somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আল্লাহ্‌র অস্তিত্বঃ আস্তিক ও নাস্তিকের যুক্তিতর্কঃ আমার উপলব্ধি -৩

০৪ ঠা জুন, ২০১২ দুপুর ১:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

بسم الله الرحمن الرحيم

قَالُوا سُبْحَانَكَ لَا عِلْمَ لَنَا إِلَّا مَا عَلَّمْتَنَا إِنَّكَ أَنْتَ الْعَلِيمُ الْحَكِيمُ (32(
তারা বলল,আপনি মহান পবিত্র,আপনি আমাদের যা শিক্ষা দিয়েছেন তাছাড়া আমাদের তো কোন জ্ঞানই নেই,নিশ্চয়ই আপনি মহাজ্ঞানী,অতিশয় প্রজ্ঞাময়।" (বাকারা:৩১-৩২)


১ম পর্ব ২য় পর্ব আগে পড়ে আসতে হবে

হ্যাঁ, যা বলছিলাম, এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো এই যে,
ধরুন আপনি একটি রুমে বসে আছেন ,মাথার উপরে ফ্যান ঘুরছে, ফ্যানের বাতাসে পর্দা নড়ছে। দেখুন, পর্দা কেন নড়ছে? ফ্যান ঘুরার কারণে। ফ্যান কেন ঘুরছে? কারেন্ট প্রবাহিত হওয়ার কারণে। কারেন্ট কেন প্রবাহিত হলো ? কোন যন্ত্রের মাধ্যমে এটাকে তারের ভিতর দিয়ে পাঠানো হয়েছে। দেখুন পর্দা এক জিনিষ, আর সেটার নড়ার কারণ যে ফ্যান সেটা আরেক জিনিষ; ফ্যান এক জিনিষ, আর সেটা ঘুরার কারণ যে কারেন্ট সেটা আরেক জিনিষ; এভাবে কারেন্ট যে যন্ত্রের মাধ্যমে পাঠানো হলো সেটা আরেক জিনিষ ।এজন্যই পর্দার ক্ষেত্রে যেভাবে প্রশ্ন করা হচ্ছে ফ্যানের ক্ষেত্রে সেভাবে প্রশ্ন করা হচ্ছে না, ফ্যানের ক্ষেত্রে যেভাবে প্রশ্ন করা হচ্ছে কারেন্টের ক্ষেত্রে সেভাবে প্রশ্ন করা হচ্ছে না।পর্দার ক্ষেত্রে বলছি নড়ে কেন, কিন্তু ফ্যানের ক্ষেত্রে বলছি ঘুরে কেন, এই উদাহরণের জিনিষগুলো সম্পর্কে আমি আপনি জানি বলেই যেভাবে প্রশ্ন করা সাজে ঐভাবেই আমরা প্রশ্ন করছি।আবার দেখুন, ধরুন আপনি কারেন্ট সম্পর্কে কিছু জানে না এমন একজন লোককে বললেন যে, ফ্যান ঘুরছে কারেন্টের কারণে। তখন কিন্তু এই লোকটা কারেন্ট সম্পর্কে অন্য কোন উল্টাপাল্টা প্রশ্ন না করে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করবে কারেন্ট কি জিনিষ। আগে সে কারেন্টের প্রকৃতি বুঝতে চেষ্টা করবে। এটাই সাধারণ কমন সেন্সের দাবী। সুতরাং এই মহাবিশ্ব, স্থান এবং সময় যে কারণে অস্তিত্ব লাভ করলো সেই কারণটি সম্পর্কে অন্য কোন উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করার আগে আমাদের জানতে হবে সেই কারণটির প্রকৃতি কি।কি রকম প্রশ্ন তার ক্ষেত্রে মানায়। কিন্তু যেই কারণটি স্থান ও সময়কে তৈরী করেছে; ফলে সেই কারণটি স্থান ও সময়ের গণ্ডীতে আবদ্ধ নয় অর্থাৎ যাঁর কাছে অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যত বলে কিছু নেই, যাঁর কাছে নিকট দূরে বলে কিছু নেই এমন চিন্তার ঊর্ধ্বের সত্তার প্রকৃতি সম্পর্কে আমরা যারা সময় ও স্থানের গন্ডীতে আবদ্ধ তারা কিভাবে জানব, কিই বা বুঝবো; যেখানে আমরা বস্তু জগতের অনেক কিছুর প্রকৃতি সম্পর্কেই ঠিকমত বুঝতে পারিনা ; অনেক সময় বুঝেছি মনে হলেও কিছুদিন পরে দেখা যায় সেটা ভুল। হ্যাঁ, একটা উপায় আছে; তিনি নিজেই যদি আমাদেরকে জানিয়ে দেন তাহলে সম্ভব। প্রশ্ন হলো তিনি আমাদেরকে কিভাবে জানাবেন? তার সাথে যোগাযোগ করার কি কোন উপায় আছে? নাকি তিনি ইতিমধ্যে কাউকে জানিয়ে দিয়েছেন, এদিকে আমাদের খবর নাই। এখানেই আসে তাঁর মেসেঞ্জার তথা নবী রাসুলদের কথা। যাইহোক এটা আলাদা বিষয়।তো আমি মোট তিনটি আঙ্গিকে বুঝাতে চেষ্টা করলাম যে,আল্লাহকে কে সৃষ্টি করলো এই প্রশ্নটি একেবারেই অবান্তর,অযৌক্তিক।প্রিয় পাঠক আপনি কি জায়গা তিনটি ধরতে পেরেছেন ?{অবশ্য গাছ তোমার পরিচয় কি? ফলে পরিচয়।কর্ম থেকেও কিছুটা বুঝা যায় কর্মী কেমন।}

