somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দহন

০৭ ই মে, ২০১৫ ভোর ৫:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাসস্ট্যাণ্ডে দাঁড়িয়ে ঘন ঘন ঘড়ি দেখছে হিমি। বুঝতে পারছে না মতিঝিলের গাড়িটা আসতে আজ এত দেরি করছে কেন? বনশ্রীতে ফ্ল্যাট কেনার পর থেকে এই বাসটাতেই ও অফিসে যাতায়াত করে। কারণ এটাতে গেলে একেবারে অফিসের সামনেই নামতে পারে। বাড়তি রিক্সাভাড়া গোনা লাগে না বা পায়ে হাঁটতেও হয় না। হিমি পুনরায় ঘড়ির দিকে তাকায়। আশ্চার্য! এত বাস আসছে যাচ্ছে অথচ এই বাসটারই দেখা নেই! বিরক্ত হয়ে ভাবে।
ঘাড় ঘুরিয়ে আশপাশটা দেখে নেয় একবার। চারিদিকে মানুষের ভীড়। এই অফিস টাইমটায়ই যত জটলা, এরপর এগারোটা নাগাদ প্রায় ফাঁকা হয়ে যাবে বাসস্ট্যান্ড। বাসের ভিতরটাও ফাঁকা থাকবে কিছুটা।
এসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে মতিঝিলের বাসটা এসে দাঁড়ায়। অমনি হুড়মুড় করে সবাই উঠতে চেষ্টা করে। কাউন্টার বাস। টিকেট কেটে এতক্ষণ সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিল। কিন্তু বাস এলে ওসব লাইন ফাইনের ধার ধারে না কেউ। সিরিয়াল ভেঙ্গে কে কার আগে উঠবে সেই চেষ্টা। হিমিও এক ফাঁকে ঠেলেঠুলে উঠে পড়ে। আসলে প্রাইভেটকারে চড়ার অভ্যেসটাই খুব বাজে। দীর্ঘকাল ধরে নিজেদের কারে চড়ে চড়ে এখন বাস-মিনিবাসের ভিড়ভাট্টা একেবারেই অসহ্য লাগে।
আজ বাসেও খুব ভীড়। বসার জায়গা না পেয়ে হ্যান্ডেল ধরে দাঁড়িয়ে থাকে হিমি। অফিসের এই সময়টায় রাস্তায় যানজট লেগেই থাকে। ফলে কিছুক্ষণ পর পর ড্রাইভার ব্রেক কষে আর হিমি প্রায় পড়তে পড়তে নিজেকে সামলে নেয়। ওর অবস্থা দেখে পাশের সিটের এক ভদ্রলোক সিট ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়।
আপা এখানে বসুন।
না না আপনি বসুন। সংকুচিত হয়ে বলে হিমি।
অসুবিধা নেই, আপনি বসুন। আমি সামনের স্টপেজেই নেমে যাবো।
শুনে আশ্বস্ত হয়ে ধপ করে লোকটির ছেড়ে দেয়া সিটে বসে পড়ে হিমি। আসলে দাঁড়িয়ে থাকতে তারও খুব কষ্ট হচ্ছিল। পা লেগে আসছিলো। কতক্ষণ আর দাঁড়িয়ে থাকা যায়। প্রায় আধা ঘন্টার ওপর বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ানো। তাছাড়া বয়সও তো হচ্ছে। এখন তো আর আগের মত জোর নেই পায়ে।
এ সময়ে হঠাৎ মনের মধ্যে পারভেজের মুখটি উঁকি দিয়ে যায়। আজকাল ঘুমের মধ্যেও প্রায়ই সে পারভেজকে দেখতে পায়। তখন টিয়াপাখির শীষ শোনে। একবার পারভেজের সাথে লাউয়াছড়ার বনে বেড়াতে গিয়েছিল। তখন প্রথম টিয়াপাখির শীষ শুনেছিল। মাত্র আট দশ বছর আগের কথা। এরই মধ্যে কেমন সব বদলে গেল! পারভেজ ওর জীবন থেকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে গেল। কিন্তু থেমে নেই সময়ের চাকা। কেবল ঘুরছে তো ঘুরছেই। বুকের মধ্যে শূন্যতার হাহাকার!
মতিঝিল... শাপলা চত্বর... নামেন... নামেন...
