somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মার্টনেস দেখানোর উপায়

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ৯:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রায় প্রত্যেকটা মানুষ কিছু না কিছুতে স্মার্ট। কুদরত ই খুদা বিজ্ঞানে স্মার্ট, শচীন ক্রিকেটে স্মার্ট, হাসিনা রাজনীতিতে স্মার্ট, কুমার বিশ্বজিৎ গান গাওয়ায় স্মার্ট, রবীন্দ্রনাথ কাব্য ও সঙ্গীত রচনায় স্মার্ট, সত্যজিৎ রায় শিশু সাহিত্য ও film directing এ স্মার্ট। এরকম আর কি। কিন্তু overall স্মার্ট হবার উপায় কি ?
অনেকে ভাবে mature হওয়াটা smartness. আমি মনেকরি, বয়স বাড়ার পরেও immature থাকাটা স্মার্টনেস। সত্যি সত্যি দরিদ্র family থেকে আসলে ভিন্ন কেস কিন্তু নিম্ন মধ্যবিত্ত family থেকে এসে অনার্স 1st year এ ভর্তি হবার পর পোলাপান এমন ভাব দেখায় যেন কত গরীব ঘর থেকে উঠে আসছে। ফার্স্ট ইয়ারে চাকরী নিয়ে বাবা মাকে টাকা পাঠিয়ে নিজেকে mature প্রমাণ করার চেষ্টা করে। তার বাবা মা কিন্তু তাকে mature হতে বলেনি বা সংসারের পিছনে খরচ করতে বলেনি। এমনিই পন্ডিতি করে এসব করবে আর উপার্জনহীন সহপাঠীদের টিটকারী দিয়ে বলবে, "তোরা তো বাপের হোটেলে খাস, আমি থাকি মেসে। তোরা খাস মায়ের হাতের রান্না, আমি খাই নিজে রান্না করে। তোরা বাস্তবতা কি জিনিস, বুঝিস না।"
এমন না যে তার অর্থ উপার্জন করার কোন প্রয়োজন আছে। এমনিই নিজেকে দায়িত্ববান ও পরিপক্ক প্রমাণ করার চেষ্টায় পাকামো করবে আর যেসব সহপাঠী তার মত income করে না তাদের বিনা অপরাধে অনুতপ্ত feel করাবে। বাপের হোটেলে খাওয়া ছেলেগুলো ভাববে, "তারা ধনী পরিবারে জন্ম নিয়ে অনেক বড় কোন পাপ করে ফেলছে অথবা নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম নিলেও family এর সাথে থেকে অনেক বড় কোন অপরাধ করে ফেলছে।" ..... অযথা একেবারে শুধু শুধু নিজেকে ছোট মনে করবে। আর তথাকথিত দায়িত্ববান ছেলেটা সহপাঠীদের ছোট feel করিয়ে একটা আত্মতৃপ্তিতে ভুগবে।
আমার ব্যক্তিগত মতামত হল , 31 বছর বয়স হবার আগে দায়িত্ববান হওয়া, বিয়ে করা, mature হওয়াটাই অপরাধ। আমার সাথে কেউ একমত হবে না, আমি জানি। ব্যক্তিগত আক্রমণ না করে ভদ্রভাবে বিরোধীতা করার জন্য অনুরোধ করা গেল। আগেই বলেছি, যদি আসলেই দরিদ্র পরিবার থেকে আসে তখন income করা বা দায়িত্ব নেয়া ঠিক আছে। প্রয়োজন ছাড়া দায়িত্ব কাধে তুলে নেয়া বা mature হওয়াটা smartness নয়। বরং এটা stupidity. পরিবার থেকে দূরে এসে নিজের হাতখরচ চালানোর জন্য টিউশনি করা লাগে। কিন্তু সেজন্য অহংকার দেখাবে কেন ? বিনাদোষে কাউকে guilty feel করানোর অধিকার কারোর নাই।
নজরুল তো কখনো রবীন্দ্রনাথকে বলে নাই, "আপনি জমিদার পরিবারে জন্ম নিয়েছেন। আর আমি দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ করে কবি হয়েছি। আপনার চেয়ে আমার বাস্তবজ্ঞান বেশী।" .. এ ধরণের কথা বলা চরম অভদ্রতা ও বেয়াদপি। পৃথিবীতে একেকজন মানুষের বাস্তবতা একেকরকম। কেউ অর্থনৈতিক problem face করে নাই বলে তার লাইফে কোন কঠিন বাস্তবতা নাই - এমন চিন্তা করাটাও অন্যায়।
যাকগে, এখন আসি overall smartness দেখানোর উপায় সমন্ধে।
1. যেকোন একটা বিষয়ে expert হওয়া। হোক সেটা বিজ্ঞান বা সাহিত্য বা সঙ্গীত বা ক্রীড়া বা অভিনয় বা প্রোগ্রামিং anything. যেটায় আপনার প্যাশন আছে। প্যাশন থাকতেই হবে। যার প্যাশন নাই সে যদি আকিজ বিড়ির মালিকের মত ব্যবসাবুদ্ধিসম্পন্ন হয়, ধনীও হয় তবু সে স্মার্ট নয়। যেমন চীনের কোম্পানী "আলীবাবা" এর সহপ্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। সে ধনী, তার ব্যবসাবুদ্ধি আছে। সফল ব্যক্তি। তবু সে smart না। ব্যবসা কখনো কারোর প্যাশন হতে পারে না। প্যাশন হল সেই জিনিস যা ছাড়ার জন্য কেউ যদি পৃথিবীর সমস্ত সম্পদ আপনাকে এনে দেয়, তবু আপনি ছাড়বেন না। That is called passion.
