somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইসলাম কি পূর্ণাঙ্গ দ্বীন নয়?

১০ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সারা বিশ্বে আমরা যারা মুসলমান রয়েছি, আমরা কি আমাদের ধর্ম ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ বলে মেনে নিয়েছি? আমাদের আচার-ব্যবহার, উঠা-বসা, চাল-চলন, আমোদ-প্রমোদ ইত্যাদি কি ইসলামের গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে, নাকি আমরা ইসলামের সীমাকে অতিক্রম করে ফেলছি?
কিছুদিন পূর্বে সারা বিশ্বব্যাপি পালিত হলো ২০১০ সালকে স্বাগত জানানোর উৎসব থার্টি ফাস্ট নাইট। এতে আমাদের দেশের মুসলমানসহ অন্যান্য দেশের মুসলমানগণ অংশগ্রহণ করেছেন। কিন্তু আমরা মুসলমানরা কখনো ভেবে দেখেছি কি আমরা যেভাবে আমাদের ধর্মের সীমাকে অতিক্রম করে অন্য ধর্মের উৎসবগুলো পালন করছি, অন্য ধর্মাবলম্বীরা কি আমাদের ধর্মকে কিংবা উৎসবগুলোকে পালন করছে?
আমরা মুসলমানরা পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়ার জন্য প্রতিদিন মসজিদে যাই। কিন্তু কোন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকে যদি বলা হয় চলো আমার সাথে মসজিদে, নামায পড়বে! হিন্দু ধর্মাবলম্বী লোকটি মসজিদে যেতে অস্বীকার করবে। কিন্তু একজন মুসলমান কিন্তু ঠিকই হিন্দুদের পূজায় যায়, সেখানে ভোগ খায়। অথচ আমাদের পাশের দেশ ভারতেই হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মুসলমানদেরকে গরু কুরবানী করতে বাধা দিচ্ছে।
একইভাবে কোন খৃষ্টান ধর্মাবলম্বীকেও মসজিদে আনা যাবে নামায পড়ার জন্য, বরং সুইজারল্যান্ডে উল্টা মসজিদে মিনার নির্মানে বাধা দেয়া হচ্ছে। এমনিভাবে কোন বিধর্মী হজ্জ করতেও যাবে না। বরং আমরা এর বিপরীত প্রতিচ্ছবি দেখতে পাই। আমেরিকাতে মক্কা শরীফ-এর আদলে তারা শরাবখানা নির্মান করেছে। সারা বিশ্বে নির্বিচারে মুসলমান শহীদ করা হচ্ছে, তারপরও মুসলমানরা বেখবর। নিজেদের পরিপূর্ণ দ্বীন ছেড়ে অন্য ধর্মের অনুষ্ঠান পালন করছে।
আল্লাহ্‌ পাক কুরআন শরীফ-এ ঘোষণা করেন, “আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত পূর্ণ করে দিলাম এবং আমি তোমাদের দ্বীন ইসলামের প্রতি সন্তুষ্ট রইলাম।” (সূরা মায়িদা, আয়াতঃ ৩)
আবার হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, একদিন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট তাওরাত শরীফের একটি কপি এনে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এটি তাওরাত শরীফের একটি কপি। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চুপ করে রইলেন। হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তা পড়তে আরম্ভ করলেন। আর এদিকে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেহারা মুবারক লাল হতে লাগলো। অর্থাৎ অসন্তুষ্টির ভাব ফুটে উঠলো। এটা দেখে হযরত আবূ বকর সিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, হে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনার জন্য আফসুস। আপনি কি দেখছেন না যে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেহারা মুবারক কি রূপ ধারণ করছে? তখন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেহারা মুবারকের দিকে তাকালেন এবং অসন্তুষ্টির ভাব লক্ষ্য করে বললেন, আমি আল্লাহ পাক-এর অসন্তুষ্টি থেকে এবং তাঁর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর অসন্তুষ্টি থেকে আল্লাহ পাক-এর নিকট পানাহ চাচ্ছি। এবং আমরা আল্লাহ পাককে রব হিসেবে এবং ইসলামকে দ্বীন হিসেবে ও আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নবী হিসেবে পেয়ে খুশী হয়েছি। তখন রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সেই আল্লাহ পাক-এর কছম! যার অধিকারে আমার প্রাণ মুবারক রয়েছে, এ সময় যদি তোমাদের নিকট হযরত মুসা আলাইহিস সালাম (যার উপর তাওরাত কিতাব নাযিল হয়েছে) জাহির বা প্রকাশ হতেন আর তোমরা আমাকে ছেড়ে তাঁর অনুসরণ করতে তবুও তোমরা সরল পথ থেকে অবশ্যই বিচ্যুত অর্থাৎ গোমরাহ হয়ে যেতে। এমনকি তিনি যদি এখন হায়াতে থাকতেন আর আমাকে পেতেন তাহলে তিনিও নিশ্চয়ই আমার অনুসরণ করতেন।” (দারিমী, মিশকাত, মিরকাত)
এরপরও কি মুসলমানদের হুঁশ হবে না? তারা তাদের ধর্মকে পরিপূর্ণ হিসেবে মেনে নিয়ে, তাতেই দৃঢ়চিত্ত থাকবে না? আল্লাহ্‌ পাক সকল মুসলমানকে পরিপূর্ণরূপে ইসলামকে দ্বীন হিসেবে মানার তাওফিক দান করুন!
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ৯:০৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কৃষ্ণচূড়া আড্ডার কথা

লিখেছেন নীলসাধু, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:০২



গতকাল পূর্ব নির্ধারিত কৃষ্ণচূড়ায় আড্ডায় মিলিত হয়েছিলাম আমরা।
বছরের একটি দিন আমরা গ্রীষ্মের এই ফুলটির প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে প্রকৃতির সাথে থাকি। শিশুদের নিয়ে গাছগাছালি দেখা, ফুল লতা পাতা চেনাসহ-... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×