পৃথিবীর অর্ধেকের বেশী মানুষ প্রতিদিন ২ ডলারের নিচে আয় করে, যা গত ৩০ বৎসর যাবত প্রায় একই আছে। যদিও ১৫ বছরের মধ্যে ড. ইউনুস দারিদ্রকে জাদুঘরে পাঠানোর কথা বলেন।
২০০ কোটির বেশী মানুষ বিদ্যুত, পানি, গ্যাস, জমি বা আবাসন, পয়ঃনিষ্কাশন, ফোন, পুলিশ বা অগ্নিনির্বাপনের সুবিধা বঞ্চিত। বাংলাদেশে এর পরিমান প্রায় ৬ কোটি।
বিশ্বব্যাংকের ৫৫% থেকে ৬০% প্রকল্প ব্যর্থ। ( ইউ এস কংগ্রেসের একটি জয়েন্ট কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী) যদি ব্যর্থতার দায়ে বিশ্বব্যাংক আর আই এম এফ এর পরামর্শে আমাদের পাটকল বন্ধ হয় তবে বিশ্বব্যাংক নিজে বন্ধ হয় না কেন?
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি যে পরিমান টাকা তাদের পুরোনো ঋনের সুদ হিসেবে পরিশোধ করে সেটি তাদের সবার স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে প্রতিবছরের সম্মিলিত খরচের চেয়ে বেশী। এটি তাদের বাৎসরিক প্রাপ্ত সাহায্যের দ্বিগুন। এখন এই ঋনের পরিমান ৩ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশী এবং এটি ক্রমাগত বাড়ছে।
১৯৭০ সালে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের মধ্যে বানিজ্য ঘাটতি ছিল ১ বিলিয়ন ডলারের যা এখন ১১ বিলিয়ন ডলার এবং এখন বাড়ছে।
অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশে ১% মানুষ ৯০% সম্পদের মালিক।
বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি উন্নয়নশীল দেশগুলির উৎপাদনের নিয়ন্ত্রন নিয়ে নিচ্ছে। যেমন পৃথিবীর মোট কফির ৪০% নিয়ন্ত্রন করে ৪ টি কোম্পানী এবং ৩০ টি সুপার মার্কেট চেইন নিয়ন্ত্রন করে পৃথিবীর পন্য বিক্রয়ের এক তৃতীয়াংশ।
২০০৬ এর ২য় তিন মাসে এক্সন মোবিল লাভ করে ১০.৪ বিলিয়ন ডলার, এর কারন ছিল বিশ্বজুড়ে তেলের মূল্য বৃদ্ধি। ২০০৫ এর শেষ তিনমাসে এই কোম্পানীর লাভ ছিল ১০.৭ বিলিয়ন ডলার। অথচ এই ধরনের তেল কোম্পানীগুলি নানা ধরনের সরকারী সুবিধা পায়, যেমন কর অবকাশ, ভর্তুকী এবং দরিদ্র দেশের তেল গ্যাসের উপর আমেরিকান সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ।
আমেরিকার মোট ফেডারেল ট্যাক্সের ১০% দেয় বড় কর্পোরেশন গুলি, যা ২০০১ এ ছিল ২১% এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ছিল ৫০%। আমেরিকার বৃহদাকৃতির প্রতিষ্ঠানগুলির এক তৃতীয়াংশ ০ ট্যাক্স সুবিধা পেয়েছে এই শতাব্দীর প্রথম তিন বছরের মধ্যে অন্তত এক বছর।
পৃথিবীর সর্বোচ্চ বাজেটের অর্থনীতির প্রথম ১০০ টির তালিকায় ৫১ টি কর্পোরেশন আছে যার ৪৭ টি আমেরিকান।
