somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধারাবাহিক: শ্যামলা রংয়ের মেয়েটি - ৩

০২ রা নভেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

চলো, একসাথে কোথাও ঘুরতে যাই।! তুমি আমার বাবা-ঠাকুর্দার ভাষায় কথা বলো, তাই তোমার সাথে কথা বলতে, গল্পো করতে ইচ্চে হচ্চে। রিকশা বা অটো নেয়া যেতো। দেখতেই পাচ্চো কিচু নেই আশেপাশে। হাঁটা ছাড়া উপায় নেই, এ সময়ে কখনো কিচু পাওয়া যায় না।”

ভেতরে ভেতরে দমে গেলাম। দেশে আমি যে পরিবেশে বড় হয়েছি সেখানে কোন অপরিচিত ইয়াং মেয়েদের সাথে এত দীর্ঘ সময় কথা বলার প্রচলন ছিলোনা। একসাথে রিকশায় কোথাও যাওয়া? ওরে বাবা, অসম্ভব। অবশ্য এখানকার অবস্থা ভিন্ন, ওর সাথে যাওয়া যায়। দু’মিনিট সময় নিয়ে বাসায় গিয়ে পোম্পু-পিস্টন দুঃশাসন ঠাকুরকে দিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে একটু ফেটিং-ফুটিং করে বেরিয়ে পড়লাম। মনে করে সাথে ওয়ালেট নিয়েছি, রূপবতী যুবতী কন্যার সাথে গল্প করে ক্ষ্যান্ত দিলে হয় না, কোথাও না কোথাও কফি/স্ন্যাকস ইত্যাদি খেতে হবে। নিয়ম। কিন্তু লোকাল কারেন্সী শেষ হয়ে গেছে, ডলার আছে অনেকগুলো। কিন্তু এই লোকালয়ে কেউ ডলার নেবে বলে মনে হয়না। অবশ্য কার্ড আছে সাথে, ওটা দিয়ে ATM থেকে লোকাল কারেন্সী তোলা যাবে, আশ্বস্ত হলাম।

কোথায় যাচ্ছি জানিনা তবে বুঝতে পারছি দক্ষিন বরাবর হাঁটছি আর কথাবার্তা বলছি। অদ্ভুত ব্যপার হল, আমার অঞ্চলিক ভাষার প্রায় পুরোটাই বুঝতে পারছে আর সমানে কথা বলে যাচ্ছে। নাকতলা রোড প্রথম দিকে সোজা দক্ষিনে গেলেও শেষের দিকে বেশ ঘোরানো। আমার বাসা পড়েছে বাঘাযতীন শ্রী কলোনীতে, এটা দক্ষিন কলকাতার মোটামুটি পশ্ এলাকাগুলোর একটা। ঘরবাড়ীগুলো সুন্দর, প্রায় নতুন। রাস্তাঘাট আর আশপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। বাড়িগুলো সব তিন থেকে পাঁচতলা, সব আলাদা, ডিটাচড্। প্রতিটি বাড়ীতে কমপক্ষে দুটো করে গাড়ী। তার মধ্যে একটা মডেল কমন, সুজুকি-মারুতির ওমনি। অতিশয় ক্ষুদ্র মাইক্রোবাসের মত দেখতে। খুব আগ্রহ নিয়ে গল্প করছে মেয়েটা। জানা নেই, পরিচয় নেই একজন বিদেশী ছেলের সাথে পাশাপাশি হাঁটছে, কথা বলছে অনেকক্ষন ধরে। দিনের অন্য সময়ে এই পথে হাঁটার উপায় থাকেনা, প্রচুর ট্রাফিক। কিন্তু ভাতঘুমের সময়ে পুরো এলাকা নীরব থাকে। অনেক বিষয়েই কথা হচ্ছিলো তবে বেশীরভাগই ওর দাদা-দাদী (ঠাকুমা, ঠাকুর্দা) আর বাংলাদেশ নিয়ে।