শোনা যায় হেল্পারের কণ্ঠ।
অনেকের সাথে নেমে পড়ে হিমিও।

অফিসে আজ কাজের যেন শেষ নেই। রাজ্যের ফাইল এসে জমেছে টেবিলে। সকালে সেই যে এসে বসেছে এখনও পর্যন্ত একবারের জন্য উঠতে পারে নি টেবিল ছেড়ে।
হঠাৎ করে সেল ফোনটি বেজে ওঠে আর তখনই খেয়াল হয় ব্যাগ থেকে এখনও পর্যন্ত ওটা বেরই করা হয়নি। দ্রুত হিমি ব্যাগ হাতড়ে সেলফোনটি বের করে কানের কাছে ধরে। ওপাশে অপরিচিত কন্ঠস্বর।
গুড মর্নিং। আমি তাশিকা, কানাডা থেকে এসেছি...।
মূহূর্তে হিমির মনেপড়ে যায়, একসময় পারভেজ বছর পাঁচেক কানাডা ছিলো। হয়তো পারভেজের পরিচিত কেউ হবে।
বিশেষ কারণে আমি আপনার সাথে একটু দেখা করতে চাই।
পুনরায় চমৎকার বাংলায় বলে তাশিকা।
আপনি আমার অফিসে আসতে পারেন।
নো ম্যাম, আমি পারসোনাল একটি ব্যাপার নিয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে চাই। তাই অফিসে না, অন্য কোথাও মানে...।
আপনি আমার সেল নাম্বার পেলেন কিভাবে?
মি. পারভেজের অফিস থেকে আপনার সাথে যোগাযোগ করার জন্য আমাকে আপনার সেল নাম্বারটি দিয়েছে।
ও.কে। আগামীকাল শুক্রবার, অফিস ছুটি থাকবে। আপনি আমার বাসায় চলে আসুন।
থ্যাংক ইউ ম্যাম।
সেল ফোনের লাইনটি কেটে দেয় তাশিকা। হিমি অফিসের ফাইলে মন দিতে চেষ্টা করে। কিছুতেই মনোসংযোগ করতে পারে না কাজে। তাশিকা কে? মনের মধ্যে বার বার ঘুরপাক খায় প্রশ্নটি।
পারভেজ কানাডা গিয়েছিল সে আজ থেকে সতের আঠার বছর আগের কথা। এতদিন পর কী কারণে তাশিকা তার সাথে দেখা করতে এসেছে! পরক্ষণে মনে হয়, হতে পারে পারভেজ কানাডা থাকাকালীন পরিচয় হয়েছিল। কোন কারণে বাংলাদেশে এসেছে তাই হয়তো পারভেজের খোঁজ করছে। অচেনা কোন জায়গায় গেলে মানুষ তো আগে তার পরিচিত কাউকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করে।

বাসায় ফিরে হাতমুখ ধুয়ে এক কাপ কফি নিয়ে বসে হিমি। কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে রিমোট টিপে টিভিটা অন করে। এ-সময় তার পারভেজের কথা মনে পড়ে। বাড়ির সবার অমতে ভালবেসে বিয়ে করেছিল সে আর পারভেজ। বিয়ের দু’বছরের মাথায় অন্তু কোলে এলো আর তিন বছরের মাথায় অফিস থেকে পাঁচ বছরের জন্য কানাডা পাঠালো পারভেজকে। পাগলের মত হিমিকে ভালবাসতো পারভেজ। ওকে ছেড়ে পাঁচ বছর থাকতে হবে এই দুর্ভাবনায় পারভেজের সে কী মন খারাপ! একবার তো বলেই বসলো- চাকরি ছেড়ে দেবে। হিমি বুঝিয়ে ওকে শান্ত করে। বলে, মানুষ বিদেশে যাওয়ার জন্য হা করে থাকে আর তুমি এত ভালো চান্স পেয়েও যেতে চাইছো না!
