somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইরান ইসরাইলের আক্রমণ-প্রতি আক্রমণ আর আমাদের সুন্নী-শিয়া মুমিন, অ-মুমিন কড়চা।

১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(ছবি: © আল জাযীরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক)

শ্রদ্ধেয় ব্লগার সামিউল ইসলাম বাবু'র স্বাগতম ইরান পোষ্টটিতে কয়েকটি কমেন্ট দেখে এই পোষ্ট টি লিখতে বাধ্য হলাম।
আমি গরীব মানুষ, লেখতে পারিনা। তবে সব সময় সামুতে থাকি এবং মোটামুটি ব্লগ গুলো পড়তে চেষ্টা করি। আমার লিখায় ভুল-ভ্রান্তি কিংবা আপনাদের বিরক্তি হলে অনূগ্রহ করে ক্ষমা করবেন।

একজন বলেছে ইরানীরাতো শিয়া, ওরা কি প্রকৃত মুমিন?
- ভাইরে. প্রকৃত মুমিন যদি সুন্নীরা হয় তাহলে এতগুলো সুন্নী রাষ্ট্রের মুমিনেরা ঝাঁপিয়ে পড়ছেনা কেন? এখানে উল্লখ্য, ফিলিস্তিন সহ বেশীরভাগ মুসলমান রাষ্ট্রই সুন্নী। তার মধ্যে অন্যতম সুন্নী মুমিন রাষ্ট্র পাকিস্তান নিউক্লিয়ার পাওয়ার ওয়ালা। সৌদি আরব, আর ইন্দোনেশিয়া নিউক্লিয়ার পাওয়ার হাতে পাবার দ্বার প্রান্তে। প্রশ্ন আসতে পারে, দুনিয়ার এত মুমিণ নীরব কেন? কারন টেকনিকলি তাদের কারো কিছু বলার নেই, সবাই ঘুরে ফিরে আমেরিকানদের সাথে গভীরভাবে জড়িত এবং দায়বদ্ধ। বন্ধুও বলা যায়। আর, ইসরায়েলের সাথে ব্রিটেন-আমেরিকার যে সম্পর্ক সেখানে ইসাইল আক্রমণ মানে আমেরিকাকে আক্রমণ সুতরাং তারা জড়িত হবেই। এখানেই ইসরইলীদের মূল ক্ষমতা। তাদের বন্ধু আমেরিকার আছে এই ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করার স্পর্ধা সুন্নী মুমিনদের নেই।
- এছাড়া ইসরাইল পারমানবিক শক্তিধর রাষ্ট্র সেই ১৯৬০ সাল থেকে। ইসরাইলের নিউক্লিয়ার বোমার সংখ্যা ৯০ টি, অন্যদিকে মুমিন রাষ্ট্র পাকিস্তানের আছে ১৭০টি। আপাতত: আর কোন মুমিন রাষ্ট্রের হাতে নিউক্লিয়ার অস্ত্র নেই। পাকিস্তানিদের কুত্তায় কামড়ালেও পারমানবিক যুদ্ধে জড়াবেনা, আমেরিকানরা পাকিস্তানিদের পারমানবিক ক্ষমতাধর বানিয়েছিলো কোল্ড ওয়ার আমলে, সোভিয়েতবান্ধব ইণ্ডিয়াকে শায়েস্তা করার জন্য। এখন ইণ্ডিয়াও আমেরিকার কোলে এবং ইসরাইলের জন্ম থেকে ইণ্ডিয়া-ইসরাইল বন্ধু। পাকিস্তান ছাড়া দুনিয়ার তাবৎ মুমিন রাষ্ট্র ইণ্ডিয়ার বন্ধু। আবার অ-মুমিন ইরানও ইণ্ডিয়ার বন্ধু। সুতরাং কে মুমিন আর কে অ-মুমিন এটা নিয়ে গবেষণা করতে গেলে দেখবেন মাথা আউলে যাচ্ছে।

