ব্যাপক দিন আগে রিলিজ হওয়া সত্ত্বেও আজকে স্টার সিনেপ্লেক্সে বাংলা চলচ্চিত্রের ফাকিংবদন্তি এম এ জলিল অনন্ত সাহেবের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা ছবিটা দেখতে গেলাম। জলিল সাহেবের ভাষায়, এটা নাকি ব্যাপক রোমান্টিক আর ড্রামায় সমৃদ্ধ একটা ছবি। তবে এই ছবি দেখার উদ্দেশ্য সবার একটাই। ব্যাফুক বিনুদন হাসিল করা। আর এই ছবির কাহিনিতে লজিক খোঁজার করলে আপনি একটা জিনিসই হবেন। ‘বলদ’
যা-ই হোক, এখন ছবির হালকাপাতলা একটা রিভিউ দিই B)
ছবির একদম প্রথম দিকে দেখা যায় বর্ষা আপা একজন চুপার মডেল হওয়ার জন্য বিভিন্ন উল্টাসিধা লোকের কাছে ধর্না দেয়। তাদের মধ্যে একজন বর্ষা আফারে মদটদ খাওয়া শেখানো এবং আরও এটাসেটা করার পর তিন মাস ঘুরায় বর্ষা আপারে ফালায় জাপানে চম্পট দিয়া এক জাপানির সাথে শাদি মোবারক কইরা ফেলে। ভাঙাচোরা হৃদয় নিয়া রাস্তা দিয়া হাঁটার সময় বর্ষা আপা রাস্তায় অনন্ত সাহেবের শো-এর বিজ্ঞাপন দেখেন। তারপর উনি ঠিকানা নিয়া যথাসময়ে শো দেখতে উপস্থিত হন। হায় রে সেই কি শো! মুঞ্চায় Shoe খুইলা Show-এর উপ্রে ফিক্কা মারি! সেখানে নারকীয় নাচেগানে জলিল সাহেব প্রমাণ করার চেষ্টা করলেন যে তিনি নাকি ‘ভেরি ভেরি ইসমার্ট, আর নাচে-গানে আর ফাইটিংয়ে পোলা নাম্বার ওয়ান’। আর এসবে সায় দিল ছবিতে তার ভাড়া করা ডাই হার্ড আবাল ফ্যানেরা।
এইসব দেখার পর বর্ষা আপা সময় বের করে জলিল ভাইয়ের অপিসে গেলেন। জলিল বাইয়ের বড় ইয়া দেইখা, মানে বড় অপিস দেইখা বর্ষা আপা একদম খাড়ায় গেলেন। জলিল সাহেবরে আফায় কইলেন ‘এতু বড় আর সুন্দুর যার অফিস, তার মনটাও না জানি কত বড় আর সুন্দুর!’ তারপর আফায় নিজের বাঁশ খাওয়ার কাহিনি বয়ান করলেন আর জলিল ভাইরে রিকুয়েস্ট করলেন যাতে ভাই উনারে এট্টু মডেলিং লাইনে ঢুকায় দেন। জলিল ভাই বর্ষা আফার কাছে নিজের বিভিন্ন প্রশংসা শুইনা খুশিতে একেবারে টং। উনি আফারে মানা করলেন না। এমুন সময় জলিল ভাইয়ের ইয়া বড় সিম্ফোনি টাইপের একটা মোবাইল বাজা শুরু হয়। এই মুপাইল আসলে এই ছবির সেকেন্ড লিড। এট্টু পরপর মহা ক্রিটিক্যাল সব মুহূর্তে এইটা বাজতে থাকে। যা-ই হোক, জলিল ভাই উইঠা গেলেন। তবে যাওয়ার সময় বর্ষা আফা যেইটা করলেন সেইটা পুরা Epic। উনি জলিল ভাইরে কইলেন ‘ভাইয়া! আপনার ফোন নাম্বারটা একটু দেওয়া যাবে? প্লিজ ভাইয়া!’ নিজের রিয়াল লাইফ ইস্ত্রির মুখে ‘ভাইয়া’ ডাক শুইনা জলিল বাই নিজের ভিজিটিং কার্ড বর্ষা আফারে না দিয়া পারলেন না।
নাম্বার পাওয়ার পর আফায় লাগাতার সাতদিন বাই-রে ফোন দিয়া বাইয়ের ফোন খালি বন্ধই পাইলেন। অষ্টম দিন জলিল ভাই ফোন ধরার খুশিতে লাফ দিয়া আফায় নিজের চৌকি ভাইঙা ফালাইলেন।
