somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইউরোট্রিপ ২০০৩ - ২য় পর্ব

১৩ ই জুন, ২০২৩ রাত ১০:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্রাসেলস্‌ -  Day 1

{ছবিগুলো কাত হয়ে যাচ্ছে কেন জানিনা। তিনদিন চেষ্টা করে বিফল হয়ে পোষ্ট করে দিলাম। কেউ সহযোগিতা করলে উপকৃত হবো।}

✼ ✼ ✼ ✼ ✼ ✼ ✼ ✼ ✼

লন্ডন থেকে ব্রাসেলস্ টানা ড্রাইভ করে টানেল ট্রেনে গাড়ি পার হলে সর্বোচ্চ ছয় ঘন্টার বেশী লাগার কথা না, আমাদের আট ঘন্টা লেগেছিলো। প্রথমে লন্ডনের ফালতু জ্যাম, তারপর ফ্রান্সে গিয়ে ডানকার্ক দেখে ঘুরপথে বেলজিয়ামের ব্রাসেলস যাওয়া। আগে থেকেই ঠিক করা ছিলো ব্রাসেলসে আমরা সপরিবারে থাকবো আমার কলেজ বান্ধবী জেসমিনের বাসায়।


জেসমিনের বাসায় যখন পৌঁছি তখন ঠিক রাত সাড়ে এগারটা। গাড়ি পার্কিং পেয়ে গেলাম ওর বাসার ঠিক সামনে। জিপিএস এত নিখুঁত ভাবে ওর বাড়ির সামনে আমাদের থামিয়েছে, আমি ইমপ্রেসড্‌। ঘর থেকে বেরিয়ে জেসমিন আর দু্ই ছেলে আমাদের সাদরে অভ্যর্থনা জানালো। জেসমিনের বড় ছেলে আমার লাগেজগুলো জোর করে ঘরে নিয়ে গেলো। একটাও ধরতে দেয় নি। দুই মেয়ে, দুই ছেলে সবাই দারুন বাংলা বলে।

জেসমিন বেচারি সন্ধ্যা থেকে অপেক্ষা করেছে, এটা ওটা রেঁধেছে। ওর বাসা ব্রাসেলস্ এর ইক্সেলেস এলাকার, টাউন সেন্টারে। গোথিক বেলজিয়ান টেরেসড বিল্ডিং এর একটিতে দুই তলা ভবন, পেছনে ইউরোপিয়ান বাগান, অনেক উঁচু সিলিং এবং টিপিকাল বেলজিয়ান স্পাইরাল সিঁড়ি দিয়ে দোতলার মাষ্টার বেডরুমগুলোতে ওঠানামার ব্যবস্থা। আমার মেয়ে আর ছেলে এই পরসোনাল স্পাইরাল সিঁড়ির প্রেমে পড়ে গেলো। ধুপ ধাপ উঠানামা শুরু করে দিলো যেন খেলনা। নীচে লিভিং রুম, ডাইনিং স্পেস এবং ওপেন প্ল্যানড কিচেন। পুরোনো বাড়ী হলেও রুচিশীল বেলজিয়ান স্থাপত্যশৈলী আর কারুকাজ এখনও বর্তমান। উঁচু সিলিংএর প্রতি বরাবরই আমার দুর্বলতা…

এর আগে আমাদের সাথে জেসমিনের দেখা হয়েছিলো ২০১২ সালে লন্ডনে হাসপাতালে, যখন আমাদের মেয়ে তাসনুভার জন্ম হয়। আজ এত বছর পর আবার দেখা হল। বাসায় জেসমিনের দুই ছেলে জাহিদ, সামির আর ছোট মেয়ে আনিয়া ছিল, বড় মেয়ে মারজান আর জামাই ছিলো তাদের বাসায়। ঘরে ঢুকে আমার তাসনুভা যখন, “আসসালামুআলাইকুম জাজমিন” বলে জেসমিনকে জড়িয়ে ধরে, অবাক জেসমিন আবেগে কাঁদো কাঁদো হয়ে পড়ে বলে, “কি মিষ্টি করে আমাকে জাজমিন বলে ডাকলো।” আমার ছেলেও জেসমিনকে জড়িয়ে ধরলো, ছেলেমেয়েগুলো সব সময় এমনটাই করে।

