somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেরং

২২ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ছোট বেলায় আমার আশে পাশের সবার আব্বুদের দুই তিন হাজার টাকা বেতন ছিলো,
.
কারো বাবা অফিসার হলেও হয়তো স্প্রেফ আরো দুই তিন হাজার টাকা বেশী পেতো!
.
খোদার কসম নতুন শার্ট পড়লে যেদিক দিয়ে হেঁটে যেতাম সবাই মিষ্টি দাবী করতো,
.
একই শার্ট আর কারো গায়ে দেখলে হাজার মানুষের ভীড়েও আমরা বলে দিতে পরতাম আমার এলাকায় অমুকের এক সময় এমন একটা শার্ট ছিলো!
.
ব্রান্ডের শার্ট তখন দুর্লভ, পকেটে লোগোর দিকে তাকিয়ে ভাবতাম,
.
তখনকার শার্টগুলোর আমরা অনেক যত্ন নিতাম তবুও হাজার হলেও হকার মার্কেট থেকে নেওয়া! এতো যত্নে হাত উঠা নামা করার পরও বগলতল ছিঁড়ে যেতো!
.
বোতাম ছিঁড়ে যাওয়াটা সাধারণ ছিলো, কিনে এনে আবার বোতামগুলোর উপ্রে সেলাই করতাম!
.
শার্টগুলো লম্বা হওয়ায় পিছনে রোলের মতো করে উপর দিকে লেজ গুঁটিয়ে উঠতে থাকতো,
.
তখন আমরা ভাবতাম, গায়ে যে কালারের মাকড়সা উঠে, ভবিষ্যতে সে কালারের একটা শার্ট আমারও হবে! কি আনন্দ!
.
বাবার পেট বেড়ে যাওয়ার পর শার্টগুলো আমার হতো, আমি মোটা হয়ে গেলে ছোট ভাইয়ের,
.
প্যান্টগুলো কখনো ফিটিংস হতো না! বেল্ট দিয়ে কোঁচকিয়ে কোমরের সাথে আটকিয়ে রাখতে হতো!
.
প্লাজু টাইপের এক একটা পায়ের ফাঁক গলিয়ে অনায়েসে তিন চার বছরের একটা বাচ্চা ঢুকে যেতে পারবে এমন অবস্থা
.
শার্ট ইন করলে সেখানে অনায়েসে কয়েক কেজি আলু রাখার মতো জায়গা থেকে যেতো!
.
রোদে শুকাতে দিলে সুযোগ বুঝে শার্ট চুরি হয়ে যাওয়ার ভয় থাকতো,
.
সেই শার্ট প্যান্টে গুঁজে দিয়ে একটা কালা চশমা পড়ে যেদিন বের হতাম সেদিন তো সুন্দরী ললনাদেরও পাত্তা দেওয়ার টাইম থাকতো না!
.
সেদিন আমরা এক একটা সালমান শাহ! ঘর থেকে বের হলে ফিরা পর্যন্ত প্রশংসায় পঞ্চমুখ! লাগতেছেরে মামা! তোরে কিন্তু লাগতেছে!
.
হলিউড, বলিউড, ডালিউড, টালিউড, শালীউড ফেইল
.
আশার সময় ক্রাশের বাসার জানালা দিয়ে কয়েকবার ঘুরান্টি দিয়ে ঘরে ফিরে আস্তে আস্তে শার্টপ্যান্ট খুলে যত্ন করে রেখে দেওয়ার পরও রেশ থেকে যেতো!
.
সেই শার্টগুলো কিন্তু দাম বাড়েনি! এখনো দেড়শো টাকা! কিন্তু মানুষের কাছে দাম কমে গেছে! তখন আমরা ফেব্রিকস্ বুঝতাম কম!
.
তবুও দুই আঙ্গুল দিয়ে কাপড় ঘষে ভাব ধরতাম মস্ত বড় কাপড় বিশেষজ্ঞ তারপর পাল্টা প্রশ্ন করতাম, ভাই টিকবে তো! রং জ্বলবে?
.
দোকানদার আরো বড্ড ভাব নিয়ে বলতো, কাপড় ছিঁড়ে যাবে মাগার কালার উঠবে না!
.
তারপর একদিন ঐ শার্ট পড়ে দোকানদারের সামনে গিয়ে বললাম, ভাই দেখেনতো কালার উঠেছে কি না? সে বললো, 'কালার উঠেনি, ডিসকালার হয়েছে!'
.
কালার উঠে গিয়ে মূল কালারে ফিরে এসেছে! অদ্ভুত সহজ সরল ছিলো জীবন!
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে মে, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৪৯
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেঘ ভাসে - বৃষ্টি নামে

লিখেছেন লাইলী আরজুমান খানম লায়লা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩১

সেই ছোট বেলার কথা। চৈত্রের দাবানলে আমাদের বিরাট পুকুর প্রায় শুকিয়ে যায় যায় অবস্থা। আশেপাশের জমিজমা শুকিয়ে ফেটে চৌচির। গরমে আমাদের শীতল কুয়া হঠাৎই অশীতল হয়ে উঠলো। আম, জাম, কাঁঠাল,... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×