somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরবানির ঈদ এবং আমাদের আত্মত্যাগ

৩১ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রতিবছর কোরবানির ঈদে দূরদূরান্ত থেকে হাটগুলোতে গরু আসে। গরুগুলো আসে ট্রাকভর্তি হয়ে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে। গরুগুলোকে দাঁড় করিয়ে আনার কারণ, এতে করে ট্রাকে অনেকখানি স্পেস ফ্রি করা যায়। সেই ফ্রি স্পেসে আরো গরু গাদাগাদি করে দাঁড় করানো যায়। ফলে ফলে ট্রান্সপোর্ট ফির অনেকখানি সেভিংস করা সম্ভব হয়। গরুকে বসিয়ে আনলে এই সেভিংস করা সম্ভব হয় না। এই সেভিংস করতে গিয়ে আমরা অবলা প্রাণিগুলোকে এইভাবে কষ্ট দেই। ওদের কষ্ট হলে হোক, নিজের পকেটের দুটো পয়সা তো বেঁচে গেলো - এই যুক্তি দিয়ে আমরা আত্মতৃপ্ত হই।

হাটে আসার পরের ঘটনাও মোটামুটি সেইম। গরুগুলোকে জায়গামতো লাইন ধরে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এখানে দাঁড় করিয়ে রাখার কারণ, গরু বসে থাকলে তার সাইজ ঠিকমতো বোঝা যায় না। সঠিক সাইজ বুঝার জন্য গরুকে দাঁড় করিয়ে রাখা অনিবার্য। এজন্য ক্লান্ত হয়ে গরু বসে পড়লে তার লেজ মুচরিয়ে, লাঠি দিয়ে বাড়ি মেরে দাঁড় করিয়ে দেয়া হয়। এই প্রাণিগুলো যে এতোদূর থেকে এসেছে, ওদের উপর দিয়ে যে এতো ধকল গেছে, ওদেরও যে একটু বিশ্রামের প্রয়োজন আছে - এই বিষয়গুলো আমাদের মাথাতেই থাকে না। আমরা এসেছি আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে। এতোকিছু মাথায় রাখার সময় কই আমাদের?

কোরবানি আমাদের সবাইকে আত্মত্যাগের শিক্ষা দেয়। কিন্তু আমরা যদি একটু ভালো করে লক্ষ্য করি, তাহলে আমরা কোরবানির মাধ্যমে এই অবলা প্রাণিগুলোর আত্মত্যাগের বিষয়টাও বুঝতে পারবো। তাদের এই আত্মত্যাগের ফলে কিছুটা সম্মান তাদেরও প্রাপ্য। আমরাও অতি মহৎপ্রাণ ইন্ডিভিজ্যুয়াল। আমরা এই প্রাণিগুলোকে তাদের প্রাপ্য সম্মানটা প্রদান করি। অকারণে গরুর লেজ ধরে টানি। অকারণে গরুর "পাছায়" থাপ্পড় মেরে পৈশাচিক আনন্দ লাভ করি। আদর্শগত দিক থেকে আমরা যে শ্রেষ্ট, সেটা আবারও প্রমাণিত হয়।

এই কোরবানির ঈদে নিজেদের ভেতরকার পশুত্বকে ত্যাগ করতে শিখি এবং প্রতিটি প্রাণকে সম্মান দিতে শিখি। আল্লাহর সৃষ্টি প্রতিটি প্রাণই মহামূল্যবান। এই প্রাণগুলোকে সম্মান দিলে আমরা নিজেরা কি খুব অসম্মানিত হয়ে যাবো?

সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা আগস্ট, ২০২০ দুপুর ২:১৭
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্

লিখেছেন আরোগ্য, ১০ ই অক্টোবর, ২০২৪ বিকাল ৫:০১

যেহেতু জন্মসূত্রে মা বাবার কাছ থেকে ধর্ম হিসেবে ইসলাম পেয়েছেন তাই হয়তো নিজেকে মুসলিম হিসেবেই পরিচয় দিয়ে থাকেন কিংবা কোন কারণে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছেন। কিন্তু আপনি কী মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তোমাকে আমার ভাল্লাগে না X#(

লিখেছেন শায়মা, ১০ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৩


তোমাকে আমার ভাল্লাগেনা
এক্কেবারেই ভাল্লাগে না,
দেখলে পরে নামটা তোমার
বিরক্তিতে কুচকে কপাল
চোখটা ফেরাই অন্যদিকে।

কি অসহ্য তোমার নামে,
গা জ্বলে যায় বোকামীতে,
বোকার মতন বকবকানী,
গাঁক গাঁক গাঁক গকগকানী।
যাচ্ছো করেই কবে থেকেই!

লজ্জা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড: ইউনুস কি কাজের থেকে কথা বেশী বলছেন?

লিখেছেন সোনাগাজী, ১০ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:০৩



ড: ইউনস অবশ্যই কাজের থেকে কথা বেশী বলছেন, ইহা শেখ হাসিনা সিনড্রম; তিনি এই ধরণের ১টি পদ বরাবরই চেয়ে আসছিলেন ; এতদিন পরে, ৮৪ বছর বয়সে পেয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেকুব জাতি ড. মুহম্মদ ইউনূসের বক্তব্য বুঝতে পারল না

লিখেছেন আহা রুবন, ১০ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৮:১৬



বেকুব জাতি ড. মুহম্মদ ইউনূসের বক্তব্য বুঝতে পারল না। তার অফিস থেকে বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে হল! এই ব্যাখ্যা পেয়ে আমরা ধন্য! কত গভীর একটা ভাব প্রকাশ করলেন অথচ তার সাক্ষাতকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

শেখ হাসিনা পরবর্তী দেশ শাসনে সবচেয়ে যোগ্যব্যক্তি কি তারেক রহমান?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১১ ই অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪



আমরা যেহেতু ভোট দিতে চাই, সেহেতু ভোট দেওয়ার লোকতো আগে থেকেই খুঁজে রাখা দরকার। আমার জামাইয়ের মতে শেখ হাসিনা পরবর্তী দেশ শাসনে সবচেয়ে যোগ্যব্যক্তি তারেক রহমান। কেউ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×