দাদা-দাদী এমনই এক ছবি ওর মাথায় ঢুকিয়ে দিয়েছে যেন পৃথিবীর সব সৌন্দর্য, মায়া আর ভালোবাসা রয়েছে বাংলাদেশের ‘মীরের’ সরাইয়ে। যদিও দেশে আমরা ‘মীরের’ সরাই বলিনা, বলি মীর সরাই। সীতাকূণ্ড পাহাড় আর বাড়ব কূণ্ডের ‘কূণ্ড’ এখনো দেখেনি সেজন্য ওর পুরো জীবনটাই বৃথা। নাকতলা রোড ধরে হাঁটতে হাঁটতে দক্ষিনে যেতে যেতে এক পর্যায়ে নাকতলা দূর্গাবাড়ী পর্যন্ত চলে গেলাম। ওরে বাবা, অনেকদুর চলে এসেছি। এটা নেতাজী নগরের শহীদ নগর কলনী। এখানেই নাকতলা রোড শেষ। ডানে মোড় নিয়ে দূর্গাপ্রসন্ন পরমহংস রোডে উঠতেই হাতের ডানে দেয়ালঘেরা বিশাল মন্দির। ওটা দূর্গাবাড়ী। দেড়মাস পর দূর্গা পুজো, অথচ সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। আরেকটু সামনে এগিয়ে গেলে শহরের ব্যাস্ত সড়ক নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু রোড। এখানে যানবাহনের আনাগোনা ভালোই। এবার যেতে হবে। ইতিমধ্যে ভাতঘুমও শেষ, নিশ্চই এলাকা ব্যস্ত হয়ে গেছে।

বললাম,
“বহুত হাঁইটলাম, এবার বাসাত যাই গোই।”
“আরেকটু হাঁটি না, প্লীজ।” আমার ইতস্ততঃ ভাব দেখে আবার বললো, “তোমাকে একটা ব্রীজ দেখাবো, দারুউউউন! এই সামনেই।”

বাঁয়ে মোড় নিয়ে নেতাজী সুভাস চন্দ্র বসু রোড ধরে সামান্য এগিয়ে রোড ক্রস করে কয়েকটা গলি হয়ে একটা ব্রীজের উপর উঠলাম। ব্রীজের ওপারে শাহাপাড়া-ফার্তাবাদ রোড। ব্রীজে উঠে মেজাজ খারাপ হবার বদলে হাসি পেলো। আমি ভেবেছিলাম নদী বা খালের উপরে ব্রীজ, যেখান থেকে নিচে দেখা যাবে পানি, দুই পাড়ে সবুজ গাছপালা, পানিতে হাঁসেরা খেলে বেড়াচ্ছে। অথচ এই ‘দারুউউউন’ ব্রীজ হচ্ছে কলকাতা মেট্রো রেললাইনের উপরে একটা ছোটখাট সেতু। আমরা যেদিকে তাকিয়েছি তার উল্টোদিকে মেট্রো রেল ষ্টেশন, নাম গীতাঞ্জলী। গীতাঞ্জলী ষ্টেশনের ওপারে আরেকটা বড় ব্রীজ আছে নাম বান্টি ব্রীজ, বেশ ব্যস্ত, প্রচুর গাড়ীর আনাগোন। আমার ভাবলেষহীন মুখ দেখে এবার সে আমাকে বান্টি ব্রীজের উপর নিয়ে যাবে।

আমি এখানেই থাকতে চাইলাম কারন এটা একদম নিরিবিলি। ভীড়ভাট্টা নেই। ট্যূরিষ্ট গাইডের মত করে মালা বলছিলো এটার উপর থেকে কলকাতার মেট্রোরেল দেখা যায় যেগুলো বেশীরভাগ মাটির তলার সুড়ংগ দিয়ে চলে। আমি বলছি কম শুনছি বেশী। তাছাড়া ক্ষিদে পেয়েছে। গীতাঞ্জলি মেট্রো স্টেশনের পাশে শাহাপাড়া-ফার্তাবাদ রোডের উপর কিছু কফি শপ, স্ন্যাকস্ বার ইত্যাদি আছে। বিকেলের নাস্তা খাওয়ানোর অফার দেওয়া যেতে পারে।
“চা কদ্দুর খাইবা নি, কেইক দি?” চোখ গোল করে তাকিয়ে বললো,
“কেক দিয়ে চা খাবো?” আমি আবার বললাম,
“ওকে, ওকে, আই মীন চল আমরা চা নাশতা খাই। তারপর তোঁয়ার আদরের বান্টি ব্রীজ হাঁটি পার হমু। ওই ফাড়েত্তুন রিকশা নাইলে টেক্সী লই যামু, ওকে?”

