somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আহমদ আতিকুজ্জামান
আমি অন্য সবার মতো নই। কারন আমি অন্য সবদের দলে নেই। আমার পরিচয় যে আমি ই।

আইসিইউ করিডোরে কাটানো ভয়ানক দিনগুলো…

০২ রা মে, ২০১৮ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



হাসপাতালগুলোর এই এক ভালো দিক; তারা আইসিইউ এর মতো কক্ষগুলো সাধারণ ক্যাবিন কিংবা ওয়ার্ডের ফ্লোরে রাখেনা। আইসিইউ থাকে উপরের দিকের ফ্লোরগুলোতে। সেখানে কোলাহল নেই। খুব বেশি মানুষজনও থাকেনা। মৃত্যুপথযাত্রী রোগীদের দেখতে আত্মীয়স্বজন'রা ঠিক ই আসে; একনজর দেখে চলে যায়। আইসিইউ থাকার জায়গা না।

আইসিইউ এর বারান্দায় বসে আছি। শুনশান নিরবতা চারিদিকে। ফ্লোর জুড়ে ফিনাইল এর কটু গন্ধ। মানুষজনের খুব একটা আনাগোনা এদিকে নেই। আইসিইউ এর দরজার মুখে সবসময় একজন মানুষ গম্ভীর হয়ে বসে থাকেন। আমি মাঝে মাঝে তাকে লক্ষ্য করি। মানুষটা বেঁটেখাটো। সবসময় তসবি জপেন। মানুষটার উপর মাঝে মাঝে হিংসে হয়। আইসিইউ তে এম্নিতেই সবার ঢুকতে মানা আছে; তারউপর দরজার কাছে গেলেই এই মানুষটা চোখ বড় বড় করে তাকান। যেন আইসিইউতে ঢুকাটা ভয়ঙ্কর কোনো অপরাধ। আবার কখনো কখনোও ভাবি, এটাই তো উনার ডিউটি। ক্ষমতা ভয়ঙ্কর একটা জিনিস। যার যেখানে ক্ষমতা আছে, সে সেখানে রাজত্ব করবেই। এই যেমন আইসিইউ এর দরজা খোলা- বন্ধ করার ক্ষমতা এই মানুষটার হাতে; তাকে এখানে রাজত্ব করতে দিতে হবে।

আইসিইউ'তে ঢুকার অভিজ্ঞতা এর আগে আমার কখনোও হয়নি। বর্তমানে যে অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হচ্চে সেটিও অনাকাঙ্ক্ষিত। এক সপ্তাহেরও কম সময়ের ব্যবধানে একজন মানুষকে এভাবে আইসিইউতে ভর্তি হতে দেখবো তা ভাবিনি। সেদিন বাবার ফোন পেয়ে ধাক্কার মতো খেলাম। সবে কোচিং শেষে বাসা ফিরছি। ফোনের অপাশ থেকে বাবা জানালেন, চাচা খুব অসুস্থ। ওরা চাচাকে নিয়ে হাসপাতালে যাচ্ছে। আমার খানিকটা কষ্ট বোধ হলো। সন্ধ্যায় তড়িঘড়ি করে দেখতে গেলাম তাকে। তিনি কথা বলতেছেন দেখে আশ্বস্ত হলাম হয়তো বেশি অসুস্থ না। একটু পরে ক্যাবিনে তাকে দেখতে এলেন দুজন ইন্টার্ন ডাক্তার। তারা মূহুর্তেই হুলস্থুল কান্ড ঘটিয়ে ফেললেন। প্রেসার মাপা থেকে ডায়াবেটিকস চ্যাক, রক্ত পরিক্ষা, ইউরিন টেস্ট সব করা হলো।

