খেলা শুরু হইবার একঘণ্টা আগে টিভি ছাড়লাম।দেখলাম যে, star sports এ বরাবরের মতো ম্যাচপূর্ব আলোচনা শুরু হইয়া গেছে।তবে আলোচনার কিছুই কানে যায়নাই কারণ আমার মাথায় খালি toss আর pitch report ঘুরতাছিলো। তারপর সাবেক অসি ব্যাটসম্যান ‘টম মুডি’ pitch এর যে report দিছিলেন তাতে একটু আতঙ্কিত হইলাম

কারণ, pitch report অনুযায়ী toss জিতি fielding নিলেও সমস্যা হবি না যেটা মাশরাফিরে confused কইল্লেও কইত্তে পাইত্তো।হেরপর টসের সময় হইলো আর জিতলেন ইংল্যাণ্ডের অইংরেজ captain ‘এওইন রজার্স’


থুক্কু ‘এওইন মরগ্যান’ ।মনটা খারাপ হইয়া গেল।কিন্তু আমাকে বিস্মিত করি দিই উনি যখন fielding করার ফয়সালা করেন তহন, আমার খারাপ হওয়া মনে ভয়ও জইমল্লো

। হে মিয়ার কোন খারাপ মতলব নাই তো

! যাই হোক, প্রায় আধা ঘণ্টা পর দুই দেশেরই জাতীয় সঙ্গীতের সময় খাড়ায়া থাকলাম। হেরপর খেলা শুরু হইতে না হইতেই ‘এনামুল’ এর বদলি ‘ইমরুল’ মিয়া আউট।বুকটা ভাইঙ্গা গেলো গা

। এর দুই ওভার পর ‘আকরাম খান’ এর ভাতিজা ‘তামিম’ আউট হই গেলো। আমি বিরক্ত হই

খেলা দেহা বাদ দিয়া পেপার পইত্তে শুরু কইল্লাম।পণ কইল্লাম খেলা গোল্লায় যাক, পেপার পড়া হইলেই খেলা দেখতে বমু।তয় টিভিডা ছাড়াই আসিলো।পেপার পড়া শেষ করি আবার খেলা ছাইতে লাগলাম। দেখতে দেখতে ২০ ওভারের মতন হইলো আর বাংলাদেশের কেউ আউট হয়নো দেইখা যখন মনে হইলো আমরা ভালোই ঘুইরা দাড়াইছি তহনি আরেকটা উইকেট পইল্লো আর সাকিব নামলো কিন্তু একসময়কার বন্ধুর হাতে বল দেইখ্যা মনে মনে এটাই কইলেন কিনা ‘দোস্তি কিয়েথি, আব নিভানা তো পারেগাই’ কারণ মঈন আলীর যে বলে উনি আউট হইলেন, মনে হইলো ইচ্ছা করিই আউট হইলেন

। সাকিব গেল আর ভায়রা ‘মাহমুদঊল্লাহ’ রে সঙ্গ দিতে আইলো কিপার ‘মুশফিক’।অনেকক্ষণ ধরি ব্যাট করার পর ভায়রা যখন প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে বিশ্বকাপে সেঞ্চুরী মাইরলো, তহন ‘মুশফিক’ এর খুশি আসিল দেহার মতন

।কিন্তু সেঞ্চুরীর পর পরই বড় ভায়রা ছোটটার জন্য নিজের উইকেট বিসর্জন দিয়া দিলো রান আউটের মাধ্যমে

।তারপরও মনে হইতেসিলো যে, ৩০০ হইলেও হইতেও পারে।কিন্তু না, হইলো না

।শেষ পাঁচ ওভারে ব্যাটসম্যানরা কিছুই কইত্তে পাইল্লোনা

। ‘মুশফিক’ মিয়াও ১১ রানের জন্য ১০০ করতে পাইল্লো না

।
জিতার সম্ভাবনা কমি গেছে দেখি বাংলাদেশের বোলিংটাও সিরিয়াসলি দেখা শুরু করি নাই।এর মইধ্যে ১১ রানের মাথায় রুবেলের বলে মঈন আলীরে আম্পায়ার lbw দিয়া দেওনের পর মঈন আলী রিভিউ চাইয়া যখন বাইচ্চা গেলেন