জেসমিন দুনিয়ার সব দেশী খাবার রেঁধেছে. . . . চিকেন ড্রাম স্টিক গ্রীল, চিকেন বিরিয়ানী, চিংড়ীর দো-পেঁয়াজা, বেগুন ভাজা, ভেন্ডি ভাজা, বিশেষ উপায়ে গরুর মাংস (জেসু বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছিলো বেলজিয়ান বীফ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ এবং হোয়াইজ্জা [সুস্বাদু], বলেছেন শ্রদ্ধেয় শাইখ সিরাজ।). . . রাতের খাবারের পর এক কাপ চা না খেলে আমার ঘুম হয় না, পাগলীটা কিভাবে জানলো জানিনা, দেশী স্টাইলের চা বানালো। আমি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ হলাম।


সকালে জেসমিনের বড় মেয়ে মারজান আর জামাই সিয়াম এলো। নাস্তা খেয়ে আমরা সপরিবারে বের হলাম, আমাদের গাইড যুগল মারজান-সিয়াম, সাথে আছে জেসমিনের ছোট বুড়ি মিষ্টি মেয়ে আনিয়া, তাসনুভার কাছাকাছি বয়স। জেসমিনের বাসা থেকে বের হলেই টাউন সেন্টার। ব্রাসেলস্ দেখতে বের হলাম আমরা মোট সাত জন।



ইক্সেলেসের যে অংশে জেসমিনের বাড়ি সেখানকার টাউন সেন্টারের নাম ফ্লাজেই। ফ্লাজেই থেকে বাসে করে প্রথমে গেলাম সেইন্ট মাইকেল এন্ড সেইন্ড গুডুলা ক্যাথেড্রালে (সংক্ষেপে সেইন্ট গুডুলা)। বিশাল ক্যাথেড্রালের সামনের পার্কে বসিয়ে মারজান কোথায় হারিয়ে গেল, একটু পর ফিরে এল অনেকগুলো গুফফু দ্য’লীজ (Gaufre de Liège) নিয়ে এলো।


এগুলো পৃথিবীর শেষ্ঠ, বেলজিয়ামের বিখ্যাত ওয়াফল যা না খেলে বেলজিয়াম সফর অর্থহীন। একদম গরম গরম, তন্দুরী থেকে নামানো ওয়াফল মুখে দিতে মুখের ভেতর মোমের মত গলতে গলতে সুমিষ্ট রস আর অসাধারণ সৌরভ ছড়াতে ছড়াতে জিভে স্বাদ লাগিয়ে গলা দিয়ে নামছিলো, মনে হচ্ছিলো জান্নাতি খাবার খাচ্ছি। ওয়াফল আমার পছন্দের খাবার না, কিন্তু এই ‘গুফফু দ্য’লীজ’ খেতে আমার খুব ভালো লেগেছে।

সেইন্ট মাইকেল এন্ড সেইন্ড গুডুলা ক্যাথেড্রাল:
(Cathédrale des Sts Michel et Gudule, Bruxelles)


বেলজিয়ামের ন্যাশণাল চার্চ যেখানে বেলজিয়ামের রাজা, রানী, রাজপরিবারের বিয়ে কিংবা অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। অসাধারণ ব্রাবান্টাইন গথিক স্থাপত্যশৈলীর এই রোমান চার্চ নির্মান শুরু হয় একাদশ শতাব্দীতে। ক্যথেড্রালের ভেতরের অসাধারণ ডেকোরেশন, প্রচুর ভাষ্কর্য, আর্টওয়ার্কস, সুবিশাল জানালার পেইন্টিংস, সুউচ্চ স্তম্ভ, সিলিং, আর্চ, সব মিলিয়ে দারুন পরিবেশ।

উপাসনার মুল অংশের (Nave) দুপাশে ছয়টি করে বারটি কলাম (স্তম্ভে) রয়েছে যীশুখ্রীষ্ঠের বার জন শিষ্টের ভাষ্কর্য। আরো আছে আদম এবং হাওয়া কে জান্নাত থেকে বহিষ্কারের ভাষ্কর্য যা কাঠ দিয়ে তৈরী (Adam and Eve expelled from the Garden of Eden), বাইরে সেইন্ট মাইকেলের সোনালী ভাষ্কর্য যেখানে দেখা যায় তিনি ড্রাগন বধ করছেন, ভেতরে আছে সেইন্ট গুডুলার ভাষ্কর্য। বিশাল জানালার কাঁচগুলোতে রয়েছে ১৫ শতক থেকে ১৮ শতক পর্যন্ত আঁকা মহামূল্যবান পেইন্টিংস। এছাড়া রয়েছে চার হাজার তিনশত পাইপ দিয়ে বানানো পাইপ অর্গান যেখানে আছে চারটি কীবোর্ড এবং পেডাল বোর্ড। আসলে অল্প কথায় এক কিছু লেখে বোঝানো অসম্ভব তাই ছবি তুলেছি, ভিডিও করেছি সোগুলোর আপলোড দেওয়া হয়েছে। (নীচের ইউটিউব লিংক দ্রষ্টব্য।)