আরেকজনের কমেন্টে মিষ্টি একটা ছেলেমানুষি দেখলাম, "ইরানের আল্যার নিশানা ঠিক নাই ভাইয়া। ৯৯% ফেরেস্তার দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছে ইসরাইলের আকাশ প্রতিরক্ষা দানব IRON DOME." - সিরিয়াস বিষয় নিয়ে এই কৌতুক সামান্য হলেও রস দিয়েছে,
- প্রথমত: ওগুলো মিসাইল ছিলো না, রকেট। টেকনিকলি দুইটাই এক জিনিষ হলেও রকেট অতিশয় ক্ষুদ্র, হাল্কা এবং সামান্যই ক্ষতি করতে পারে। সাধারণ ইসরাইলী নাগরিকগদের হত্যা করা ইরানের উদ্দেশ্য ছিলোনা (অন্য দিকে ইসরাইলের সরকারী বাহীনি গাযায় ৩৬ হাজারেরও বেশী প্যালেষ্টাইনী হত্যা করেছে যার ভেতর শিশুর সংখ্যা প্রায় অর্ধেক)। ইরানের উদ্যেশ্য ছিলো ইসারইলকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়া যে তারাই যুদ্ধে জড়াতে চাচ্ছে ইরানী কনস্যূলেট হামলার মাধ্যমে। (বারাবরের মত ইসরায়েল এই দাবী প্রত্যাখ্যান করেছে। সম্ভবত: ইহুদী ধর্মে ব্যাভিচার, সুদ, মিথ্যাচার পাপ নয় তাই তারা প্রচুর মিথ্যাচার করে থাকে।)
দিত্বীয়ত: ইসরাইল সরকারের বর্তমান সন্ত্রাসবাদী কর্মকান্ডের সাথে বেশীরভাগ নাগরিক একমত নয়। এই যে প্রতিদিন সাইরেন বাজে আর ইঁদুরের মত ইসরাইলের নাগরিকেরা ছোটাছুটি করি, বাংকারে আশ্রয় নেয় এটা সহ্যের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
তৃতীয়ত: নেতানিয়াহুর সরকার গাযার প্রতিটি মানুষকে হত্যা করে সমগ্র গাযা কে ইসরাইলের সাথে একীভূত করার পণ করেছে, এটা উদ্ভট এবং আকাশ কুসুম কল্পনা।
চতুর্থত: কাউকে না কাউকে ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। এটা দেখিয়ে দিতে হবে যে আমেরিকা আর ব্রিটেনের কোলে বসে, তাদের মাধ্যমে নিজেদের নিউক্লিয়ার সুপার পাওয়ার বানানোর পরও ইসরাইলের অধিবাসীরা সারাক্ষণ একটা ভীতির মধ্যে বাস করে। পান থেকে চুন খসলে সাইরেন বাজে আর তারা সবাই ইঁদুরের বাচ্চার মত দিগ্বদিক জ্ঞানশ্যূন্য হয়ে গর্তে (বাংকারে) লুকাতে থাকে। আর সেটা প্রতিনিয়ত: দেখিয়ে দেয় ফিলিস্তিনি গেরিলারা, আর বাধ্য হয়ে রকেট ছুঁড়ে দেখাতে হল ইরান কে। এখন আমেরিকা-ব্রিটেন তাদের যময ইসরাইলে আঘাতের দায়ে ইরান এ্যাটাক করবে? যদি তাই করে তাহলে রাশিয়া আর নর্থ কোরিয়া ইরানের পাশে দাঁড়াবে। তারপর কি? আরেকটা বিশ্বযুদ্ধ? বর্তমানে গোটা দুনিয়ায় যে পরিমান অর্থনৈতিক সংকটে আছে সেক্ষেত্রে পূর্ণমাত্রা যুদ্ধে কেউ জড়াবে বলে মনে হয় না।
- এই অভিশপ্ত জীবন থেকে ইসরাইলের সাধারণ নাগরিকেরা মুক্তি চায়। আর এর একমাত্র প্রতিকার হল, "ফিলিস্তিন (প্যালেষ্টাইন) বলে কিছু থাকবেনা", কট্টর যায়োনিষ্টদের এই সূত্র থেকে বের হয়ে একটা সমঝোতায় আসা।

দেখা যাক কোথাকার পানি কোথায় গড়ায়। এই ফাঁকে আমরা, বাংলার মুমিনেরা সুন্নী-শিয়া আর মুমিন-অ'মুমিন কিছুদিন ক্যাঁচাল করি। সামনে নতুন কিছু আসবে, তখন সেটা নিয়ে ক্যাঁচাল করবো!

সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৭
৬টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাঙ্গাইল শাড়িঃ অবশেষে মিললো ইউনস্কর স্বীকৃতি

লিখেছেন কিরকুট, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৭



চারিদিকে যে পরিমান দুঃসংবাদ ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এর মধ্যে নতুন এক গৌরবময় অধ্যায়ের সূচনা হলো বাংলাদেশের টাঙ্গাইলের তাতের শাড়ি এর জন্য, ইউনেস্কো এই প্রাচীন হ্যান্ডলুম বুননের শিল্পকে Intangible Cultural... ...বাকিটুকু পড়ুন

×