অনুগল্প
আমার সীমানা
ইউসুফ আলমগীর
‘...
আমি এখন জানি, আমার সীমানা কতোটুকু...’
মুঠোফোনের এমন বার্তায় চমকে ওঠে পৃথিবী।
অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকে হাতের যন্ত্রটির দিকে। যাকে ঘিরে পৃথিবী নিজের পৃথিবীটাকে সাজিয়ে ছিল; তার এমন বার্তায় থমকে যায় সব কিছু। চোখের কোণা ছল ছল করে ওঠে। কুঁকড়ে যায় নিজের ভেতর। দৃষ্টি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়ে নিজের সীমানা নির্ধারণ করে ফেলেছে। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত।
পৃথিবী অফিসের চেয়ারে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে। ফ্ল্যাশব্যাকে দ্রুত উল্টাতে থাকে স্মৃতির পাতা। দৃষ্টির সাথে পৃথিবীর প্রতিটি মুহূর্তগুলো আলোড়িত করে তাকে। অস্থির হয়ে ওঠে পৃথিবী। ঝট করে চোখ খোলে। চেয়ারটাকে পেছনে ঠেলে দাঁড়ায়। খুলে রাখা জুতোগুলো পায়ে ঢোকায়। কম্পিউটারের টেবিলে রাখা মোটরবাইকের চাবিটা হাতে নেয়। বের হয়ে যায় রুম থেকে।
দোতলার সিড়ি ভেঙে নিচে নামে। মোটরবাইকে ওঠে। স্টার্ট দেয়। শাঁ করে রাস্তায় নামে। দৃষ্টির বাড়ির উল্টোদিকের প্রধান সড়ক ধরে তার মোটরবাইক ছোটে। পিকআপের বাড়ন্ততা অস্বাভাবিক শব্দময় হয়ে ওঠে সাইলেন্সার। শহর ছেড়ে শহরতলির সড়ক দিয়ে এগুতে থাকে পৃথিবীর বাইক। ওই সড়কের সাথে এগিয়ে যাওয়া রেললাইন চিকচিক করে ওঠে শুক্লাদ্বাদশীর চাঁদের ঝলকে। ইউক্যাল্পিটাসের পাতার ফাঁকে চাঁদের রূপালি জোছনায় হেডলাইট বন্ধ করে পৃথিবী। তখন বিপরীত দিক থেকে এই শহরে সদ্য চালু হওয়া আন্ত:নগর ট্রেনটি দ্রুতবেগে শহরে দিকে ছুটে আসে।
ট্রেনটি পৃথিবীকে ক্রস করার মুহূর্তেই বাইক থেকে ঝাঁপ মারে পৃথিবী।
তারিখ: ২৩ এপ্রিল ২০১৭
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১১:০৩