২০ মার্চ, ২০১৬। আরো একটি বর্বরতা। আরো একটি কলঙ্ক। আরো একটি ধর্ষণ পরে হত্যা।
ময়নামতি সেনানিবাসের অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের কাছ থেকে মেয়েটির নগ্ন লাশ পাওয়া যায়। ধর্ষণের শিকার নিহত মেয়েটির নাম সোহাগী জাহান তনু, বয়স ১৯। সে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলো। কলেজের নাট্য সংগঠন ‘ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারে’ (ভিসিটি) ছিলো তার অবাধ বিচরণ।
পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারণে সোহাগী পাড়াশোনার পাশিপাশি বাসার কাছে অলিপুর গ্রামেই এক বাসায় টিউশনি করে লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে আসছিলো। ঘটনার দিন সোহাগী ২০ মার্চ বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে প্রতিদিনের মতো ঘর থেকে বের হয়। বাসায় ফিরতে দেরি হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তার মোবাইলে যোগাযোগ করে, কিন্তু পায়নি। যে বাসায় টিউশনি করতো সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ওই বাসা থেকে বের হয়ে গেছে সে। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ময়নামতি সেনানিবাসের অভ্যন্তরে পাওয়ার হাউসের পানির ট্যাংক সংলগ্ন স্থানে সোহাগীর মৃতদেহ পাওয়া যায়। গলাকাটা মৃতদেহ নগ্ন অবস্থায় কালভার্টের পাশে ঝোপঝাড়ের ভেতর পড়েছিল। নাক দিয়ে রক্ত ঝরছিলো। মোবাইল ফোনটিও পড়েছিল পাশে।
মেয়ের লাশ দেখে বাবার চিৎকার— “মা, আমার মা রে…”
ঘর থেকে বের হবার আগে মাকে বলে গিয়েছিলো— “মা টেইলারের কাছ থেকে আমার নতুন জামাটা আজ নিয়ে এসো, আমি কাল নতুন জামা পরে কলেজ যাবো..”
আজোব ব্যাপার কি জানেন?
দেশের সবথেকে নিরাপদ স্থান হিসেবে ধরা হয় সেনানিবাসকে, আর সেখানেই ধর্ষণ-হত্যা। কোন বড় ধরনের প্রথম অবস্থায় মিডিয়ার সাড়া পাওয়া যায়নি। কয়েকটি ছোটোখাটো মানব বন্ধন হয়েছে। আশা করছি বিচারও হবে না।
কারা করেছে এই কাজ?
সিভিলিয়ান নাকি সেনা? সাধারন জনগণ সেনাবাহিনীকে দেখলে ভয়ে অন্তুত ২০০ হাত দূরে থাকে। সেনাদের সাথে কথা বলতে গেলে সাধারন পাবলিকের সর্বাঙ্গ কাঁপে। তারা করবে এই কাজ? এতো বড় সাহসী মানুষ বাংলাদেশে আছে? সবাই বিশ্বাস করলেও আমি বিশ্বাস করতে পারবো না।
সরকার, পুলিশ, বিচার বিভাগকে বলছি,
আমি জানি আমার এই ২টা কথায় আপনাদের কিছুই যায় আসে না। কিন্তু আপনারা যদি এটার বিচার না করতে পারেন, আমার বিশ্বাস আল্লাহ্ আপনাদের ক্ষমা করবেন না।
আমার মনে হয়, বাংলাদেশ সরকার দুধ কলা দিয়ে কাল-সাপ পুষছেন। জানি না আমার মা, বোন, স্ত্রী, মেয়ের কপালে কি আছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ২:১০