আমাদের সমস্যা অনেক তার মাঝে একটি হচ্ছে আমরা মাথামোটা (রাগী)।
মানুষের রাগ থাকবেই, কারণে অকারণে আমাদের রাগ ওঠে বা মেজাজ গরম হয়
কিন্তু কেউ কেউ আছেন যার রাগ কন্ট্রোলের বাইরে বা বদরাগী।
কারণে অকারণে রাগেন ও হুশ হারিয়ে ফেলেন।
এরা এক জীবনে অনেক দুঃখী ও একাকী হয়।
রাগী আর অহংকারী মানুষকে কেউ পছন্দ করেন না।
স্বয়ং মহান আল্লাহ, যিনি রহমান ও রহীম।
তিনি নিজে বিন্দুমাত্র অহংকার পছন্দ করেন না।
উনার বিশাল জান্নাতে অহংকারী ও মানুষকে কস্ট দিয়ে কথা বলা লোকের জন্য কোন স্থান নেই।
যাই হোক, আসল কথায় আসি।
তবে তার আগে কুরআনের একটা আয়াত উল্লেখ করি, যা আমার অনেক অনেক পছন্দের একখানা আয়াত।
কথায় কে উত্তম হতে পারে ঐ ব্যক্তি অপেক্ষা,
যে আল্লাহর দিকে আহ্বাবান করে,
সৎ কর্ম করে এবং বলে আমি আত্মসমর্পণকারীদের অন্তর্ভূক্ত।
ভালো এবং মন্দ সমান হতে পারে না।
(মন্দ) প্রতিহত কর উৎকৃষ্টতর (আচরণ) দ্বারা।
ফলে তোমার সাথে যার শত্রুতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মতো।
এ গুণের অধিকারী করা হয় কেবল তাদেরকেই, যারা ধৈর্যশীল।
এ গুণের অধিকারী করা হয় কেবল তাদেরকেই যারা মহা সৌভাগ্যবান।
(সুরা ফুসসিলাত : আয়াত ৩৩-৩৫)
আমি মোটামুটি মানের একটি ইসলামিক চ্যানেল চালাচ্ছি। দ্বীনের প্রচারের স্বার্থে ও পরকালে মুক্তির আশায়।
আমার ইউটিউব চ্যানেলের লিংক
আর জানেন তো চ্যানেলে সারা দিন নানা জন নানা রকম পজেটিভ বা নেগেটিভ প্রশ্নও ও মন্তব্য করেন।
চেষ্টা করি সব গুলো প্রশ্নের সঠিক ও কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী সমাধান দেয়ার।
তবে কিছু কমেন্ট বা প্রশ্নও আসে একদম বাড়াবাড়ি পর্যায়ের। সে ক্ষেত্রে উত্তর হিকমতের সাথে দেয়ার চেষ্টা করি।
নিজেকে মুসলিম পরিচয় দেই, কিন্তু রসূল সাঃ এর উদারতা ও কুরআনের শান্তির বানী যদি অন্তরে ধারন-ই না করতে পারলাম তাহলে কিসের মুসলমান পরিচয় দেই আর দ্বীনের-ই বা তাহলে কোট্টটুকু বুঝলাম।
মুসলিম মাথা গরম করে না, বিনয় ও ধৈর্য ধারণ করে।
ঠিক আমিও মানুষকে দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে চেষ্টা করি বিষয়গুলো মনে রেখে দাওয়াত দেয়ার। বাকী আল্লাহর দয়া।
তো কিছুদিন আগে এক ব্যক্তি আমার চ্যানেলে একটি বাজে কমেন্ট করলে আমি কি উত্তর তাকে দিয়েছিলাম সেটা আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করছি।
এক কমেন্টর লিখেছেন, (যেখানে কমেন্ট করেছেন সেই লিংক, এই ভিডিওর পিন কমেন্টে পাবেন)
...... আরে খা**** পোলারা, গুনাহ কইরা চু**** মুসলমান হওয়া যায় মাত্র তোগো থার্ড ক্লাস ধর্মেই সম্ভব।
আমার উত্তরঃ