অন্তুকে, তোমাকে ছেড়ে আমি থাকতে পারবো না।
অবুঝের মতো বলে পারভেজ।
দেখতে দেখতে পাঁচ বছর কেটে যাবে। তাছাড়া এই সুযোগে আমি অন্তুকে বড় করে তুলবো। তুমি এসে দেখবে অন্তু কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে স্কুলে যাচ্ছে।
এভাবে সেবার কত বুঝিয়ে সুঝিয়ে তারপর পারভেজকে কানাডা যাওয়ার জন্য রাজী করাতে পেরেছিল হিমি। সেই পারভেজ কানাডা যাওয়ার বছর খানেকের মধ্যে কেমন পাল্টে গেল! প্রথম দিকে দিনে একবার ফোন, সপ্তাহে সপ্তাহে চিঠি। মাসখানেকের মধ্যে সপ্তাহে দু’সপ্তাহে ফোন, মাসে একটি চিঠি। তারপর ধীরে ধীরে মাসে একটি ফোন, দুই কিংবা তিন মাসে একটি চিঠি। সে সব চিঠিতে আর আগের মতো সেই আবেগ, উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসার কথা থাকে না, থাকে কেবল দরকারী কথাটুকু। হিমিও তখন অন্তুকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। সকালে ঘুম থেকে তুলে অন্তুকে মুখ ধোয়ানো, স্কুল ড্রেস পরানো, নাস্তা খাওয়ানো, তারপর স্কুলে নিয়ে যাওয়া। ছুটি না হওয়া পর্যন্ত অন্যান্য গার্জিয়ানদের সাথে বসে অপেক্ষা করা। স্কুল ছুটির পর ছেলেকে নিয়ে বাসায় ফিরে রান্না-বান্না, ছেলেকে গোসল করানো। খাওয়া দাওয়ার পর একটু বিশ্রাম নিয়ে বিকেলে ছেলেকে নিয়ে কোচিং সেন্টারে যাওয়া। দেখতে দেখতে সময় যে কি
কীভাবে পার হয়ে যায় টের পায় না হিমি। এক সময় কানাডা থেকে ফিরে আসে পারভেজ। দেশে ফিরেই অন্তু আর হিমিকে নিয়ে মেতে ওঠে, সেই আগের মতই।
এখন খুব তো দরদ দেখাচ্ছো অথচ কানাডার শেষের দিনগুলোতে কিভাবে ভুলে ছিলে আমাদের?
হিমি কখনও কখনও অনুযোগের সুরে বলেছে। শুনে হেসে উঠেছে পারভেজ। তারপর একদিন বিনা মেঘে বজ্রপাতের ন্যায় পারভেজের লিভার সিরোসিস ধরা পড়লো। ওর দু’চোখে বাঁচার সেকি আকুলতা! হিমিও চেষ্টার কোন ত্রুটি করে নি। আত্মীয় স্বজন সবাই পাশে থেকেছে। কিন্তু সকলের চেষ্টাকে ব্যার্থ করে দিয়ে চলে গেল পারভেজ। অন্তু তখন কেবল সপ্তম শ্রেণীতে পড়ে।
তারপর থেকে যুদ্ধ আর যুদ্ধ। একা একা যুদ্ধ করে চলেছে হিমি। নিজে চাকরি করছে। টাকা পয়সা যা ছিল তার অর্ধেক প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছিল পারভেজের চিকিৎসায়। বাকী যা ছিল তার সাথে ডিবিএইচ থেকে কিছু লোন নিয়ে বনশ্রীতে সাড়ে বার’শ স্কয়ার ফিটের একটি ফ্ল্যাট কিনেছে। ও লেভেল পাশ করার পর অন্তুকে বাইরে পড়তে পাঠিয়েছে। অন্তুও ওর বাবার মত খুব হিসেবী আর গোছানো স্বভাব পেয়েছে। ছ’মাস যেতে না যেতে পড়াশুনার পাশাপাশি পার্টটাইম জব করে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছে, আবার মাঝে মাঝে মাকেও বেশ কিছু টাকা পাঠাচ্ছে। তাতে করে হিমির জন্য হাউজ লোনের টাকাটা শোধ করা সহজ হচ্ছে। আর দু’বছর পর নিজের ফ্ল্যাটে উঠতে পারবে।