এখানে আরেকটি বিষয় হলো এই যে , আস্তিক নাস্তিক তর্কের শুরুতেই আলোচনাটা নিয়ে যাওয়া হয়েছে মহাবিশ্বের একটা শুরু আছে কি নাই সেদিকে।হায়রে মানুষ! এই বিরাট মহাবিশ্বের এক কোণে অতি কোণে অতি ক্ষুদ্র এক বালুকণার মত পৃথিবীতে বাস করে সে পুরা মহাবিশ্বের প্রকৃতি উদ্ঘাটন করতে চাচ্ছে।অবশ্য চেষ্টা করা খারাপ না।খারাপ হলো অপ্রমাণিত
ও ধরে নেয়া বিষয়গুলোকে এমনভাবে বলা যে এগুলো নিশ্চিত এবং......... যাইহোক, আলোচনাটা মহাবিশ্বের দিকে ঘুরিয়ে দেয়ার কারণে আলোচনা জটিলতার দিকে এগিয়ে যায়। আস্তিক নাস্তিক এটা চিন্তা করলো না যে, আরে আমিই তো একসময় কিছু ছিলাম না। এটাতো বাস্তব, সবার চোখের সামনে।আমার শরীরের এই জড় পদার্থগুলো দিয়ে কে আমাকে বানালো এত জটিল কারুকার্য করে?শরীরের এতগুলো সিস্টেমের মাঝে এমন বিস্ময়কর সমন্বয় সাধন করে কে আমাকে তৈরী করলো? ধরুন, আপনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছেন, দেখলেন এক জায়গায় কিছু ইট রাখা আছে।কিছুক্ষণ পর আবার যাওয়ার সময় দেখলেন যে, ইটের সাজানো স্তুপ থেকে কিছু ইট পরে গেছে এলোমেলো ভাবে। তখন আপনি কি বলবেন? যে, হয়ত কেউ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে, বা জোড়ে বাতাস বয়েছে বা কোন গাড়ী ধাক্কা দিয়েছে ইত্যাদি। দেখুন কোন পাগলেও কিন্তু বলবে না যে, এমনি এমনি পরে গেছে। সবাই বলবে যে, কোন একটা কারণ বা শক্তি এখানে কাজ করেছে। আবার দেখুন, যদি আপনি দেখেন যে কিছু ইটতো নীচে পরে আছে, কিন্তু সেগুলো একটার উপর আরেকটা রেখে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। এখন আপনি কি বলবেন? যে, এবার শুধু শক্তিই কাজ করেনি, শক্তির সাথে বুদ্ধিও কাজ করেছে। কেননা কোন জড় বস্তু নিজে নিজে কিছু করতে পারেনা, কোন অগোছালো বিশৃঙ্খল কিছু নিজে নিজেই সাজানো গোছানো বা সুশৃঙ্খল হতে পারেনা। এটা কমন সেন্সের ব্যাপার। হঠকারী, জ্ঞানপাপী ছাড়া এটা কেউ অস্বীকার করতে পারেনা।করলে জাহান্নামের লেলিহান অগ্নিশিখাই হতে পারে তার চিকিৎসা। আবার দেখুন, যদি আপনি দেখেন যে, ঐ পরে যাওয়া ইটগুলো দিয়ে ছোট একটা ঘড় বানানো আছে, তখন আপনি একথা বলতে পারবেন যে, কোন বাচ্চা হয়ত এই ঘরটি বানিয়েছে। কিন্তু যদি দেখেন যে একটু বড় ঘর এবং একটু জটিল ঘর বানানো আছে। তখন কিন্তু আপনি বলবেন যে একটি ছোট বাচ্চাতো এরকম ঘর বানানোর শক্তিও রাখেনা, বুদ্ধিও রাখেনা। নিশ্চয়ই কোন বড় মানুষ এটা বানিয়েছে। তো ঘরটি যত সুন্দর ও জটিল হবে সেটা যে বানিয়েছে সে যে তত বুদ্ধিমান এটা প্রমাণ হবে। এবার আপনি নিজের সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা করুন, আশেপাশের গাছপালা, ফুল-ফল নিয়ে চিন্তা করুন, প্রকৃতির জটিল সব নিয়ম ও চক্রগুলো নিয়ে চিন্তা করুন, গ্রহ নক্ষত্রের সুশৃঙ্খল ঘূর্ণন নিয়ে চিন্তা করুন যে এই জড় বস্তুগুলোর মাঝে এত সূক্ষ্ম সব নিয়ম, এত সৌন্দর্য, এমন অপূর্ব শৃঙ্খলা, এমন অকল্পনীয় সমন্বয় আগে ছিলো না পরে হয়েছে। এগুলো কখনো এক বিরাট শক্তিময় ও মহাজ্ঞানী সত্তা ছাড়া এমনি এমনি হতে পারেনা।{দেখুন এই লিংকে, এই লিংকে ,এই লিংকে , এই লিংকে , এই লিংকে , এই সুন্দর লিংকে ,GOD Arises: Evidence Of God In Nature & Science
, এই লিংকে , and this excellent site ,
এই লিংকে }