দেখা গেলো ডায়াবেটিকস পরিক্ষা বার বার করা হচ্ছে; ওদের মেশিন নাকি কাজ করতেছেনা! এদের কান্ড দেখে আমরা মোটামুটি ভয় ই পেয়ে গেলাম। কি হচ্ছেটা কি! পরীক্ষার যন্ত্রপাতি খুলে এরা ঘোষণা দিলেন এক্ষুনি রোগীকে আইসিইউতে ভর্তি করতে হবে! এটা শুনে আমরা স্তব্ধ! বলে কি এ হাফ-ডাক্তার! হেসেখেলে যে মানুষটা জ্ঞানবুদ্ধি নিয়ে কথা বলতে পারছেন, তাকে ঘাবড়ে দিয়ে মূহুর্তেই আইসিইউর রোগী বানিয়ে দেয়া হচ্ছে! পরক্ষণেই মনে হলো; উনি কম দিন থেকে অসুস্থ নন। বাবারে দেখতে সুদূর লন্ডন থেকে উনার মেয়ে এসেছিলেন; সপ্তাহ দিন আগে চলে গেছেন। উনি হয়ত কল্পনাও করেন নি ৭ দিনের ব্যবধানে তার বাবাকে আইসিইউর সাদা বিছানায় শুতে হবে! চারদিন আগে আমি গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলাম। ফেরার সময় সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে রাস্তা পর্যন্ত চলে এসেছি। গাড়িতে উঠবো এমন সময় মনে হলো চাচাকে বলা হয়নি! দৌড়ে গেলাম উনার কাছে। বললাম, চাচা চলে যাচ্ছি। উনি মাথায় হাত রেখে প্রায় কেঁদে ফেললেন; বললেন বাবা দোয়া কইরো। চাচা বেশিদিন বাঁচবনা!' আমি খানিকটা অভয় দিয়ে বলেছিলাম, কি যা তা বলছেন এসব। কিচ্ছু হবেনা।

এই চাচাকে ঘিরে আমার শৈশবের অনেক আনন্দঘন মুহুর্ত আছে। শৈশবের পুরোটাতেই উনার আদর পেয়েছি। বাবা মা যখনি বকা দিতেন কিংবা মার দিতেন; তখন আমার আশ্রয় হতো এই চাচার ঘরেই। উনি কাছে ডেকে নিয়ে বলতেন, 'ওরা তোকে আদর করেনা, তুই একেবারের জন্য আমাদের ঘরে চলে আয়।' ছোট ছিলাম বলেই হয়তো তখন উনার কথায় সম্মতির মাথা নাড়াতাম। ব্যাপারটা সবসময় ই ঘটতো। হয় আমি কেঁদেকেটে উনার ঘরে গিয়েছি নয়তো উনিই হয়তো আমাকে নিয়ে গেছেন উনার ঘরে। আর যতবার ই গিয়েছি, সংকল্প করেছি পরের বার আর ঘরে ফিরবোনা। চাচার ঘরেই কাটিয়ে দিবো জীবন।

একবার আমার হাত ভেঙ্গে গেলো। বিকেলে চাচাতো ভাইয়েরা ফুটবল খেলার সময় আমার উপর বল কিক করলো; ছোট ছিলাম তাই বলের তোড়ে ছিটকে পড়লাম অনেক দূর। হাতটা গেলো ভেঙ্গে। সবাই যখন আমার হাত ভাঙ্গার নায়ক'কে খুঁজতে ব্যস্ত, তখন এই চাচাই আমাকে নিয়ে ছুটলেন। ডাক্তার দেখালেন, হাতে ব্যান্ডেজ করালেন নিজে দাঁড়িয়ে থেকে। কোথাও বেড়াতে যাবো, কিন্তু বাবা যেতে দিচ্ছেন না। পড়ালেখার ক্ষতি হবে এই ভেবে। আমাদের ত্রাণকর্তা হিসেবে তখন চাচার আবির্ভাব; ইশারায় আমাদের রেডি করাতেন। তারপর বাবা ঠিক ই গাড়ি এনে বেড়াতে যেতে দিতেন। আমরাও খুশি, চাচাও খুশি। খাবার ভালো লাগছেনা তাই খাচ্চিনা এই খবর চাচার কানে যাওয়ার মানেই হলো ডেকে নিয়ে উনার ঘরে খাইয়ে দেয়া। সে দিনটা আমার জন্যে অঘোষিত দাওয়াতস্বরুপ হতো। 'শর্ট মেমরি ডিজিজ' এর রোগী হওয়ায় এখন ছোটবেলার অনেক স্মৃতি ই মনে করতে পারছিনা। কিন্তু এটা নিশ্চিত বলতে পারি; চাচার সাথে কাটানো শৈশবের দিনগুলো ছিলো আনন্দের এবং ভালোলাগার। এই চাচা এখন আইসিইউ এর সাদা বিছানায় নিবিড় পর্যবেক্ষণে আছেন! ভাবতেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। লিখা'টা যখন লিখছি, তখন নিজের অজান্তেই চোখের দু'কোণে অশ্রু জমা হচ্ছে!

