somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সময়টা বদলেছে, কিন্তু মানুষটা কি বদলেছে?

১৪ ই অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বছর পনেরো–বিশ আগেও জীবনের গতি ছিল অন্যরকম। মোবাইল ফোন তখনও সবার হাতে ছিল না, ফেসবুক-ইনস্টাগ্রাম ছিল অজানা নাম।
যখনই সময় পেত, বন্ধুরা বসত আড্ডা দিতে, চা খেতে খেতে কতো রকমের আলাপ, উত্তাপ কিংবা শিহরণ। সেই আড্ডার জায়গা হয়তো রেল স্টেশনের পাশে, ক্লাবে, কারও ঘরের বারান্দায়, মাঠের কোনে, কোনো এক ব্রিজের রেলিংয়ে বা পাড়ার দোকানে। কেউ রাজনীতি নিয়ে উত্তপ্ত, কেউ ক্রিকেট বা ফুটবল নিয়ে ঝগড়া করছে — তবুও সেই ঝগড়া শেষে হাসি টাই থাকত বড়। মানুষ তখন মানুষের খবর রাখত, মুখোমুখি কথা বলত, কারও দুঃখ শুনলে পাশে দাঁড়াত।

এখন সবই আছে — স্মার্টফোন, নেটওয়ার্ক, ভিডিও কল, স্মার্টওয়াচ। কিন্তু মানুষ টা, মানুষগুলো যেন একটু নিঃশব্দ হয়ে গেছে। বন্ধুত্ব এখন ফলো রিকুয়েস্টে, ভালোবাসা রিয়্যাকশনে, আর মন খারাপ মানে নিঃশব্দে স্ক্রল করা। একটা “Seen” কথার চেয়ে বেশি কিছু বলে না, তবুও ভেতরে ভেতরে কেমন যেন শূন্য লাগে।

ভেবেছিলাম প্রযুক্তি জীবনকে সহজ করবে — করেছে, সন্দেহ নেই। কিন্তু সেই সহজতার ভেতর কোথাও যেন একটু কঠোরতা ঢুকে পড়েছে।
আমরা এখন মুখ খুলে বলার চেয়ে পোস্ট দেই, শুনে বোঝার চেয়ে তর্ক করি, আর কাছের মানুষটার মুখের দিকে তাকানোর সময়টাই যেন হারিয়ে ফেলেছি।

মাঝে মাঝে ভাবি — আমরা কি সত্যিই বদলে গেছি, নাকি কেবল বদলের দৌড়ে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি? সময় আমাদের গতি দিয়েছে, কিন্তু শান্তিটা কেড়ে নিয়েছে।
আজকের মানুষ কাজ জানে, হিসাব জানে, কিন্তু হৃদয়ের দাম জানে না। কিংবা, জানলেও ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা। তার আগেই আরেকটা কিছু চলে আসে।
সেই মানুষ টা, যে আগে ঝড়ের রাতে বন্ধুর বাড়ি পৌঁছে যেত শুধু পাশে থাকার জন্য — সে এখন একটা “Take care” লিখে দায় সারছে।
সারতে বাধ্য হচ্ছে, হয়তো।

সময় এগিয়েছে, ঠিকই, কিন্তু মানুষ টা যদি একটু থেমে নিজের দিকে তাকাত, দেখত—সব ব্যস্ততার মাঝেও একটা শূন্যতা ক্রমে বড় হয়ে উঠছে।
তবুও আশার জায়গাটা এখনো ফুরায়নি। কারণ যতদিন আমরা কারও কাঁধে মাথা রেখে নীরব থাকতে পারি, যতদিন কারও মন খারাপ হলে আমরা “চলো, একটু হাঁটি” বলতে পারি, প্রাণ খুলে কথা বলতে পারি, ততদিন মানুষ টা পুরোপুরি বদলে যায় নি।

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৯
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×