দেখুন, চিন্তাশক্তি বিহীন, পরিকল্পনাশক্তি বিহীন কিছু জড় বস্তু এমনি এমনি সুশৃঙ্খল হয়ে যাবে এটা হওয়াতো দূরের কথা বুদ্ধিবিশিষ্ট , চিন্তা ও পরিকল্পনাশক্তি বিশিষ্ট কিছু মানুষও এটা পারেনা। অলিম্পিক বা বিশ্বকাপ উদ্বোধনের আগে যে ডিসপ্লে দেখানো হয় , কিছু মানুষ মিলে ফুলের আকৃতি হয়ে যাচ্ছে বা অন্য কিছুর অথবা কোন বিদেশী প্রধানমন্ত্রী আসলে যে সেনাবাহিনীর সদস্যরা মার্চ করে তাদেরকে অভ্যর্থনা জানায়; এগুলো কি পরিকল্পনা ছাড়া হয়, একদিনেই তারা এগুলো দেখাতে পারে? না, বরং এরজন্য মাথা খাটিয়ে, পরিকল্পনা করে অনেকদিন ধরে অনুশীলন করতে হয় , পুরা ব্যাপারটি বাইরে থেকে প্রশিক্ষকদেরকে পর্যবেক্ষণ করতে হয় , কেননা কোথায় কে ভুল করছে তা যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে তারা কিন্তু বুঝতে পারে না (সবসময়) । তাহলেই দেখুন, এখানে প্রতিটি সদস্য বুদ্ধিমান, চিন্তা করতে পারে, পরিকল্পনা করতে পারে,দেখতে পারে,শুনতে পারে,কথা বলতে পারে, আশেপাশে কি হচ্ছে না হচ্ছে তা উপলব্ধি করতে পারে ;তথাপিও তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না কোন প্রশিক্ষকের প্রশিক্ষণ ছাড়া বিনা পরিকল্পনায় কোন সুশৃঙ্খল কিছু দেখানো অথচ মানুষের দেখানো এই ডিসপ্লে বা মার্চ তেমন জটিল কিছু নয়, সৃষ্টি জগতের শৃঙ্খলার, জটিলতার তুলনায় একেবারেই অতি তুচ্ছ সাধারণ বিষয়। তাহলে দেখুন, প্রকৃতির এই সকল জড়বস্তু যেগুলো না চিন্তা করতে পারে,না পরিকল্পনা করতে পারে,না দেখতে পারে,না শুনতে পারে,না কথা বলতে পারে,না কোন কিছু উপলব্ধি করতে পারে;এমনি এমনি পরিকল্পনা ছাড়া, বিশৃঙ্খলভাবে সজ্জিত হয়ে এত জটিল,সূক্ষ্ম, বিস্ময়কর, সুশৃঙ্খল সব সিস্টেম কিভাবে হতে পারে। এটা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। এটা একেবারেই সাধারণ কমন সেন্সের বিষয়।এটা স্বতঃসিদ্ধ বিষয়।এটা কোন যুক্তি প্রমাণ দিয়ে সাব্যস্ত করার বিষয় নয়।