পবিত্র কোরানে মুর্তি আর ভাস্কর্য্য নিয়ে কি বলা আছে? আসুন, জেনে নেই পবিত্র কোরানে আল্লাহ আমাদের কি বলেছেন;
---------------
প্রথমেই কয়েকটি সুরায় মুর্তি ও পূজা নিয়ে স্পষ্ট আয়াতগুলি পড়িঃ
-সূরা হজ্জ : ৩০
এ প্রসঙ্গে কুরআন মজীদের স্পষ্ট নির্দেশ-
فَاجْتَنِبُوا الرِّجْسَ مِنَ الْاَوْثَانِ وَ اجْتَنِبُوْا قَوْلَ الزُّوْرِۙ۳۰
‘তোমরা পরিহার কর অপবিত্র বস্ত্ত (অর্থাৎ মূর্তিসমূহ) এবং পরিহার কর মিথ্যাকথন।’
এই আয়াতে পরিস্কারভাবে মূর্তি পরিত্যাগ করার এবং মূর্তিকেন্দ্রিক কর্মকান্ড (পূজা বা শিরক) বর্জন করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। আরো লক্ষণীয় বিষয় এই যে. উপরের আয়াতে মূর্তিকে ‘রিজস’ শব্দে উল্লেখ করা হয়েছে। ‘রিজ্স’ অর্থ নোংরা ও অপবিত্র বস্ত্ত। বোঝা যাচ্ছে যে, মূর্তির সংশ্রব পরিহার করা পরিচ্ছন্ন ও পরিশীলিত রুচিবোধের পরিচায়ক।
(@@@) এখানে স্পষ্টত যে মুর্তিকে ইশ্বর বা দেবতা জ্ঞানে পূজা করা হয় তাকে নোংরা ও পরিত্যাজ্য ঘোষনা করা হয়েছে।
দ্বিতীয় আয়াতঃ
-সূরা নূহ : ২৩
অন্য আয়াতে কাফের সম্প্রদায়ের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে এভাবে-
وَ قَالُوْا لَا تَذَرُنَّ اٰلِهَتَكُمْ وَ لَا تَذَرُنَّ وَدًّا وَّ لَا سُوَاعًا ۙ۬ وَّ لَا یَغُوْثَ وَ یَعُوْقَ وَ نَسْرًاۚ۲۳
‘এবং তারা বলেছিল, তোমরা কখনো পরিত্যাগ করো না তোমাদের উপাস্যদেরকে এবং কখনো পরিত্যাগ করো না।
@@@@এখানেও মুর্তি পূজা (উপাসনা) বা শিরককে পরিত্যাগ করতে বলা হয়েছে।
>>>>>> অথচ পরিস্কারভাবে ভাস্কার্য্যে কোনো পূজা বা উপাসনা বা শিরক হয় না, কোনো ভাস্কার্যের কাছে তো কোনো মানুষ কিছু চায়ও না।
ঃঃঃঃঃঃ আরো আয়াত দেখি, পড়ি ও জানি, আসুনঃ
--------------------
[সূরা আনকাবুত, আয়াত ১৭]
মহান আল্লাহ বলেনঃ তোমরা তো আল্লাহকে বাদ দিয়ে মূর্তির পূজা করছো আর মিথ্যা বানাচ্ছো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ছাড়া তোমরা যাদের উপাসনা করো, তারা তোমাদের জন্য রিযিক দানের কোন ক্ষমতা রাখে না। তাই আল্লাহর নিকট রিযিক তালাশ করো আর তাঁরই ইবাদাত করো এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো। তাঁরই কাছে তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে।
@@@ এখানে আল্লাহ পরিস্কার বলছেন যে, তুমি মুর্তির কাছে রিযিক চাচ্ছো, যা পুরো শিরক।
>>>>>>> আর ভাস্কার্য্যে কে রিযিক চায়, কে এবাদত করে? এখানে স্পষ্টত মুর্তি থেকে ভাস্কর্য্য আলাদা। এখানে মুর্তির সাথে ভাস্কর্যকে এক করলে বঙ্গভবন বা হোয়াইট হাউজকেও এক কাতারে ফেলা যায়।
-------------------
[সূরা আনকাবুত, আয়াত ২৫]