এক্সক্সক্স ভাই, ধর্ম যেটাই হোক আমরা এক প্রভুর সৃষ্টি এটা ভুলে গেলেন। যে প্রভু আপনার মাকে সৃষ্টি করেছেন সেই প্রভু আমার মাকে ও সৃষ্টি করেছেন। হয়ত আপনি সঠিক ধর্মে আছেন আমি বেঠিক ধর্মে আছি। তাই বলে এই ভাষা ব্যবহার করে আপনি আপনার ধর্মের সত্যতা প্রমাণ করতে যে চেষ্টা করছেন এটা কি আদৌ কেউ মেনে নিবে। দিন শেষে আমরা একই পিতা মাতার থেকে সৃষ্ট, আমরা একে অপরের ভাই ভাই। আমাদের সকলের শরীরের রক্তই লাল। ধর্ম তো পরের কথা আগে প্রভুর এই সৃষ্টির প্রতি সম্মান করতে শিখুন। আর মানুষ মাত্রই ভুল হয়, গুনাহ হয়ে যায়। ভুল হয়না ফেরেশতাদের। দিন শেষে কেউ যদি তার ভুল বুঝতে পারে সেক্ষেত্রে তার উচিৎ তাওবা করা। অর্থাৎ যাকে কস্ট দিয়েছে তার থেকে প্রপারলি ক্ষমা চাওয়া ও আল্লাহর কাছে আর কোন দিন এমন ভুল হবে না সেই ওয়াদা করা। যদি কেউ তার এই ওয়াদা রক্ষা করতে পারে তাহলেই শুধু মাত্র ক্ষমা হয়। তা না হলে হজ্জ করলেও বা শহীদ হলেও বান্দাকে দেওয়া কস্ট আল্লাহ ক্ষমা করেন না। ভাইজান, ইসলাম অনেক কঠিন এক জীবন ব্যাবস্থার নাম। দৈনিক পাচ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের জন্য বাধ্যতামূলক। জানেন ফজরের ওয়াক্ত এখন কয়টায় ( ভোর ৪টা থেকে ৫টার মধ্যে) অর্থাৎ একজন মুসলিম শীত নেই গরম নেই আজীবন (মরণের আগ পর্যন্ত) প্রতিদিন এই ভোর বেলায় উঠে হাত দাঁত, মুখ, মাথা, হাত, পা (ওযু করে) ধুয়ে মসজিদে যায় নামাজ পড়তে। এছাড়া আমাদের ইনকাম করতেও অনেক কিছু বেছে চলতে হয়। হালাল হারাম ইত্যাদি। আপনিই বলেন, এই যুগে বর্তমানে যে দামের অবস্থা সেই হিসাবে একজন হালাল উপার্জনকারীর জন্য দুই বেলা ডাল ভাত কিনে খেতে পারা কষ্টকর। বিনোদন বা বিলাসিতা তো অনেক পরে। যদি কখনো কোন সত্যিকার মুসলিম এর সাথে দেখা হয়ে যায় তাহলে দেখবেন ইসলাম কত সুন্দর। আর খারাপ মুসলিম এর সাথে দেখা হলে এর উল্টো এক্সপেরিয়েন্স হবে। অনেক অমুসলিম ও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের আচরণ ও চলার স্টাইল ও আমার খুব পছন্দের। আমি যেমন ডাঃ জাকির নায়েক কে ফলো করি, তেমনি সাদ গুরু কেও ফলো করি। দুজনকেই আমার বিদ্বান মনে হয়। দুজনের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। যাই হোক, ভালো থাকবেন। আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন। বেচারি অনেক দুঃখী একজন মা। অনেক আগেই স্বামী হারিয়ে অনেক কষ্টে; রক্ত পানি করে আমাদের ভাইবোনকে বড় করেছেন। আজ পর্যন্ত সুখ কি জিনিষ তিনি হয়ত সেভাবে কখনো দেখেন নি। আপনি তাকে গালি দিয়ে আমাকে কস্ট দিয়েছেন। আর আমি বিনিময়ে আল কুরআনে থাকা একটি উপদেশ মেনে আপনার সাথে কথা বলেছি, মহান আল্লাহ বলেন, .........
এরপরে উপরের আয়াত টা লিখে কমেন্ট শেষ করেছিলাম। সাথে বলে ছিলাম, আপনার জন্য শুভকামনা। -----------------------
সর্বশেষ এটাই বলবো, আপনার আচরণ আপনার আইডেন্টিটি বহন করে।
আপনি কেমন সেটা মানুষ আপনার চেহারা দেখে নয় বরং আপনার আচরণ ও আখলাক দেখে বুঝে নিবে।
নিজেকে বিনয়ী করতে পারলে সবখানে সম্মান পাবেন,
রাগ করলে শুধু হেরেই যাবেন।
কারণ রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন !!!
আব্দুল্লাহ ইথার।
আগস্ট ৩, ২০২২
আমি ফেসবুকে ও ইউটিউবে।
যারা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাচ্ছেন ।তারা ভিজিট করুন।