প্রমাণ ছাড়াই এটা প্রমাণিত। এটা অস্বীকার করাই হলো সবচেয়ে বড় মূর্খতা,অযৌক্তিকতা ,হটকারিতা। বিজ্ঞানের বিরাট প্রাসাদ এমন কিছু স্বতঃসিদ্ধ বিষয়ের উপর দাঁড়িয়ে আছে।এরা যেন নির্বুদ্ধিতায় প্রাচীনকালের মূর্তি পূজারীদেরকেও হারিয়ে দিলো;যারা নাকি জড় মূর্তিকে নিজেদের সুখদুঃখের ও লাভক্ষতির মালিক মনে করতো।কিন্তু দেখেন কারবার,যাকে বলে,চোরের মার বড় গলা ;উল্টো তারাই আমাদেরকে বলে যে,আমরা নাকি যুক্তি ছাড়া না দেখে আল্লাহকে বিশ্বাস করি।এটা দেখা বা না দেখার কোন বিষয় নয়।অতি সহজ,সাধারণ কমন সেন্সের বিষয়;এটা দেখার চেয়েও বেশী, যুক্তির চেয়েও বেশী ।দেখুন,আপনি যদি কোথাও দেখেন যে একটি খেলনা গাড়ী চলতেছে;তখন কিন্তু আপনি না দেখলেও অতি অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত নিবেন যে কেউ এটা আড়াল থেকে রিমোট কন্ট্রোলার দিয়ে চালাচ্ছে।আপনি এখানে কমন সেন্সকে চোখের উপর প্রাধান্য দিবেন।দেখুন আমি হয়ত উপমাটা ঠিক মত দিতে পারলাম না, কিন্তু আপনি যদি সত্যান্বেষী হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিজেই একটা সুন্দর উপমা আপনার জীবন থেকে খুঁজে নিন, আমাকেও জানিয়ে দিন। আমি যেটা বুঝাতে চাচ্ছি সেটা হলো এই যে, কমন সেন্সের বিরুদ্ধে বা স্বতঃসিদ্ধ কোন কিছুর উল্টো কিছু যদি আমরা দেখি বা শুনি তাহলে আমরা কমন সেন্সকেই অগ্রাধিকার দেই এবং পরে দেখা যায় কমন সেন্সটাই ঠিক হয়। আলহামদুলিল্লাহ্‌। {{এখানে আরেকটি কথা বলা হয়ে থাকে যে,যদি কার্যকরণের ধারায় একের পর এক ঘটনা ঘটে নিজে নিজেই এই পৃথিবী বসবাসের উপযোগী হতো,তাহলে শুধু পৃথিবী কেন ,চন্দ্র,সূর্য এবং অন্যান্য গ্রহ-নক্ষত্রেও এমনি এমনি মানুষ টাইপের বুদ্ধিমান প্রাণীর উৎপত্তি হতো।এমনি এমনি সূর্যের মধ্যে সূর্যে বসবাস করার মত আগুনের তৈরী প্রাণীর উদ্ভব হইত।যাইহোক এটা একটা বাড়তি কথা।কারণ এমনি এমনিতো হয়ইনি।আর যদি সব গ্রহ নক্ষত্রে বসবাস উপযোগী পরিবেশ ও প্রাণী থাকতও তবুও এটা প্রমাণ হতোনা যে,এমনি এমনি হয়েছে।তখন আরো বেশী করে প্রমাণ হতো যে একজন সৃষ্টিকর্তা আছেন।}}আলহামদুলিল্লাহ্‌।

