সেই অত্যাচার পুলকের মা সহ্য করতে পারেননি। পুলকের যখন তিন বছর বয়স। তখন তারা আলাদা হয়। এরপর পুলক কখনো তাঁর বাবাকে দেখেনি। শুধু এর ওর মুখ থেকে শুনেছে। বিয়ে না করার পেছনে তাঁর এই ‘বাবা’ও একটা কারণ। যদি পুলক তাঁর বাবার মত হয়!!! একই তো রক্ত। আর পুলক নিজেকে জানে। সে জানে তাঁর অনেক রাগ। এই রাগ যদি সে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে। তাঁর মা তাঁকে অনেক যত্ন করে মানুষ করেছেন। এক ছেলে। কিন্তু অযথা আদর দেননি। যথাযথ শাসনও করেছেন। এরপরো কি কারণে পুলকের সেই ভয় কাজ করে। সে কাউকে কষ্ট দিতে চায় না।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে তাঁর জীবনে প্রেম এসেছিল। সাময়িক আকর্ষণের স্তর পাড় হওয়ার পর বুঝতে পারলো যে কোথায় বোঝাপড়ার সমস্যা হচ্ছে। মেয়েরা যেমন সবসময় চায় যে তাঁর প্রেমিক সবসময় তাঁর মেজাজ মর্জি বুঝে চলবে এটা পুলক কেন জানি মানতে পারতো না। বরং উলটা সে চাইতো যে ও আমার মর্জি বুঝে চলুক। কিন্তু সেটা তো হওয়ার নয়। সেই রাগ। সেই রাগকে বশে সে আনতে পারেনি। কখনো পারবে বলেও মনে হয়না।
তবে পুরোপুরি বদরাগী বলেই যে পুলকের পরিচয়টা দেয়া হয়ে যায় তা কিন্তু না। রাগের অংশটা যদি কেউ একটু সহ্য করে তাহলেই এরপরের নরম অংশটুকু দেখা যায়। হাতে গোনা দুই-একটা বন্ধু পুলককে জানে। একটু রাগটা সহ্য করতে পারলেই পুলকের চেয়ে ভালো মানুষ হয় না। কিন্তু প্রেম করতে গিয়ে পুরুষের রাগ সহ্য করবে, এরকম মেয়ে পাওয়া কিছুটা অসম্ভবই বটে।
এদিকে রীতার কিন্তু পুলককে ভালো লেগেছে। কিন্তু সে ধরেই নিয়েছে যে পুলকের কোন গার্লফ্রেন্ড আছে। নাইলে তো আর একটা লোক বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে এসে এসব কথা বলে না। রীতা দেখতে খারাপ না। ইউনিভার্সিটি তে অনেক ছেলেই তাঁর পিছনে ছোক ছোক করে। তাঁর কেন জানি ছোক ছোক করা ছেলে একদম পছন্দ হয় না। এরা সবাই সুযোগ পেলেই হাস্যকর কথা বলে।
স্কুল এ থাকতে একটা ছেলেকে তাঁর খুব পছন্দ হয়েছিল। ছেলেটার খুব ভাব ছিল। তাকাতোই না ওর দিকে। ছেলেদের ভাব দেখলে তাঁর খুব ভালো লাগে। ছেলেদের ভাব দুই রকম। একদল বাদলা দিনেও সানগ্লাস পরে ঘুরে বেড়ায়। এই দলকে রীতার পছন্দ না। আরেকদল যারা সাধারণ কিন্তু কোথায় যেন তাদের মধ্যে অসাধারণ কিছু কাজ করে। তারা মেয়ে দেখলেই তেলতেলা চেহারা নিয়ে কথা বলতে চলে আসে না। এই দ্বিতীয় দলের লোক ইউনিভার্সিটি তে সে পায়নি।
তাঁকে অগ্রাহ্য করে এরকম পুরুষ সে কমই দেখেছে। তাঁর মধ্যে পুলক একজন। রীতা যে মোটামুটি দেখতে সুন্দরী, পুলক সেটাকে পাত্তাই দেয়নি। দ্যাট ইজ ভেরি ইনটারেস্টিং। এই লোক আবার সমকামী নাতো!! সুন্দরী মেয়ে হিসেবে একটা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের প্রশংশাভরা চাহনি তো সে ডিসারভ করে। তাই না?
বিয়েটা সে এখন করতে চায় না। তাঁর বাবা তাঁকে কোন চাপ দেয়নি। কিন্তু মায়ের একটা তীব্র ইচ্ছা মেয়েকে এখনি পাড় করে দেয়া। মেয়ের বয়স হয়েছে। রীতারা দুই বোন। রীতা বড়। ছোট মেয়ে মিতা ক্লাস এইটে পড়ে। ভিকারুন্নেসা নুন স্কুল এ। পাকার পাকা। এখনি বাসায় মাঝে মাঝে অসময়ে ছেলদের ফোন আসে। তারা সবাই মিতাকে চায়।
রীতা ভাবছে কিছুদিন পর পুলককে একটা ফোন করবে। এই লোক মনে হয় না নিজে থেকে তাঁকে ফোন করবে। কিন্তু মেয়ে হয়ে আগ বাড়ায়ে ফোন করাটা কিরকম ডেস্পারেট হয়ে যায় না? হোক!! অন্তত লোকটার আসল কাহিনীটা জানা যাক।
পর্ব-১ Click This Link পর্ব-২ Click This Link পর্ব-৩ Click This Link পর্ব-৪ Click This Link পর্ব-৫ Click This Link পর্ব-৬ Click This Link পর্ব-৭ Click This Link পর্ব-৮ Click This Link পর্ব-৯ Click This Link পর্ব-১০ Click This Link পর্ব-১১ Click This Link পর্ব-১২ Click This Link পর্ব-১৩ Click This Link পর্ব-১৪ Click This Link পর্ব-১৫ Click This Link পর্ব-১৬ Click This Link পর্ব-১৭ Click This Link পর্ব-১৮ Click This Link পর্ব-১৯ Click This Link পর্ব-২০ Click This Link পর্ব-২১ Click This Link পর্ব-২২ Click This Link পর্ব-২৩ Click This Link পর্ব-২৪ Click This Link পর্ব-২৫ Click This Link পর্ব-২৬ Click This Link পর্ব-২৭ Click This Link পর্ব-২৮ Click This Link পর্ব-২৯ Click This Link পর্ব-৩০ Click This Link পর্ব-৩১ Click This Link পর্ব-৩২ Click This Link পর্ব-৩৩ Click This Link পর্ব-৩৪ Click This Link পর্ব-৩৫ Click This Link পর্ব-৩৬ Click This Link পর্ব-৩৭ Click This Link পর্ব-৩৮ Click This Link পর্ব-৩৯ Click This Link পর্ব-৪০ Click This Link পর্ব-৪১ Click This Link পর্ব-৪২ Click This Link