এসব কথা ভাবতে ভাবতে বারান্দায় এসে দাঁড়ায় হিমি। পাশাপাশি দু’টি চেয়ার রাখা বারান্দায়। মনেপড়ে যায় অফিস থেকে ফিরে দক্ষিণের খোলা বারান্দায় বসতে খুব পছন্দ করতো পারভেজ। হিমিও দু’কাপ চা আর হালকা নাস্তা নিয়ে এসে বসতো ওর পাশে। সারাদিনের জমে থাকা কথাগুলো বলতো অনর্গল। কখনো কখনো অন্তুও যোগ দিতো ওদের সাথে। আজ হিমি একা। পারভেজ নেই, অন্তুও দূর পরবাসে! চেয়ার দু’টি স্মৃতি হিসেবে এখনও বারান্দায় রেখে দিয়েছে হিমি। শুধু চেয়ার নয় পারভেজ চলে গেছে প্রায় সাত বছর হতে চলল। এখনও ঘরের সব জিনিসপত্র তেমনই সাজানো রয়েছে, যেমন ছিল পারভেজের চলে যাওয়ার দিনটি পর্যন্ত। এমনকি বেডরুমের দেয়ালে টানানো সেই বিয়ের ছবিটাও।

***
শুক্রবার মানেই অফুরন্ত ছুটি। নিশ্চিন্তে তাই বেলা ন’টা অব্দি ঘুমায় হিমি। ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে পারভেজকে স্বপ্ন দেখে। আজ স্বপ্নের মাঝে পারভেজকে কেন যেন খুব দূরের মানুষ মনে হয়। অস্পষ্ট শব্দে কিছু যেন বলতে চায়, অথচ হিমির কাছে কথাগুলো কেমন দুর্বোধ্য মনে হয়। এমন সময় কলিং বেলের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় হিমির। ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া মানেই স্বপ্ন হারিয়ে যাওয়া। আর স্বপ্ন হারিয়ে যাওয়া মানে পারভেজের মুখটিও দৃষ্টির আড়ালে চলে যাওয়া। একরাশ বিষন্নতায় ছেয়ে যায় হিমির মন।
পুনরায় কলিংবেল বেজে ওঠে।
বাধ্য হয়ে বিছানা ছেড়ে নামতে হয় হিমিকে। ম্যাক্সির ওপর একটি ওড়না জড়িয়ে নিয়ে সদর দরজা খুলে দিয়েই হোঁচট খায়।
কে ও! পারভেজ এলো কিভাবে! সে কী স্বপ্ন দেখছে?
পরক্ষণে ভুল ভাঙ্গে। না না পারভেজ নয়, অবিকল পারভেজের মত দেখতে আর একজন মানুষ। বয়সে তরুণ। বড় জোর পনের ষোল বছর হবে বয়স।
বিস্ময়ে তরুণটির দিকে হা করে তাকিয়ে থাকে হিমি। দু’জনের দৃষ্টি বিনিময় হয়। লাজুক হাসে তরুণটি।
হ্যালো ম্যাম, গুড মর্নিং।
গলার স্বরটিও হুবহু এক! হতভম্ব হিমি তরুণের কথার কোন জবাব দিতে পারে না। কেবল মাথা নাড়ে।
গুড মনিং, আমি তাশিকা। গতকাল আমিই আপনাকে ফোন করেছিলাম।
এতক্ষণে হিমির নজরে পড়ে পারভেজের মতো দেখতে তরুণটির পিছনে আরো একজন রয়েছে।
গুড মর্নিং। আসুন ভিতরে আসুন।
দরজার একপাশে সরে গিয়ে ভিতরে আসার আহবান জানায় হিমি।
তাশিকা এবং তরুণ প্রবেশ করে ভিতরে। হিমি দরজা বন্ধ করে ওদেরকে নিয়ে ড্রইং রুমে আসে। তাশিকা সঙ্গের তরুণটির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলে, ও প্রিয় আহমেদ, মাই সান।
চমকে ওঠে হিমি। প্রিয় আহমেদ? কানাডিয়ান মায়ের ছেলের গায়ের রঙটা কিছুটা মায়ের মত হলেও চেহারাটা বাঙালী ধাঁচের, নামটাও!
হাই...
সম্ভাষণ জানিয়ে বলে প্রিয়।
হ্যালো। বলে হিমি।
তিনজনেই আসন গ্রহণ করে। হিমি তাশিকার দিকে ফিরে বলে,
আপনি তো চমৎকার বাংলা বলতে পারেন।
আমার বাবার কাছে শিখেছি।
আপনার বাবা বুঝি বাঙালি?
হ্যাঁ, আমার হাজব্যান্ডও।
সত্যি?
হ্যাঁ, আর সেজন্যই তো আপনার কাছে এসেছি।
বলুন, আমি আপনার জন্য কী করতে পারি?