মালা আর কথা বাড়ালোনা। কিন্তু কোনো কফি শপ বা স্ন্যাকস্ বারে ঢুকতে দিলোনা। সে আনিসের চিকেন চাও খাবে। ওদের সব খাবার ‘দারুউউউন’। একেবারে কাছে, স্টেশনের ওই পাড়ে। বান্টি ব্রীজ পার হবার সময় পা ফেলা যাচ্ছিলোনা, রাস্তায় এত গাড়ী আর মানুষ। হারিয়ে যাবো এই অজুহাতে মালার হাত ধরতে গিয়েও ধরলাম না। কিন্তু সে আমার হাত ধরলো। ওর ডান হাত দিয়ে পেঁচিয়ে আমার বাঁ হাত। কি সহজেই গায়ের সাথে গা সেঁটে রাস্তা পার হচ্ছে। দক্ষিন কলকাতার বিকেলের ভীড় শুরু হয়ে গেছে। চায়নীজ খাবার এবং রোল, দোকানের নাম আনিস না অণীষ সেটাই ঠাহর করতে পারছিনা। ইংরেজীতে লেখা ‘ANISH’। উপরে রংচংগা সাইনবোর্ড আর নিচে ধোঁয়াটে তেলতেলে দেয়াল আর আসবাবপত্র পুরোনো ঢাকার কথা মনে করিয়ে দেয়। কাছের একটা ক্যাশ মেশিন (ATM) থেকে লোকাল টাকা তুলে নিলাম। সত্যি ওদের চিকেন চাওমিন অনেক স্বাদ, পেটের সাথে মনটাও ভরে গেলো। আমাকে অবাক করে মালা কার্ড দিয়ে পয়সা দিতে গেলে ওর দুহাত চেপে ধরলাম। “প্লীজ, এই কাম করিও না। ” আমি অতিথি, তার উপর দাদার বাড়ীর কাছের লোক, আমাকে তারই ট্রিট দেওয়া উচিত। ছোটখাট বক্তৃতা আর কি। কিন্তু আমি কোনোভাবেই তাকে বিল পে করতে দিইনি বলে একটা খোঁটা দিলো, “দিস ইজ এ মেন'স্ ওয়ার্ল্ড।”

বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে গেছে, রিকশা নেওয়া যেতো কিন্তু আমি অটো নিলাম। এবার অটো নিয়ে মেজাজ খারাপ হল, শাঁই শাঁই ইণ্ডিয়ান অটো চলছে। ভেবেছিলাম ওর সাথে একটু গল্প স্বল্প করবো, এত তাড়াতাড়ি পৌঁছে গেলে কি আর গল্প হবে? তার উপর অটোর ইঞ্জিনের শব্দ, বাইরে দুনিয়ার গাড়ীঘোড়ার শব্দ। ধ্যাৎ! সত্যি কথা বলতে, ওর হাত ধরার পর আমার কি জানি হয়েছে। এর আগে এই অভিজ্ঞতা হয় নি। একটু পরই পৌঁছে যাব, ও চলে যাবে ওর বাসায়। আমার অস্থির লাগছে,
“বিরাট এক বেয়াক্কলের কাম করিয়ালাইছি।”
“কেন এটা বললে? কিইই করেচো?”
“মরার অটো, ভডভডাই যার গো...ই, আর আঁর বিরক্ত লাগের।” (বঙ্গানুবাদ: মরার অটো, দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে আর আমার বিরক্ত লাগছে)
“বিরক্ত লাগচে কেন?” মালা অবাক।
“অটো ছাড়ি দিই?”
“ক্যানো? অটো ছেড়ে দেবে ক্যানো?”
তখনও আমরা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস রোডে। অটো থামিয়ে নেমে পড়লাম, অটোওয়ালাকে ফুল ভাড়া দিতে চাইলে নিলোনা। এই বিষয়টা আমার ভালো লেগেছে। এদিকে মালা বুঝতে পারছে না কিছু। ওর হাত ধরে পাশের নাকতলা রোডে ঢুকলাম। এখানে পরিবেশটা অনেকটা ঢাকার উত্তরার মত। সরু লেন, দুপাশে সুন্দর সুন্দর বাড়ীগুলো দেখে বোঝা যায় গড়িয়ার ধনীরা থাকে এখানে।
“রিকশা নিতাম চাই,” মালাকে বললাম।
“এই বললে দেরী হয়ে গ্যাচে, অটো নাও। উরিব্বাপশ্! কিছু বুজলাম না, ধুম করে অটো স্টপ করালে। তারপর রাস্তায়, তারপর আবার এখানে। এবার বলচো রিকশা নেবে। কি নেবে, ই-রিকশা না কি শাইকেল রিকশা। এখানে কিন্তু টানা রিকশা পাবেনা। “
“নাউযুবিল্লাহ্, টানা রিকশায় জিবনেও উইঠতান্ন। বড় অমানবিক বিষয়। তোঁয়ার ওই শাইকেল রিকশাই ঠিক আছে। “ কি এক অদ্ভুত কারনে কলকাতায় দন্ত স এর উচ্চারন করে 'শ' আর তালব্য শ এর উচ্চারন করে 'স'। যখন কোন শব্দের শুরু 'স' বা 'শ' হয়।


