কিছুদিন আগে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছিল 2017 সালের মত। মূর্তি না ভাস্কর্য এই বিতর্ক না হয়ে বিতর্ক হওয়া উচিত এসব টপিক নিয়ে - কোরআন কি সত্যিই আল্লাহর বাণী ? আল্লাহ কি সত্যিই আছে ? থাকলে প্রমাণ কি ? .... বাংলার জমিনে আল্লার অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্ক করতে না পারলে মৌলবাদী ধর্মান্ধ অপশক্তিকেও দমন করা সম্ভব হবে না।
বাংলার জাকির নায়েক খ্যাত আরিফ আজাদের ফেসবুক স্ট্যাটাসের একটা অনুচ্ছেদ -
"মূর্তিপূজার গোঁড়া কোথায় প্রোথিত তা কুরআন বেশ সুস্পষ্টভাবে বিধৃত করেছে, এবং সেই সূত্রের শুরুর ঘটনায় কোনোভাবেই পূজোর মূর্তির দেখা মিলে না, সেখানে বরং দেখা মিলে ব্যক্তি সম্মান তুলে ধরবার সম্মানার্থে গড়ে তোলা ভাস্কর্যের। নূহ আলাইহিস সালামের কওমেরা তাদের সময়কার মহাত্মা মনীষীদের মৃত্যুর পরে, তাদের মহাজীবনকে স্মরণীয় করে রাখতে তাদের প্রতিমূর্তি গড়ে তুলে যা কালক্রমে একসময় পূজোর বস্তুতে পরিণত হয়। এভাবেই একসময়কার ভাস্কর্য পরিণত হয়েছে মূর্তিতে। আর, ভাস্কর্য নির্মাণ করে ব্যক্তি-জীবনকে স্মরণীয় করে রাখবার এই পরামর্শ তারা লাভ করেছিলো ইবলিশ শয়তানের কাছ থেকে।"
নাহয় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য একসময় পূজার বস্তুতে পরিণত হল। তো ? এতে সমস্যা কি ? ধর্ম তো মানুষের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তাই না ? যার যার ইসলাম সে সে পালন করবে। কোন মুসলিম যদি পথভ্রষ্ট হয়ে বঙ্গবন্ধুকে পূজা করা শুরু করে দেয়, তাতে অন্য মুসলিমদের সমস্যা কি ? অন্য মুমিনদের বিপথে যাওয়া থেকে আটকানোর ঠিকাদারি কে নিতে বলছে ? যত্তোসব। আরিফ আজাদ, তুই পূজা করিস না, নিজে পৌত্তলিক হইস না। অন্যদের পৌত্তলিক হতে বাধা দিবি কেন ?
ধর্মকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ রাখা উচিত, রাষ্ট্রের উপর ধর্ম আরোপ করা ঠিক না। মানছি, ইসলামে মূর্তিপূজা হারাম। বাংলাদেশ কেন ইসলাম মেনে চলবে ? বাংলাদেশ তো Islamic Country না। বাংলাদেশ ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ।
এখন এক ডায়লগ বের হইছে, "ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়।" ... এ কথা দ্বারা কি বুঝানো হয়েছে, সেটাই clear না। এজন্য জবাব দেয়া যায় না। মানে "বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ হোক, ক্ষতি নাই। কিন্তু ধর্মহীন হওয়া যাবে না। ধর্ম থাকতই হবে।" ... এরকম কিছু mean করা হয়েছে ? ok fine, বাংলাদেশ নাম রাষ্ট্রে ধর্ম যদি থাকতেই হয়, সেটা ইসলাম কেন হবে ? হিন্দুধর্ম অনুসারে তো মূর্তি হালাল, বৌদ্ধ ধর্মেও গৌতম বুদ্ধের মূর্তি use হয়। চার্চেও যীশু খ্রিষ্টের মূর্তি আছে। আমরা হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান এই ধর্মগুলো কেন রাষ্ট্রের উপর প্রয়োগ করব না ? তাহলেই তো সকল মূর্তি, ভাস্কর্য হালাল হয়ে যায়। মূর্তিকে হালাল বানানোর জন্য আমরা ইসলামকে বাদ দিই। রাষ্ট্র যেহেতু ধর্মহীন হওয়া যাবে না, কাজেই ইসলাম বাদে বাকি সব ধর্ম আমরা রেখে দিই। কেমন ?
টক শোতে হুজুরগুলার কথাবার্তা শুনলে দাড়ি টেনে ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছা করে। সবকিছু মেনে নিতে রাজী আছি। ভাস্কর্যকে মূর্তি বলে মানতে রাজী আছি, নুনু কেটে মুসলিম হতেও রাজী আছি। শালার পুত, আগে তোর আল্লার অস্তিত্ব প্রমাণ কর। তারপর ভাস্কর্য বিরোধীতা করতে আসিস।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২০ বিকাল ৫:০৬