দরিদ্র দেশগুলিতে বিজ্ঞাপন, ট্যাক্স ও ভ্যাট দেয়ার নামে এরা মিডিয়া ও সরকারকে নিয়ন্ত্রন করতে শুরু করে। এর সাথে তাল মেলায় তাদের দূতাবাস।
১৯৯৭ সালে ল্যান্ডমাইন নিষিদ্ধ করার চুক্তিটি জাতিসংঘে পাশ হয় ১৪২-০ ভোটে। ইউএসএ তাতে ভোটদানে বিরত থাকে। ইউ এস এ ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার বিষয়ক কনভেনশনকে স্বীকৃতি দিতে অসম্মতি জানায়, বায়োলজিকাল অস্ত্র নিষিদ্ধকরন, কিয়োটো প্রটোকল ও আন্তর্জাতিক ক্রিমিনাল কোর্ট স্থাপনেও অসম্মতি জানায়।
পৃথিবীর মোট সামরিক ব্যয় ২০০৬ সালে ছিল ১.১ ট্রিলিয়ন ডলার যার অর্ধেকের বেশী ছিল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের। এই ব্যয় তাদের মোট নাগরিকের মাথাপিছু ১৬০০ ডলারের বেশী।
বিশ্ব প্রেস ফ্রিডমের তালিকায় ইউ এস এর অবস্থান ৫৩ ছিল ২০০৬ সালে, যেটির সমালোচনা করেছে রিপোর্টার্স সন্স ফ্রন্টিয়ারস। সেখানে বিনা কারনে সাংবাদিকদের হয়রানী ও জেলে পাঠানোর মত ঘটনাও ঘটেছে।
ইউ এস এর মোট জাতীয় দায় বা ঋন ছিল মাথাপিছু ২৮৫০০ ডলার, ২০০৬ সালের অগাস্টে এর মোট পরিমান ছিল ৮.৫ ট্রিলিয়ন যার বেশীর ভাগ ছিল জাপান, চীন এবং ই ইউ এর দেশগুলির সাথে।
ইউ এস এর মোট প্রাপ্য বহি: ঋন ছিল ৯ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশী যার বেশীর ভাগই উন্নয়নশীল দেশগুলির কাছে। এই দায়কে কাজে লাগিয়ে তারা দেশগুলিকে নানা রকম ভাবে তাদের শর্ত মানতে বাধ্য করে।
আপনাদের এই তথ্য দিলাম।
এবার বুঝে নিন তেলের দাম বাড়লে কার লাভ? লাভ এক্সন মোবিলের মতো কর্পোরেশন গুলির যারা দেশে দেশে তেল সম্পদ নিয়ন্ত্রন করে। সৌদি আরবের তেলের অর্ধেকের মালিক আরামকো। সৌদি আমেরিকান তেল প্রতিষ্ঠান। কুয়েতের জনগন এখনো দায় মেটাচ্ছে ইরাকের সাথে যুদ্ধ করার জন্য। সেখানে সামরিক ঘাটি আছে ইউ এস এর। ইরাকের তেল পুরোটাই তাদের হাতে। দুবাই, আবুধাবী, বাহরাইন, কাতার সহ পুরো মধ্যপ্রাচ্যের সর্বত্র তাদের অনুগত বশংবদদের শাসন।
নাইজেরিয়া সহ আফ্রিকার অধিকাংশ দেশের তেল সম্পদের এবং প্রাকৃতিক সম্পদের নিয়ন্ত্রন কর্পোরেশনগুলির হাতে।
আমাদের দেশেও এরা সেটি চায়। সারা পৃথিবীর তেল গ্যাস ও কয়লার দখল চায় তারা। কারন শিল্পায়নের জন্যই তাদের উন্নতি। শিল্প চালাতে চাই জ্বালানী। যদি শিল্পায়ন বাদ দেন তবে আমরা বেশী সম্পদশালী। কারন আমাদের হাত বেশী। আমাদের মানুষ বেশী।
অল্প মানুষ অধিক সম্পদ ভোগ করতে পারে কারন তারা টেকনোলজীর মালিক। টেকনোলজী চালূ রাখতে চাই এনার্জী।
পারবেন তেল গ্যাস কয়লা বাঁচাতে?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


