somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

।। আবুলের মেয়ে পটানো যন্ত্র ।। :!> ;)

১৩ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রাইভেট ভার্সিটির তৃতীয় বর্ষে পড়া আবুলের মনে কষ্টের পাহার । হাবুল আর কাবুল , এই দুই জন আবুলের বেস্টি । মানে বেস্ট ফ্রেন্ড আর কি । এই দুইজনের আবার গার্ল ফ্রেন্ড আছে । কিন্তু আবুল সিঙ্গেল । এই নিয়ে আবুলকে প্রায় ই টিটকারী শুনতে হয় । প্রতিদিন আবুল একা একা ভার্সিটিতে আসে , আর তার দুই বেস্টি আসে তাদের নিজ নিজ গার্ল ফ্রেন্ডদের কোমর জড়িয়ে ধরে । কে কার গার্ল ফ্রেন্ডকে নিয়ে কি কি করল তার রসালো আলাপ করে হাবুল কাবুল মিলে । আবুল এসব আলোচনায় যোগ দিতে পারে না । কারণ তার কোন গার্ল ফ্রেন্ড নাই । রস করার সুযোগ ও নাই । মনে মনে আবুল একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলে । একটা গার্ল ফ্রেন্ড জুটানো চাই ই চাই । নইলে মুখ দেখাতে পারবে না বন্ধুকুলে ।

যেই ভাবা সেই কাজ । আবুল গেলো এলাকার এক বড় ভাইয়ের কাছে । মেয়ে পটানোতে নাকি ওই বড় ভাই উস্তাদ । এক রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে থেকেই নাকি উনি ডজনখানেক মেয়ে পটিয়ে বসে আছেন । গুরু মানুষ । মানতেই হবে । বড় ভাইয়ের কাছে ইতস্ত করতে করতে আবুল তার সমস্যার কথা বলেই ফেললো । মুচকি হেসে বড় ভাই বললেন
‘’ আরে মিয়া , এইডা কুনু ব্যাফার ? আমগো লগে কডা দিন সিটিং দ্যাও , দেখবা পাইলাইবা ‘’ ।

পরদিন বিকেলে আবুল গেলো বড় ভাইদের সাথে ‘সিটিং’ দিতে । বিকেল টাইম কারণ এই সময়ে মেয়েরা প্রাইভেট কলেজ শেষে বাড়ি ফিরে । মোড়ের চায়ের দোকানে বসে আবুল বড় ভাইয়ের নির্দেশ মতো মেয়েদের পটানোর প্রথম পর্ব মানে তাদের ডাকা শুরু করল । একটা করে মেয়ে যায় আর আবুল একটা করে উক্তি করে । এমন করে দুই দিন পার হয়ে গেলো । আবুল মেয়ের দেখা পায় না । একদিন বিকেলে আবুল বসে আছে । ইতিমধ্যে ডজন খানিক মেয়ে পার হয়েছে । হটাত আবুল দেখল এক বোরকা পড়া মেয়ে এগিয়ে আসছে । দ্রুত হাতে চুল ঠিক করে আবুল বড় ভাইয়ের শেখানো মন্ত্র আউড়ালো
‘’ বোরকা পড়া মেয়ে আমায় পাগল করেছে’’ । মন্ত্র আউড়ানোর সাথে সাথে আবুল তার একশন দেখল । মেয়েটি তার দিকে এগিয়ে আসছে । । মনে মনে আবুল গদগদ । মেয়েটি কাছে এসে আবুলের গালে তার হাতের স্পর্শ দিলো , মানে থাপ্পড় মারলো আরকি । বোরকা পড়া মেয়েটি আর কেউ না , তার ই ছোট বোন ।

রাস্তার মোড়ের আইডিয়া বাতিল । ঘরে আর কোন ইজ্জত ই রইল না আবুলের । এই ঘটনা তার ভার্সিটির বন্ধু মহলেও চাউর হয়েছে । টিটকারির পরিমাণ বাড়লো বৈকি ।
ক্যাফেটেরিয়ায় বসে বসে আবুল গরম কুত্তা চিবাচ্ছে আর ভাবছে , কি করা যায় । তখন ই আবুলের চোখে পড়লো ছেলেরা মেয়েদের গোলাপ ফুল দিচ্ছে । মেয়েরা হাসি মুখে তা নিচ্ছে । তারপর হাত ধরে বেড়িয়ে যাচ্ছে । দেরী না করে আবুল ও কয়েকটা গোলাপ ফুল কিনে দৌড়ে গেলো । এক মেয়েকে ফুল ধরিয়ে দিতে না দিতেই সেই ফুল আবুলের নাকে এসে পড়লো । তবে এতে তার নাক ফাটে নি । আজকে ছিল ভ্যালেন্টাইন ডে । একের পর এক মেয়েকে গোলাপ ফুল দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছিল না । উলটো আবারো হাসির পাত্র হল ।