মহান আল্লাহ বলেনঃ আর ইব্রাহিম বলল, দুনিয়ার জীবনে তোমাদের মধ্যে পরস্পরিক ভালোবাসার জন্যই তো তোমরা আল্লাহকে ছাড়া মূর্তিদেরকে গ্রহণ করেছো। তারপর কিয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং পরস্পর পরস্পরকে অভিশাপ দিবে, আর তোমাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম আর তোমাদের জন্য থাকবে না কোন সাহায্যকারী।
@@@আল্লাহকে ছেড়ে মানে শিরক করে কেউ যদি মুর্তি পুজো করে, যে পূজা অন্য ধর্মের রীতি, সেটা যদি কোনো ব্যক্তি করে তাহলে সে কিয়ামতের দিন অভিশাপের শিকার হবে। শিরক এমন একটা অপরাধ যেটা আল্লাহ কখনোই ক্ষমা করেন না।
>>>>>>>> আর ভাস্কার্য্যে কে পূজা করে, কে এবাদত করে? এখানে স্পষ্টত মুর্তি থেকে ভাস্কর্য্য আলাদা। এখানে মুর্তির সাথে ভাস্কর্যকে এক করলে বঙ্গভবন বা হোয়াইট হাউজকেও এক কাতারে ফেলা যায়।
------------
[সূরা আহকাফ, আয়াত ৫-৬]
মহান আল্লাহ বলেনঃ সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে যা কিয়ামত দিবস পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দিবে না। আর তারা তাদের ডাক সম্বন্ধে অবহিতও নয়। যখন কিয়ামতের দিন মানুষকে একত্রিত করা হবে, তখন তারা তাদের শত্রু হয়ে দাঁড়াবে এবং তাদের উপাসনাকে অস্বীকার করবে।
@@@@ এখানে এমন কিছুকে ডাকে, যেমন কেউ যদি বলে, হে দেবী দুর্গা বা হে জিউস বা এমনকি কেউ যদি কোনো নবীর কাছেও বা পীরের কাছেও কিছু চায়, সেটা হারাম, কারন দেয়ার মালিক একমাত্র আল্লাহ।
>>>>>> আর রাস্তার মাঝখানে রোদে পোড়া ভাস্কার্য্যে কে কি চায়, কে এবাদত করে? কাক আর মাখি ছাড়া কেউ বসেও না, তেমন ছায়াও নেই। এখানেও স্পষ্টত মুর্তির সাথে ভাস্কর্য্য-এর বিন্দু মাত্র সম্পর্ক নেই। এখানে মুর্তির সাথে ভাস্কর্যকে এক করলে বঙ্গভবন বা হোয়াইট হাউজকেও এক কাতারে ফেলা যায়।
-------------
[সূরা আনআম, আয়াত ৭৪]
মহান আল্লাহ বলেনঃ আর যখন ইবরাহিম তার পিতা আযরকে বলেছিল, আপনি কি মূর্তিগুলোকে ইলাহ রূপে গ্রহণ করছেন? নিশ্চয়ই আমি আপনাকে ও আপনার জাতিকে স্পষ্টভাবে গোমরাহীতে নিমজ্জিত দেখছি।
@@@@ এখানে মুর্তি গুলাকে ইলাহ (সৃস্টিকর্তা) রূপে গ্রহন করতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে যা একটি জাতিকে ধবংস করবে।
>>>>> আর রাস্তার মাঝখানে রোদে পোড়া ভাস্কার্য্যে কে কি চায়, কে এবাদত করে? এখানেও স্পষ্টত মুর্তির সাথে ভাস্কর্য্য-এর বিন্দু মাত্র সম্পর্ক নেই। এখানে মুর্তির সাথে ভাস্কর্যকে এক করলে বঙ্গভবন বা হোয়াইট হাউজকেও এক কাতারে ফেলা যায়।
------------
[সূরা শুআরা, আয়াত ৬৯-৭৭]
মহান আল্লাহ বলেনঃ আর তুমি তাদের নিকট ইবরাহিমের ঘটনা বর্ণনা কর, যখন সে তার পিতা ও তার কওমকে বলেছিল, তোমরা কিসের ইবাদাত করো? তারা বলল, আমরা মূর্তির পূজা করি। অতঃপর আমরা নিষ্ঠার সাথে তাদের পূজায়রত থাকি। সে বলল, যখন তোমরা ডাকো তখন তারা কি তোমাদের সে ডাক শুনতে পায়? অথবা তারা কি তোমাদের উপকার কিংবা ক্ষতি করতে পারে? তারা বলল, বরং আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদের পেয়েছি তারা এরূপই করতো। ইবরাহিম বলল, তোমরা কি তাদের সম্পর্কে ভেবে দেখেছো তোমরা যাদের পূজা করো। তোমরা এবং তোমাদের অতীত পিতৃপুরুষেরা? সকল সৃষ্টির রব ছাড়া অবশ্যই তারা আমার শত্রু।
