somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ডেন্টিস্টের দাতের করুন দশা ( রম্যগল্প)

১১ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ১:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আখ দেখে লিমনের দাতের কথা মনে পরে গেল। আখ হচ্ছে উন্নতমানের প্রাকৃতিক দন্ত পরিস্কারক। লিমন গত আড়াইদিন যাবৎ দাত মাজেনি। সে সাধারনত দাতের খুব যত্ন নেয়। তবে গত আড়াইদিন দাত না মাজার কারন হল লাকি। পুরো নাম ইসমত আরা লাকি। মায়ের নামের সাথে মিল করে রাখা নাম। লাকির মায়ের নাম ইসমত আরা বানু।  লাকি একজন উদীয়মান ডেন্টিস্ট। লিমনের প্রেমিকা। আধুনিকভাবে বলতে গেলে লিমনের গার্ল ফ্রেন্ড। লিমনের সাথে লাকির অন্যতম মিল হচ্ছে নামের প্রথম অক্ষর। এ ছাড়া তাদের বৈশিষ্ট পৃথিবীর এ প্রান্ত আর ও প্রান্তের মত বিপরীত। লাকি খুবই সময়নিষ্ঠ,দায়িত্ববান একটা মেয়ে অন্যদিকে লিমন সময় অনিষ্ঠ ও অদায়িত্ববান একটা ছেলে। তারপরও আশ্চর্যজনকভাবে তাদের মধ্য প্রেমের সম্পর্ক। তাদের প্রেম দেখে মনে হয় বিপরীত চার্জের মত হয়ত বিপরীত চরিত্রও একে অপরকে আকর্ষন করে। তাই হয়তো দুই বিপরীত চরিত্রের লিমন আর লাকির মধ্য প্রেম। আড়াইদিন আগে লিমনের সাথে এই ডেন্টিস্ট লাকির কোন এক তুচ্ছ কারন নিয়ে ঝগড়া হয়। তখন কোন এক পর্যায়ে লাকি বলে, তোমাকে আমি আর জীবনেও ফোন দেব না। তখন লিমন বলে,তুমি যতক্ষন পর্যন্ত ফোন না দিবে ততক্ষন পর্যন্ত আমি দাত মাজব না। একজন ডেন্টিস্টের জন্য আসলেই এটা একটা বড় হুমকি। ডেন্টিস্টের কাজ জাতির দাত ঠিক রাখা। আর সেখানে যদি সেই ডেন্টিস্টের কারনেই একজন নিরপরাধ নাগরিকের দাত হুমকির মুখে পরে তবে তা আসলেই দুঃখজনক। অবশ্য দুর্নিতীবাজ ডেন্টিস্টরা চাইবেই যে জনগন দাতের সমস্যায় ভূগুক আর তাদের কাছে আসুক চিকিৎসার জন্য। যেমন কিছুদিন আগে হরতালের মধ্য এক দাতের ডাক্তার রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমান চিকিৎসা কেন্দ্র দিয়ে বসে চিকিৎসা করানোর জন্য। তারকাছে অনেক পিকেটার এবং পুলিশ আসে চিকিৎসা নিতে। রুগী যেখানেই আহত হোক না কেন সেই ডাক্তার আগে রুগীর দাত পরিক্ষা করত। পিকেটারদের আবার বুদ্ধি দিত যেন তারা কাউকে মারলে দাতের উপর মারে। তার উদ্দেশ্য দাতে মারলে তার রুগীর সংখ্যা বাড়বে আর একস্ট্রা মাল কামানো যাবে। কিন্তু লাকি সেরকম না। সে একজন আদর্শবান ডেন্টিস্ট। লাকি মন থেকেই চায় জাতি অন্য যে কোন রোগে মারা গেলেও যেন দাতের রোগে মারা না যায়।একজন আদর্শবান ডেন্টিস্ট হিসেবেই হোক অথবা একজন আদর্শবান প্রেমিকা হিসেবেই হোক লাকি লিমনকে আজ সকালে ফোন দেয়। দীর্ঘ সময় পর ফোন পেয়ে লিমন আনন্দে নয়খানা হয়ে যায়। সে ঘুম থেকে উঠেই রওয়ানা করে লাকির চেম্বারে। পথিমধ্য ইক্ষুর পসরা দেখে সে দাড়িয়ে পরে। আখ হচ্ছে তার অপছন্দের খাবারের তালিকায় অন্যতম। বাঁশের মত একটা জিনিস চিবাইলে মিষ্টিরস বের হয়। কী অদ্ভূদ খাবার! আচ্ছা আঁখ কী ফল না-কী সবজি? এটা কোন দলে?লিমন চিন্তা করতে করতেই পাঁচ টাকা দিয়ে এক খন্ড আখ কিনে ফেলে। আখ খাওয়া তার মূল উদ্দেশ্য না,তার মূল উদ্দেশ্যে দাত পরিস্কার করা। বাহ্! দাততো খুব সুন্দর পরিস্কার হইছে! একেবারে ঝকঝকা-ফকফকা। হাসলে আলো রিফ্লেক্ট করে। হঠাৎ করে একলোক আখের দোকান থেকে একটা আখ নিয়ে আরেকজন লোকের মাথায় বারি মারে। তাদের মধ্য ঝগড়া হচ্ছিল এতক্ষন তাই হাতের কাছে কিছু না পেয়ে বাঁশ সাইজের আখ দিয়েই মারামারি শুরু করে। আশ্চর্য হলেও সত্য আখের বারি খেয়ে একলোকের মাথা ফেটে যায়। আখের রস আর মাথার রস(রক্ত) মিলে সে এক শরবত শরবত অবস্থা। লিমন আখ দিয়ে এই মারামারি খুব উপভোগ করে। যাহোক লিমন রওয়ানা দেয় লাকির সাথে দেখা করার জন্য। সাথে নিয়ে যায় এক টুকরা আখ। লাকির সাথে দেখা হয়। লাকি প্রথমেই তাকে বলে,দাত না মেজে রুমে ঢোকা নিষেধ। লিমন একটা নিম মাজন টাইপ হাসি দেয়।লিমনের দাত থেকে আলো প্রতিফলিত হয়ে লাকির চোঁখে পরে। আর এতেই লাকি বুঝতে পারে লিমনের দাত পরিস্কার। লিমন লাকির চেম্বারে ঢুকেই লাকির হাতে আখের টুকরাটা দিয়ে বলে,'আখ খাও,দাতের জন্য খুবই উপাদেয় খাবার'। লাকি আখের ব্যাপারটা উপেক্ষা করে রাগান্বিত স্বরে জিঙ্গেস করে,তুমি কি সত্যি সত্যি এই দুইদিন দাত মাজনি! লিমন এবার পেপসোডেন্ট মার্কা হাসি দিয়ে বলে,না। লাকিতো আরো রেগে যায়। রেগে গিয়ে লিমনের হাত থেকে বাঁশ সদৃশ আখটা নিয়ে যায়।লিমন কিছুটা ভয় পেয়ে যায় আখ দিয়ে মারামারির কথা মনে করে। না জানি আবার তার মাথার রস দিয়েও শরবত বানানো হয়! কিন্তু আখ হাতে নিয়ে লাকি তার ট্রেড মার্ক হাসি দিয়ে আখে কামড় বসায়। সঙ্গে সঙ্গে উহ! করে চিৎকার করে উঠে লাকি। তার পুরো মুখ রক্তে ভরে যায়। তার মাড়ির একটা দাতের ভিত্তি কিছুটা দুর্বল হয়ে যায়। দাতটা নড়তে থাকে। তার মোটামুটি কিছুদিনের জন্য দাত মাজা নাজায়েজ হয়ে যায়। লিমন মনে মনে হাসে একজন ডেন্টিস্টের দাতের করুন দশা দেখে। তবে উপরে উপরে খুব দুঃখ প্রকাশ করে। আসলে আখের দোকানের পাশেই আরেক লোক নলি বাঁশ বিক্রি করতে ছিল। ঐ নলি বাঁশ দেখতে প্রায় আখের মত। রংও সবুজ, একেবারে কাঁচা বাঁশ। লোকজনের মারামারির কারনে বাঁশ আর আখ উলট-পালট হয়ে যায়। লিমন সেই বাঁশকেই আখ মনে করে কিনে নিয়ে আসে। আর তাতেই......
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুন, ২০১৫ দুপুর ১:০৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বরিষ ধরা-মাঝে শান্তির বারি