2. Question authority. কর্তৃপক্ষকে সর্বদা প্রশ্ন করতে হবে, কর্তৃপক্ষের কাছে সবসময় জবাবদিহি চাইতে হবে। কোন আদেশ অন্ধভাবে পালন করা যাবে না। আর্মিরা সর্বদা অন্ধভাবে আদেশ follow করে তাই তারা smart না। কেন জানি সাধারণ মানুষের কাছে আর্মিদের smart মনে হয়, বুঝিনা। সম্ভবত আর্মিরা সুশৃঙ্খল, তাই সবাই তাদের smart ভাবে। Trust me, সুশৃঙ্খল হওয়াটা smartness না। লাইফে একটু সুশৃঙ্খলতা ও একটু বিশৃঙ্খলতার mixture দরকার। আইনস্টাইন always শিক্ষকদের সাথে বেয়াদপি করছে। কারণ, সিস্টেম তার পছন্দ না। You know, প্রয়োজনে যে বেয়াদপ হতে পারে, ভদ্রতা পাবার অধিকার শুধু তারই। সিস্টেমকে বদলানোর জন্য সংঘর্ষ করাটা smartness.
3. সমাজের প্রচলিত রীতিনীতির বিরোধীতা করা। কোন culture আবহমান কাল ধরে চলে আসলেই সেটা সঠিক হয়ে যায় না। অবশ্যই স্রোতের বিপরীতে চলার, সমস্ত দুনিয়ার বিরুদ্ধে যাবার সাহস থাকতে হবে। মানুষ পাগল বললেও নিজের আদর্শে পর্বতের মত অটল থাকতে হবে। স্রোতের বিপরীতে গেলে সাধারণত সমাজ স্মার্ট ভাবে না বরং বলদ বা পাগল মনে করে। কিন্তু কোটি কোটি বলদের ভীড়ে দুই একজন smart ব্যক্তি ঠিকই বুঝবে যে আপনি right.
4. নাস্তিক না হলেও at least সংশয়বাদী হওয়া, ধর্মকে কুসংস্কার মনে করা।
5. নারীবাদের বিরোধীতা করা।
6. দেশকে জন্মভূমি না ভেবে, পুরো পৃথিবীকে জন্মভূমি ভাবা। দেশপ্রেমকে সামাজিক ব্যধি মনে করা।
7. ঠাট্টার ছলে নিজের ঢোল নিজে পিটানো
8. কথা বলার সময় হাত নাড়িয়ে নাড়িয়ে কথা বলা
9. টক শো বা কোন আলোচনা সভায় গেলে একেবারে সবার শেষে নিজের মতামত দেয়া। গলাবাজি করে অন্যকে কথা বলতে না দেয়াটা smartness নয়।
10. আলাপচারিতায় যোগ দেয়া। হয়ত যে টপিকে ফ্রেন্ডরা আলোচনা করছে, সে টপিকে আপনার আগ্রহ নাই। তবু চুপ থাকা যাবে না। যদিও আমি নিজে introvert ( অন্তর্মুখী ) হওয়ায় সহজে কোন conversation এ যোগ দিতে পারি না। আমি চেষ্টা করি, যতটুকু পারা যায়।
11. সবকিছুর উপরে পদমর্যাদা। হয়ত আপনি জিনিয়াস। আপনার অফিসের বস আপনার বুদ্ধির সামনে কিছুই না। তবুু দারোয়ান, কেরানী ও কলিগরা আপনার চেয়ে বসকে বেশী সম্মান দিবে। কারণ, সে আপনার চেয়ে উচ্চপদে আছে। সবসময় অবশ্য পদমর্যাদায় কাজ হয় না। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে সবচেয়ে বেশী ট্রল হয়। কেমব্রীজের বিজ্ঞানী রিচার্ড ডকিন্স ও স্টিফেন হকিংকে বাংলাদেশের মানুষ চরম ঘৃণা করে কারণ তারা নাস্তিক। নোবেল প্রাইজ না পেলে নাস্তিক হয়ে মুসলিমদের কাছ থেকে সম্মান আদায় প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। সবার কাছে সম্মানিত হওয়া সম্ভব না। যতই great হোন না কেন, সর্বদাই একটা গোষ্ঠী আপনাকে ঘৃণা করবে। যাকে সবাই শ্রদ্ধা করে, পছন্দ করে তার কোন ব্যক্তিত্ব নাই। কারণ সে সবার মন জুগিয়ে চলে। মানুষের প্রিয়পাত্র হবার চেষ্টা না করে নিজের মত চলাটাই ব্যক্তিত্ব ও smartness এর পরিচয়।
12. সমলিঙ্গের কেউ আপনার সাথে গলার আওয়াজ তুলে কথা বললে, আপনি মেজাজ ঠান্ডা রেখে ঠান্ডা গলায় জবাব দিবেন। বিপরীত লিঙ্গের কেউ গলার আওয়াজ তুলে কথা বললে তাকে গলা তুলেই জবাব দিতে হবে। বিপরীত লিঙ্গের অপমানের জবাবে যদি আপনি পাল্টা অপমান না করেন, সে আপনাকে দুর্বল মনে করে আরো বেশী পেয়ে বসবে।

এগুলো সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত মতামত। আমার সাথে একমত হবার প্রয়োজন নাই। ভদ্রতা বজায় রেখে বিরোধীতা করেন।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:৪৩
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×