আজ থেকে অনেক অনেক দিন পরের কথা । যখন আমরা একসাথে একই ছাদের নিচে থাকবো । তখন, খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যাবে তোমার । বাহিরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি । সেই বৃষ্টির ছাটে তোমার মনটাও ভিজে যাবে । ভিজে যাওয়া মন নিয়ে ছাদের রেলিং ধরে দাড়াবে তুমি।উদাস দৃষ্টিতে হারাবে তোমার মন । আনমনে ভাববে বসে একাকী ।
ঠিক তখন, পেছন থেকে চুপটি করে জাপটে ধরবো আমি । তোমার মুগ্ধতার হাসি,ঘোর লাগা চোখের চাহনি,ভেজা চুলের মুহুর্মুহু ঘ্রাণ, সবকিছুকে এমনকি সকালের বৃষ্টিকেও ছাপিয়ে খুন করবে আমায় । তুমি বলবে, একটু চা হলে
বেশ হতো । আমি তোমার আফসোস দূর করতে দুহাত মেলে তুলে ধরবো দুটো চায়ের কাপ । নাহ্, দুটো না, একটি । ভাগাভাগি করে নিবো দুজন । এক চুমুক আমার । আরেক চুমুক তোমার।
বৃষ্টি কেটে যাবে ধীরে । ঝলমলিয়ে রোদ উঠবে, মিষ্টি রোদ । চা টাও শেষ হয়ে যাবে চুমুকে চুমুকে । আমরা তখনও দাড়িয়ে রেলিং ধরে । নীচে রাস্তায় লাল-নীল রংয়ের গাড়ি ছুটে চলবে দুরন্ত গতিতে । পাশেই একটা দোলনা, সেই দোলনা দুলবো একসাথে দুজন । কেটে যাবে সারা সকাল।
দুপুরে তুমি নীল শাড়ি পড়বে । আমি নীল পাঞ্জাবী । তারপর রিকশা করে দূরে কোথাও যাবো । দুপুরের খাবার শেষ করে একসাথে । দুপুর গড়িয়ে বিকেল ছুঁইছুঁই । আবার রিকশায় উঠবো দুজন । যাবো নদীর ধারে । কলকল করা পানির শব্দে পা ভেজাবো দুজন । বিকেলের শেষ আলোটুকু ঘিরে ধরবে আমাদের । দূরে মাঝিদের হলুদাভ হারিকেনের আলো । হলুদের রং এ তোমার নীল শাড়ি,কালো টিপ,কাচের চুড়ি দেখবো আমি ।
ধীরে ধীরে শেষ আলোটুকুও নিভে যাবে । হাটবো দুজন একসাথে । তোমার করতলে হাত রেখে হাটবো আমি । গন্তব্য? আমাদের সেই ছাদ, ছাদের রেলিং। রেলিং এর পাশে থাকা দোলনা । অথবা ছাদের কোণে আমাদের ছোটখাটো চিলেকোঠাটা । পৌঁছাতে পৌঁছাতে চাঁদ উঠে যাবে । আকাশে বসবে তারার মেলা । চোখ তুলে তাকালেই আকাশ দেখবে তুমি।
তারপর এক এক করে তারা গুনবো আমরা । খুঁজে খুঁজে বের করবো সন্ধ্যাতারাটা কে । সারারাত জ্বলজ্বল করা তারাটাও রাগে,দুঃখে সেদিন ডুব দিবে আধারের মাঝে । আর কেউ থাকলো না তাকিয়ে দেখার । কেউ দেখবে না আর । সকাল হয়ে যাবে । শুকতারাটা আমাদের দেখে ফেলার আগেই চিলেকোঠায় চলে আসবো আমরা
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:০৩