গ্র্যান্ড প্লেস (La Grand-Place, Brussels)


ক্যাথেড্রাল পরিদর্শন শেষে ফের বাসে চেপে চলে এলাম পুতেরি’র গার চেন্ত্রালে (Gare Centrale বা ব্রাসেলস্ সেন্টার ষ্টেশন)। সেখান থেকে সামান্য পায়ে হেঁটে সোজা গ্র্যান্ড প্লেস। দ্য গ্র্যান্ড প্লেস, ফ্রেঞ্চ: ঘঁম্ প্লাস, ডাচ্(জার্মান): গ্রোট মার্খট বা “Big Market” হচ্ছে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলস্ এর কেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্কয়ার যাকে ঘিরে রেখেছে ব্রাসেলস্ গিল্ডহল, সিটি টাউন হল এবং কিংস হাউস (ব্রিড হাউস) যার সাথে একটি মিউজিয়ামও সংযুক্ত। গোটা এলাকা পাথরের ইট দিয়ে বাঁধানো। ঝকঝকে উজ্জ্বল গ্রীষ্মের শুরুতে আকাশে সূর্য্য হাসছে কিন্তু গরম নেই তেমন, পর্যটকদের ভীড়ে হাঁটা মুশকিল। এই ‘প্লেসে’ প্রায়শঃ সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ হয়ে থাকে। সবচেয়ে কাছের মেট্রো ষ্টেশন বূর্স(Bourse), বাস স্টপ ঘঁম্ প্লাস/গ্রোট মার্খট লাইন 95

বিশাল প্লেসের মাঝখানে পর্যটকদের ভীড়ে আমরা, চারিদিকে ঘিরে আছে বেলজিয়ান গথিক স্থাপনা গুলো; বাঁয়ে ব্রাসেলস্ টাউন হল যার মাঝখানের গম্মুজের উচ্চতা ৯৬ মিটার বা ৩১৫ফুট। গম্বুজের উপরে সেইন্ট মাইকেলের সোনালি ভাষ্কর্য যেখানে তিনি ড্রাগন বধ করছেন, ডানে ব্রাসেলস্ সিটি মিউজিয়াম, আর সামনে বিশাল ম্যানশন দ্যূ হোনাদ (Du Renard) যেখানে আছে একাধারে বেশ ক’টি সুপার পশ্ রেষ্ট্যূরেন্ট; ডান থেকে বাঁয়ে ‘লো হোয়া দ্য’ এসপাইনে (Le Roy d'Espagne), লা বো’হুয়েৎ (La Brouette), লো সাক্ (Le Sac), লা লূভ (La Louve), লো কোহ্-নে (Le Cornet), এবং লো হ্বেনা (Le Renard)। খানিক তফাতে আরেকটি ম্যানশন; হাউস অফ দা ডিউকস অফ ব্রাবান্ট (দ্যূশেসে দো বাহ্ববোঁ, Duchesse de Brabant)।