হাসপাতাল জিনিস'টাই আমার অপছন্দের। সাদা এপ্রন পরা ডাক্তার, নার্সরাও অপছন্দের। আমার মনে হয় ডাক্তাররা সবাইকেই এক চোখে দেখে। এটা অবশ্য খারাপ কিছু না। আইসিইউর বারান্দায় বসে কত কিছু না চিন্তা করতেছি। ভাবছি, আইসিইউ কতটা বিষাদমাখা। মৃত্যুকে গ্রহণ করার পূর্বমুহুর্তে যাপিত জীবনের নৈঃশব্দের অন্ধগুহায় মানুষের দূরের কোন হ্যামিলনের বাঁশির সুরে নতুন ভোরের শিশির ছোঁয়ার প্রত্যয়ে আঙুলের ডগা নাড়াতে চায়।

এখানে প্রাণোচ্ছল কত মানুষের দেহ ঢুকে; বের হয় লাশ হয়ে। কালে কালে কত অবুঝ শিশুর মৃত্যুক্ষুধার সাক্ষী হয়ে এই আইসিইউ। কত বৃদ্ধ- বৃদ্ধা আবার তার আপন নীড়ে ফিরবেন আশা নিয়ে এসেছিলেন; বের হয়ে গেছেন ছেলে মেয়ে তথা গোটা পরিবারকে অশ্রুসিক্ত করে। দাদুর অসুখ হয়েছে, সুস্থ হলেই বাড়ি ফিরবেন, আবার তার খেলার সাথী ঘোড়া হবেন ভাবতো যে শিশুটা; তাকে অসহায় করে ওপারে পাড়ি জমান তার দাদু। সে হয়তো জানতেও পারবেনা, আইসিইউতে ঢুকে সবাই সুস্থ হয়ে বের হতে পারেনা। কিংবা তাকে কে বুঝাবে- নিবিড় পরিচর্যারত অবস্থাতেই নিকষকালো অন্ধকারের জগতে ভ্রমণ শুরু করে করেছেন তার প্রিয় দাদু। এসব চিন্তা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম খেয়াল ই করিনি!

