(পুরো লেখাটি আমার সীমাবদ্ধ জ্ঞানের আলোকে লেখা একটি নিজস্ব চিন্তা চেতনা)
আমরা সবাই জানি ঈমান হচ্ছে অংকের ১ এর মতো আর আমল হচ্ছে ০ এর মতো। ঈমান থাকা মানে আপনি অংকের এক বসালেন তারপর যত আমল করবেন ১ এর পর তত শুন্য পড়বে, আপনার নাম্বার বাড়তে থাকবে। আর যদি ঈমান বা ১ না থাকে তার পিছনে যতই শুন্য বসান ফলাফল শুন্য।
আমরা যারা আস্তিক তারা প্রায় সকলেই ঈমানের দাবীদার অর্থাৎ আমাদের ১ আছে। ১ এর পিছে শুন্য বসানো জন্য নামাজ পড়া দরকার, অনেকেই পড়িনা, রোজা রাখা উচিত, অনকেই রাখিনা, জাকাত দেয়া দরকার, দেই না, সুদ খাই, ঘুষ খাই, গীবত গাই। এ দিকে আঙুল তুললে- কারও জবাব অলসতায় পারিনা, কারও জবাব বয়স হলে ঠিক হয়ে যাবে, কারও জবাব এ যুগে এর চেয়ে ভাল থাকা যায় নাকি আর সবচেয়ে বড় কথা আল্লাহ রহমানুর রাহিম তিনি ক্ষমা করে দিবেন। কারণ ঈমান আমাদের দৃঢ়। কিভাবে ? আমরা আল্লাহ এবং তাঁর রাসুল (সাঃ) বিশ্বাস করি, পরকালে বিশ্বাস করি, ধর্মের নামে কেউ কিছু বললে কষ্ট পাই, নাাস্তিকদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ি ইত্যাদি, ইত্যাদি। অতএব আমাদের ঈমান পাকা।
কিন্তু সত্যি কি আমরা যেমন মনে করি আমাদের ঈমান ততটাই পোক্ত? আমার মনে হয় না। কারণটা একটা উদাহরণ দিলেই পরিস্কার হয়ে যাবে। ধরেন আপনার বাসায় এসে থানার ওসি বলে গেল- কাল থেকে যদি দৈনিক পাঁচবার থানায় হাজিরা না দেন তবে থানায় নিয়ে উল্টা করে টাঙ্গানো হবে। তবে কি আপনি ওসির কথা মতো না চলে বিভিন্ন ওজর আপত্তি দেখাবেন? আমার মনে হয় না। কিন্তু আল্লাহ তার আদেশ না মানলে জাহান্নামের ভয় দেখিয়েছেন তারপরও কেন এত ওজর আপত্তি!!!
আপনার ঈমান আসলে ততটা দৃঢ় না। শুধু আশৈশব শুনে আশা ঈমানের ধারনাটা আপনা মনে শক্ত হয়ে বসে আছে। সেটাকে মন থেকে বের করে এনে কষ্টি পাথরে ঘষে তার বিশুদ্ধতা আপনি পরীক্ষা করেননি। আপনার ব্দ্ধমুল ধারনা যে আপনি ঈমানের পরীক্ষায় পাশ।
এই ধারণ থেকে বের হয়ে আসুন একটু যাঁচাই করি-
ইসলামে ঘুষ খাওয়া নিষেধ আপনি নিচ্ছেন। একবার ভাবুন আপনাকে দুদক এর চেয়ারম্যান এসে বলে গেল এর পর ঘুষ নিয়ে আপনাকে ধরে নিয়ে গিয়ে পত্রিকায় ছবি ছাপিয়ে দিবে তারপরও কি আপনি ঘুষ খাবেন? খাবেন না। তারমানে আপনি ঈমানের পরীক্ষায় ফেল।
আপনি পাড়া পরশির হক মেরে খাচ্ছেন। চেয়ারম্যান এসে বলে গেল পড়শির হক আদায় না করলে কাল আপনাকে হাটের মাঝখানে বেঁধে পিটানো হবে । তারপরও কি আপনি পড়শির হক আদায় করবেন না? যদি করেন তাহলে আপনি ঈমানের পরীক্ষায় ফেল।
আপনি গীবত গান। ডিবি থেকে এসে বলে গেল আগমীকাল থেকে গীবত গাওয়া বন্ধ না করলে ডিম থেরাপি দেয়া হবে । তারপরও
আপনি গীবত গাইবেন? মনে হয় না। আবারও আপনি পরীক্ষায় ফেল।
আপনার কাছে আল্লাহর চেয়ে দুদক, চেয়ারম্যান বা ডিবির ভয় বড়। দোযখের আগুনের চেয়ে ইহকালের শাস্তি বড় । তারমানে আপনি ফেল। ঈমানের পরীক্ষায় ডাহা ফেল। অতএব আশৈশব ঈমানের দৃঢ়তার কল্পনা করে যে বেহেশতের আশায় বসে আছেন তা কল্পনার ফানুস মাত্র। বাস্তবতার কষ্টিপাথরে যাঁচাই করলে তা থেকে হয়তো বার আনাই খাদ বের হবে।
ছবি-https://pixabay.com/photos/tree-sunset-clouds-sky-silhouette-736885/
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২৩ রাত ৮:৩০