সম্প্রতি আমরা দেখতে পাই, দেশের বিভিন্ন স্থানে ওয়াজ মাহফিল, সিরাত মাহফিল, ইসলামী মহাসম্মেলন ইত্যাদি নামে কিছু উগ্র সাম্প্রদায়িক ও স্বার্থান্বেষী মহল আহমদীসহ বিভিন্ন মত ও পথের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত ও উত্তেজিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। একটি মিথ্যা অপপ্রচার বা গুজব কত সহজেই যে জনগণের কোন কোন অংশকে উত্তেজিত করে ভয়ঙ্কর কান্ড তথা লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে পারে তার অসংখ্য দৃষ্টান্ত আমাদের দেশেই রয়েছে।
কয়েক বছর আগে চট্টগ্রামের রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ আর ২০১৬ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ তার সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়গুলোতে বিভিন্ন মত ও চিন্তার ব্যক্তিবর্গের ওপর শারীরিক তথা ব্যাহত হত্যার উদ্দেশে আক্রমণ দেশে জঙ্গিবাদীদের উপস্থিতি জানান দেয়।
একইভাবে গত কয়েকদিন যাবৎ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগরে খতমে নবুয়ত মহাসম্মেলনের নামে আহমদিয়া মুসলিম জামায়াতের স্থানীয় সদস্যদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও হুমকি প্রদান, আহমদিদের কার্যক্রম বন্ধ এবং সরকারিভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে ব্যাপক প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে খতমে নবুয়ত সংগঠনের পক্ষ থেকে মাইকে আহমদিয়াদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং উসকানিমূলক বক্তব্য প্রচার করার সংবাদও আসছে।
আমরা প্রায়ই দেখতে পাই এসব ধর্মীয় উগ্রবাদী ও স্বার্থান্বেষী মহল বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা অপপ্রচার এবং জনগণকে বিভ্রান্ত করে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি এবং সরকার ও প্রশাসনের ওপর পেশীশক্তি দেখিয়ে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা করে থাকে। বিশেষ করে দেশে যখন কোন ক্রান্তিকাল উপস্থিত হয় আবার যখন কোন ইস্যু থাকে না তখন ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের লক্ষ্যে এরা আহমদিয়া ইস্যুসহ নানা ইস্যু সৃষ্টির চেষ্টা করে।
আশঙ্কা হয়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ঐসব অশুভ শক্তি আবারও মাঠ গরম এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টায় মাঠে নেমেছে। এসব উগ্রধর্মান্ধদের ব্যাপারে সরকার, সচেতন জনগণসহ সব বিবেকবান মানুষের উচিত হবে সময় থাকতে এদের সব ধরনের অপতৎপরতা বন্ধ করে, দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে যে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে তার পেছনে মূলত উগ্রধর্মান্ধ গোষ্ঠী কাজ করছে। এরা চায় শান্তিপূর্ণ এ দেশটাকে পাকিস্তানের মতো ব্যর্থ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে। দেশকে শান্তিময় এবং নিরাপদ রাখতে হলে এদের বিরুদ্ধে সরকারকে যেমন আরও কঠোর হতে হবে তেমনি সমগ্র দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উগ্রধর্মান্ধ গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:৩৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