এখানে আরেকটি বিষয় খেয়াল করতে হবে যে,উপমা আর প্রমাণ এক জিনিষ নয়।উপমা দিয়ে কোন কিছু প্রমাণ হয় না,বরং,সাধারণত উপমা দিয়ে এমন একটি বিষয়কে অধিক স্পষ্ট করা হয় যেটা আগেই স্বতন্ত্র দলীলের আলোকে প্রমাণিত ।এখন তাহলে আপনি বলবেন যে ,উপরে তো আপনি শুধু উপমাই দিলেন-একবার ইটের উপমা দিলেন,এরপর ডিসপ্লের উপমা দিলেন,এরপর খেলনা গাড়ীর উপমা দিলেন।এইসব উপমা দিয়ে আপনি কোন বিষয়টি স্পষ্ট করলেন এবং সেই বিষয়টির স্বতন্ত্র দলীল-প্রমাণই বা কি? তাহলে আসেন এবার উপরের যুক্তি প্রমাণের অপারেশন করি। আসলে আমার মূল যুক্তিটি হল এরকমঃ

১- কিছু বিশৃঙ্খল জড় বস্তু নিজে নিজে সুশৃঙ্খল কোন সিস্টেম বানাতে পারেনা কোন শক্তিময়,বুদ্ধিমান কারণ বা সত্তার নিয়ন্ত্রণ ছাড়া।

২-আমরা নিজেরা,গাছপালা,ফুলফল,মাছপাখি,সুশৃঙ্খল এই পৃথিবী,সুশৃঙ্খলএই মহাবিশ্ব এগুলো শৃঙ্খলাহীন অবস্থা থেকে সুশৃঙ্খল হয়েছে।

৩- সুতরাং অবশ্যই এমন কোন শক্তিময়,বুদ্ধিমান কারণ রয়েছে যা এই বিশৃঙ্খল জড় বস্তুগুলোকে সুশৃঙ্খল করেছে,অগণিত কোটি কোটি বস্তু ও নিয়মের মাঝে অকল্পনীয় সমন্বয় সাধন করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি।

দেখুন গুছিয়ে না লেখতে পারলেও আশাকরি সত্যান্বেষী সবাই বুঝে নিয়েছেন আমি কি বুঝাতে চাচ্ছি।এখানে ১নং ও ২নং হলো আমার যুক্তির ভিত্তি।আর এই দুই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আমি ৩নং সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।দেখেন এই যুক্তির ২য় ধাপটি আমাদের সবার চোখের সামনে।আর ১ম ধাপটি হলো স্বতঃসিদ্ধ।আগেই বলা হয়েছে,এটা সাধারণ কমন সেন্স দিয়েই বুঝা যায়।এটার জন্য কোন আলাদা যুক্তি প্রমাণ লাগে না।কিন্তু নাস্তিকরা যখন এই স্বতঃসিদ্ধ বিষয়টাকে বুঝেশুনে গোঁড়ামি করে হোক বা কম বুদ্ধির কারণে হোক অস্বীকার করছে ,তখন তাদেরকে বুঝানোর জন্য এইসব উপমাগুলি আনা হয়েছে।বলা হচ্ছে যে , ভাই নাস্তিক তুমি যখন এই উপমাগুলোর ক্ষেত্রে কমন সেন্সের আলোকে মেনে নিচ্ছো যে, কিছু জড় বস্তু নিজেরা নিজেরা সুশৃঙ্খল হতে পারে না,কোন একটা সরল সিস্টেমও হতে পারে না তাহলে মানুষ, গাছপালা, ফুলফল, মাছপাখি ইত্যাদি এসবের ক্ষেত্রেও মেনে নাও যে এগুলোকে কোন শক্তিমান ও বুদ্ধিমান কারণ বা সত্তা এরকম সুন্দর ডিজাইন করে বানিয়েছে। কেননা উপমার বস্তুগুলোও প্রকৃতির উপাদান আবার মানুষ,ফুল-ফল যা দিয়ে তৈরী হয়েছে সেগুলোও প্রকৃতিরই উপাদান।সবই জড় বস্তু, সবই অনু পরমাণু, ইলেকট্রন, প্রোটন ইত্যাদি দিয়ে তৈরী। সুতরাং ,উপমার বস্তুগুলোর ক্ষেত্রে যেমন নাকি তুমি একজন ডিজাইনারকে,একজন পরিকল্পনাকারীকে বা পরিচালককে না দেখেও মেনে নিচ্ছো অতএব, মানুষ, ফুলফল, পৃথিবী, মহাবিশ্ব এসবের ক্ষেত্রেও একজন ডিজাইনারকে না দেখে মেনে নাও। আলহামদুলিল্লাহ্‌।
আবার দেখুন, বিজ্ঞানের এই চরম উন্নতির যুগেও মানুষ কিন্তু প্রকৃতির কোন কিছু এমনকি একটি গমের দানাও বানাতে পারেনি। দানা বানাবে দূরের কথা একটি কোষও বানানোর ক্ষমতা রাখেনা। তাহলেই চিন্তা করুন যেটা আমারা সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে, সর্বোচ্চ মেধা ব্যবহার করে বানাতে পারছিনা সেটা আবার এমনি এমনি হয়ে যায় কি করে? বিজ্ঞানীদের কৃত্রিম প্রাণ বানানোর গুজবটি এখান থেকে অবশ্যই পড়ে আসুন।