এরপর কী হইল সেইটা তো ইতিহাস। বর্ষা আফায় ছবিতে জলিল বাই-রে মোট ডজনখানেক বার ‘ভাইয়া’ কইলেন। কিন্তু তবুও উনাদের মধ্যে পেয়ার-মোহাব্বত হইল। জলিল ভাই বর্ষা আপার মুখে একবারও ‘আই লাব ইউ’ টাইপের কিছু না শোনার পরেও উনারে দুইটা ফ্ল্যাট, একটা গাড়ি, জামা, কাপড় এটাসেটা দুনিয়া কিইন্যা দিলেন। এমনকি আফার দুই বইনেও যা চায় উনি তাগোরে সেটাই কিইন্যা দেন। কিন্তু বর্ষা আফা বারবার মডেল হইবার বাসনায় বিভিন্ন উল্টাসিধা লোকের কাছে যাইতেই থাকে। মাগার প্রত্যেকবারই জলিল বাই আফারে মাফ কইরা দেন, আর আফায় আবার অন্য কোনো লুইচ্চা ভদ্রলোকের কাছে গিয়া বয়। এমনকি জলিল বাই যখন সিঙ্গাপুরে অবশ না করায় নিজের পাছার অপারেশন করাইলেন তখন তো বর্ষা আফায় নগদ আরেকজনের লগে পিরিত করাই শুরু কইরা দিলেন। জলিল বাই সব জানার পরেও আফারে মাফ কইরা দিলেন। তারপর আফায় কিরা-কসম দিয়া কইলেন যে, আর জিন্দেগিতেও অন্য কারও ওইটার দিকে, মানে চেহারার দিকে ফিরাও চাইবেন না।
এইসবের পর আফা দুই দিন ভালা থাকলেন। তারপর আবার আরেক আবাল মিশা সওদাগর আফারে চুপার মটেল বানানোর খায়েশ পুরা করার খোয়াব দেখাইলেন। আফা আমার দেখা সর্বকালের সবচেয়ে লম্পট নায়িকা। উনি মিশার সাথে মিশলেন, আর জলিল ভাইরে আবার কলা দেখায় বললেন, টাকার মধ্যেই সকল সুখ। বাইয়ে এইসব শুইনা উনার এক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বর্ষা আপার নামে দান কইরা আত্মহত্যা করার জন্য ইন্ডিয়ায় গেলেন। ওইদিকে মিশা সওদাগর জলিল ভাইয়ের হাতে বাঁশডলা খাওয়ার প্রতিশোধ উঠাইতে, আর জলিল ভাইয়ের সব সম্পত্তি হাতায় নিয়ে বর্ষা আপারে ঘুমের ওষুধ খাওয়ায় অজ্ঞান কইরা সোজা সিঙ্গাপুরে নিয়া গেল।
এদিকে ইন্ডিয়ায় অনন্ত ভাই উপ্রে থিকা ঝাঁপ দিয়া নিজের ভর্তা বানানোর ঠিক আগ মুহূর্তে ছবির সেকেন্ড লিড, সিম্ফোনির ইয়া বড় অ্যান্ড্রয়েড ফোন বাইজা উঠল। উনি ফোন উঠাইতে উঠাইতে সোজা সিঙ্গাপুরে এক্সপোর্ট হইয়া গেলেন আফারে বাঁচাইতে। জলিল বাই ক্রিশ, স্পাইডারম্যান, সুপারম্যান, ব্যাটম্যান, রজনীকান্তের চেয়েও কঠি ফাইট দিয়া বর্ষা আপারে বাঁচাইলেন। এর মধ্যে ভাইয়ে খাইলেন গুল্লি, চাক্কু, লাত্থি, উষ্টা ইত্যাদি। এত কিছু একসাথে খাইয়া উনি কয়েকবার চিলিসস সমৃদ্ধ রক্তবমিও করলেন। অবশেষে উনি নায়িকার সাথে কথা কওয়া শুরু করলেন। এক পর্যায়ে ভাইজান টান দিয়া নিজের হার্টটা বাইর কইরা হাতে নিয়া আসলেন। ফাইজলামি না ডুড, উনি উনার হার্ট হাতে লইয়াই ডায়ালগ দিলেন। ডায়ালগ দেওয়ার ধরন দেইখা বর্ষা আপা নাকের পানি চোখের পানি এক কইরা কানতে লাগলেন। এর মধ্যে চাকু খাইয়া পইড়া থাকা মিশা সওদাগর উইঠা জলিল বাইয়ের ভিতরে হান্দায় দিলেন। আই মিন গুল্লি। জলিল বাই ওই অবস্থাতেই মিশা সওদাগরের ওপর পুরা পিস্তল খালি কইরা দিয়া ধাম কইরা মাটিতে পড়লেন। তারপর উনার সেক্রেটারি বাংলাদেশে একটা ফোন দিয়া কারে জানি খবর দিল যে বাংলাদেশের সুপার হিরু জলিল বাইয়ের অবস্থা খারাপ। উনার এক ঠ্যাং কবরে, আর এক ঠ্যাং কলার ছিলকায়। এরপর দেখাইল যে, এই খবর শোনার পর দেশের বেবাক মানুষ কান্দাকাটি লাগায় দিয়া বাইয়ের নামে খিইচ্যা দোয়া করা শুরু করল। অবশেষে সিঙ্গাপুরি ডাক্তার ঘোষণা করলেন যে, মেডিকেল শাস্ত্রকে ইয়া বড় কলা দেখায় জলিল বাই বাঁইচা ফিরছেন। ছবি শ্যাষ

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




