ক্লাস টুয়ে পড়া ছোট্ট লিরার দুনিয়াটা পুতুল খেলা,পুতুলের বিয়ে,ছোট্ট ছোট্ট হাড়ি-পাতিল আর ওর মতোই ছোট্ট খুকিদের নিয়ে,এর বাহিরে যে আর কিছু ভাবতেই পারেনা সে..স্বপ্নেও ভাবে পুতুলগুলো কেমন আছে,ঘুমাচ্ছে তো!!
এক শুক্রবারে লিরার আব্বু চারটা মুনিয়া নিয়ে হাজির।লিরারতো চক্ষু বিস্ফোরিত হবার যোগাড়।কারন আম্মু যে বাসায় পশু-পাখি দেখতে পারেনা একদমই,অথচ আব্বু বিনা নোটিসে এইভাবে মুনিয়া নিয়ে হাজির!
অবশ্য লিরার খুশি দেখে আম্মু কোন আপত্তি করেনি।তবে কিছু বিধি-নিষেধ দিয়ে দেয় আম্মু কিন্তু কে শোনে বিধি নিষেধ?
আম্মু ঘুমিয়ে পড়ার সাথে ষাথে লিরা ব্যস্ত হয়ে পড়ে মুনিয়াদের নিয়ে।
ধীরে ধীরে লিরা সব কিছু বাদ দিয়ে মুনিয়াদের নি্যে নিজের একটা জগত করে তোলে।এখন সবকিছুতেই মুনিয়া পাখিদের তার পাশে থাকা চাই।খাওরার সময় মুনিয়া,হোমওয়ার্কের সময় পাশে ওরা,পুতুল খেলার সময়ও তাই।লিরার বন্ধুরা এখন লিরার বাড়িতেই আসে খেলতে।
লিরা কোথাও বেড়াতেও যায়না ওর মুনিয়াদের ছেড়ে।
মুনিয়াদের সাথে খেলা করা ছাড়াও লিরার আর একটা প্রিয় কাজ ছিলো ওদের গোসল করানো।মুনিয়ারা গোসল করার সময় ডানা ঝাপটায় আনন্দে এটা লিরার খুব ভালো লাগে।
এভাবে ভালোই চলল কয়েকমাস।হঠাৎ লিরা খেয়াল করে যে একটা মুনিয়া খুব ঘুমায় কয়েকদিন যাবত।লিরার বান্ধবী লোটাস লিরাকে বলে তোমার এই পাখিটা মনে হয় বাচঁবেনা।খুব রাগ হয় লিরার রাগ করে বলে এইভাবে আর বলবানা।
কিন্তু কয়েকদিন পর পাখিটা মরে যায়।
পাগলের মত হয়ে যায় লিরা।
এর করেকদিন পর খাচাঁর আর একটা পাখি কেমন করে জানি উড়ে যায়।লিরার আরো মন খারাপ হয়।উড়ে যাওয়া পাখিটা মাঝে মাঝে আসে ওর পুরানা সঙ্গীদের কাছে,কিনতু লিরাকে দেখলেই উড়ে যায়লিরা আরো কষ্ট পায়।যাদেরকে এতো ভালোবেসেছে তারা ওকে বুঝতেই পারছেনা।কিছুদিন পর লিরার উপলব্ধি হয় যে এই অবুঝ প্রাণীদের কাছে ও যা চাইছে তারা তা চাইছেনা।ওরা চায় নিজেদের মত থাকতে,প্রাণ খুলে উড়তে।
কাউকে কিছু না বলে বাকি পাখি দুইটাকে উড়িয়ে দেয় লিরা।
আর তারপর ভীষণ মনমরা হয়ে পড়ে লিরা।
আম্মু এই অবস্হা দেখে বলে মন খারাপ করার দরকার নাই।আবার পাখি কিনে দিবো।
এইবার বাসায় আসে একটা টিয়া।কিছুদিন ভালো্ই চলল,আগের মত পাখির যত্ন-আত্তি।কিন্তু কোথায় যেনো কিছু একটা গোলমেলে,কি যেনো হয়েছে লিরার
আবারো কাউকে কিছু না বলে এই টিয়াটাকেও উড়িয়ে দেয় লিরা।
কিযেনো ভেবে মেয়েটা বাসায় ঘোষনা দেয় এরপর আর কেউ,কোনদিন খাচাঁয় পাখি কিনে আনবেনা।
আজ ছোট্ট মেয়েটা বড় হয়ে গেছে,অনেক বড়ো,আর তার সেই প্রিয় মুনিয়াদের মনে করছে আজ।
love u dear
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১০ রাত ২:০৮