@@@এখানেও সেই মুর্তির কথা বলা আছে যে মুর্তিকে ভগবান বা দেবতা মেনে পূজা করা হয়। যা শিরক।
>>>>>> আর ভাস্কার্য্যে কে পূজা করে, কে এবাদত করে? এখানে স্পষ্টত মুর্তি থেকে ভাস্কর্য্য আলাদা করা হয়েছে।
-------------
[সূরা মায়িদা, আয়াত ৯০]
আল্লাহ বলেনঃ হে মুমিনগণ, নিশ্চয়ই মদ ও জুয়া আর মূর্তি এবং ভাগ্য নির্ধারক তীর সমূহ অপবিত্র শয়তানের কাজ, তাই তোমরা তা পরিহার কর যেন তোমরা সফলকাম হতে পার।
@@@এখানেও স্পষ্টত মুর্তি পূজা, মদ, জুয়া, এমনকি ভাগ্য গননাকে শয়তানের কাজ বলে সতর্কতা করা হয়েছে।
>>>>> নিরীহ ভাস্কর্য্য এখানে কই বলা হলো?
--------------
আমার কথাঃ
))))) উপরক্ত একটা আয়াতেও ভাস্কার্য্য, ছবি বা বিল্ডিং নিয়ে কিছুই বলা নেই। তবে পরিস্কার করে বলা হয়েছে এমন সব বস্তুর কথা যাকে পূজা বা উপাসনা করা হয় দেবতা/ইশ্বর/ভগবান নামে, যা শিরক, যা মুসলমানদের পরিত্যাগ করতে হবে, এবং মুসলমান তা পরিত্যাগ করে। কোনো ভাস্কর্যে জীবনেও কেউ পুজো করে না, উপাসনাও না। এখন গভীর রাতের কেউ টয়লেট করতে আর কেউ চুরি করতে যায়, সেখানেতো রাতে বের হওয়া বন্ধ করা যাবে না, শুধু চুরি করারে নিষিদ্ধ করতে হবে। আল্লাহ মুর্তি নিয়ে তাই করেছেন, মুর্তি পুজো বা উপাসনা হারাম করেছেন। ভাস্কার্য্য এর মদ্ধেই পরে নাই।
))))) কিছু আলেম মুর্তির আরবি শব্দকে বাংলায় রূপান্তর করে একসাথে দুই শব্দ জুড়ে দেব, এটিকে মুর্তি ও ভাস্কার্য বলেন, এটি তারা ইচ্ছাকৃত ভাবে করেন ও মাদ্রাসায় এভাবেই শিক্ষা দেন। এটা উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও এখানে এলাকায় মিছিল মিটিং করার একটা সুযোগ থাকে, যা এলাকায় প্রভাব বিস্তারে সহায়তা করে। আরবি এই শব্দকে মুর্তি ও ভাস্কর্য্য একই সাথে বলার সাথে যদি বঙ্গবভন বা হোয়াইট হাউজও এড করা যায়, তাহলে কিন্তু কেল্লা ফতে।
)))))) আমরা আম জনতা আরবি জানি না বলে আরবি লিখে বাংলা করে আমাদের বোঝানো হয়। পরে আসলটা জানতে পেরে কস্ট লাগে। এমনিতেই এক আলেম আরেক আলেমের বদনাম করে। আমরা উনাদের ভালোবাসি, শ্রদ্ধা করি, কিন্তু ভরসা পাই কম। জাহান্নামে কিন্তু বহু আলেম উপস্থিত থাকবেন। অনেক আলেম বেহেশ্তের সুবাস পর্যন্ত পাবেন না।
)))))) আলেমদের কাজ ধর্মকে মানুষের কাছে নিয়া আসা, সহজ করা। কঠিন করলে মানুষ ধর্মচ্যুত হবে, সরে যাবে। অনেকটা বিধ্ববিদ্যালয়ের সেই অঙ্কের মতো, যে অংকটা আবিস্কারের জন্য দরকারী, কিন্তু সাধারন মানুষ বোঝে না বলে ভয়ে কাছেও যায় না। আলেমরা যদি আতেল হয়ে এমন সন ক্ষুদ্র জিনিস নিয়ে মিমাংসা না করে সমস্যা বাধায়, তাহলে সমাজ কই যাবে, ধর্ম কই যাবে?