চরম ব্যস্ত নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস রোডের কোলাহল থেকে এখানে এসে হঠাৎ আবার সব নিরিবিলি হয়ে গেলো। গড়িয়ার এই এলাকার নাম নাকতলা। খুব একটা লোকজন নেই, আশেপাশে কিছু দোকান খোলা, একটা দুটো টমটম (মটর লাগানো রিক্সা) দেখা যাচ্ছে, স্থানীয়রা বলে ই-রিকশা। ই-রিকশায় উঠবোনা শুনে মালা বললো,
“চলো সামনে বৈষ্ণবঘাটা রোডে শাইকেল রিকশা পাবো।” দুজন হাঁটছি পাশাপাশি, মালা আবার জানতে চাইলো, “কিন্তু অটো থেকে এভাবে নেমে শাইকেল রিকশায় যেতে চাইছো ক্যানো?”

এই মেয়েকে কে বোঝাবে আমরা হুমায়ুন আহমেদের বই পড়া প্রজন্ম যেখানে আমাদের প্রেম ভালোবাসার ফ্যান্টাসীর বিশেষ অংশ প্রমিকাকে পাশে বসিয়ে রিকশায় ঘোরা। দেশে কখনো এই অভিজ্ঞতা হয় নি, এখানে হতে অসুবিধা কোথায়?
“বাউ রে, কেন্নে বুঝাইতাম? আইচ্ছা, শুনো, অটো এক টানে পাঁচ মিনিটে বাসাত লই যাইবো। আর, রিকশাত করি গেলে মিনিমাম পনর/বিশ মিনিট তো পামু। হেই সময় তোঁয়ার লগে ফ্রেম-ভালোবাসার কতা কমু, কতক্ষন লুডর-ভুডুর করুম। এইখানদি, ওইখানদি টাস্ করি কমু, 'চরি ভুল হইয়ে গিঁয়েছে। ' তুমি লাজুক হাসি কইবা, 'ইট ইজ উখে'। হেই কারনে রিকশাত করি যামু কইছি। ”
“এরকম ড্রামা করলে শাইকেল রিকশায় বসে স্লোওলি একসাথে যাবার জন্য? আগে বললেই পারতে!”
আমি শিউর আমার কথার বেশিরভাগ সে বোঝে নি, অথবা ভান করছে বোঝে নি। আবার বললাম, “ওইটাই, প্রেম করুম, তুঁই আমারে ফ্রেমের যাবতীয় বক্কর-চক্কর শিখাইবা। ”
এর মধ্যে বৈষ্ণবঘাটা রোডে এসে রিকশা থামালাম, মালা দামদর করতে গেলে বাধা দিয়ে উঠে বসলাম দুজনে। জীবনে প্রথম অচেনা কারো সাথে রিকশায় ওঠা, হৃদয়ে নাচন ধরেছে, শরীর চুদুরবুদুর করছে। আহা, পৃথিবীটা শুধু সুন্দর নয়, সুগন্ধময়।
“বক্কর-চক্কর মানে কি? তাছাড়া আমি শেখাবো প্রেম, তোমাকে? ক্যানো?” মালার প্রশ্নে বাস্তবে ফিরে এলাম।
“ওহ্ ইয়েস্, তুঁই যেহেতু আগেত্তুন ফ্রেম করি অইভ্যস্থ, সেহেতু তুঁই হইবা আমার ফ্রেম গুরুণী। “ (বঙ্গানূবাদ: যেহেতু তুমি আগে থেকে প্রেম করে অভ্যস্থ, সেহেতু তুমি হবা আমার প্রেমের টিচার)
