(মাওঃ মুফাজ্জল হুসেন-কে)
একটি স্বপ্নচূড়া হইতে বরফ-চাঙড় খসিয়া তাহার দিবানিদ্রাবিভোর স্বপ্ন-জনক মস্তিষ্কের উপর ধৈসা পড়িতে সুখস্বপ্নাচ্ছাদিত অন্ধকার জঠরের অভ্যন্তর ছাড়িয়া ধীরে ধীরে, অত্যান্তিক লঘু স্পিডে, আইসবার্গের তলা হৈতে সীল মাছের ভুসকি মারা মস্তকের লাহান বাস্তবের বোধগুলা বুদ্বুদের ন্যায় আদিগন্ত মরুময় শ্মশানভূমে উদিত হৈয়া উঠিল। মধ্য এপ্রিলের গগন-বক্ষ ছিন্ন করা প্রখর রৌদের সুতীক্ষ্ণ বর্শার ফলা হৈতে চক্ষুদ্বয়কে প্রহরা দিবার প্রত্যাশায় হস্তদুখানি লৌহবর্মের আকৃতিতে আসমান পানে মেলিয়া ধরিয়া অতঃপর মুখব্যাদান বর্তমান হইতে উদ্ধারলাভের অলীক এষণায় চৌদিক হাতড়াইয়া স্বীয় মোবাইলখানার অন্বেষণে তাহার চক্ষুযুগল ভোকাট্টা ঘুড়ির ন্যায় চক্কর খাইতে লাগিল কিন্তু পঞ্চদশ সহস্র আশ্রফীর বিনিময়ে কিনা যন্ত্রখানি তাহার দৃষ্টির সার্চলাইটে বড়শির অগ্রভাগে বেকুব মীনসম্প্রদায়ের আকিদায় ধরা দিল না। পরবর্তী শটে উহা থেমস নদীর পারে অভিভাবক-পরিত্যাক্ত প্যারাম্বুলেটর-আরোহী শিশুটির ন্যায় “আমার সহিত সর্বদা কেন এমন হৈতেছে?” কহিয়া আর্তচিৎকার করিয়া উঠিল। প্রাগুক্ত তাহার চিৎকারে অনতিদূরে গুরুতর সভায় আগত বায়সদল তাহাদের প্রাণমন-একীভূত চিত্ত-সমর্পিত বৈঠক হৈতে হতচকিত হৈয়া আকস্মিক বিচ্ছিন্নতার বাস্তবতায় “কস্কি মমিন!” আর্তরবে দিগন্তব্যাপী কৃষ্ণবর্ণীল পক্ষযুগল বিস্তারিত করিয়া বিশৃঙ্খল সুরতে উড়াউড়ি করিতে লাগিল। পরিপার্শ্বে চার ক্রোশ পরিধির অভ্যন্তরে পদচারণারত সংখ্যাগত পরিসংখ্যানে বিরলপ্রায় সারমেয়-সকল সম্মুখস্থ পদ-দুখানি অ্যাক্রোব্যাটের দক্ষতায় অদ্ভুত ভঙ্গিমায় বাঁকাইয়া-চুড়াইয়া কর্ণস্থিত শ্রবণতন্ত্রের প্রবেশদ্বারে সমূলে স্থাপন করিয়া কম্পিত গতরে একমনে প্রভুনাম জপিতে আরম্ভ করিল। চারিদিকে তাবত প্রাণিকুলের ত্রাহি পরিস্থিতি স্বচক্ষে অবলোকন করিয়া মানবমনে পরিবর্তিত ভাবের অঙ্কুরোদগম ঘটিল- আপন বিগড়াইয়া যাওয়া ললাটে করাঘাত করিয়া নিয়তির পদতলে সমর্পিত প্রাণ নবতর যন্ত্রক্রয়ের সম্ভাব্যতায় পকেটস্থ অর্থঝুলির অভ্যন্তরে দুই নেত্র বিস্ফারিত করিয়া চাহিয়া দেখিল, পরক্ষণে স্কন্ধের উপরস্থিত বেঢপ মস্তকখানা দুর্জ্ঞেয় হেতু একবার দক্ষিণে অতঃপর বামে নাড়িতে নাড়িতে গগনবিদারক, চিত্তহন্তারক প্রবল অগ্নিবর্ষণের অধিকৃত উপত্যকায় অচিহ্নিত গন্তব্যের পানে ঈষৎ কম্পমান পদবিক্ষেপে অনতিদ্রুত অগ্রসর হৈতে লাগিল।
(এক্ষণে এলিজি হৈল না- আপন কুশলতার সীমাবদ্ধতা হেতু গুরুচাঁড়ালের আশ্রয় লৈয়া ব্যাপারখানি যথাসম্ভব ব্যাখ্যা করিতে প্রয়াস পাইলাম)।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৩:৩০