এখানে এসে কোন নাস্তিক বলতে পারে ,ভাই আপনি যে বললেন ,
" ভাই নাস্তিক তুমি যখন এই উপমাগুলোর ক্ষেত্রে কমন সেন্সের আলোকে মেনে নিচ্ছ যে, কিছু জড় বস্তু নিজেরা নিজেরা সুশৃঙ্খল হতে পারে না,কোন একটা সরল সিস্টেমও হতে পারে না তাহলে মানুষ, গাছপালা ......."
আপনার এই কথা ঠিক নয়। আমরা এটা, এইসব উপমার ক্ষেত্রে কমন সেন্সের আলোকে মেনে নেইনি বরং এ ব্যাপারে আমাদের পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে যে ইট নিজে নিজে সজ্জিত হয় না বা খেলনা গাড়ী নিজে নিজে চলতে পারে না। এই হিসাবে আমরা এটা মেনেছি। কিন্তু এই ফুলফল, গাছপালাকে আমরা কারো দ্বারা সৃষ্টি হতে দেখিনি।
নাস্তিকের এই কথার জবাব হলো এই যে, না , বরং আপনি কমন সেন্সের আলোকেই বুঝেছেন যে ইটগুলো এমনি এমনি সজ্জিত হতে পারেনা, খেলনা গাড়ী নিজে নিজে চলতে পারেনা। কেননা যার নাকি এসব ব্যাপারে পূর্ব অভিজ্ঞতা নাই সেও বুঝবে যে, ইটগুলো এমনি এমনি সজ্জিত হতে পারেনা, খেলনা গাড়ী নিজে নিজে চলতে পারেনা।

আর যদি না মানেন তাতেও সমস্যা নেই। তখন ব্যাপারটি এই দাঁড়াবে যে, কিছু ইটকে আপনি নিজে নিজে সজ্জিত হতে কখনো দেখেননি, সব সময় দেখেছেন যে কেউ সাজিয়ে রাখলে পরই সেগুলো সজ্জিত হয় । তাই এখন কিছু সাঁজানো ইট দেখে আপনি নিশ্চিত সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন যে, কেউ এগুলো সাঁজিয়েছে যদিও আমি তাকে দেখতে পাইনি। তো, এটাইত বলছি যে এই অভিজ্ঞতাটি নিজের এই শরীরের ক্ষেত্রেও ফিট করুন। ইট কেন নিজে নিজে সজ্জিত হতে পারে না? এই কারণেইতো যে এগুলো জড় বস্তু, বুদ্ধিহীন, চিন্তাশক্তিহীন। কিছু ইট যদি নিজে নিজে অতি সাধারণভাবে সজ্জিত হতে না পারে তাহলে অতিশয় জটিল এই মানবদেহ কিভাবে নিজে নিজে হবে ? সুতরাং এক্ষেত্রেও এটা মেনে নিন যে, এগুলোকেও কোন এমন কারণ ডিজাইন করে বানিয়েছে যেই কারণের প্রাণ আছে, বুদ্ধি আছে। সামনের লেখাটুকু পড়ে ব্লগার মেহেদী হাসান ভাইয়ের
মহাবিশ্বের সৃষ্টি এবং স্রষ্টার অস্তিত্ব (পর্ব ০১) এই পোষ্টটা এবং সেটার কমেন্টগুলো অবশ্যই পড়ে আসুন এবং উনার এই পুরা সিরিজটাই পড়ার মত।