এটা আইসিইউ'তে আমার দ্বিতীয় দিন।
সকালে কারা যেন খিচুড়ি জাতীয় খাবার নিয়ে এসেছিলো। চাচাকে খাইয়ে দিয়ে গেছে। শুনলাম উনার অবস্থা আগের চেয়ে ভালো। শরীর স্ট্যাবল আছে। শুনে আশ্বস্ত হলাম। ভাবলাম, যেকোনোভাবে সুস্থ হয়ে বাসা পর্যন্ত গেলেই হলো। দুপুরে ভয়ানক একটা খবর পেলাম, যার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। জানতে পারলাম চাচার গলায় ক্যান্সার ধরা পড়েছে। এবং তা একদম শেষ পর্যায়ের। সারা শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে! এমন বিষাদমাখা খবর কেউ কাউকে দিতে পারে জানা ছিলোনা। মূলত, মৃত্যুর প্রহর তখন থেকেই শুরু! শেষ টার্মিনালের যাত্রীরা চাচার জন্য অপেক্ষা করতেছিলো। ভিতর থেকে বলা হলো ডায়াবেটিকস কন্ট্রোল হচ্ছেনা। কন্ট্রোল হলে গলায় ছোটখাটো একটা অপারেশন করা হবে। আমি নিষেধ করলাম, কারণ গলা ফুটো করে কথা বলার ব্যবস্থা করাটা রোগীর জন্যই কষ্টকর ব্যাপার হবে। এই দীর্ঘসময়ে আমি একবারও আইসিইউতে ঢুকলাম না। বারান্দায় ঘন্টার পর ঘন্টা, প্রহরের পর প্রহর কাটয়ে দিছি। আমার বাবা সর্বক্ষণ ই আমাদের সাথে আছেন। নির্দেশনা দিচ্ছেন যখন যা প্রয়োজন করতে। ভিজিটর বেশি বা এই ধরনের অভিযোগ এলো আমাদের বিরুদ্ধে; বাবার সাথে কথা বলতে হাসপাতালের মালিক এলেন। পরিচয় জেনে বাবা বললেন, 'আপনার সাথে কি কথা বলবো? আপনার বাবার সাথেই তো আমাদের আত্মীয়তা, উনি ভালোই জানেন, শুনেন।' এরপর থেকে খোদ মালিক ই বারবার খবর নিতেন চাচার। আইসিইউ তে ঢুকার নিয়মশৃঙখলা শিথিল করা হলো আমাদের জন্যে। আমি ভাবলাম একবার ঢুকবো। কিন্তু সাহসে কুলোয় না।

এর পরেরদিন রাত্রে ঘটলো আমার জীবনে দেখা কিছু ঘৃণিত ঘটনার একটি। যার অধীনে সেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া, সে ডাক্তার রোগী দেখতে গেলেন এবং আমাদের বাবা-চাচার সাথে চরম খারাপ ব্যবহার করলেন! খারাপ ব্যবহার করেই ক্ষান্ত হলেন না, নিজের গাফিলতি ঢাকতে প্রচুর গাঁজাখুরি কথাও বললেন! আমরা নিরব থাকলাম। ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের এমন ব্যবহার দেখে ডাক্তারদের উপর ঘৃণা জন্মে গিয়েছে সেদিন থেকেই।

সেদিন রাত্রে বাসায় এসেছি ২ টার দিকে। ঘুমিয়েছি সবে। আমার পাশে চাচার মেঝো ছেলে, কোরানে হাফিজ তিনি। শেষরাত্রে ভয়ঙ্কর ভাবে কেপে উটলো পুরো বিল্ডিং। বুঝতে বাকি রইলো না ভূমিকম্প হচ্ছে! তড়িঘড়ি করে সবাই নিচে নেমে গেলাম, এবং দেখলাম বিল্ডিংয়ের প্রত্যেকটা মানুষ ই ভয়ার্ত চোখে দাঁড়িয়ে আছে। এ ধাক্কা সামলিয়ে ঘুমোতে গেলাম ভোরে। আর তখনি একটা দুঃস্বপ্ন দেখলাম। আমি দেখলাম, আইসিইউর ফ্লোরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সবাই কাঁদছে। হাসপাতালের মালিক লিফট বেয়ে নেমে আসছেন। তার মুখ বিষণ্ণ দেখাচ্ছে। আমরা সবাই কাঁদছি অভিন্নভাবে! দুঃস্বপ্ন ভেবে জিনিসটা মাথা থেকে দূর করতে চাইলাম। সকালে যথারীতি হসপিটালে গেলাম এবং জানলাম অবস্থা খুব একটা ভালোনা। আমি সেদিন সাহস করে ঢুকে পড়লাম আইসিইউ রুমে! হীম শীতলতা শেখানে। রোগী মাত্র ২ জন! চাচার কাছে গেলাম না, দূর থেকে দেখলাম তার চোখ নিঃসাড়! চোখের মৃত্যু ঘটেছে নাকি? ডাক্তার অভয় দেয়ায় একটু কাছে গেলাম, দেখলাম উনার শরীর মৃত মানুষের মতো পড়ে আছে। কোনো বোধশক্তি নেই। চোখ বড় বড় হয়ে আছে। সে চোখ কিছু বলতে চায় নিশ্চয়। আমি নিঃশব্দে রুম থেকে রেরিয়ে আসলাম। যেখানে প্রাণ থেকেও নেই; সেখানে থাকার কোনো মানেই হয়না।

