somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জামাতী চিন্তাধারার দেউলিয়াত্ব:

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৬ রাত ১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(আড্ডার ইংরেজী ভার্সনে প্রকাশিত হয় সেপ্টেম্বর 25, 2005)
আড্ডার আসরে আমার ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক কোন এজেন্ডা নেই। বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী চিন্তাধারায় যে অসংগতি ও দেউলিয়াত্ব বিরাজ করছে তা তুলে ধরাই হচ্ছে আমার লেখার পটভূমি। মৌলবাদী ও চরমপন্থী দল হিসেবে জামাতী ইসলামীর অপকর্ম ,ইসলামী বিশ্বাস ও অনুশীলনের অপব্যাখ্যা আমাদের ধর্ম বিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতার সবচেয়ে বেশী ক্ষতিসাধন করেছে।

জামাত তার ইসলামী আন্দোলনের উৎস ও প্রেরণা লাভ করেছে পাকিস্তানী কথা সাহিত্যিক মওদুদীর (1903-1979) লেখা থেকে। ইসলাম সম্পর্কে মওদুদীর কোন একাডেমিক যোগ্যতা নেই। কিন্তু তার লেখার মধ্যে রয়েছে উগ্র উদ্দীপনা ও উন্মাদনার উৎস। বিশেষতঃ জামাতীরা মওদুদীর লেখা পবিএ কোরআনের অনুবাদ "তাফহীমুল কোরআন' কে পাঠ্যবই হিসেবে পড়ে থাকে ও গবেষণার জন্য তথ্যসূএ হিসেবে ব্যবহার করে। এই উপমহাদেশের অধিকাংশ ইসলামী চিন্তাবিদ মওদুদীর লেখাকে ভ্রান্ত ও ইসলামবিরোধী হিসেবে মত দিয়েছেন। যে কোন শিক্ষিত মানুষ এসব ব্যাপার নিয়ে লেখা যথেস্ট বই পএ বাজারে পাবেন, কারণ মওদুদীর লেখা বই পএ ইসলামে নবুয়ত ও রাসুলুল্লাহ'র (সাঃ) প্রদর্শিত পথ নিয়ে অহেতুক বিতর্কের অবতারণা করেছে। মওদুদী ও তার শিষ্য গোলাম আজম উভয়ই কোন রকম ধমীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা ছাড়াই কেবল সংকীণ ধর্মীয় বিশ্লেষণ ও মোহাচ্ছন্ন লেখার কৌশল দিয়ে ধর্মীয় উন্মাদনা ও বিভ্রান্তির জন্ম দিয়েছেন। বিশেষত: জামাতী ও শিবির কমর্ীরা এসব লেখা পাঠ্য হিসেবে তোতা পাখির মতো আওড়ায় যা জন্ম দেয় ধমর্ান্ধতা ও উগ্রতার যার সাথে প্রকৃত ইসলামী বিশ্বাস ও অনুশীলনের কোন সম্পর্ক নেই।

দার্শনিকভাবে, মওদুদী চিন্তাধারা গড়ে উঠেছে ইবনে তাইমিয়ার কট্টর ইসলামী চিন্তাধারার উপর। বর্তমানে সৌদী আরব ও বেশ কিছু আরবদেশে তাইমিয়ার ধারণার সূএ ধরে ইসলামী মৌলবাদের জন্ম নেয়। তাইমিয়া ওয়াহাবী আন্দোলনের পথপ্রদর্শক ও ইসলামী বিশ্বাসে অপ্রয়োজনীয় নতুনত্বের (বিদায়াত) সূচক। আমাদের ধর্মে ইসলামী রাজনৈতিক দল বলে কোন আলাদা ধমর্ীয় বিধান নেই যার এই উপমহাদেশীয় সূচক হচ্ছেন মওদুদী ও তার উওরসূরী গোলাম আজম ও জামাতী দল।

জামাতীরা 'রাজনৈতিক ইসলামকে' ধমর্ীয় বিশ্বাসের মূল শেকড় বলে বিশ্বাস করে যেখানে ধর্মীয় উগ্রতা ও জঙ্গীপনা তাদের চিন্তা ও আচরণকে চালিত করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, একবার কিছূ অন্ধলোককে হাতী স্পর্শ করে তার বিবরণ দিতে বললে প্রত্যেক অন্ধ হাতীর যে অঙ্গকে স্পর্শ করেছে, হাতীকে দেখতে সেই অঙ্গের মতো বলে বর্ণনা করে। জামাতীরা হচ্ছে সেসব অন্ধের মতো যারা ইসলামকে কেবল উগ্র রাজনৈতিক ইসলাম হিসেবে চালিয়ে দিতে চেয়েছে যা ইসলামের শান্তিপূর্ণও সহনশীল চিএকে কালিমালিপ্ত করে। ইসলাম শিখায় শান্তি, এখানে হানাহানির কোন স্থান নেই।

বাংলাদেশে রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও অগ্রসর চিন্তার জনগোষ্ঠী জামাতীদেরকে বাংলাদেশে পাকিস্তানী ঘাতকদের দোসর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এর বাইরে তারা আর কোন ঐক্যবদ্ধ সামাজিক ও রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। অন্যদিকে যারা এদেশে ধমর্ীয়ভাবে জামাতী চিন্তার অন্তঃসারশূণ্যতা প্রমাণ করেছেন তারা তাদের লেখাকে সহজবোধ্যভাবে বৃহওর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন। এই দুই মেরুর অভিন্ন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থতার সুযোগের সদ্ব্যবহার করে জামাতীরা পরগাছার মতো আমাদের জাতীয় জীবনে নীরবে স্থান করে নিয়েছে। স্বাধীনতাপ্রেমী বাংলাদেশীরা কখনো দীর্ঘদিন প্রতারিত হয়নি। জনগণ বিপথগামী জামাতীদেরকে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে ছুঁেড় ফেলতে অবশ্যই এগিয়ে আসবে।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে ডিসেম্বর, ১৯৬৯ সন্ধ্যা ৭:০০
২৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×