“ফ্রেম গুরুণী? ও ওহ্ প্রেম গুরুণী, এ্যাই গুরুণী বললে কেন? অসভ্য?”
তাড়াতাড়ি বললাম, “আরে! অসভ্য বল কা? গুরুণী হইলো গুরুর ইসতিরি লিঙ্গ, আমি ত' তোঁয়ার মতন এক্সপার্ট না। তুঁই হইলা ফ্রেমের লেডি মাষ্টর”
“তাই বলে গুরুনী? আর কোন শব্দ খুজে পেলেনা?” এবার হাসতে হাসতে বিষম খাচ্ছে মেয়েটা? “হোয়াট এ ওয়ার্ড, 'গুরুনী' কি সুন্দর ব্যাখ্যা, 'গুরুর ইসতিরি লিঙ্গ' “
অভিমানে আমার মুখ গোমড়া হয়ে গেছে, “সোন্দর একখান শব্দ শিখাইলাম আর তুমি খটখডাই হাঁইসতে হাঁইসতে মরি যাইতেছ। কিয়ারে, সিরিয়াস কথারে ইয়ার্কি মনে করার কি কারন?”
এটা সিরিয়াস কথা, আমি প্রেম গুরুণী? গুরুর ইসতিরি লিঙ্গ. . . .
মালার হাসি থামে না, হাসি থামানের প্রানপন চেষ্টা করছে। পারছেনা, বরং আরো বেশী বেশী হাসছে। তখন ওকে আরো সুন্দর লাগছে। হাসতে হাসতে সারা শরীর কাঁপছে, বুক ওঠানামা করছে। আমার অন্যরকম লাগছে। কিন্তু হাত ধরাধরি, রোমান্টিক দৃষ্টি বিনিময়, একটুখানি স্পর্শ কিছুই হল না। ভালোই দেরী হয়ে গেছে, আজাইররা টাইম লস।
রিকশা বিদায় দিয়ে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে ভারাক্রান্ত কন্ঠে বললাম, “কি লাভ হইলো? তোঁয়ারে টাস্ করা হইলোনা।”
“আর হাসিওনা প্লীইইজ! মরে যাবো, মাইরি। “ যেতে গিয়ে আবার থামলো,
“আর শোনো! তুমি আমাদের বাড়ী আসবে, অবশ্যই আসবে। ঠাম্মা-ঠাকুর্দা তোমায় দেখে অনেক খুশী হবে। চা-জলপান না খাইয়ে আসতেই দেবেনা! ঠাকুর্দা এখনও মীরের সরাই চলে যেতে চায়। নিজের জন্মভূমির কথা, ছেলেবেলার কথা বলে আর বিমর্ষ হয়। এ্যাই, তুমি আমাদের বাড়ী আসবে তো?”

“আসুম আসুম, কথা দিলাম তোমার ঠাম্মা আর ঠাদ্দার লগে দেখা করুম।”

“ঠিক আচে, পরে দ্যাখা হবে, ক্যামোন?” সাঁই করে ঘুরলো, মেরুন রংয়ের কামিজটা এবার আর ফুলে উঠলো না, গভীর কালো চুলগুলো ছড়ালো দুপাশে আবার, বসে গেলো পিঠের উপর।

ভালোই লম্বা চুল।

(চলবে)

পর্ব-১
পর্ব-২

*
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৭
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×