আমি কে?
আমি বহু বছর ধরে এখানে থাকি, যখন এই জায়গা পুরোটাই জঙ্গল ছিল তখন থেকেই আমি এখানে। এখানে আরো কিছু জ্বীন-পরী থাকলেও কেউ জানেনা আমি এখানে থাকি। কারণ, ওদের সবার থেকে আমার শক্তি অনেক বেশি।
আবীর ছেলেটা বেশ হৃষ্টপুষ্ট। ও যখন প্রথম এ বাসায় আসে তখনি ওর উপর আমার নজর পড়ে। অনেক দিন ধরে মানুষের রক্তের স্বাদ পাইনা তার উপর ওকে দেখে লোভ সামলানো কষ্ট হয়ে যায়। অনেকদিন ধরেই ওকে চোখে চোখে রাখছিলাম কিন্তু দীর্ঘ ৬ বছর পর আজ হঠাৎ করেই সুযোগটা পেয়ে যাই।
আজ ওর বাবা-মা কেউ বাসায় নেই। ছেলেটার সাহস আছে বলতে হবে। এতরাতে পুরো বাসায় ও একা, সেই কখন কাঁথার নিচে ঢুকে ঘুমুবে তা-না করে হরর গল্প লিখতে বসে। ওকে এ অবস্থায় দেখে আমার বাসনা আর দমিয়ে রাখতে পারিনি। সুন্দর এক মেয়ের রুপ নিয়ে ওর সামনে উপস্থিত হলাম, ভেবেছিলাম হকচকিয়ে যাবে কিন্তু কিছুই হয়নি। বরং আমাকে দেখে মুচকি হেসে আবার লেখায় মন দেয়। সম্ভবত ও আমাকে ভালো মনে করেছিল। কিন্তু ও জানতোনা যে আমি ডাইনী, আমি এসেছি ওর রক্তপান করার জন্য।
আমি ওর কাছে গিয়ে কামনা ভরে ওর গলা জড়িয়ে ধরে গালের বাম পাশে একটা চুমু দিই, ভেবেছিলাম ও সাড়া দিবে কিন্তু ও বিরক্ত হয়ে আমাকে সরিয়ে দেয়। আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম।
ওর কোনো ইচ্ছে নেই, কিন্তু ওর রক্তপানের জন্য আমার আর তর সইছিল না তাই ওকে জড়িয়ে ধরে ওর বা গালের নিচে ঘাড় বরাবর আমার দাঁত বসিয়ে দিই। আহ কি শান্তি! কতদিন ধরে মানুষের রক্তপান করিনা মুহুর্তেই প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। ওর রক্ত যতটা মিষ্টি হবে ভেবেছিলাম তারচেয়েও অনেক বেশি মিষ্টি।
আবীর প্রচণ্ড ছটফট করছিল, মুক্তি পাওয়ার জন্য হাত-পা ছুড়ছিল। আমিও আজকের জন্য ছেড়ে দিতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ওর রক্ত এতটাই মিষ্টি যে, কোন ফাঁকে পুরো রক্তপান করে ফেলেছি খেয়ালই করিনি। যখন আর রক্ত বের হচ্ছিল না তখন তাকিয়ে দেখি ওর শরীর নিথর আর শুভ্র হয়ে গেছে। একফোঁটা রক্ত ও অবশিষ্ট নেই।
আমি এখন ওর নিথর দেহের পাশে বসে ওর ফেসবুক দেখছি। ও এখানেই গল্পটা পোস্ট করার জন্য লিখছিল। কিন্তু আজকের পর থেকে ওর ফেসবুকে গল্প লেখা আর রিপ্লে দেয়ার মতো আর কেউ থাকবেনা।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৫:৩২