আসলে আমি আপনার কাছে এসেছি আমার হাজব্যান্ডের খবর জানতে।
হাজব্যান্ডের খবর জানতে? আমার কাছে? কপালে ভাঁজ পড়ে হিমির।
ইয়েস ম্যাম। আমার হ্যাজব্যান্ড মি. পারভেজ আহমেদ, আমি তার খোঁজেই বাংলাদেশে এসেছি।
তাশিকার কথা শুনে হা করে তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে হিমি। তাঁর মাথায় কিছুই যেন ঢুকছে না।
তাশিকা বলেই চলে, ওকে খুঁজতে গতকাল ওর অফিসে গিয়েছিলাম। ওখান থেকে জানালো, ও নাকি অনেক দিন থেকে আর ঐ চাকরিটি করছে না। আমি ওর সাথে যোগাযোগের ঠিকানা চাইলাম। তখন একজন আপনার সেল নাম্বার দিয়ে বলল, আপনি নাকি ওর সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানাতে পারবেন। তাই আপনাকে কষ্ট দিতে হলো।
আপনার স্বামী পারভেজ আহমেদ...
বিড় বিড় করে বলতে থাকে হিমি। তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে তাশিকা বলে,
ও কানাডায় একটি ট্রেনিং-এ গিয়েছিল, তখন ওর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। আমরা একে অন্যের প্রেমে পড়ে যাই। আমার বাবা ভারতীয়, মা জাপানীজ। একটু রক্ষণশীল স্বভাবেরও। আমাদের ফ্রি মেলামেশাটা তিনি খুব একটা পছন্দ করলেন না। যার ফলে আমরা খুব তাড়াতাড়ি বিয়ে করে ফেলি। প্রিয়’র জন্ম হয়। পারভেজ শখ করে ওর নাম রাখে প্রিয়। প্রিয়’র বয়স যখন ছ’মাস তখন ওর ট্রেনিং শেষ হয়ে যায়। ও বাংলাদেশে ফিরে আসে। আসার আগে আমাকে বলে আসে, দেশে ফিরে সবকিছু গুছিয়ে নিয়ে আমার কাছে ফিরে যাবে। দেশে ফিরে বছর খানেকের মত আমার সাথে চিঠিতে, ফোনে যোগাযোগ রেখেছিল। তারপর হঠাৎ করে একদিন চিঠি দেয়া বন্ধ করে দেয়। আমি তখন আমার গ্রোসারী শপ্ এবং প্রিয়কে নিয়ে এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম যে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে ওঠে নি।
এক নাগাড়ে কথাগুলো বলতে বলতে থেমে যায় তাশিকা। হয়তো দম নেয়।
তারপর? -কেমন যেন ফ্যাসফেসে গলায় জানতে চায় হিমি।
ওর কন্ঠস্বরে চমকে ওঠে তাশিকা। বলে,
কী হয়েছে ম্যাম, আপনার কী শরীর খারাপ?
না না শরীর ঠিক আছে... না মানে গলার ভিতরটা কেমন যেন লাগছে... আসলে এলার্জি আছে তো, তাই মাঝে মাঝে স্বরটা কেমন যেন বসে যায়। ঠিক আছে, আপনার কথা বলুন।
আশ্বস্ত হয়ে তাশিকা পুনরায় বলতে শুরু করে, তারপর এক সময় ছেলে বড় হলো। বাবাকে দেখতে চাইলো। কিছুদিন থেকে আমার মনও উতলা হয়ে উঠেছে ওকে দেখার জন্য। আমার টমি বয়ফ্রেন্ড বলল, তুমি বাংলাদেশে গিয়ে হাজব্যান্ডকে দেখে এসো। সে কটা দিন আমিই তোমার গ্রোসারী শপ দেখাশোনা করবো। ব্যাস অমনি আমি ছেলেকে নিয়ে উড়াল দিলাম।
কথা শেষ করে হিমির দিকে তাকায় তাশিকা। বলে, আপনার যদি ওর কোন সংবাদ বা কন্ট্রাক্ট নাম্বার জানা থাকে প্লীজ আমাকে দিন।
একরাশ মিনতি ঝরে পড়ে তাশিকার কন্ঠ হতে।
