এখন অনেকেই মনে করে সে মানুষ হয়ে গেছে! তার আর কোনো ভাবনা নাই। আর সে-ই যেন পৃথিবীর কিংবা দেশের একমাত্র মানুষ। এমন অযাচিত-ভাবনা দেশের একটি শ্রেণীকে খুব সহজেই আচ্ছন্ন করে রেখেছে। এরা নিজেদের স্বার্থমোহে ডুবে আছে। আর হয়তো এভাবেই চিরকাল ডুবে থাকবে। আর চিরদিন ভাববে: সে খুব মানুষ হয়ে গেছে!
মানুষ এখন কত রকমের চাকরি করছে, ব্যবসা করছে। আরও কত কী করছে! আর তাদের কত ডিগ্রী! আর কত সার্টিফিকেট! কিন্তু একটি ডিগ্রীর বড় অভাব—সেটি মনুষ্যত্ব। আজ পৃথিবীর সর্বত্র এই মনু্ষ্যত্বের বড় অভাব। কিন্তু এটি ছাড়া পৃথিবী অচল।
অনেকেই এখন দেশপ্রেমের শুধু ভান করে থাকে। আর কিছু ফাঁকা-বুলি দিয়ে মানুষের মন জয় করতে চায়। আর দেশের মানুষগুলোও যা হয়েছে না! এরা লাভের ও স্বার্থের একটুখানি সুযোগ পেলে অমনি কুকুরের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। মানুষ এখন কুকুরের মতো লোভী হয়ে গেছে। এই মানুষকে ভালো বানানো খুবই কঠিন কাজ। তবুও আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তাই বলে হাল ছেড়ে দেওয়া যাবে না। মানুষের পৃথিবীতে মানুষকে মানুষের মতো মানুষ হতেই হবে।
পশুত্ব আর মনুষ্যত্ব আজ একসঙ্গে চলতে পারে না। আর তাই, মানুষকে এখন এর যেকোনো একটি ধরতে হবে। আর যাবতীয় ভণ্ডামি ও শয়তানী ছেড়ে দিয়ে ভালো হতে হবে। আর সকলকে দেশের কথা, মানুষের কথা, সবার কথা ভাবতে হবে। মানুষের কথা ভাবতে-ভাবতেই একদিন সকলে মানুষ হয়ে উঠবে।
শয়তানী করে এই পৃথিবীতে কে কতবড় হয়েছে? তৈমুর লঙ্গ, নাদির শাহ, সুলতান মাহমুদ, হালাকু খাঁ, চেঙ্গিস খাঁ, হিটলার, মুসোলিনি কেউই জোর করে কিংবা গায়ের জোরে বড় হতে পারেনি। তাই, শয়তানী ছেড়ে দিয়ে মানুষকে আবার মানুষ হতে হবে। আবার মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে হবে।
৩০লক্ষ শহীদের দেশ এটি। তবুও এখানে দেশপ্রেমিকের বড় অভাব! আজও এই দেশের মানুষ নিজের মাতৃভূমিকে তার জীবনের শ্রেষ্ঠ স্থান বলে ভাবতে পারেনি। এর চেয়ে বড় দুঃখের আর কী আছে আমাদের জীবনে? নিজের স্বার্থটাকে জলাঞ্জলি দেওয়ার সৎসাহস ও আন্তরিকতা মানুষের মধ্যে কবে আবার জন্মলাভ করবে? কবে এই দেশের মানুষ আবার কমপক্ষে ৮০ভাগ দেশপ্রেমিক হবে? আর মানুষকে দেশপ্রেমিক তো হতেই হবে। নইলে, এই দেশের কী হবে?
মানুষ হওয়া এতো সহজ নয়। আর এটি বাজারের কোনো পণ্যও নয় যে তা কিনে নিলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আর একদিনে বা খুব সহজে মানুষ হওয়াও যায় না। এর জন্য প্রয়োজন আত্মসাধনা, আত্মসমালোচনা আর সুন্দর জীবনভাবনা। এটি দিনে-দিনে সাধনা ও ত্যাগের মাধ্যমে অর্জন করতে হবে। আর এটি অর্জন করার জন্য জীবনের শেষদিন পর্যন্ত সর্বাত্মক প্রচেষ্টাও চালাতে হবে। তবেই জীবনে ফুটতে পারে মনুষ্যত্বের ফুল।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ৮:৪৩