জীবন ধারন এর প্রথমটি এখানে।
গল্পটি প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য নিজ দায়ীত্বে পড়লে ভাল হয়।
আগের পার্টটি না পড়লে আপনি গল্পের মেসেজ বুঝতে ব্যর্থ হবেন।প্রথমটি আগে পড়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
হঠাৎ ঘুমে ভেঙ্গে গেল জেরিনের।মোবাইলে ঘড়ি দেখল মাত্র নয়টা বাজে।মালবোরোর প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে বাসি মুখে খুব আয়েস করে সিগারেটটা ধরাল। পাশে ড্যানি বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। কাল হুইস্কির পরিমানটা একটু বেশী হয়ে গিয়েছিল। রিজেন্সিতে নাচানাচি পর্ব শেষ করে সোজা ড্যানির ফ্ল্যাটে। না এসেও উপায় ছিল না। ড্যানি সবার সামনেই যা শুরু করেছিল জেরিনকে আসতেই হল। থার্ডি ফাষ্ট নাইটটা সত্যিই জেরিনের অনেক ভাল কেটেছে। ড্যানি পারেও বটে। অস্ট্রেলিয়া থেকে এসেছে সপ্তাহখানেক।বড় দিনের ছুটিতে। এর মধ্যেই প্রায় পুরোটা সময় কাটিয়েছে জেরিনের সাথে।
সিগারেট শেষ করে জেরিন ভাবল যাওয়া দরকার। যদিও বাসায় মা-বাবা নাই। তার এখন আমেরিকাতে আছেন। কিন্তু তবুও যাওয়া দরকার। ভার্সিটি যেতে হবে। রুবেলকে আবার বলেছে বিকালে ভার্সিটি যাবে।পরনের টি শার্ট, শর্টস খুলে জিনস এবং টি শার্ট পড়ে নিল জেরিন। বের হওয়ার আগে ঘুমন্ত ড্যানির মুখে আলতো করে চুমু খেতে গেলেই ড্যানি ধরে ফেলে জেরিনকে?
-কই যাও?
-তুমি জাগা? বাসায় যাব ডিয়ার
-ওহো না বলে হেচকা টানে জেরিনকে বুকে নিয়ে আসল ড্যানি।
-না ডিয়ার পরে এখনা যাব “জেরিন ছুটতে চেষ্টা করল। কিন্তু একবার যখন ধরার অধিকার দিয়েছে তখন কি আর চাইলেই ছুটে যাওয়া যায়। “অসভ্য” বলে নিজের অনুমতি দিয়ে দিল জেরিন। সকালে আর তার বাসায় যাওয়া হল না।
জেরিন ঢাকার নামি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। বাবা শহরের সেরা ধনী না হলেও তালিকায় আছে। নিজেকে সবসময় নিজের মত করে চালিয়েছে জেরিন।ইন্টারমেডিয়েট থেকে সে বুঝতে পেরেছে সে অনেক সুন্দরী। স্কুল থেকে সুন্দরী ছিল তবে সেটা বুঝে উঠার সময় পায়নি। জেরিনের সুখ তার বন্ধুত্বে। বরাবরই সে এসব বিষয়ে উদার। প্রথম প্রেম নিয়ে জেরিনের ভ্রুক্ষেপ নেই। কাকে প্রথম ভালবেসেছিল জেরিনের মনে নেই। আসলে ভাবার সময় বা কোথায়? সকালে নিলয় বাসা থেকে নিয়ে যায় তার বাইকে করে। নিলয় আগের রাতে ফোন করে বলে দেয় “কাল কিন্তু তুই তোর গোলাপি টাইট টি-শার্টটা পড়বি” স্পষ্ট সেক্সুয়াল ইঙ্গিতে পুরোটাই সায় দেয় জেরিন। সায় দেয়ার অবশ্যই কিছু নেই। নিলয়ের সাথে হাজারবার বিভিন্ন অভিজাত হোটেলে একান্ত সময় কাটিয়েছে জেরিন।