মি. পারভেজের কোন ছবি আছে আপনার কাছে? কারণ আমি যে পারভেজকে চিনতাম সেই যে আপনার স্বামী সেটা তো আগে নিশ্চিত হতে হবে।
নিশ্চয়। নিশ্চয়।
বলতে বলতে ভ্যানিটি ব্যাগ খুলে একটি ছবি বের করে হিমির দিকে বাড়িয়ে দেয় তাশিকা। এই যে এটি আমার হাজব্যান্ডের সাথে তোলা ছবি। প্রিয়র বয়স তখন তিন মাস।
ছবির দিকে তাকিয়ে চোখের সামনের পৃথিবীটা দুলে ওঠে হিমির। তার ভালবাসা, তার বিশ্বাস ভীষণভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে তার সাথে। বাকরুদ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে ছবিটির দিকে। একহাতে তাশিকাকে জড়িয়ে ধরে আছে পারভেজ, অন্যহাতে কোলে বসা প্রিয়কে ধরে আছে। তাশিকা, পারভেজ দু’জনেই হাসছে। সুখী পরিবারের চিত্র।
হিমির দম বন্ধ হয়ে আসে, সবকিছু অন্ধকার মনে হয়। চীৎকার করে কাঁদতে ইচ্ছে করে। গলার কাছে এসে থেমে যায় কান্না। না, কিছুতেই সে তাশিকার কাছে নিজেকে ছোট করতে পারবে না। কিছুতেই না।
কী হয়েছে আপনার? শরীর খারাপ লাগছে কি?
তাশিকার কথায় চমক ভাঙ্গে হিমির। নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
না, মানে... হ্যাঁ, আসলে ক’দিন থেকে শরীরটা একটু খারাপই লাগছে।
ও নো ম্যাম, একেবারেই নেগলেট করা উচিৎ নয়। ফিজিশিয়ানের কাছে যাওয়া উচিৎ।
আমিও তাই ভাবছি।
আচ্ছা আপনারা একটু বসুন। আমি এক্ষুণি আসছি।
এই মুহূর্তে একটু আড়াল দরকার তার।
সিওর। বলে তাশিকা।

***

ক্লান্ত পায়ে বেডরুমের দিকে চলে যায় হিমি। ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়ালে টানানো ছবিগুলির দিকে তাকায়। একটি তার আর পারভেজের বিয়ের ছবি, অন্যটি সে, পারভেজ আর অন্তুর একত্রে তোলা গ্রুপ ছবি।
হিমি গ্রুপ ছবিটির সামনে এসে দাঁড়ায়। পারভেজ সে আর অন্তু। কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে তোলা ছবি। পিছনে উত্তাল সমুদ্র আর অস্তগামী টকটকে লাল সূর্য। পারভেজ একহাতে তাকে এবং অন্য হাত দিয়ে অন্তুকে জড়িয়ে ধরে আছে। মুখে সেই ভুবন ভোলানো হাসি। বাতাসের তোড়ে এলোমেলো চুল।
বিশ্বাসঘাতক! মিথ্যেবাদী! আমিই তোমার প্রথম আর শেষ প্রেম তাই না? তবে তাশিকা কে? প্রিয় কে?
ছবির দিকে তাকিয়ে অস্ফুট কন্ঠে চীৎকার করে ওঠে হিমি, পরক্ষণে অসহায় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। ফোঁপাতে ফোঁপাতে বলে, কেন তুমি আমার সাথে এতবড় বিশ্বাসঘাতকতা করলে... কেন...? কী দেই নি আমি তোমায়? কেন তুমি এমন করলে? আর করলেই যদি তবে আমি জানলাম কেন? আর ক’দিনই বা বাঁচতাম, কেন তোমার প্রতি আমার সীমাহীন বিশ্বাস আর ভালবাসা এভাবে কেড়ে নিলে? সবাই জানতো তুমি আমাকে প্রাণের চাইতে বেশি ভালোবাসতে। তারা যখন তোমার ভালবাসার আসল রূপ জানবে, তাদের কাছে আমি কেমন করে মুখ দেখাবো, বলো কেমন করে? ওহ খোদা, তুমি আমার মৃত্যু দাও... আমার মৃত্যু দাও... আমি যে আর সহ্য করতে পারছি না...