জানি,যারা সাইন্সের বড় বড় বই পড়ে এবং সেইসব বইয়ের কঠিন কঠিন টার্ম পড়ে অভ্যস্ত তাদের কাছে হয়ত এই সহজ সরল যৌক্তিক কথাগুলো তেমন কিছু মনে হচ্ছে না। কারণ তারা কঠিন কঠিন শব্দ আর সূত্র পড়তে পড়তে নিজেদের মানসিকতাকে এমন অস্বাভাবিক করে ফেলেছে যে সহজ বিষয়টাকে সহজ করে তারা বুঝতে অপারগ, যতক্ষন না আপনি সেটা তাদেরকে কঠিন করে না বলবেন।যেন তাদের কাছে সত্যের মাপকাঠি হলো কোন একটা বিষয় বলতে গিয়ে কঠিন কঠিন টার্ম ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, গণিতের কঠিন সূত্রাবলীর প্রয়োগ তাতে হয়েছে কিনা। একটি কথা বলি- ভুল হতে পারে-আমারে আবার গালি দিয়েন নাঃ আপনারা অনেকেই আসলে ঐসব কঠিন বই পড়ার যোগ্যতা রাখেন না,এরপরও যখন পড়েন তখন বদ হজম হয়,ফলে আপনাদের স্বাভাবিক সুস্থ চিন্তাশক্তি নষ্ট হয়ে যায়।তখন যেটা নাকি সাধারণ কমন সেন্স দিয়েই বুঝা যায়, যেটা একটা বাচ্চাও বুঝে সেটাকে আপনারা কঠিন যুক্তির আলোকে বুঝতে চান,কিন্তু বেশীরভাগই ব্যর্থ হন, তখন নীচের মত প্রশ্ন করেন,
""শৈশব থেকে একটি সরল প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খেত, ধরা যাক সীমিত জ্ঞানের কারণে সৃষ্টিকর্তাকে খুঁজতে ব্যর্থ হই, যদি মনে বিশ্বাস আনতে চেয়েও বিশ্বাস খুঁজে না পাই তবে এর জন্য কি ভয়াবহ দন্ড প্রাপ্য হওয়া উচিত? যদি হয় তবে এ যেন কুকুরের মগজে ক্যালকুলাস ঢুকবেনা জেনেও কুকুরকে গণিত অকৃতকার্য বলে উত্তম মধ্যমের সিদ্ধান্ত! ""

একটা উদাহরণ দেই,আল্লাহই জানে মিলবে কিনা,সূর্য,যেটা চোখে দেখা যায়,তো দেখাকে বাদ দিয়ে সেটাকে যদি ফিজিক্স আর গণিতের আলোকে বুঝতে চান তাহলে কঠিনতো লাগবেই,এমনও হতে পারে আপনি সারা জীবনেও বুঝবেন না। সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাসের মত অতি জরুরী বিশ্বাসের ভিতকে সৃষ্টিকর্তা কমন সেন্সের উপর রেখেছেন,যেটা নাকি চোখে দেখার চেয়েও বেশী।তো আপনি যদি এরকম সহজ বিষয়, যেটা নাকি সাধারণ কমন সেন্স দিয়েই বুঝা যায় সেটাকে কোয়ান্টাম ফিজিক্স দিয়ে বুঝতে চান তাহলে কঠিনতো লাগবেই। সমস্যা হলো,আপনারা অনেকেই জ্ঞানের অহমিকায় আবদ্ধ।আপনাদের অনেকেরই যে কমন সেন্স নষ্ট হয়ে গেছে সেটা অহমিকার কারণে বুঝতেও পারছেন না।আচ্ছা,অন্ধ যদি পথের দিশা পেতে চায় তাহলে তাকে কি করতে হবে? তেমনি যার কমন সেন্স নষ্ট হয়ে গেছে তাকে কি করতে হবে? সমস্যা হলো অন্ধ যদি নিজেকে অন্ধ ভাবতে নারাজ হয়ে চক্ষুষ্মানের মত পথ চলে তাহলে তো সে গর্তে পড়বেই। আর নাস্তিকরা পড়বে জাহান্নামের গর্তে। আলহামদুলিল্লাহ। .................(কথা কিন্তু শেষ হয়নি

এই ভিডিওটা দেখেন। এর মাঝে চিন্তাশীলদের জন্য চিন্তার খোরাক আছে।



সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:১৯
১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×