এটা একটা আশ্চর্যের বিষয় বিদ্রুপ এবং বিদ্রুপকারীর বিষয়ে কোরানে যে দিক নির্দেশনা এবং উপদেশ দেওয়া হয়েছে , তার কোনটাই মুসলমানরা মানছে না বা যাকে এক কথায় বলা যায় কোরানের আদেশকে লংঘন করছে ।
এটা আরো আশ্চর্যের বিষয় কোরানে উপদেশ নির্দেশ নিজের অজান্তে নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়ে অমুসলমারা অনুসরন করে , তাদের ধর্মের বিদ্রুপকারীদের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে এবং যার ফলশ্রুতিতে বিদ্রুপকারীরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে, যার জন্য তাদের কে সেই ভাবে কেহ বিদ্রুপ করে না শুধু মাত্র ওয়াজ মহফিলের হুজুররা ছাড়া ।
আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন খৃষ্টান, হিন্দু, বৌদ্ধরা তাদের ধর্মকে গালাগালি বা বিদ্রুপ করার জন্য কোন রকমের প্রতিক্রীয়া দেখায় না এবং ওয়াজ মহফিলে প্রকাশ্য নোংরা ভাষায় অমুসলিমদের গালাগালি বিদ্রুপ করলে ও তারা কোন প্রতিক্রীয়া দেখায় না , নিশ্চুপ থাকে এবং কোন রকমের পাত্তা দেয় না, যার জন্য অমুসলিম বিদ্রপকারীরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে শুধু মাত্র মুসলমান ওয়াজিরা ছাড়া ।
বিদ্রপ বন্ধ করার প্রধান উপায় হোল টোটাললি ইগনোর করা এবং পাত্তা না দেওয়া এবং অবাক হবেন এই ভাবে বিদ্রুপ এবং বিদ্রুপকারীদের মোকাবেলা করা জন্য কোরানে নির্দেশ আছে ।
কোরানের নির্দেশ অমান্য করার ফলাফল , আজকে মুসলমান রা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে । এটা বোধগোম্য হচ্ছে না , কোরানের নির্দেশ অমান্যকারীরা কি আদৌ নিজেদেরকে মুসলমান দাবি করতে পারে ?
এখন দেখুন কোরানের আয়াতে কি বলা হচ্ছে
সুরা মোজ্জামেল ( ৭৩--১0 ) কাফেররা যা বলে, তজ্জন্যে আপনি সবর করুন এবং সুন্দরভাবে তাদেরকে পরিহার করে চলুন।
সুরা নিসা আয়াত ১৪0- আর কোরআনের মাধ্যমে তোমাদের প্রতি এই হুকুম জারি করে দিয়েছেন যে, যখন আল্লাহ তা’ আলার আয়াতসমূহের প্রতি অস্বীকৃতি জ্ঞাপন ও বিদ্রুপ হতে শুনবে, তখন তোমরা তাদের সাথে বসবে না, যতক্ষণ না তারা প্রসঙ্গান্তরে চলে যায়। তা না হলে তোমরাও তাদেরই মত হয়ে যাবে। আল্লাহ দোযখের মাঝে মুনাফেক ও কাফেরদেরকে একই জায়গায় সমবেত করবেন।
সুরা আল আনাম ( ৬--৬৮)----- যখন আপনি তাদেরকে দেখেন, যারা আমার আয়াত সমূহ নিয়ে উপহাস করে, তখন তাদের কাছ থেকে সরে যান যে পর্যন্ত তারা অন্য কথায় প্রবৃত্ত না হয়, যদি শয়তান আপনাকে ভূলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়ার পর জালেমদের সাথে উপবেশন করবেন না।
সুরা আহযাব ( ৩৩ -৪৮) -----আপনি কাফের ও মুনাফিকদের আনুগত্য করবেন না এবং তাদের উৎপীড়ন উপেক্ষা করুন ও আল্লাহর উপর ভরসা করুন। আল্লাহ কার্যনিবার্হীরূপে যথেষ্ট
সুরা ক্কাফ (৫০-- ৩৯) অতএব, তারা যা কিছু বলে, তজ্জন্যে আপনি ছবর করুন এবং, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের পূর্বে আপনার পালনকর্তার সপ্রশংস পবিত্রতা ঘোষণা করুন। --
আপানার নিশ্চয়ই লক্ষ করেছেন উপরের কোরানের আয়াত গুলোতে ইগনোর করা, চুপ থাকা, কোন প্রতিক্রীয়া না দেখানো বা পাত্তা না দেওয়ার উপদেশ দেওয়া হয়েছে ।
দেখুন ঠিক ঐ কাজ গুলো করে অমুসলিমরা হাতে নাতে কেমন ভাল ফলাফল পাচ্ছে । ওয়াজ মহফিলের হুজুরদের হাজারো বিদ্রুপকে তারা পাত্তা দিচ্ছে না ।
সুরা আহযাব (৩৩-৫৭) যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাদের প্রতি ইহকালে ও পরকালে অভিসম্পাত করেন এবং তাদের জন্যে প্রস্তুত রেখেছেন অবমাননাকর শাস্তি। --- এই আয়াতে শাস্তি দানকারি স্বং আল্লাহ তালা কোন মানুষ নহে ।
দেখুন সুরা হিজরে আয়াত ৯৫ তে আল্লাহ কি বোলছেন -- বিদ্রুপকারীদের জন্য আমিই আপনার পক্ষ থেকে যথেষ্ট"----- সুতরাং এই আয়াত স্পষ্ঠ করে বলেছে বিদ্রুপকারীদের আল্লাহ নিজে শাস্তি দিবেন ।
এখন দেখুন একে মুসলমানরা বিদ্রুপকারীকে পাত্তা না দিয়ে , পাত্তা দিচ্ছে না বা ইগনোর করছে কোরানের নির্দেশ এবং আরো দেখা যাচ্ছে আল্লাহ তালার উপরে তাদের আস্থা নেই , যেখানে আল্লাহ নিজেই বোলছেন তিনি নিজে বিদ্রুপকারীদের শাস্তি দিবেন , সেই নিশ্চয়তাকে ও এই সব মুসলমানরা ইগনোর করছে ।
পরিশেষে বলতে চাই বিদ্রপ এবং বিদ্রপকারীদের ব্যপারে যত দিন মুসলমানরা আল্লাহর কোরানের নির্দেশ অমান্য অগ্রাহ্য করবে , তত দিন বিদ্রুপ জনিত সমস্যার কোন সমাধান হবে না । এই সমস্যার একমাত্র সমাধান আল্লাহর নির্দেশ পালন করা এবং কোরানের নির্দেশ নিজেদের অজান্তে অমুসলিমরা অনুসরন করে হাতে নাতে কি রকম সুফল পাচ্ছে ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০২০ সকাল ১০:৪২