দু’হাতে মুখ ঢেকে পাগলের মতো অস্ফুট চীৎকার করে কাঁদতে থাকে হিমি। দীর্ঘক্ষণ কাঁদার পর একসময় তার মনে পড়ে ড্রইংরুমে তাশিকা আর প্রিয় তার অপেক্ষায় বসে আছে। দ্রুত বাথরুমে প্রবেশ করে চোখেমুখে বেশি করে পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে নেয়। আয়নায় তাকিয়ে দেখে, চোখ দু’টো বেশ লাল আর ফোলা মনে হচ্ছে। কিছুই করার নেই। মনে মনে ভাবে। এরপর বেডরুমের বন্ধ দুয়ার খুলে বের হয়ে আসে হিমি। কিচেনে ঢুকে ফ্রিজ খুলে দু’টো বাটিতে পায়েস বাড়ে। একটি হাফপ্লেটের ওপর কিছু আপেল আর আঙুর সাজায়। ফ্রিজ বন্ধ করে ফ্ল্যাক্স থেকে দু’মগ গরম পানি নিয়ে কফি বানায়। এরপর ক্লান্ত পায়ে নাস্তার ট্রলিটা ঠেলে নিয়ে যায় ড্রইংরুমে। ওকে দেখে তাশিকার মুখে বিব্রত হাসি ফুটে ওঠে।
সরি, আপনাদের অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখলাম। বলে হিমি।
ইটস ও.কে। আমরাই তো সকালবেলা এসে আপনাকে বিরক্ত করছি। আসলে পারভেজকে দেখার জন্য প্রিয় এত ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে...। অনেকটা কৈফিয়তের সুরে বলে তাশিকা।
ড্যাড কি এখন ঢাকাতে আছে? ব্যাকুলতা নিয়ে জানতে চায় প্রিয়।
ওর দিকে তাকায় হিমি। একেবারেই পারভেজের কার্বন কপি। সেই নাক, সেই চোখ, সেই ঠোঁট, কেবল গায়ের রঙটা একটু ফর্সা।
ওকে দেখতে দেখতে মনটা কেমন যেন হয়ে যায় হিমির। রাগটা পড়ে গিয়ে কেমন যেন একটা মমতা অনুভব করে। কোমল কন্ঠে বলে,
আগে কিছু খেয়ে নাও তারপর বলছি।
পায়েসের বাটি দু’টো দু’জনের হাতে তুলে দেয় হিমি। খেতে খেতে তাশিকা বলে, খুব মজার, কিভাবে বানিয়েছেন?
দুধ, চাল এবং চিনি দিয়ে।
এটা কী রাইস কাস্টার্ড?
এটার নাম পায়েস।
পায়েস খেতে খেতে তাশিকা অনর্গল কথা বলতে থাকে। হিমি কেবল ‘হু’ ‘হা’ করে যায়।

***

বেলা এগারোটার দিকে সোমেলা হিমির বাসায় কাজ করতে আসে। অন্যদিন যদিও সাতটার মধ্যে কাজে আসতে হয় তবে শুক্রবার এগারোটার সময় আসে। হিমির নির্দেশ। সারা সপ্তাহ অফিসের জন্য সকালবেলা একটু শান্তিমতো ঘুমুতে পারে না, ছুটির দিন তাই বেলা দশটা এগারোটা পর্যন্ত ঘুমিয়ে পুষিয়ে নেয়।
সোমেলা অনবরত কলিং বেল টিপে চলে, অথচ দরজা খোলার নাম নেই কারো। বাধ্য হয়ে নীচে গিয়ে দারোয়ানকে জানায়। এক সময় ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে সোমেলা, দারোয়ান এবং ফ্লাটের অন্যান্য বাসিন্দারা। ভিতরে প্রবেশ করে দেখতে পায়, সোফার ওপর দু’দিকে কাৎ হয়ে পড়ে আছে দু’জন ভিনদেশি মানুষ। তাদের বিপরীত সোফায় স্থাণুর মতো বসে আছে হিমি। সামনের টি টেবিলের ওপর পড়ে আছে অর্ধসমাপ্ত খাবারসহ প্লেট, মগ।