??????? নাকি তারা আইসিসের কাছে যাবে? যে টেরোরিস্ট আইসিস পবিত্র কাবা শরীফকে 'বস্তু' জ্ঞান করে ভেঙ্গে ফেলতে চেয়েছিলো (নাউজুবিল্লাহ) এই বলে যে, এটাও পুজার সামিল, মুসলমান কেনো একটা বিল্ডিংএর সামনে মাথা নত করবে?
###### মুর্তি পুজো অন্য ধর্মের ব্যাপার। মুসলমান মানেই অন্য ধর্মের প্রতি চুরান্ত সহনশীল শুধু না, তারা যাতে নির্ভিগ্নে ধর্ম পালন করতে পারে না নিশ্চিত করা আমাদের জেহাদের অংশ, এটা মক্কা বিজয়ের পর নবী করীম (সঃ) আচরন, কর্ম ও চুক্তিতে চুরান্ত। যে এই আইনের বাইরে যাতে যে নবীজীর সরাসরি বিরোধিতা করে।
---
শেষ কথাঃ
আমাদের সামান্য পরিবারেও অনেকের মতো বেশ কয়েকজন ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, ডক্টর, শিক্ষক, সরকারী কর্মকর্তা আছেন, বেশ কয়েকজন ভালো আলেমও আছেন, সর্বোচ্চ শিক্ষিত ও সম্মানিত। সারা বিশ্বে একসময় ইসলামী লাইনের আলেম বা স্কলাররা জ্ঞান, বিজ্ঞান, সমাজনীতি, দর্শন ইত্যাদি নিয়ে নেতৃত্ব দিতেন, এমনকি আমাদের নবীজীকে খোদ আমেরিকায়ও সবচেয়ে বেশী আইন প্রনেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে ও সম্মান করা হয়। অথচ আমাদের দেশের আলেমরা বিবি তালাক, মুর্তি, কোন আলেম মুর্খ আর কে কাফের বা মুরতাদ, এইসব নিয়ে বিরাট জ্ঞান বিলাতে দেখা যায়। এসব কাজে তারা যত পারঙ্গম, নবীজীর সেই জ্ঞান আর আইনের ক্ষেত্রে তাঁদের পথচলা একদমই সীমিত।
তাদের কি আর বড় কোনো সমস্যা নেই সমাধান করার? কোনো যোগ্যতা নেই অন্য কোনো খাতে তাঁদের এতো বড় মেধাশক্তিকে কাজে লাগাবার?
আমরা প্রগতিশীল সত্যিকার জ্ঞাননির্ভর আলেম সমাজ চাই, চাই তারা সৎ, কর্মঠ, দান বিমুখ, ভবিষ্যতমুখী হয়ে কাধে কাধ মিলিয়ে সব ধর্ম আর সব মানুষের জন্য সাম্য সমাজ গঠনে মুখ্য ভুমিকা রাখুন।
আল্লাহ আমাদের তোউফিক দান করুন।
COLLECTED FROM A PAGE
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০২০ ভোর ৪:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