বেলজিয়ান চকোলেট, পৃথিবীর সেরা


সারা বেলজিয়াম জুড়ে রয়েছে দুনিয়ার সব চকোলেট শপ। ষোড়শ শতাব্দী থেকে বেলজিয়া সেরা চকোলেট প্রস্তুতকারক হিসেবে সারা বিশ্বে পরিচিত। গত আট শত বছর ধরে বেলজিয়াম ঐতিহ্য ধরে রেখেছে।গ্র্যান্ড প্লেসের উত্তর কোনে লো হোয়া দ্য’এসপাইনে রেষ্ট্যূরেন্ট আর সারিবদ্ধ ছোট ছোট দোকানগুলোর মাঝখান দিয়ে যে এ্যালিওয়ে (গলি) চলে গেছে তার নাম রু অ বোহ্ (Rue au Beurre)। এই গলির দুপাশে ছোট বড় অনেক গুলো বেলজিয়ান চকোলেট শপ আছে। আমরা সবাই জানি বেলজিয়ান চকোলেট পৃথিবীর সেরা যার মধ্যে কিছু কমন নাম সবাই জানে যেমন, গুইলিয়ান, গোডিভা, নেউহাওস (বেলজিয়ামের সবচেয়ে পুরোনো), কোরনি পোর্ট রয়াল, পিয়েরে মারকোলিনি, বেলভাস, লিওনিডাস, কো’টে ডি’ওর ইত্যাদি। মারজান আমাদের করনি পোর্ট রয়াল চকোলেট শপে নিয়ে গেলো এবং দামী এক বক্স চকোলেট গিফট করে বললো, এই সেই হাতে বানানো চকোলেট বিক্রেতা যারা বছরের পর বছর ধরে বেলজিয়ামের সেরা চকোলেট এ্যাওয়ার্ড পেয়ে আসছে। চকোলেট শপ থেকে বেরিয়ে গলির দু ধারে প্রচুর স্যূভেনির শপ, সেখান থেকে কিছু স্যূভেনির না কিনলেই নয়। তা না হলে বেড়ানোর স্মৃতি থাকেনা। ম্যাগনেট লাগানো স্যূভেনির গুলো রেফ্রিজারেটরে সেঁটে দেওয়া যায়, তাছাড়া প্রিয়জনদের জন্যেও দারুন উপহার। এছাড়া আমার জীবনের এক বিশেষ ঘটনা ঘটলো, আমার মেয়ে তাসনূভা এই প্রথম আমার কাছ থেকে চেয়ে এমিটিশনের একটা গলার হার কিনে নিলো।


গ্র্যান্ড প্লাজার পাশেই ব্রাসেলসের বিখ্যাতে সেইন্ট হুবার্ট গ্যালারী (Les Galeries Royales Saint Hubert) যা কিনা এক তলা অথচ উঁচু অট্টালিকা যার দুপাশে রয়েছে বেলজিয়ান আর্টস, ক্রাফ্টু, আইস-ক্রীম এবং চকোলেট শপগুলো; আর আছে বেলজিয়ান শুঁড়িখানা, পাবস্। গ্যালারী নাম হলেও এটা মুলতঃ মল বিশেষ। দুপাশের উঁচু ফাসাদ (facade) উপরের দুই ফাসাদকে একীভুত করেছে জগৎ বিখ্যাত বেলজিয়ান গ্লাসের খিলান-সদৃশ কাঁচের লম্বা ছাদ। জেনে রাখা ভালো, পৃথিবীর সেরা এবং দামী কাঁচ এই বেলজিয়ানাই বানায়।


লাঞ্চ সেরে প্লাজা সংলগ্ন মেট্রো স্টেশন ‘সেন্ট্রাল’ থেকে ব্রাসেলসের উত্তরে ‘বীকান্ট’ স্টেশনে এলাম। এই এলাকার নাম হেইসেল যেখানে রয়েছে পদার্থবিদ্যা এবং বেলজিয়ান স্থাপত্যবিদ্যার অনন্য এক নিদর্শন, এ্যাটমিয়াম।



The Atomium:
অ্যাটমিয়াম ব্রাসেলসের একটি আইকনিক স্থাপনা যা মূলতঃ ১৯৫৮ সালে ব্রাসেলস এক্সপো ওয়ার্ল্ড ফেয়ারের জন্য নির্মিত হয়েছিল। এটি স্টীল এবং এ্যালুমিনিয়ামের তৈরী একটি স্ফটিকযুক্ত অণুর প্রতীক যা সত্যিকার অণুর চেয়ে প্রায় ১৬৫ বিলিয়ন অনুপাতে বড়। অসাধারণ স্থানপাশৈলীর এই ল্যান্ডমার্কটি বেলজিয়াম তথা বিশ্বের অন্যতম বিখ্যাত কনস্ট্রাকশন আইকন। অ্যাটোনিয়ামের এই ডিজাইন কপিরাইটেড তাই আর কেউ এরকম আরেকটি বানাতে পারবেনা বিধায় পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারেরা বড় বিরক্ত।