, তখন আমি জিতার সম্ভাবনা আরও কমি যাইতে দেখলাম।পেসাররা ভীষণ মাইর খাওনের পর বল হাতে নিলেন ‘আরাফাত সানি’ এবং প্রথম ওভারেই মঈন আলীর উইকেট

, তয় ‘সানি’ না, আউট করছেন কিপার মুশফিক, ‘সৌম্য’ এর দারুণভাবে ছোঁড়া বল লুফে নিয়া মানে রান আউট আরকি।এরপর নামলেন ‘হেইলস’, দেইখ্যা তো খুশি না হই আরও ডরাইয়া গেলাম

। যে লম্বা, ‘গেইল’রেও ছাড়ায় কিনা সন্দেহ

। পরে মনে হইলো, এতো ঢাকায় শ্রীলঙ্কার লগে সেঞ্চুরী মারছিলো।যাই হোক নাইমাই চাইর। ভয় পাইলাম ম্যাচটাই না তাড়াতাড়ি শেষ হই যায়

। যাইহোক পরের ওভারে সাকিবও বল পাইলো।হেরপর, দোনজনে মিলি কিছু রান আটকাইলো।খানিক বাদে মাশরাফি আইলো বল কইত্তো।হের আগে তাসকিন, সাব্বিররাও একটু বল করি দিসিলো তয় কাউরেই আউট কইত্তো পারে নো।যাই হোক ওই ওভারেই ‘হেইল’স আউট তয় তার আগে পরপর দুটা চাইর খাইসিলো ‘মাশরাফি’।তারপর নাইমলো ‘জো রুট’।এই বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ভালো ব্যাটসম্যান আর সে কারণেই আমি ‘খেলা দেইখা লাভ নাই’ ভাইবা অন্য কাজে ব্যস্ত হই পইল্লাম।কিছুক্ষণ পরই শুনি ‘ইয়ান বেল’ আউট।একটু খুশি হইলাম

।কিছুক্ষণ পর আবার চিৎকার, তয় দর্শকদের না, ধারভাষ্যকারদের।ভাবলাম ছয় টয় মারলো নাকি।ওমা, শুনি ক্যাপ্টেন সাহেব আউট।কে কইল্লো? কে আবার রুবেল।এক ওভারেই হে, দুইজনরে সাজঘরে পাঠাইলো। ভাবলাম, খেলা জমসে।তয় আমি দেরি করিই খেলা দেখতে বইলাম। ভাবলাম অনেক রান টান হই গেসে।কিন্তু একি, ২৮.৩ ওভারে ১২৬ রান মাত্র।বসতে না বসতে তাসকিন ফিরাইলো টেলররে।তয় এবারও খুশি না হই ভয় পাইলাম

। কারণ আসতাছে ‘জস বাটলার’।একাই ম্যাচ বের করে নিয়া যাইতে পারে।আমার ভয়টাই সত্যি হইতে শুরু কইল্লো।মাঝে ‘রুট’ আউট হওয়াতে একটু হাফ ছাড়ি বাইচলাম

।বিশ্বকাপে তাঁর performance এর জইন্য না, বোলারদের সিরিয়ালও যে শুরু হই গেসে গা

। কিন্তু তারপর অনেকক্ষণ কোন উইকেট নাই।দেখতে দেখতে প্রয়োজনীয় রান দাঁড়াইলো ৪৭ এ।বল আসে ৩০ টা।বল পাইলো তাসকিন। ভয় পাইলাম, প্রয়োজনীয় রানের আধাই না দিই দেয়।কিন্তু না রান দিলো ৯ আর আউট কইল্লো ‘বাটলার’ রে