গোঁ ধরে আছে আবুল । আবলামি বন্ধ করে ডিজিটাল পদ্ধতি অবলম্বন করার কথা ভাবল আবুল । ফেসবুকে মেয়েদের সাথে ইটিশ পিটিশ শুরু করলো আবুল । এক মেয়েকে পেয়েও গেলো । গদগদ অবস্থা । আই লাভু জানুপাখি , টিয়াপাখি , কইতর , ময়নাপাখি আর চুমু সাইন দিয়ে একাকার । রাতের পর রাত ম্যাসেজিং । আবুল ভাবল , যাক । গতি এবার হয়েই গেলো একটা । এখন থেকে সেও গার্ল ফ্রেন্ডের কোমর জড়িয়ে ধরে ভার্সিটিতে যাবে । একদিন বলেই ফেললো , ‘ জানুপাখি , কবে করবে দেখা ও আমার প্রেয়সী ? ‘
উত্তর এলো , ‘ কারেন্ট গেছে আবুল । কথা হবে পরে’’

হাসু আপা দিয়াছেন কথা
দৈনিক লোডশেডিং হবে দুই ঘণ্টা ।

দুই ঘণ্টা পার হইল । প্রেয়সী আসে না । চার ঘণ্টা । তাও এলো না । আবুল ভয় পায় । কিছু হইল না তো তার জানুপাখির ? এক দিন , দুই দিন এমন করে একটি সপ্তাহ খবর নাই প্রেয়সীর ।
সে যে কেন এলো না , কিছু ভালো লাগে না । !!!!

গুনগুন করতে করতে আবুল বসে আছে । টিভি তে একটা তামিল ছিল । টিভির দিকে নজর পড়তেই তার বুকে ডিপডিপ শুরু হয় । দৌড়ে কুদে আবুল ফেসবুক অন করে । প্রেয়সীর প্রোফাইল পিকচার টা একদম ই ওই তামিল ছবির নায়িকার মত ।
হে খোদা , এই তো ফেইক আইডি । !

তৃতীয় বারের মত আবুল খুন্তির ছ্যাকা খাইলো । কলিজাটা ফাটে ফাটে পর্যায়ে । বন্ধুমহলেও কিভাবে যেন রটে গেছে , আবুল গে হয়ে গেছে । ছেলেদের জানুপাখি , প্র্যেয়সি বানিয়ে বেড়ায় । দুঃখে কষ্টে আবুলের প্রাণ উশঠাগত ।


মাসাধিককাল পর ।

ভার্সিটির গেটের সামনে দাঁড়ালো একটি গাড়ি । গাড়ি থেকে একটা ছেলে নামলো । দুই পাশে দুইটি মেয়ে। মেয়ে দুটোর কোমর জড়িয়ে ধরে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে চত্বরে বসা দুইটি ছেলের দিকে । হাবুল আর কাবুল । গল্পে মশগুল দুইজন আগুন্তককে দেখে অবাক । এই তো আমাদের আবুল । আবুল দি গে ম্যান । দুই দুইটি মেয়ে নিয়ে করছেটা কি ?

মেয়ে দুটিকে রাতে দেখা করার কথা বলে বিদায় দিলো আবুল । বন্ধুদের কাছে গিয়ে ভুরু নাচিয়ে বলল , কিহে, কি রসালো আলাপ করছিস তোরা ? আমাকেও বল । আমিও জয়েন করি ‘’

কাবুল বলল , দোস্ত , কেমনে কি ? মাইয়া জুটালি কেমনে ?
হাবুল বলল , এতদিন এতো ট্রিক খেললি , কোন মেয়ে ঘুইরাও চায় নাই । আইজ দুইডা ? কাহিনী কি ?

আবুল মুচকি এসে বলল , হে হে হে । দোস্তরা , মেয়ে পটানি যন্ত্র আছে আমার কাছে । এই যন্ত্রের টানে সব মেয়েই চলে আসে ।

যন্ত্রটা ব্যাগ থেকে বের করে দেখালো আবুল । কালো মতন একটা জিনিস । হাবুল চেচিয়ে বলল , দোস্ত , এইডা তো একটা ক্যামেরা লাগে ।
আবুল গর্বের সাথে বলল , হ্যাঁ , এটা ক্যামেরা । জেনতেন ক্যামেরা না । ডিএসএলআর ক্যামেরা । আরও অনেক যন্ত্র আছে এর সাথে ।

হাবুল হা করে আছে । কোন মতে বলল , এই যন্ত্র দিয়া ই কি মেয়ে পটালি ?
আবুল বলে , চোখের সামনেই তো দেখলি , নাকি ?


পুরো ভার্সিটিতে রটে গেলো

আবুলের একটি মেয়ে পটানো যন্ত্র আছে ।
ABUL HAS A DSLR CAMERA .


প্রথম প্রকাশ - ( ।। আবুলের মেয়ে পটানো যন্ত্র ।। )


পুনশ্চঃ

পোস্টের আইডিয়া পেয়েছিলাম এক ব্লগার ভাইয়ের মন্তব্য থেকে । মাসাধিককাল পর ব্লগে এসে এটি দিয়েই সূচনা করলাম । ব্লগারের নাম টা মনে করতে পারছি না । উনাকে গায়েবী ধন্যবাদ ।

সর্বশেষ দুটি পোস্ট –
।। বাঙালির বাসর রাত - প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ।।

।। ” গর্ভনিরোধক খাপ” এবং আমেরিকান খাপের রেডিয়াম প্রযুক্তিতে বাঙালির সর্বনাশ ।।
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই অক্টোবর, ২০১২ রাত ১১:৫৮
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×