অ্যাটোনিয়াম নামটি এসেছে প্রাথমিকভাবে অ্যাটম বানানো হয়েছিলো অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে। এর উচ্চতা ১০২মিটার বা ৩৩৫ফুট। মোট প্রতিটি অণু বা গোলকের ব্যাসার্ধ (diameter) ১৮মিটার বা ৫৯ফুট। অ্যাটোনিয়াম সাজানো হয়েছে মাঝখানে নিউক্লিয়াস যাকে চারিদিক থেকে প্রদক্ষিণ করছে ইলেক্ট্রন, প্রোটন এবং নিউট্রন। গোলকগুলো ১০ফুট চওড়া স্টীল টিউবের মাধ্যমে এক অন্যের সাথে সংযুক্ত এবং এক গোলক থেকে আরেক গোলকে যাবার ব্যাবস্থা রয়েছে সিঁড়ি এবং এস্কেলেটরের মাধ্যমে। দর্শকদের জন্য অ্যাটোনিয়াম উম্মুক্ত তবে টিকেট কেটে ঢুকতে হবে। দর্শকেরা প্রথমে লিফটের মাধ্যমে সর্বোচ্চ গোলকে উঠবে যেখান থেকে দেখা যায় সমগ্র ব্রাসেলস্, সেখান থেকে ধীরে ধীরে অন্যান্য গোলক দেখতে দেখতে নীচে নেমে আসবে। সপরিবারে ঘোরার জন্য অ্যাটোনিয়াম হতে পারে দারুণ উপভোগ্য। টপ স্ফিয়ার বা সর্বোচ্চ গোলক বেলজিয়ামের অন্যতম রোমান্টিক স্থাপনা যেখানে প্রতি সপ্তাহে মিনিমাম একটি বিয়ের প্রস্তাব দেয়া হয়।

সর্বমোট নয়টি গোলকের (Sphere) মধ্যে তিনটি ছাড়া বাকি ছয় টি দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত। প্রথমে সেন্ট্রাল টিউব (লিফট) এর মাধ্যমে মাত্র ২৩সেকেন্ডে ৩৩৫ফুট উচ্চতায় (৪০ তলার সমান) সর্বোচ্চ গোলকে নিয়ে যায় যেখানে রয়েছে প্যানোরামা (360°) ডেক এবং রেষ্ট্যুরেন্ট। মধ্যবর্তী স্ফিয়ার গুলোতে রয়েছে ইভেন্ট, এক্সিবিশন, স্পেশাল লাইটিং এবং কিডস এরিয়া। সারাক্ষণ ক্যামেরা রেডি রাখতে হবে তা না হলে মিস হয়ে যাবে অনেক কিছে। একদম নিচে রয়েছে পারমানেন্ট এক্সিবিশন যেখানে রয়েছে অ্যাটোনিয়াম তৈরীর গ্রাফিক ইতিহাস। অ্যাটোনিয়ামের টিকেট মূল্য ১৬ ইউরো প্রাপ্ত বয়ষ্ক, বয়স ১৮’র কমদের ৮.৫ ইউরো।

অ্যাটোনিয়াম থেকে নীচে নামার আগে থেকে জেসমিনের টেলিফোন আসছে, প্রিন্স রয়াল স্ট্রীটে একটা রেষ্ট্যুরেন্ট আছে যার গভর্ণর হচ্ছেন আমাদের জেসু। সেখানে রাতের খাবার খেতে হবে। ওই রেষ্ট্যুরেন্ট আবার জেসমিনের বাসা থেকে হাঁটা দুরত্বে। উত্তর ব্রাসেলস থেকে মেট্রো, বাস ইত্যাদি নিয়ে আমরা সবাই জেসমিন কে বাসা থেকে নিয়ে সেই রেষ্ট্যুরেন্টে গেলাম। সেখানে আমরা ইষ্ট লন্ডন বাংলা রেষ্ট্যুরেন্ট স্টাইলের ডিনার করেছি। প্লেন পোলাওর সাথে ছিলো সিজলিং চিকেন, মিক্সড সালাদ, বীফ ঝালফ্রেজি, ডাল, ভেজিটেবল এবং সফট ড্রিংকস। আবারও বেলজিয়ান বীফ আমার মন কাড়লো, এতো অথেনটিক স্বাদ যেন দেশী গরুর গোশ্‌ত খাচ্ছি। না, তা ঠিক না। দেশীর চেয়েও বেশী মজার বীফ।

আজ সারাদিন ব্রাসেলসের এখানে ওখানে ঘুরে বেশ আরাম পেয়েছি। মেয়ে আর ছেলেও বেশ এনজয় করেছে। ক্লান্ত হলেও কম্প্লেইন করেনি। গ্রীষ্মের বিশাল লম্বা দিন বরকতময়, সূর্য্যাস্ত হয় রাতের পৌনে দশটায়। মন্দ কি?

ইউটিউব লিংক:- https://youtu.be/v0vQhNRDXTY
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুন, ২০২৩ বিকাল ৫:০৩
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×