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:১৬





মাসের আধিক কাল ধরে দাবদাহে মানব প্রাণ ওষ্ঠাগত। সেই যে অগ্নি স্নানে ধরা শুচি হওয়া শুরু হলো, তো হলোই। ধরা ম্লান হয়ে, শুষ্ক হয়, মুমূর্ষ হয়ে গেল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সমস্যা মিয়ার সমস্যা

লিখেছেন রিয়াদ( শেষ রাতের আঁধার ), ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

সমস্যা মিয়ার সিঙ্গারা সমুচার দোকানে প্রতিদিন আমরা এসে জমায়েত হই, যখন বিকালের বিষণ্ন রোদ গড়িয়ে গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে, সন্ধ্যা পেরিয়ে আকাশের রঙিন আলোর আভা মিলিয়ে যেতে শুরু করে। সন্ধ্যা সাড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই মুহূর্তে তারেক জিয়ার দরকার নিজেকে আরও উন্মুক্ত করে দেওয়া।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৬ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৬


তারেক জিয়া ও বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আমি ব্লগে অনেকবারই পোস্ট দিয়েছি এবং বিএনপি'র নেতৃত্ব সংকটের কথা খুব স্পষ্টভাবে দেখিয়েছি ও বলেছি। এটার জন্য বিএনপিকে সমর্থন করে কিংবা বিএনপি'র প্রতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×