***

দু’জন বিদেশি নাগরিককে বিষ দিয়ে হত্যার দায়ে ফাঁসি হয় হিমির। খবর শুনে অস্ট্রেলিয়া থেকে ছুটে আসে অন্তু। নামকরা উকিল নিয়োগ করেও মায়ের ফাঁসি ঠেকাতে পারে না। কিছুতেই অন্তু ভেবে পায় না তার মা কেন এমন একটি কাজ করলো। শেষ দেখা দেখতে গিয়ে কেঁদে বুক ভাসিয়ে অবিশ্বাসী কন্ঠে বার বার মায়ের কাছে জানতে চায়,
কেন তুমি এমন করলে মা? তুমি এ কাজ করতে পারো আমার কিছুতেই বিশ্বাস হয় না। তোমার মনে আছে ছেলেবেলায় একবার স্কুল থেকে ফেরার পথে রাস্তার ধারে এক পাখিঅলাকে পাখি বিক্রি করতে দেখে আমি বায়না ধরেছিলাম পাখি কিনবো বলে। তুমি আমাকে একটি টিয়ে পাখি কিনে দিয়েছিলে। পাখিটাকে প্রতিদিন আমরা ভেজানো ছোলা খেতে দিতাম। বাজারে যাওয়ার পূর্বে রোজ বাবাকে বলতে, কাঁচামরিচের সাথে বেছে বেশি বেশি পাকা মরিচ আনতে। তারপর লাল টকটকে পাকা মরিচগুলো ওকে খেতে দিতে। বলতে বেশি করে পাকা মরিচ খেলে ও তাড়াতাড়ি কথা বলা শিখবে। আমি আদর করে ওর নাম রেখেছিলাম টুকটুক। সত্যিই একদিন সকাল বেলা তুমি শুনতে পেলে কে যেন বলছে-
এই অন্তু ওঠ্ ওঠ্ ... স্কুলে যাবি না... ওঠ্ ওঠ্ ...। সেদিন কী যেন একটা ছুটির দিন ছিলো। আমি আর বাবা অনেক বেলা পর্যন্ত আরাম করে ঘুমোচ্ছিলাম। সারা বাড়ি খুঁজেও তুমি কাউকে পেলে না। অবশেষে আবিষ্কার করলে, এটা টুকটুকের কাজ। তোমার সেকি আনন্দ! তক্ষুণি আমাকে আর বাবাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলে ঘটনাটি বললে। আমরা ছুটে গেলাম বারান্দায়। কিন্তু সেদিন আর টুকটুক ডাকলো না। হয়তো লজ্জা পেয়েছিলো। ‘ভুল শুনেছো’ -বলে আমি আর বাবা তোমাকে খুব ক্ষ্যাপালাম। কিন্তু তার পরদিন থেকে নিয়মিত সকালে শুনতে পেতাম- ‘অন্তু ওঠ্ ওঠ্’ কিংবা ‘এ্যাই পারভেজ চা নাও’ অথবা ‘মা, আমার বল দাও, ব্যাট কই...’ -এসব নানারকম কথাবার্তা। অর্থাৎ সারাদিন আমরা যেসব কথাবার্তা বলতাম তা নকল করতো টুকটুক। তারপর একদিন রাতে খুব বৃষ্টি হলো, ঘুমের মধ্যে আমরা কেউই জানতে পারি নি বৃষ্টির কথা। ফলে সারারাত বৃষ্টিতে ভিজে ঠান্ডা লাগে টুকটুকের। পরদিন বিকেলের দিকে মারা গেল টুকটুক। সেদিন আমার সাথে সাথে তুমিও কত কেঁদেছিলে। একটি পাখির জন্য যার এত মমতা সে কীভাবে মানুষ খুন করতে পারে! তাও দু-দু’জন মানুষ! মা আমাকে সত্যি করে বলো, কী করেছিলো ওই বিদেশি মানুষ দু’জন, কী কারণে তুমি খুন করলে ওদের?
বার বার মাকে প্রশ্ন করেও কোন উত্তর পায় না অন্তু। দু’টি অসহায় চোখে অন্তুর মুখের দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টি মেলে তাকিয়ে থাকে হিমি। ঘটনার পর থেকে যেন বোবা হয়ে গিয়েছে সে।
ফাঁসির আগের দিন জেল কর্তৃপক্ষ যখন তার শেষ ইচ্ছের কথা জানতে চায়, হিমির ঠোঁট দু’টি ইষৎ কেঁপে ওঠে। দীর্ঘদিন পর কেবল একটি কথা বলে, আমাকে যেন আমার স্বামীর পাশে কবর দেয়া হয়।
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×