somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কিশোর আড্ডা

২৫ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ২:৪৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শুন একটা গল্প বলি। সেদিন ছিল ঘন বরষা। আকাশ কালো মেঘে মেঘাচ্ছন্ন । রাস্তাঘাটে গাড়ি-ঘোড়া নেই বললেই চলে। এমন সময় পাশের এক গলি ভেদ করে এক কিশোর উদয় হল। কিশোরটির নাম হিমেল। আজ হিমেলের বন্ধু রায়হানের বাসায় গোলটেবিল আড্ডা বসেছে। যত ঝড়-তুফানই থাকুক ন না কেন আড্ডা কিছুতেই মিস করা যাবেনা।

রাস্তায় নেমেই হিমেল বুঝল হেঁটে হেঁটেই বুঝি আজ পাড়ি জমাতে হবে বন্ধুর বাসায়। গ্যারেজে গাড়িটা রেখে এসেছে। এই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় গাড়ি নিয়ে বাইরে গেছে শুনলে বাবার হাজারো প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে। তাই গাড়ি ছাড়া যাওয়াটাই শ্রেয় মনে হল তার কাছে। এমন সময় দেখল এক বৃদ্ধ ধীরে ধীরে একটি রিকশা টেনে টেনে আনছে। ভাগ্যদেবীর লীলাখেলায় যেন তার জয় হল। রিকশাওয়ালাকে যাবে কিনা জিজ্ঞাসা করতেই সে না সূচক মাথা নাড়ল। হিমেল আর বাকবিতন্ডা না করে এক লাফে রিকশায় উঠে বসল। রিকশাওয়ালা তো ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। বলল - "ভাইজান যামু না কইলাম না"। হিমেল প্রচন্ড এক ধমক দিয়ে বলল - "আরে মিয়া যা"। বেচারা রিকশাওয়ালা ভয়ে আর কিছু বলল না। ধীরে ধীরে রিকশা চালাতে শুরু করল। হিমেল দেখল রিকশা খুবই ধীরে যাচ্ছে। সম্ভবত এটা রিকশাওয়ালার নিরব প্রতিবাদ। বন্ধুর বাসায় পৌঁছেই রিকশাওয়ালাকে কিছু টাকা ধরিয়ে দিয়ে সে দ্রুত ঘরের ভিতর প্রবেশ করল। রিকশাওয়ালা খালি ময়দান ফিরে পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে চলে গেল।

রায়হানের বাবা বড় ব্যবসায়ী। মালেয়শিয়ার সাথে উনার ব্যবসা। মালেয়শিয়াকে ওদের ২য় ঘরও বলা যায়। এবার বাবা-মা মালেয়শিয়া যাওয়ার সময় ওকেও যেতে বলেছিল কিন্তু ও পড়াশুনার অজুহাত দেখিয়ে যায়নি। আগে অনেক বার যাওয়া হয়েছে আর ভালো লাগেনা।

হিমেল ঘরে ঢুকে দেখল ইতোমধ্যে প্রায় সবাই এসে গেছে। রায়হান হিমেলের পিঠ চাপড়ে দিয়ে বলল- ব্যাটা এতোক্ষনে তোর আসার সময় হল। হিমেল তার দেরির নানা কারণ দর্শাতে লাগল। রায়হান বলল- আচ্ছা হইছে হইছে বস।

সবাই বেশ মাস্ত মুডে আছে। উচ্চকন্ঠে চিৎকার, চেঁচামেঁচি, হাসাহাসি, তর্কাতর্কি চলছে ঘর জুড়ে। এর ফাঁকে রায়হান কিছু খাবারের প্যাকেট নিয়ে এল। সব খাবার বাইরে থেকে অর্ডার করে আনা। সাথে কিছু দামী সিগারেটের প্যাকেট। সবাই হৈ হুল্লোড় করে খাবার সাবাড় করল। এবার একজন সিগারিটের প্যাকেট তুলে নিল এবং সবাইকে একটি করে দিল। একজন একজন করে সিগারেট ধরাল।

আড্ডায় মশগুল কিশোর ছেলেগুলো ভুর ভুর করে ধোঁয়া ছাড়ছে। একজন বলল জানিস আজকে আমি একটা নতুন জিনিস নিয়ে আসছি। খেয়ে দেখবি নাকি সবাই? সবাই আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইল কি জিনিস। কিশোর ছেলেটি ওর ব্যাগ খুলে কিছু মদের বোতল ও কিছু মাদক দ্রব্য বের করল। মদ কেউ কেউ আগেও একবার দুবার পান করেছে কিন্তু অন্যটি সবার কাছে একদমই নতুন। মাদক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এটা সবাই জানে। কিন্তু সবাই ভাবল একদিন স্বাদ নিয়েই দেখিনা কেমন। প্রতিদিনতো আর হবেনা !
কিছু পরেই সবাই নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে রইল কার্পেটের উপরেই।

গল্পটি শুনেছ তো। গল্পে যাদের কথা বলা হয়েছে ওদের পরবর্তী কাহিনী কিন্তু মোটেও সুখের নয়। ওদের জীবনের পরিণতিও অনেক করুণ। এরা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে । খুব শীঘ্রই ওরা অনেক অপরাধমূলক কাজে না চাইলেও জড়িয়ে পড়বে। এদের মধ্যে থেকেই ভবিষ্যতে অনেক বড় বড় সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজের আবির্ভাব ঘটবে। মাদক অনেক খারাপ। শুরুটা হয়ত সুখের কিন্তু শেষটা অনেক অনেক অনেক বেশি কষ্টের। তাই মাদককে কখনই আমাদের জীবনে আসতে দেওয়া উচিত না। এমনকি খেলাচ্ছলেও না।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে আগস্ট, ২০০৯ দুপুর ২:৪৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইসলামে পর্দা মানে মার্জিত ও নম্রতা: ভুল বোঝাবুঝি ও বিতর্ক

লিখেছেন মি. বিকেল, ১৯ শে মে, ২০২৪ রাত ১:১৩



বোরকা পরা বা পর্দা প্রথা শুধুমাত্র ইসলামে আছে এবং এদেরকে একঘরে করে দেওয়া উচিত বিবেচনা করা যাবে না। কারণ পর্দা বা হিজাব, নেকাব ও বোরকা পরার প্রথা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×