-আবু মকসুদ
আমাদের ছেলেবেলার নদী হাফ্প্যান্ট পরে
চলে যেত দূরে, বহুদূরে-
তার পথ চেয়ে একদল ভোরের বালক
কাতর হতো, তাদের কাতরতা নদীকে
স্পর্শ করতো কী না, এখন তা জানার উপায় নেই
তবে নদী ফিরত না, নিরুদ্দেশ ভালোবেসে
থেকে যেতো দূর পরদেশে
বালকেরা অপেক্ষা করতে করতে
ফিরে যেতো বিষণ্ণ বারান্দায়
আর ধীরে ধীরে নিজেদের আদুল
গা ঢাকতে ঢাকতে দেখত
অবিশ্বাসী নদীর মতই নিরুদ্দেশ হয়ে
ছেতাদের যাবতীয় বিশ্বাস, ছেলে ভুলানো গল্পে
তারা আর মোহিত হয় না
নদীর সাথেই হারিয়েছে
জীবনের সব নীতিবাক্যাবলি।
আমাদের ছেলেবেলার গ্রাম তরুণী ছিল
শরতের সন্ধ্যায় সাদা সাদা মেঘে চড়ে
সে যেত বৃষ্টি পাড়ায়, তারপর দুই সখি
যুগলে নেমে পড়ত পূর্ণচাঁদের স্নানে
আমরা পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখতাম আর
ভাবতাম এমন জুড়ি ত্রিভুবনে কোথাও পাব না
আমাদের ভাবনার মাঝেই গ্রাম হঠাৎ যুবতি
হয়ে পড়ত, বিয়ের আলাপের জের ধরে
আস্তানা গাড়ত পাশের শহর,
আমরা দেখতাম উচ্ছল তরুণী গ্রাম, অযাচিত
দাম্পত্যের ক্রমাগত অত্যাচারে নুইয়ে পড়েছে
শরতের মেঘ তাই পাঠাত না নিমন্ত্রণ,
দুঃখে কষ্টে আর অভিমানে শয্যায় লুটিয়ে পড়া
আমাদের তরুণী গ্রাম দেখত
চিতাভস্মের পাশে তার অতৃপ্ত বিদায়বে