তারা ছিলো এক আলোকবর্ষ দূরে
তা ঠিক কতখানি আমি জানিনা।
শুধু দেখেছি, এক বছরের আলো সাঁতরে সাঁতরে
মেয়েটা যখন অন্ধ হলো,
তখন তার ছেলেটার সাথে দেখা।
ভরাট গলাটা বলল,
তোমার হাতের বাতিটা কি সুন্দর গো!
জ্বালিয়ে রাখোনি কেন?
খেয়ালী চমকে উঠে বাতি ধরে দেখলো
এটা এখনো আছে! সেই কতকাল আগে...
অস্থির ছেলেটা গল্প শুনতে চায়
কতকাল আগে কি, কি!
মেয়েটা তার গল্প বলতে চায়নি।
আসলে কি একটা গল্পের মধ্যে যা যা উত্তেজনাকর থাকতে পারে,
একটা হারিয়ে যাওয়া, একটা খুন,
কিংবা নিদেনপক্ষে একটা রেপ,
কিছুই তার গল্পে ছিলোনা।
কেবল, একঘেয়ে আলোর মধ্যে সাঁতরে চলার,
একঘেয়ে আলোর মধ্যে হাতড়ে চলার ক্লান্তি
তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে আঁকড়ে ধরেছিলো।
এই তুচ্ছ দুঃখের কথা কি কাউকে বলা যায়!
নাকি বলা উচিৎ!
বিশেষ করে এখনই যখন কয়েকটা যুদ্ধ চলছে!
তার চেয়ে তোমার গল্প বলো।
সুরেলা ভরাট কন্ঠ বলে চলে,
পাখির কথা, গানের কথা, নদীর কথা,
একটা সুন্দর স্বপ্নের কথা
বলতে বলতে ক্লান্ত কথক ঘুমিয়ে পড়ে।
বাতি হাতে মেয়েটি তখন ভীষণ অন্ধকারে হাবুডুবু খায়।
আহা, সম্প্রদান কারকে চতুর্থীর মত
কেউ অন্ধজনে আলো দিক!
ছেলেটা কিন্তু চাইলেই ঠোকাঠুকি করে
দুটো চকমকি পাথর জ্বেলে দিতে পারতো।
কিন্তু সে একটা চিঠি লিখে চলে গেলো আর আশা করলো,
কেউ যদি কোন একদিন আলো জ্বালিয়ে দেয়,
তবে মেয়েটা পড়তে পারবে,
আমার প্রিয় লেডি উইথ ল্যাম্প,
তোমার আমার এই দেখাটা না হলেও চলতো।