১) আমাদের চেম্বারের অফিস সহকারী এসে বেশ চড়া গলায় বললো- ঐ বাজারে কি মানুষ যায়! কি দুর্গন্ধ, বাজার ভেঙ্গে দেয় না কেন।
পরবর্তীতে আরো তথ্য জানার পর যা বুঝলাম - আনন্দ সিনেমা হলের পাশেই একটা খ্রিস্টানদের বাজার আছে। সেখানে শুকরের মাংস বিক্রি হয়। কোন কাজে আমাদের অফিস সহকারীটি ঐ বাজারে ঢুকার পর শুকরের মাংস দেখেই তার বমি আসা শুরু হয়েছে। কোন রকমে সেখান থেকে বের হয়ে চেম্বারে ঢুকে তার ডায়ালগ ছিল ঐ রকম। অফিস সহকারীটি ইসলাম ধর্মাবলম্বী তবে ধর্ম নিয়ে তার কোন বাড়াবাড়ি নেই বরং আধুনিক মন মানসিকতার ছেলে।
এই যদি হয় অবস্থা তাহলে একজন সনাতনী ধর্মলম্বী যখন মহল্লার রাস্তার পাশের গোস্তের দোকানে গরুর মাথাটি ঝুলিয়ে রাখা দেখে তখন তাদের কেমন লাগে বা কুরবানীর ঈদের সময় যখন তার বাড়ির সামনে গরু জবাই করা হয় তখনই বা কেমন বোধ করে?
২) আমাদের গৃহকর্মীটির বক্তব্য, তাদের দেশের বাড়ির সড়কের পাশের মন্দিরে একটা মুর্তি বানানো আছে, জিহ্বা বের করা সেই মুর্তিটি দেখলে তার লা.. মেরে ভেঙ্গে দিয়ে আসতে ইচ্ছে করে।
৩) আমাদের কোন এক বন্ধু ছিল সনাতনী। এলাকার কোন এক প্রভাবশালী মুসলিম জুম্মার নামাজে যাওয়ার আগে তাকে দেখায় রাস্তায় থুতু ফেলে বলেছিল -শালা নামাজে জাওয়ার আগে মালায়নের মুখ দেখলাম। এর পর থেকে বুঝতাম আমাদের ঐ বন্ধু অন্তরে মুসলিমদের সম্পর্কে এতটাই বিদ্বেষ পোষণ করে যে পরিস্থিতি অনুকুলে হলে মুসলমানদের গলায় ছুরি দিতেও সে দ্বিধা করবে না কিন্তু বাহ্যিক ভাবে তার সাথে আমাদের সম্পর্ক ছিল খুব ঘনিষ্ট।
প্রতিবার রাষ্ট্র ক্ষমতার পালা বদলের পর যদি সংখ্যালঘুদের ভিক্টিম হতে হয় তখনই বা তাদের কেমন লাগে?
আমাদের বেশির ভাগ বাংলাদেশি মুসলিমদের অভিযোগ সনাতনিরা খায় এদেশে আর সম্পদ করে ও দেশে। তাদের এক পা এ দেশে তো আরেক পা ও দেশে। হয়তো কথাটি ঠিক। তাই এ সংক্রান্ত একটা বিদ্ধেষ তো তাদের প্রতি আমদের অনেকের রয়েছে। এ রকম বিদ্বেষ নিয়ে কিভাবে সম্প্রীতিি বা অন্তরিকতা থাকে!! পরষ্পরের প্রতি এরকম মনোভাব থাকার পর কি করে এক সম্প্রদায় আরেক সম্প্রদায়কে মনে নিবে।
আসলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কথা বলে মনে হয় আমরা পরষ্পরকে প্রতারণা করছি।
তাই যদি মনে নেয়া না বলে মেনে নেয়া বলি বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি না বলে যদি সাম্প্রদায়িক সহবস্থান বলি তবে তা মনে হয় অধিক যুক্তিযুক্ত হয়।