অামার এক চাকরির পরীক্ষার কেন্দ্র চট্টগ্রামে হওয়ায় অামি মনে মনে খুবই অানন্দিত।কারন এবার বুঝি অাবার চট্টগ্রামের সেই বিখ্যাত মেজবান খেতে পারবো।পরীক্ষার পাঁচদিন অাগে টিকেট কাঁটার জন্য দেড়শ টাকা পাঠাও ভাড়া দিয়ে রাতে অামি কমলাপুর রেল স্টেশনে যাই।কিন্তু শত চেষ্টার পরও টিকেট না পেয়ে অামাকে খালি হাতেই ফিরে আসতে হল। পরের দিন অনেক কষ্ট করে তারেক ভাইয়ার নেক্সাস কার্ড থেকে ৬০০ টাকা নিয়ে অনলাইনে ৬ তারিখ বৃহস্পতিবার সকাল ৭.০০ টায় 'সোনার বাংলা' ট্রেনের টিকেট কিনলাম।'সোনার বাংলা' অনেক ভাল ট্রেন বলা যায় যে, ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডের সবচেয়ে সেরা ট্রেন।এই ট্রেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছাতে সময় লাগে মাত্র ৫ ঘন্টা।মনে মনে অনেক পরিকল্পনা করতে লাগলাম সাড়ে বারোটায় চট্টগ্রাম গিয়েই প্রথমে মেজবান খাবো তারপর পতেঙ্গা,গুলিয়াখালি সি বিচ ও মহামায়া ঘুরবো অারো কত কি...।কারণ বিকাল সাড়ে তিনটার পর প্রায় হোটেল রেস্টুরেন্টে মেজবান শেষ হয়ে যায়।কিন্তু অত্যন্ত কষ্টের বিষয় ৬ তারিখ কমলাপুর রেল স্টেশনে পৌঁছাতেই অামার সকাল ৭ টা ৫ মিনিট বেঁজে গেল।কি অার করা টাকা ও ট্রেন দুটোই গেল।মন অামার খুব খারাপ হয়ে গেল।পরে দেখি ৭.৪৫ মিনিটে মহানগর প্রভাতি চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে প্লাটফর্ম ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করছে।এটা এতটা ভাল না,এই ট্রেনে চট্টগ্রাম যেতে লাগে ৭ ঘন্টারও বেশি সময়।তাছাড়া প্রত্যেক স্টেশনে যাত্রাবিরতি তো অাছেই।কি অার করা,নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল।তারপরও টিকিট পাবো না জেনেও ট্রেনে উঠে পড়লাম ভাবলাম যা হবার হবে।ভাগ্য অামার ভীষণ ভাল ট্রেনে উঠতেই দেখি অামার এক বন্ধু সিটে বসে আছে।সে ও চট্টগ্রাম পরীক্ষা দিতে যাবে। তার যেহেতু টিকিট অাছে সেজন্য অামি একটু সাহস নিয়ে তার পাশের সিটে বসে গেলাম।টিটির ডিস্টার্ব ছাড়া এভাবে প্রায় দেড় ঘন্টা পথ সিটে বসেই পাড়ি দিলাম।তারপর ভৈরব স্টেশনে একজন এসে বলল ভাই এটা অামার সিট।অামি সম্মানের সহিত উনাকে সিট ছেড়ে দিলাম।এরপর ২ ঘন্টা দাড়িয়ে দাড়িয়ে গেলাম।তারপর কুমিল্লা স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত বাকিপথ সিটে বসে অাড়ামেই গেলাম।মজার বিষয় হল এভাবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম সম্পূর্ণ ফ্রিতেই অামার যাওয়া হল।চট্টগ্রাম পৌঁছেই চকবাজারের বিখ্যাত 'মেজ্জান অাইলে অাঁইয়ুন' রেস্টুরেন্টে মেজবানটা সেরে নিলাম।এই রেস্টুরেন্টের নাকি জামাল খানে অারও একটি শাখা আছে।সোনার বাংলা ট্রেনের টিকেট মিস হলেও চাটগাঁইয়া বিখ্যাত মেজবান কিন্তু অামার মিস হল না।।মেজবান খাওয়ার পর অবশেষে অামার অার ৬০০ টাকার সোনার ট্রেনের টিকেট লস হওয়ার কষ্টটা থাকল না।যেকোন জার্নিতে যদি বিস্ময়কর কোন কিছু না থাকে তাহলে সে জার্নিকে কেমন জানি নিরামিষ মনে হয়।টোটালি,অামার জার্নির শুরুটা একটু কষ্ট দায়ক হলেও শেষটা ছিল অত্যন্ত মজার ও অানন্দায়ক।
Email:[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৮ রাত ১:১১