somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বইমেলা ২০২৪ এ যাদের বই আপনার কেনা উচিৎ - ১

১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



কথাসাহিত্য ক্যাটাগরি - শাহীন আখতার
.
ফেব্রুয়ারির ১১ তারিখ আজ। বইমেলার ১/৩ অংশ শেষ। প্রতিদিনই মেলায় ভিড় বাড়ছে। দর্শনার্থীদের পুণ্য পদধূলিতে প্রতিনিয়ত ধূলিধূসর হচ্ছে ডিসপ্লে তে রাখা বই আর বিক্রেতাদের মুখ। তবুও, মোবাইলে জমা হওয়া ছবির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠছে না হাতের থলিতে জমা হওয়া বইয়ের সংখ্যা।
.
কেউ মেলায় ঘুরতে আসেন, কেউ আসেন কনফিউজড অবস্থায় - যেন বই নয় কনে দেখতে এসেছেন, কেউ দরাজ দিলে একধারে বই কেনা শুরু করেন, আবার কেউ কোরবানির পশুর হাটে ঘুরবার মতো করে ঘুরে ঘুরে বই দেখতে থাকেন আর নোট নিতে থাকেন, কোন কোন বইগুলো কেনার মতো। মেলার শেষদিকে হয়তো একটা দুটো করে কেনা শুরু করবেন।
.
বই কিনে পড়তে চান যারা, তাদের জীবনকে খানিকটা সহজ করে তোলার জন্য আমি আমার পছন্দের লেখকদের সাথে আগ্রহী - কৌতূহলী নতুন পাঠকদের পরিচিত করিয়ে দেয়ার একটি পদক্ষেপ নিচ্ছি। যাদের বই আপনার সংগ্রহে না থাকলে সংগ্রহ করে পড়া উচিৎ বলে মনে করি, ধারাবাহিকভাবে তাদের নিয়ে লেখা আরম্ভ করছি, যা চালিয়ে যাবো পুরো মেলা জুড়ে।
.
আর এই সিরিজে প্রথম লেখক, যার বই আপনার সংগ্রহে অবশ্যই থাকা উচিৎ, এবং পড়া উচিৎ বলে আমি মনে করি, তিনি শাহীন আখতার।
.
শাহীন আখতারের বই আপনার সংগ্রহে রাখার প্রথম কারন, আমার বিবেচনায় তিনি বাংলাদেশের জীবিত কথা সাহিত্যিকদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক।
.
দ্বিতীয়ত, তিনি সেই বিরলপ্রজ কথাসাহিত্যিকদের একজন, যিনি আমাদের এপার বাংলার মানুষদের ইতিহাসের ধূসর অংশগুলি মমতার সাথে (এবং মমতার সাথে কখনো কখনো একচিমটি বিদ্রূপের সাথেও) চিহ্নিত ও চিত্রিত করেন। তার প্রথম আত্মজৈবনিক উপন্যাসটি বাদ দিলে বাকি চারটি উপন্যাসই আমাদের ভূভাগের ইতিহাসের নানান গুরুত্বপূর্ণ পালাবদলের মুহূর্তকে নিয়ে রচিত। তা সে বীরাঙ্গনাদের অসহনীয় জীবনালেখ্য তালাশ হোক, কিংবা সখী রঙ্গমালার পালা - ই হোক, দেশভাগের সময়ের পূর্ববঙ্গের মানুষের দৈনন্দিন জীবনচিত্রকে ধারণকারী অসুখী দিন হোক, বা হলি আর্টিজনের জঙ্গি হামলার অনুরূপ আলেখ্য, একশো এক রাতের গল্প।
.
তৃতীয়ত, তার লেখাপত্রে বাংলার নারী জীবনের অব্যক্ত অনেক আলাপ ও গল্প প্রাসঙ্গিকভাবে উঠে আসে। তিনি কি নারীবাদী? আমার পঠন তা ই বলে, তবে খিস্তিখেউড় করা বা বাহ্যিক সাজপোশাকে নারীমুক্তির আন্দোলনকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা লেখিকা নন তিনি। তার গল্প - উপন্যাসের চরিত্র মহিলারা আমার - আপনার মা খালারই অনুরূপ। তবে শক্তিশালী।
.
চতুর্থত, শাহীন আখতারের গদ্যের ভাষা এক আলাদা সৌন্দর্যমন্ডিত শিল্পকর্ম। তার লেখা পড়তে গেলে আমার সবচে সহজে যে অ্যানালজি মাথায় আসে, তা হল সুঁই সুতোর ফোঁড়। অসাধারণ সব উপমা, রুপকাশ্রয়ীতা, প্রতীকের ব্যবহার, নির্মোহভাবে আঞ্চলিক ভাষাকে নিজের লেখায় ব্যবহার করা - চাই তাতে পাঠক থাকুক বা না থাকুক - এ সবই তার ভাষাকে অনন্যতা প্রদান করে। এবং, প্রতিটি উপন্যাসে গল্প বলার এক আলাদা বয়ন - বয়ান পদ্ধতি তিনি আবিষ্কার করেন।
.
কাজেই, যারা মনে করেন হুমায়ূন আহমেদ মারা যাওয়ার পর বাংলাদেশে আর কোন ভালো সাহিত্যে তৈরি হচ্ছে না তারা হুমায়ুনীয় ঘেরাটোপ থেকে বেরিয়ে শাহীন আখতারের তৈরি জগতে একবার ঢুকে পড়তে পারলে, আর বেরুতে পারবেন না, আমি যেমন পারি নি এখনও।
.
শাহীন আপার বইগুলো পাওয়া যাচ্ছে -
১। পালাবার পথ নেই, তালাশ, সখী রঙ্গমালা (উপন্যাসত্রয়ী) - মাওলা ব্রাদার্স
২। ময়ূর সিংহাসন, অসুখী দিন, একশো এক রাতের গল্প (উপন্যাসত্রয়ী - প্রথমা)
৩। গল্প সংগ্রহ ১, প্রেমের গল্পেরা ফিরে আসছে - মাওলা ব্রাদার্স
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ রাত ১০:৪৮
১৪টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×