বিকেলে মালিক আসলেন। উনাকে দেখেই আমি ভয় পেয়ে গেলাম! এ কি! উনার পরণে ঠিক সেই কাপড়টাই, যা আমি রাতে স্বপ্নে দেখেছি! এরচেয়ে অবাক করা বিষয়, উনি লিফটে উঠলেন এবং বেরিয়ে এলেন খুব বিষন্ন মনে! এটা কি স্বপ্নের মতোই মিলে যাচ্ছেনা? সব্ধ্যা গড়ালো। ৮-৯ টার দিকে বাবা'দের সাথে মিটিং করলেন ডাক্তার এবং মালিক। জানালেন, উনার ৯৫% চিকিৎসা ই হয়ে গেছে। এখানে উনাকে রেখে শুধু শুধু বিল বাড়িয়ে লাভ নেই। বাকিটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিতে! বুঝতে একটুও বাকি রইলোনা; চাচা আর বেশিক্ষণ আমাদের মধ্যে নেই। তাহলে কি শেষ টার্মিনালে পৌছে গেছেন চাচা? পূর্বেকার যাত্রীরা কি তার জন্যে অপেক্ষা করছে? বিস্ময়ের সীমা রইলো না, যখন দেখলাম আমার বাবা ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন! তার সাথে সাথে কাঁদছেন আইসিইউর করিডোরে থাকা আমাদের প্রত্যেকটা আত্মীয়স্বজন! বাবার পরণে ঠিক সেই শ্যুট-কোট যা গতরাতে স্বপ্নে দেখেছিলাম! এবং তিনি ঠিক সেই পিলারের কাছে ই দাঁড়িয়ে কাঁদতেছেন যা স্বপ্নে দেখেছিলাম! চাচা তখনো বেচে আছেন; কিন্তু বেচে থেকেও বেচে নেই অবস্থা! হসপিটালের এম্বুলেন্স আনা হলো; আত্মীয়স্বজন সবাই মরাকান্না করতে থাকলো। লাশবাহী এম্বুলেন্স এ আমার সিট পড়লো ঠিক চাচার পায়ের কাছে। বুঝতে পারলাম মিনিট দশেক পরেই চাচার মৃত্যু হয়েছে। তবুও, সারাটা রাস্তা চাচার পায়ে হাত বুলাতে থাকলাম, কান্না করতেছি আর মনে মনে বলতেছি; চাচা মাফ করে দিও, কতো বেয়াদবি ই না করেছি তোমার সাথে।

আইসিইতে থাকা সেসকল মানুষের ছলছল চোখের আকুতির কাছে স্বজনদের হৃদয় ভাঙা হাহাকার, যা অন্তপুরের বোধের গভীরে নিরব গল্প হয়ে প্রকাশ করলাম। এখনো সেই দিনগুলোর কথা মনে হলে শিউরে উঠি, ভাবি- কত ই না বেদনার ছিলো আইসিইউ এর করিডোরে কাটানো দিনগুলি।

© আহমদ আতিকুজ্জামান।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মে, ২০১৮ রাত ১১:২৭
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×