সমুদ্রের পানি আর পুকুরের পানির মধ্যে অন্যতম পার্থক্য ভয় ।সমুদ্রের পানিকে ভয় করতে হয় বা ভয় করতে বাধ্য কিন্তু পুকুরের পানিকে ভয় করার মত কিছু নেই ,সমুদ্রের পানি চঞ্চল বিপরীতে পুকুরের পানি শান্ত । সমদ্রের পানিতে যখন চঞ্চলতার গতি বেড়ে যায় তখন বিপদ দেখা দেয়। মানুষের মধ্যেও ওই একই পার্থক্য ভয়। একপক্ষ জালিম অন্য পক্ষ মজলুম। জালিমকে ভয় করা হয় তার হিংসা ও মানসিকতার জন্য। জালিমের জুলুমের কারণে সমাজে দেখা দেয় অশান্তি ।
সমুদ্র প্রকৃতির একটা অন্যতম অংশ সমুদ্রের সুন্দর পরিবেশ প্রকৃতিকে অনেক চমত্কার করে। তেমনি সমুদ্রের পানি ও পানির ঢেউ মানুষের ভয়ের কারণ হয়ে দাড়ায়। সমুদ্রের পানির ঢেউয়ে মানুষের জীবন চলে যায়। তবে মজার বিষয় এই সমুদ্রেই মানুষ সাতার কাটে আনন্দের জন্য। জীবিকার নির্বাহের জন্য সমুদ্রকে ব্যবহার করেন এবং যাতায়াত ব্যবস্থার জন্য সমুদ্রকে ব্যবহার করেন ভয়কে সাথে নিয়ে। তবে যারা সাতার জানেনা তাদের মধ্যে ভয় অতিরিক্ত থাকে।
মানুষের বেলায় ও ঠিক তেমন জালিমের সাথে বসবাস করতে হয় সে যত বড় জালিম হোক। জালিম আর মজলুম একই সমাজে বসবাস করে। মানুষ জালিম হয় তখন তার ভেতর যখন মনুষত্বের মৃত্যু ঘটে ।যখন জালিম হয় সে হিংসুক হয়ে যায় ।যখন সে সমাজের ভালবাসা থেকে নিজেকে দুরে রাখে ।যখন সে অহংকারী হয়ে যায় ।যখন সে কোনো কিছুর ক্ষমতার পিছে পড়ে দৌড়ায়। জালিমের ধর্ম নির্যাতন নির্যাতন করবেই সেটা যেরকমই হোক মানসিক কিংবা শারীরিক। জালিমের অব্যাসের কারণে মজলুমের সৃষ্টি হয় । জালিমের জুলুমের শিকার হওয়া সত্তেও একই সমাজে বসবাস করতে হয়। সমাজ থেকে নিজেকে আলাদা করা যায় না আবার জালিমকে ও আলাদা করা সম্ভব হয় না। সমুদ্রের পানি কে যেমন ভয় পেলেও যারা সাতার জানে তারা সাতার কেটেই যাচ্ছে ।যারা জীবিকা নির্বাহের জন্য সমুদ্রকে বেছে নিয়েছে তারা সেটা করেই যাচ্ছেন ,যাদের যাতায়াতের পথ সমুদ্র তারা যাতায়াত বন্ধ করেন নাই করতে পারেন না । তেমনি যারা জালিমের রক্ত চক্ষুকে প্রতিহতের ক্ষমতা রাখে তারা জুলুমের প্রতিবাদ করেই যাচ্ছে । হাত কেটে ফেললে মুখ দিয় প্রতিহত করার মনোবল থাকলে তা সম্ভব ।জালিমের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভাবে প্রতিহত গড়ে তুলতে হবে অন্যতায় জুলুমের শিকার তীব্র থেকে তীব্রতর আকার ধারণ করবে।যখন জুলুম তীব্র আকার ধারণ করবে তখন প্রতিহত করা কঠিন হয়ে যাবে।
জালিমের জুলুম করার অব্যাসকে শেষ করতে হলে মজলুমের মনোবল বাড়াতে হবে।নিরবতাকে দুরে ঠেলে দিতে হবে ,ভয় ভীতি ছোড়ে ফেলে দিয়ে শক্তি অর্জন করতে হবে। সাহসের সাথে জালিমকে প্রতিহত করার কৌশল আয়ত্ত করতে হবে। পাশাপাশি জনসম্পৃক্ততা সৃষ্টি করতে হবে , সর্বপরি মহান আল্লাহর ওপর অটল বিশ্বাস রাখতে হবে। কারণ জালিমের জন্য মহান আল্লাহ সহায়ক নন মহান আল্লাহ মজলুমের সহায়ক । আল্লাহ তায়ালা কুরআনে কারিমে বলেন ‘জালিমদের জন্য কেউ দরদি হবে না,আর না এমন শাফায়াতকারী হবে না।’ [হজ্জঃ ৭৯]। জালিমের জুলুমের পরিণতি সম্পর্কে মহানবী সাঃ আরো বলেন, ‘যে ব্যক্তি এক বিঘত পরিমাণ জমিতে জুলুম করল কেয়ামতের দিন সাত তবক পরিমাণ জমিন তার গলায় লটকে দেয়া হবে।’ [বুখারি ও মুসলিম]।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:৩৮