জেরিন জানে মোটরবাইকে নিজের গোলাপি টিশার্ট ভেদ করে একটি সেক্স জার্নি হয়ে যাবে।হোক জেরিন ব্যাপারটা খুব উপভোগ করে। বিশেষ দিন ছাড়া নিলয়কে দুপুরের পর আর পাওয়া যায় না। সে তখন অন্যকোন মেয়ের সাথে কোন বারে একান্ত সময় কাটাচ্ছে, যেরকমটা প্রায় কাটায় জেরিন।তবে হ্যাঁ প্রথম কে তার শরীরে হাত দিয়েছিল তা স্পষ্টই মনে আছে।
ইন্টারমেডিয়েটে ভর্তি হওয়ার প্রথম বছরে পরিচয় হয়েছিল রাকিবের সাথে। ছোট ছোট চুলের সুদর্শন রাকিব অন্য সেকশনে পড়ত। জেরিনের আগ্রহেই দুজনের প্রেম হয়ে যায়। জেরিনের গাড়ী পার্কিয়ে রেখে ভিতরে অনেক দিনই দুজন উত্তেজনা বিনিময় করেছে। কিন্তু এভাবে আর কতদিন? রাকিবের বাবা-মা হজ্বে গেলে খালি বাসায় প্রথমবার জেরিন নিজেকে রাকিবের কাছে দেয়,রাকিবও সাদরে গ্রহন করে। কালের স্রোতে অথবা জেরিনের জীবনে নরস্রোতে রাকিব হারিয়ে যায়। অবশ্যই রাকিব ছিল মধ্যবৃত্ত ঘরের ছেলে। এই টাইপের ছেলে-মেয়েদের সাথে জেরিনের মিশতে ভাল লাগে না। এরা সেক্সে আগ্রহী কিন্তু কাপড় খুলতে ভয় পায়। মধ্যবিত্ত মেয়েরা বেশী খারাপ। সব এক একটা ক্ষেত। জীবনটাকে নিজের পরিবারের ভিতর বন্দী করে রাখে। নিজের মত করে জীবন চালাতে পারে না।
বিকালে জেরিন তাই অন্যকোন বন্ধুকে খুজে নেয়। সীমান্ত,আদিত্য,জহীর,তমাল এদের যে কাউকে ডাকলেই হাজির। অথবা তারা নিজেরাই জেরিনকে পেতে চায় সিসা লাউন্জের আলো আঁধারিতে।
ড্যানি আসার পর বিপদ হয়েছে। এই ছেলে কিছুতেই ছাড়তে চায় না। এদিকে জেরিনের অন্য বন্ধুগুলো দিন দিন ভয়াবহ রেগে যাচ্ছে। নিজেরও কিছুটা খারাপ লাগছে তবে আনন্দযে কম তা কিন্তু না। ড্যানি দেশে বেশীদিন থাকবে না।তাই ড্যানিকে বেশী সময় দিতে হচ্ছে।
সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে জেরিন গোসল করে ফ্রেশ হল। একেবারেই নগ্ন হয়ে অবাক দৃষ্টিতে আয়নায় নিজের শরীরের দিকে তাকিয়ে থাকল।নিজেইতো নিজের শরীরে প্রেমে পড়ে গেল তাহলে আর ওদের কি দোষ।নিজের ভাবনাতে বাঁধা দিল মোবাইলের রিংটোন। নিলয়ের ফোন। জেরিন রিসিভ করে “ হাই বেবস”
-হ্যালো সেক্সি পাখী। সকালে কই ছিলি। ফোন দিলাম ধরলি না।
-ছিলাম ড্যানির সাথে।