।চিন্তা কইল্লাম, বিপজ্জনক ব্যাটসম্যানগোরেই কেন তাসকিনের শিকার হিসাবে পছন্দ।মানে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর প্রথম শিকার ভয়ংকর অসি ব্যাটসম্যান ‘গ্লেন ম্যাক্সওয়েল’।ওহ, ওই ওভারে খালি ‘বাটলার’ না। আরও একজন আউট হইছিলো। ‘ক্রিস জর্ডান’ সে দুর্ভাগার নাম।সাকিবের ডাইরেক্ট থ্রোতে ‘টিভি আম্পায়ার’ তারে আউট দিই দেয়।যদিও ‘benifit of doubt’ তাঁর পক্ষেই যাওয়ার কথা আছিলো।বর্ণপ্রথার victim হইলেন কিনা কে যানে

। তয় ইংল্যান্ডের কোচ কিন্তু আম্পায়াররে হুমকিই দিয়া রাখলেন

।জমিদারের দল বলে কথা

। দুই ওভার পর তাসকিন ‘ক্রিস ব্রড’ পুত্রের হাতে ছক্কা খেয়ে ১৫ রান দিয়া দিলেন।তয় উইকেটও পাইতে পারতেন কিন্তু ‘আকরাম খান’ এর ভাতিজা নিতে দিলে তো। ‘তামিম ইকবাল’ ক্যাচটা ফেলার সময় সারাদিনে এই প্রথম প্রচণ্ড রাগ উঠসিলো

।একে তো তাড়াতাড়ি আউট হইসে, তার ভিতর ক্যাচটা নিতে পারে নাই

।ভাবলাম তাঁরে না ম্যাচ শেষে ঝাড়ি খাইতে হয়।শেষ দুই ওভারে দরকার ১৬ রান। হাতে উইকেট ২ টা।মনে মনে চাইতাছিলাম ‘সানি’ বল করুক।কিন্তু বল পাইলো আগের স্পেলের শেষ ওভারে মাইর খাওয়া ‘রুবেল’। মনটা আরও বেজার হইগেলো


।এরকম পরিস্থিতিতে ‘মুরালিথরন’ এর মত ব্যাটসম্যানের হাতে মাইর খায় যে বোলার, তাঁর হাতে কিনা বল।ভাবতে ভাবতেই দেখি ‘স্টুয়ার্ট ব্রড’, ‘ক্রিস ব্রড’ পুত্র ক্লিন বোল্ড।এটা দেইখা খুশি হইতে না হইতেই দেখি আম্পায়ার দেখছেন ‘নো বল’ হয়েছে কিনা।না, হয় নো

।জিতার স্বপ্ন দেখতে শুরু করে দিসি। দুই বল পরেই দেখি ‘জেমস অ্যান্ডারসন’, যারে আউট কইত্তে ভারতীয়দের একবার জান বের হয়ে গেসিলো

, হেও ক্লিন বোল্ড

। ম্যাচের পুরোটা সময় শান্ত থাকা এই আমি খুশিতে জোরে একখান চিৎকার দিলাম

। আবার মনে হইলো, আমি আসলেই স্বপ্ন দেখতাছি না তো ?এটা ভাবতে ভাবতেই দেখলাম ‘মাহমুদউল্লাহ’ ম্যান অব দ্য ম্যাচ হইছে। ‘সত্যই আমরা জিতা গেছি’ মনে হইলো যখন দেখলাম captain দের মইধ্যে মাশরাফির আগে ‘মরগ্যান’ মিয়া presentation এ আইছে , দুঃখের কথা কইতে

। ‘মাশরাফি’ রা এক্কেরে জমিদারি স্টাইলে ধইরা দিছে ইংল্যাণ্ডেরে

।
আর এই হইলো আমার বিশ্বকাপে ‘বাংলাদেশ-ইংল্যাণ্ড’ এর খেলা দেখার অভিজ্ঞতা।দেরিতে হইলেও বাংলাদেশ দলেরে অভিনন্দন জানাইয়া আমি এখনকার মতো শেষ কইত্তাছি

।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৫৭