-ওয়াও ওয়াও। আমার জন্য কিছু রাখিস।
-যা চুপ ষ্টুপিড।
-তুই ফ্রি থাকলে চল ঢাকা শহর বাইকে চক্কর দিয়ে আসি।
-২০ মিনিট পর বাসার নিচে এসে ফোন দিস।
নিলয় কিছু একটা বলতে চাইল। জেরিন থামিয়ে দিয়ে বলল “টি শার্টতো….হুমম মনে আছে বেবী”
-গুড গার্ল।
এভাবেই জেরিনের একেকটা দিন যায়। বাইকে চক্কর শেষে কখনো শিশা লাউন্ড,কখনো বা কম দামি গাজা( জিনিসটা গরীবের হলেও ভাল কাজ দেয়), কখনো বা দামি কোন বারে গিয়ে মদ।সঙ্গে দুজনের শাররীক কামনাগুলো বিনিময়তো আছেই। কামনার স্রোত যেদিন বেশী সেদিন কোন ফাঁকা ফ্ল্যাট অথবা নগরীর কোন দামি হোটেলের সুন্দর বিছানায় কামনাগুলো সুখ নামে জন্ম দিয়ে আসে।
৫ বছর পর।
আজ জেরিনের বিয়ে। এই নিয়ে জেরিনের তৃতীয় বিয়ে। তেমন কোন অনুষ্ঠান নেই। প্রথমবার বেশ ঝাঁকজমক করেই হয়েছিল। কিন্তু এটা একেবারেই দ্বায়সারা ভাবে হচ্ছে।দু বছর আগে জেরিনের প্রথমবার বিয়ে হয়েছিল সফটওয়্যার ব্যবসায়ী আসাদ আলীর সাথে। জেরিনের সাথে আসাদের কোনভাবেই মিলছিল না।আগের সম্পর্ক নিয়ে ঝগড়াতো ছিল। ছয়মাসের মাথায় ডিভোর্স হয়ে যায়। তারপর প্রায় বছর খানেক জেরিন স্বাধীন জীবন যাপন করে। কিন্তু ড্যানি দেশে ফেরার পর সব জেনেও ড্যানি তাকে বিয়ে করে। প্রেমে অনেক কিছু করা যায়। পুরুষ মানুষ প্রেম করে হাজারটা মেয়ের সাথে সেক্স করতে পারে কিন্তু বিয়ের পর সে কথা ভুলে গিয়ে “১ নম্বর মেয়ে” চায়। তাই শেষ পর্যন্ত জেরিনে ড্যানির সাথে তিন মাসের বেশী সংসার করতে পারলো না। এক সময় প্রথম প্রেমের কথা মনে না করতে পারা জেরিন হঠাৎ করেই ড্যানিকে নিজের প্রেম ভেবেছিল। কিন্তু খুব বেশী দেরী হয়নি ভুল ভাঙ্গতে।
সাবেক ফ্রেন্ডরা এখনো কামুক দৃষ্টিতেই জেরিনকে দেখে। বিশেষ উত্তেজনা ব্যাতিত কোন বন্ধু জেরিনকে ফোনও দেয় না।কারো দোষ ধরার কোন পথ জেরিনের কাছে নেই।৩য় বিয়ে করে হয়ত সে জীবনকে নতুন করে খুজে পাবে। যা পায়নি জরিনা। দুজনের জীবনের (গল্পে) মৌলিক বিষয় শরীর নির্ভর।তবে ভিন্ন প্রয়োজনে। প্রথম জনকে আমরা পতিতা হিসাবেই জানি, সমাজে সে কখনই স্বীকৃতি পাবে না। ২য় জনের স্বীকৃতির কোন প্রয়োজন নেই।কারন সে কখনই ঠোটে উটকো লিপিষ্টিক মাখবে না, শরীর থেকে সস্তা মেকআপের গন্ধও আসবে না।পুলিশও সুযোগ নিবে না। সবচে বড় কথা সমাজ আসলে তার কাছাকাছি পৌছবে না।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১:১১